গল্প : ছোট্টবেলা মাছ ধরার মজার ঘটনা //by ripon40
আসসালামু আলাইকুম
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@ripon40 বাংলাদেশের নাগরিক
- ছোট্টবেলা মাছ ধরার মজার ঘটনা
- ২০, মে ,২০২৪
- সোমবার
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আমি " ছোট্টবেলা মাছ ধরার মজার ঘটনাময় গল্প শেয়ার করছি । আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
প্রতিটা মানুষের জীবনে ছোট্টবেলার অনেক মধুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যেগুলো কখনো ভুলবার নয় । চলমান সময়ের মধ্যে জীবনের সেরা মুহূর্ত কোনটি হয়তো সেটা আমরা বুঝতে পারি না। যখন সেই সুন্দর মুহূর্তগুলো অতীত হয়ে যায় তখন বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। সেই সুন্দর দিনগুলো কতই না মধুর ছিল। প্রতিটা মানুষের কাছে শৈশবের মুহূর্ত সবচেয়ে সেরা মুহূর্ত। আজকে শৈশবকালে মাছ ধরার গল্প শেয়ার করব। এই মাছ ধরতে গিয়ে ঘটেছিল ঐতিহাসিক ঘটনা।
তখন ক্লাস ফাইভ কিংবা সিক্সে পড়ি সেই সময়ের ঘটনা। বর্ষাকালে নদীতে ভরপুর পানি থাকে বর্ষার শেষে শীতের মৌসুমে ছোট্ট ছোট্ট শাখা নদী গুলো শুকিয়ে যায়। খাল, বিল যেখানে হালকা পানি থাকে গ্রামীণ পরিবেশে যারা বেড়ে উঠেছে সেই খাল বিলে এবং ছোট্ট শাখা নদীতে মাছ ধরার শোরগোল পড়ে যেত। আমাদের বাড়ির পাশেই ছোট্ট একটি শাখা নদী রয়েছে। যেখানে বর্ষার সময় অনেক পানি থাকে। বর্ষা শেষ হয়ে গেলে আবার শুকিয়ে যায়। হালকা পানি থাকতো কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও হাঁটু পানির বেশি যেখানে পানি কম থাকতো সেখানে আমরা বাড়ি থেকে গামলা নিয়ে গিয়ে মাছ ধরা শুরু করে দিতাম।
বর্ষার আগে ধান চাষ হয়। শীতের সময় যখন নদীর পানি কমে যায় তখন সেই ধানের জমির চারিপাশে উঁচু আইল থাকে সেখানে পানি জমে থাকতো। হাঁটু পানি সেখানে আমরা মাছ ধরার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম। আমার এক বন্ধুসহ চাচাতো ভাই মোট তিনজন সেই ধানের জমির স্থানে হাঁটু পানির মধ্যে দেখলাম অনেক খসলা মাছ। যেহেতু বাড়ি বেশি দূরে নয় আমরা কয়েকটি গামলা নিয়ে এসে সেখানে সুন্দর করে বাঁধ দিয়ে পানি সেচতে শুরু করলাম। সময়টি ছিল বিকেলের শেষ মুহূর্ত আর কিছুক্ষণ পর হয়তো সন্ধ্যা হয়ে যাবে। সেই চিন্তা ভাবনা আমাদের মধ্যে নেই মাছ দেখে আর লোভ সামলাতে পারিনি। কেউ পানি সেচতেছি আবার কেউ সুন্দর করে বাঁধ দিয়ে দেখাশোনা করছে ছিদ্র দিয়ে পানির ভিতরে প্রবেশ করছে কিনা।
সেখানে অনেকগুলো খসলা মাছ দেখার কারণেই মাছ মারার আগ্রহ আসে আমাদের। অনেক সময় ধরে পানি ছেচতেছি যখন আমার হাফ লেগে যায় তখন আমি দম নেই। আবার বন্ধু সুজন সে পানি সেচতে থাকে। এভাবে এক ঘন্টা যাবত আমরা পানি সেচতে থাকি । তখন সন্ধ্যা ঘোর হয়ে গিয়েছে পানি সেচ প্রায় শেষের দিকে। আমরা সেই বড় বড় খসলা মাছ ধরতে থাকলাম। একটি কথা বলা হয়নি নদীর পানি যখন আস্তে আস্তে কমতে থাকে। তখন ধানের জমির উঁচু আইল গুলো জেগে ওঠে সেখানেই মাছ ধানের জমিতে বন্দী হয়ে যায়। সেই সুযোগটি আমরা কাজে লাগিয়েছিলাম। অনেকগুলো মাছ ধরলাম এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। বন্ধু সুজনের বাবা তিনি এসে দেখে বলল রাত হয়ে যাচ্ছে আর এখন মাছ মারার সময়।তোমরা সবাই ওঠে আসো। যেহেতু শেষের দিকে রাত হয়ে গিয়েছে আলো লাগবে বন্ধু সুজনের বাবা বাড়ি থেকে একটি টস লাইট নিয়ে আসলো। যা যখন টর্চ লাইট নিয়ে আসতে গিয়েছে সেই সময় চাচাতো ভাই হাসান সে বলল আমি বড় একটি বাইম মাছ ধরেছি।
আমাদের মাছ মারা শেষের দিকে তার এই কথা শুনে আমরা মহা খুশি। অনেক বড় বাইম মাছ যাক আজকে মাছ মারার বড় সার্থকতা পেলাম । কিন্তু আমাদের মাথায় এটা কাজ করেনি আমরা যখন সেখানে মাছ ধরার জন্য পরিকল্পনা করছিলাম। সেই সময়ে পানি অনেক পরিষ্কার সবকিছু দেখা যাচ্ছিল। শুধু খোসলা মাছ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায়নি সেখানে। দু একটি পুটি মাছ ছিল। সুজনের বাবার টস লাইট নিয়ে আসার অপেক্ষায় থাকলাম আর হাসানকে বললাম কোনভাবে যেন না ছুটে যায়। তার সাথে সুজন গিয়েও ধরল কারণ এত বড় বাইম মাছ আমরা ছেড়ে দিতে রাজি নই। আমি আবার এই বাইম মাছ ধরতে অনেক ভয় পেতাম। সাপের মত দেখতে সেজন্য অনেক ভয় পেতাম।
যখন আংকেল টর্চ লাইট নিয়ে আসলো বন্ধু সুজন এবং চাচাতো ভাই হাসান দুজন সেই বাইম মাছ নামক সাপ উপরে উঠায়ে নিয়ে আসলো। টস লাইট এর আলোয় দেখি সাপ। এমনিতেই সাপ দেখে আমি খুব ভয় পেতাম। আমি এক দৌড়ে উপরে উঠে গেছি। এই দিকে তারা দুজন সেই সাপটিকে ছুড়ে মেরে তারাও দৌড় দিছে। তারপর কি আর করার অনেক মাছ থাকার পরেও আমরা সেখান থেকে উঠে বাড়ি চলে আসলাম। সেদিনকার ঘটনা এখনো মনে পড়লে গায়ের মধ্যে সিরে ওঠে।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি মোঃ রিপন মাহমুদ। আমার স্টীমিট একাউন্ট@ripon40। আমি একজন বাঙালি আর আমি বাঙালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করি। আমি স্টীমিটকে অনেক ভালোবাসি। ভালোবাসি পড়তে, লিখতে, ব্লগিং,ফটোগ্রাফি,মিউজিক,রেসিপি ডাই আমার অনেক পছন্দের। আমি ঘুরতে অনেক ভালোবাসি। আমার সবচেয়ে বড় গুণ হলো কারোর উপর রাগ করলে সহজেই ভুলে যাই।
অনেক সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করছে না। ছোটবেলায় এমন সুন্দর মাছ ধরার মজার ঘটনা আমারও অনেক রয়েছে। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনার ছোটবেলার ঘটনা। বেশ ভালো লাগলো আপনার ঘটনা জেনে।
ভাইয়া দেখছি, বহু আগের মাছ ধরার গল্প শেয়ার করলেন। তবে আপনাদের দুই বন্ধু মিলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পানি সেচে মাছ ধরলেন। আসলে সবকিছুই ভীষণ ভালো লেগেছে। এদিকে দেখছি আপনারা মাছ ধরতে ধরতে সন্ধ্যা হয়ে আসলো। তবে এত বড় বাইম মাছটা সাপে পরিণত হবে এটা আসলে একেবারে কল্পনার বাইরে ছিল। আর সাপটার জন্য আপনাদের আর মাছ ও ধরা হলো না। এই বিষয়টা পড়ে আমার নিজেরও ভীষণ ভয় লেগেছিল।
https://twitter.com/mahmudrr_r/status/1792779289408176632?t=wVzliBQN-o2s5Mwr6g65iA&s=19
হাহাহাহা ভাইয়া বাইম মাছ ভেবে সাপ ধরে উপরে তুলেছেন জেনে খুব হাসি পেলো।আপনাদের কষ্ট তো জলে চলে গেলো খলসে মাছের জন্য জল সেচে মাছ ধরতে নেমে বাইম মাছ ভেবে সাপ ধরে উপরে তুলেছেন। আপনাদের কি অবস্থা হয়েছিল ঐ মূহুর্তে বুঝতে পারছি।বেশ ভালো লাগলো পোষ্টটি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।