প্রথম রক্তদান অভিজ্ঞতা
হ্যালো বন্ধুরা
সবাই কে আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @rimon76 চলে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আমার আজকের ভ্লগে থাকছে জীবনের প্রথম রক্তদান এবং কি কি করলাম সেই সম্পর্কে , আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে তো চলুন শুরু করি আমার আজকের ব্লগ।
সকালে ঘুৃম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে যথারীতি নিজের কাজ করছিলাম। এভাবেই অর্ধেক বেলা কেটে যায়। প্রায় দুপুর গড়িয়ে এলো। কাজ শেষ করে গোসলে যায়। তখন ফোনে কয়েকবার কল আসে। গোসলে থাকা অবস্থায় ফোন টা রিসিভ করতে পারি নি পরে বের হয়ে ফোন টা চেক করে দেখি আমার স্কুলের খুব কাছের একটা বন্ধু বেশ কয়েকবার কল দিয়েছে। এতো দিন পর তার এমন কল পেয়ে কিছু টা অবাকই হলাম সচারাচর আমরা কেউ কারও সাথে অনেক দিন যোগাযোগ করি না।
তো যাই হোক আমি কল টা আবার ব্যাক করি এবং আমার সেই বন্ধ কল টা রিসিভ করে ফোনের ওপাশ থেকে জিজ্ঞেস করে মামা কেমন আছিস? ও আর একটা কথা বলে নিই সে সম্পর্কে আমার মামা ও হয়। তারপর তারসাথে আমার সাধারণত কথোপকথন হয়, কিছু ক্ষন পর সে আমাকে জিজ্ঞেস করে তোর রক্তের গ্রুপ কি মামা? আমি কোনো কিছু না ভেবেই তাকে আমার রক্তের গ্রুপটা বলি। এবং সে আমাকে জানায় তার এক কাছের আত্নীয় বাইক দূর্ঘটনায় মারাত্বক ভাবে আহত হয়েছে এবং তাকে ঢাকা পঙ্গু তে ভর্তি করা হয়েছে। যার ইতিমধ্যে তিন থেকে চার ব্যাগ রক্ত লেগেছে এবং আরও দরকার। এবং তার সেই গ্রুপ আমার সাথে কাকতালীয় ভাবে মিলে যায়। অতঃপর আমার বন্ধু আমাকে জিগ্যেস করে আমি সেখানে যেতে পারবো কি না,
আমি কোনো কিছু না ভেবেই তাকে হ্যা বলে দেই। কারন বিপদে পরলেই তো মানুষ মানুষের সাহায্য চাই। আমরা তো সবসময় নিজেদের কে সে ভাবে পাশে রাখথে চাই না বা রাখি না। আমি আমার বন্ধু কে বললাম কখন যেতে হবে সে বললো তুই কখন ফ্রি। উত্তরে তাকে আমি জানালাম তাদের যখন প্রয়োজন আমি যেতে পারবো। সে এক প্রকার স্বস্তি পেলো আমার কথা শুনে, আমাকে একটা নাম্বার দিয়ে বললো তুই এই নাম্বারে যোগাযোগ কর তোকে কেবিন নাম্বার আর কখন যেতে হবে তারাই সব বলে দিবে। আমি এদিকে দুপুরের খাওয়া শেষ করে একটু তরিঘরি করে তাদের কল দিলাম যেহেতু তারা বিপদে আছে। আমাকে যেতে বলা হলো। কারন তাদের দুপুর তিন টার মধ্যেই রক্তটা লাগবে। আমিও তৈরী হয়ে বেড়িয়ে পরলাম। দুপুর হওয়া স্বর্তেও দেখি রাস্তায় অনেক জ্যাম যা আমাকে ব্যাপক ভাবে হতাশ করলো। তখন নিজের বাইক না থাকার অনুভূতি টা বুঝতে পারলাম। যে টা আমাকে কতোটা সাহায্য করতো। আমি আনার আর একটা ভাগ্নে কে কল দেয় তার বাইক টা নেওয়ার জন্য সাহায্য করার মতো সুযোগ থাকলেও সে আমাকে সাফ জানিয়ে দেয় বাইক টা তার কাছে নেই অথচ আমি তার গ্যারেজ থেকেই তাকে কল টা করেছিলাম এবং সেখানে বাইক টা ছিলো। মনটা একটু খারাপ হলো আসলে বিপদে পরলেই কাছের মানুষ চেনা যায় অন্যের বিপদ ছিলো সেদিন তাই এঅবস্থা নিজের বিপদ হলে কি হতো আল্লাহ জানেন।
সবকিছু বাদ দিয়ে আমি পাঠাও রাইড করে হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা দেয় এবং আধাঘন্টার মধ্যেই সেখানে পৌছায়। বাসে গেলে সেদিন আর সময় মতো যেতে পারতাম না। হসপিটালে পৌছে আমার বন্ধুর সেই আত্নীয়র সাথে দেখা করি। বলে রাখা ভালো আমার বন্ধ সেখানে উপস্থিত থাকতে পারে নি তার অনুপস্থিতে সেখানে আমি যাবো সেটা বন্ধুর আত্মীয় আশা করে নি। কিন্তু মানুষ তো মানুষের জন্যই। আর স্বার্থ ছাড়া কারও বিপদে এগিয়ে যাওয়া টা মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু আমরা কজনই বা এভাবে ভেবে দেখি। যাইহোক নীতিকথা বাদ দেই। তাদের সাথে কথা বলে জিগ্যেস করলাম রক্ত কখন লাগবে?
তারা আমাকে জানালো দশ মিনিটের মধ্যেই দিতে হবে আমি কোনো কিছু না ভেবেই বললাম ঠিক আছে কোনো সমস্যা নেই আমি প্রস্তুত আছি। মজার বিষয় হলো এটা আমার জীবনের প্রথম রক্তদান, কিন্তু আমার কেনো জেনো একবার এর জন্য মনেও হয় নি এটা আমার জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। যথারীতি আমি রক্ত দিলাম এবং কিছুক্ষন সেখানে বিশ্রাম নিয়ে তাদের সাথে আবার দেখা করলাম। বিপদে কাওকে সাহায্য করার মতো মানসিক শান্তি হয়তো আর নেই। অনেকে বলতে পারে এ আর এমন কি ব্যাপার। কিন্তু কজন কে পাওয়া যায় সঠিক সময়ে। নিজেকে দিয়েই সেটা অনুভব করি। যাইহোক তারপর তাদের সাথে কথা শেষ করলাম তারা অনেক খুশি ছিলে আমি যে আমার বন্ধু ছাড়াই ওখানে উপস্থিত হবো সেটা তারা ভাবে নি। এই ছিলো আমার জীবনে রক্তদানের প্রথম অভিজ্ঞতা। সব কথার শেষ কথা এই পৃথিবীতে বিপদে না পরলে কাছের মানুষ চেনা যায় না।
তো বন্ধুরা আমার ব্লগ টা আজকে এখানেই শেষ করছি। আশা করি সবার অনেক ভালো লাগবে। সবাই ভালো থাকবেন আবারো দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টে।
পোস্টের | বিবরণ |
---|---|
পোস্টের ধরন | প্রথম রক্তদানের অভিজ্ঞতা |
লোকেশন | ঢাকা , বাংলাদেশ |
ক্যামেরা | ভিভো |
ক্যামেরাম্যান | @rimon76 |
আসলে রক্ত দান করা একটি ভালো কাজ।এর থেকে ভালো কাজ পৃথিবীতে আর হয় না। আপনার রক্ত দান করা দেখে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগলো ভাইয়া।আপনার
রক্তের মাধ্যমে একজন অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হতে পারবে। আপনি আজকে আপনার জীবনে প্রথমবার রক্ত প্রদান করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। আপনার রক্ত দান করার অনুভূতি পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে আমার কাছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া মতামত দিয়ে পাশে থাকার জন্য
রক্তদান করা মহৎ একটি কাজ। এই কাজে পূণ্য হয় কি-না সেটা আমার জানা নেই। তবে রক্ত দান করলে অনেক অসহায় মানুষের বিশাল আকার উপকার হয়। আপনার প্রথম রক্তদান করার অভিজ্ঞতার কথাগুলো অনেক সুন্দর ভাবে আপনি গুছিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আমি আশা করি আপনি এভাবেই চেষ্টা করবেন মহৎ কাজে নিজেকে জড়িত রাখতে।
রক্ত দান একটি মহৎ কাজ, আমি ২০১৯ থেকে ডোনেট করে আসছি এই রক্ত দানের মধ্যে দারুন একটি অনুভূতি কাজ করে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো এগিয়ে যান এবং এমন মহৎ কাজ আরো করুন সেই কামনা করি।
ধন্যবাদ ভাই
অনেক দিন যোগাযোগ না থাকলেও অনেক সময় প্রয়োজনে কাছের বন্ধুরা পুরনো বন্ধুদেরকে খোঁজার চেষ্টা করে। আপনি একজন অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন আর রক্ত দান করেছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য।
মতামত দিয়ে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ