সিলেট মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ঘুরাঘুরি (১০% পে আউট লাজুক খ্যাকের জন্য)
হ্যালো বন্ধুরা
সবাই কে আসসালামু আলাইকুম ,আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @rimon76 চলে এলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। আমার আজকের ভ্লগে থাকছে সিলেট মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ঘোরাঘুরির কিছু মূহুর্ত। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে তো চলুন শুরু করি আমার আজকের ব্লগ।
বাসায় খুব বোরিং সময় কাটাচ্ছিলাম, তো হঠ্যাৎ আমার বাবা আমাকে বললো আমি অফিসের কাজে সিলেট যাচ্ছি তুমিও চাইলে ওখানে গিয়ে ঘুরে আসতে পারো। যেই কথা সেই কাজ কোনো কিছু না ভেবে ঘাড় বেঁকিয়ে এক কথায় হ্যা বলে দেয়। তারপর বাবা আমাকে কনফার্ম করলো তোমার ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে। আমি তো মহা খুঁশি এই প্রথমবার বাবার সাথে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হলো তাও আবার সিলেট। যেখানে নানান অযুহাতে যাওয়া হয়ে উঠে না। সময় ও চলে এলো আমি আমার কাপড়ের ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম পরেরদিন সকালে যাবো। সারাদিন পার হয়ে রাতের অন্ধকার নেমে এলো আমার রাত শেষ হয় না ঘুম আসে না কারন একটাই আমি কখন রওয়ানা হবো ভ্রমন বিষয় টা আমি এতোটাই উপভোগ করি।
সকাল হলো আমি ঘুম থেকে উঠে তৈরী হয়ে নিলাম নাস্তা শেষ করে কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশ্য, আমি আর আমার বাবা রওয়ানা হলাম এবং সেখানে পৌঁছালাম। স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হলো ১ ঘন্টা । অবশেষে ট্রেনের দেখা পেলাম। ১১ টা নাগাদ ট্রেনে উঠে গেলাম। আমাদের একটা কেবিন টাইপ এর সিট নেওয়া ছিলো। ছেলে হিসেবে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হচ্ছিলো তখন বাবার সাথে ভ্রমন কারন আমার জীবনে বুদ্ধি হওয়ার পরে এটাই ছিলো আমার বাবার সাথে প্রথম ভ্রমন। যাইহোক ট্রেন ছাড়লো আমারও গন্তব্য পৌঁছানোর অপেক্ষায় সাড়ে ৭ ঘন্টা জার্নি শেষ করে অবশেষে সন্ধ্যায় সিলেট স্টেশন পৌছালাম। সেখানে আমাদের রিসিভ করতে আসলো আমার এক ভাইয়া। স্টেশন থেকে বের হয়ে ভাইয়ার বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলাম। এবং ৩০ মিনিট পরে বাসায় পৌঁছালাম, বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয় সবাই একটু আড্ডা দিয়ে বিছানায় গেলাম। যেহেতু সারাদিনের জার্নি ছিলো একটু টার্য়াড ও ছিলাম আর রাত ও হয়ে গিয়েছিলো তাই সেদিনের মতো আর কোথাও বেরোনো হলো না।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে ঘুরাঘুরির উদ্দেশ্য বের হলাম এবং চলে গেলাম সিলেটের সেই বিখ্যাত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে।
ওখানে গিয়ে নিজেকে অন্যরকম ভাবে আবিষ্কার করলাম আসলে কোথাও ঘুরতে না গেলে বোঝা যায় না ভ্রমন একটা মানুষ কে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে কতোটা প্রফুল্ল রাখে। যাইহোক তারপর সেখানে গিয়ে আমাদের টিকিট নিতে হলো এবং ভেতরে প্রবেশ করলাম গেট থেকে জলপ্রপাতের কাছে যেতে প্রায় ১ কিলোমিটার হাঁটতে হলো। ভালোই লাগছিলো বেশ উপভোগ করছিলাম কিছুদূর যেতে একটা অদ্ভুত আওয়াজ কানে ভেসে এলো যেটা ছিলো সেই কাঙ্খিত জলপ্রপাত পরক্ষনে পৌছালাম আর অবাক দৃষ্টিতে দৃশ্য চেয়ে রইলাম সত্যি বলতে এতোটা ভালো লাগছিলো মনটা অনেক ভালো হয়ে গেলো।
ওখানে অনেক পর্যটক এসেছে সবাই নিজেদের মতো করে উপভোগ করছে। কেউ ছবি উঠাচ্ছে কেউবা পরিবারের সাথে ঝর্নার পানিতে গা ভেজাতে মেতেছে। পরিবেশটাই অন্যরকম।আমি সেভাবে কোনো প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম না ভেবেছিলাম কেমন হবে বা ওখানে গেলে ঝর্নায় নামতে পারবো কি না।
অহ বলতে ভূলে গেছি আমার সাথে ছিলো আমার ভাগ্নে আর একটা ছোটো ভাই। তাদের পানিতে নামতে দেখে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারি নি আমিও নেমে গিয়েছে এতো সুন্দর একটা পরিবেশ কোনো ভাবেই মিস দেওয়া যাবে না। তারপর অনেকক্ষন সেখান সময় কাটালাম। নিজের সকল খারাপ লাগা গুলো ভুলো একমুহূর্তের জন্য নিজেকে অনেক সুখী মনে হচ্ছিলো। সময় পেরিয়ে গেলো আমরাও আবার বাসায় ফেরার উদ্দেশ্য তৈরী হলাম ওখান থেকে বের হয়ে মাধবকুণ্ড যার নামে পর্যটনকেন্দ্র টা তার স্মৃতিবিজড়ীত একটা মন্দির দেখতে পেলাম। এবং কিছু পুরনো নিদর্শন ছিলো। তার কিছু ইতিহাস জানলাম।
আশপাশে ঘুরে অবশেষে বাসায় ফেরার পালা ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হলো প্রফুল্ল মন নিয়ে বাসায় ফিরে রাতের খাবার শেষ করে সেদিনের মতো ঘুমিয়ে গেলাম। গল্প টা বলার একটাই উদ্দেশ্য ছিলো জীবনে ঘুরাঘুরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ঘরবন্দী হয়ে থাকলে আসলে আমরা নিজেদের কে এক ঘেয়েমি করে ফেলি যেটা থেকে আমরা প্রভাবিত হয়। তাই জীবনে প্রচুর ঘুরতে হবে নিজেকে ভালো রাখতে হবে। তাহলেই জীবনটা উপভোগ করা যাবে।
আমার ব্লগ টা এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা। আশা করি সবার অনেক ভালো লাগবে। সবাই ভালো থাকবেন আবারো দেখা হবে নতুন কোনো পোস্টে।
পোস্টের | বিবরণ |
---|---|
পোস্টের ধরন | মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত |
লোকেশন | সিলেট, বাংলাদেশ |
ক্যামেরা | রিয়েলমি |
ক্যামেরাম্যান | @rimo76 |
ভাই আপনি মাধবকুণ্ড ইকো পার্কের মধ্যে বেশ দারুন সময় অতিবাহিত করেছেন আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। আসলে সিলেট মাধবকুণ্ড ঝর্ণা দেখার জন্য আমিও গিয়েছিলাম সেখানে বেশ দারুন মজা করেছিলাম বন্ধুদের সাথে। অপরূপ ঝর্ণার প্রকৃতি দৃশ্য দেখে সত্যিই আমি বেশ মুগ্ধ হয়ে ছিলাম। তবে আপনার ভ্রমণ পোস্টটি মধ্যে আরো কিছু ছবি দিলে বেশি ভালো লাগতো দেখতে।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
❣️
বেশ ভালোই করেছেন আপনার বাবার সাথে যেতে রাজি হয়ে। আসলে ঘুরতে যেতে আমাদের সবারই ভালো লাগে। আর যদি সিলেট হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। তবে আপনার বাবার সাথে এটাই প্রথম ভ্রমণ শুনে ভালো লাগলো। ঝর্ণার ধারে গেলে এমনিতেই ভিজতে ইচ্ছা করে। প্রস্তুতি না নিয়ে গেলেও বেশ ভালোই আনন্দ করেছেন দেখছি। আপনার পুরো পোস্ট করে অনেক বেশি ভালো লেগেছে।
বাবার সাথে ঘুরার সৌভাগ্য সব ছেলেদের হয় না, যখন আমিও সুযোগ টা পেলাম তাই আর মিস করি নি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।