অচেনার উদ্দেশ্যে!!steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? অনেকদিন পর আমি "অচেনার উদ্দেশ্যে" আরো একটি পর্ব নিয়ে আসলাম। অচেনার উদ্দেশ্যের শেষ পর্ব সম্ভবত এক বছর আগে করেছিলাম। আজ থেকে এক বছর আগে যখন ঢাকাতে আসলাম তখন থেকেই ঘোরাঘুরি আগের তুলনায় ১০% এরও নিচে চলে এসেছে। তাইতো এখন আর "অচেনার উদ্দেশ্যে" পর্ব শেয়ার করা হয়না।

বহুদিন পর এবার ঈদের ছুটির শেষের দিকে বাড়িতে অবস্থান করাকালীন একদিন আমরা বেরিয়েছিলাম অচেনার উদ্দেশ্যে। আসলে আমাদের এলাকার আশেপাশে এত পরিমাণ ঘোরাঘুরি করেছি আমরা যে এখন আর অচেনা জায়গা নেই বললেই চলে। তবুও বিকেলবেলা বেরিয়ে পড়লাম যখন সূর্যের তাপ একটু কমতে শুরু করেছে। ৮ জন চারটি বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বিকেল সাড়ে চারটার দিকে। আমাদের মধ্যে আরও দুজন মিসিং ছিল তাদেরকে বেশ মিস করেছি। কারণ আগে যখন ঘুরতে যেতাম তারা সবসময় সাথে থাকতো। আসলে দিন যত যাবে ততই সবাই ছন্নছাড়া হয়ে যাবে। যাইহোক প্রথমেই আমরা গেলাম একটা নতুন ব্রিজে। ব্রিজটি একেবারেই নতুন বানানো হয়েছে।
1689763448680-01.jpeg

1689763490099-01.jpeg

1689763505047-01.jpeg

এক থেকে দেড় বছর আগের ঘটনা, আমরা তাল গাছের সারি দেখতে গিয়েছিলাম তখন এই নদীটি পার দিয়ে যেতে হয়েছিল। তখন এই নদী পারাপারের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। বাইক নিয়ে নৌকা পার হতে বেশ অসুবিধাই হত। এখন সব যানবাহনের জন্যই বিশাল একটা সুবিধা করে দিয়েছে এই ব্রিজটি।

1689763461717-01.jpeg

1689763478449-01.jpeg

1689763520426-01.jpeg

1689763533879-01.jpeg

ব্রিজের উপর অসাধারণ পরিবেশ দেখলাম গিয়ে। যতদিন ব্রিজটা আন্ডার কনস্ট্রাকশন ছিল ততদিন আমরা ওই দূর থেকে চা খেতে খেতে দেখেছি। সেইদিনই প্রথম ব্রিজের উপর আসা। ব্রিজের উপর উঠে আশেপাশের দৃশ্যগুলো মারাত্মক সুন্দর দেখাচ্ছিল। বর্ষাকাল হওয়ায় দুপাশে সবুজের সমরহ। দৃষ্টিতে শীতল এক অনুভূতি জায়গায়। কিছুক্ষণ ব্রিজের উপর সময় কাটানোর পর ব্রিজের অপরপ্রান্তে গেলাম আমরা। সেখানে গিয়ে সবাই এক গ্লাস করে ঠান্ডা শরবত খেলাম। রাস্তার পাশের এই দোকানগুলোরে শরবত মোটেও স্বাস্থ্যকর না তবুও সবাই এক গ্লাস করে নিলাম।

1689764448173-01.jpeg

এরপর নদীর অন্য সাইডের রাস্তা ধরে আমরা আরো এগোতে থাকলাম। রাস্তাগুলো নতুন করা হয়েছে অনেক সুন্দর ছিল। এরই মাঝে আমাদের মধ্যে কয়েকজন সেই তাল গাছের সারি দেখতে যাওয়ার মনস্থির করল। কিন্তু বেশি রাত হয়ে যাবে এজন্য আমি নিষেধ করলাম। আর ওই জায়গাটা ছিল অনেক দূর এত দূর যাওয়াটা ঠিক হবে না, তার থেকে আশে পাশেই একটু বেশি সময় ধরে ঘোরাফেরা করলে ভালো লাগবে। এজন্য আমরা ওদিকে আর এগোলাম না। এরপর একটা অচেনা রাস্তায় আমরা ঢুকলাম। শুরু হলো আরো একটি অচেনার উদ্দেশ্যে যাত্রা। আমাদের সবার কাছেই এই রাস্তাটা অপরিচিত ছিল। জানিনা আমরা কোথায় যাচ্ছি কিন্তু যেতে থাকলাম। অনেক দূর যাওয়ার পর হালকা বৃষ্টি শুরু হলো। কোন উপায় না দেখে স্থির করলাম যে কোন একটা বাড়িতে ঢুকে যাব। এরপরে দেখলাম রাস্তার পাশে একটা নতুন বানানো হচ্ছে এমন বাড়ি। বাড়িতে কেউ থাকে বলে মনে হচ্ছিল না, একেবারেই নতুন বানানো হচ্ছে ।

1689764636020_compress45.jpg

Polish_20230719_170248028.jpg

বাইকগুলো গাছের নিচে রেখে আমরা ওই বাড়ির বারান্দা সাইডে গিয়ে দাঁড়ালাম সবাই। মজার বিষয় হচ্ছে ওই বাড়ির মধ্যে থেকে একটা বৃদ্ধ মহিলা বেরিয়ে আসলো। প্রথমে ভাবলাম কি না কি ভাববে এত মানুষ এখানে দাঁড়িয়ে আছি!! কিন্তু উনি আমাদের সবাইকে আরো ভিতরে যেতে বললেন। যদিও আমরা যাইনি। ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। তবে ওই বৃদ্ধ মহিলা খুবই মিশুক প্রকৃতি ছিল। গল্পে গল্পে বেশ ভালোই জমে উঠল আমাদের ওই মুহূর্তটা। ওই বৃদ্ধ মহিলাকে আমরা দাদী বলেই ডাকলাম।

1689763616646-01.jpeg

কিছুক্ষণ পরে খেয়াল করলাম দুইটা মেয়ে বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজতে আসতেছে স্কুল থেকে। তারা রাস্তা থেকে নেমে ওই বাড়িতেই ঢুকছিল যেখানে আমরা ছিলাম। তারা নিজেদের মধ্যে কি যেন বলাবলি করছিল আর হাসাহাসি করছিল। ওই হাই স্কুলের মেয়েরা যেরকম হয় আর কি। তারপর আবার তারা সাইডে গিয়ে ওই বৃদ্ধ মহিলাকে দাদী বলে ডাক দিয়ে বলছে তুমি কাদের সাথে কথা বলছো। তখন বুঝতে পারলাম এই মহিলাটা উনাদের দাদী হয়। এরপর আমার কিছু ছোট ভাইয়েরা অতি উৎসাহিত হয়ে ওই মেয়ের পরিচয় জানতে চাইলো। বিস্তারিত শুনেও নিল মহিলা থেকে। যাই হোক পুরো টাইমটা বেশ মজাতেই কেটেছে।

এরপর বৃষ্টি থেমে গেল, আমরাও সবাই আবার বেরিয়ে পড়লাম দাদীকে বিদায় জানিয়ে। আসার সময় আমি অবশ্যই একটু ফাইজলামি করে বলেছিলাম এর পরের বার ছোট ভাইদের নিয়ে আসব আপনার নাতনিদেরকে দেখার জন্য। দাদী সম্মতিও জানালেন৷ হিহিহি।।

1689763959794-01.jpeg

1689764129920-01.jpeg

এরপর বৃষ্টি ভেজা পথ দিয়ে আমরা এগোতে থাকলাম আবার ব্রিজের দিকে। মাঝপথে এসে আবারো এক জায়গায় দাঁড়াতে হয়েছিল বৃষ্টির কারণে। একটি মজার ব্যাপার হলো ব্রিজের এদিকে আবার এসে দেখি এদিকে কোন বৃষ্টিই হয়নি। এরপর ব্রিজের উপর বসে আমরা পুরো সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় কাটালাম। সন্ধ্যার মুহূর্তটা বেশ ভালো লাগছিল ব্রিজের উপর।

অনেকক্ষণ ব্রিজের উপর সময় কাটানোর পর আমরা আবার চলে এসেছিলাম আমাদের এদিকে। আমাদের এদিকে কিন্তু তবুও সেটা আমাদের বাড়ি থেকে ১০, ১১ কিলোমিটার দূরে। আমাদের মধ্যে একজন ছিল যাদের জমি কিনেছে এক জায়গা। সে রাস্তায় কখনো যাওয়া হয়নি, আমরা স্থির করলাম ওই রাস্তায় আজকে ঢুকবো সবাই। আর সেই সাথে ওদের জমিটাও দেখে আসা যাবে। ওই রাস্তাটা আগে কখনো ঢুকিনি, বেশ ভালই লাগলো। সুরু পাকা রাস্তা আর মাটির রাস্তা দুটোর এক্সপেরিয়েন্সি পাওয়া গেল।

1689764152119-01.jpeg

1689764168332-01.jpeg

1689764802044-01.jpeg

অনেক দূরে যাওয়ার পর একটা পাকা রাস্তায় গিয়ে মিলল মাটির রাস্তাটা। সে জায়গাটা আবার পরিচিত। কারণ এই জায়গা দিয়ে আমরা গিয়েছি আগেও। আর এই রাস্তার জয়েন্টে অর্থাৎ মাটির রাস্তা যেখানে শেষ হলো এই রাস্তাটা যে কোথা থেকে আসলো সেটা জানতাম না। আজকে নতুন একটা রাস্তা চেনা হলো।

1689764227505-01.jpeg

1689764202710-01.jpeg

1689764187881-01.jpeg

আমরা সবাই ওই মোড়টির উপরের ছোট্ট ব্রিজের উপর বসে চা খেলাম। সেখানে অনেকগুলো চায়ের দোকান ছিল। আর অনেক মানুষ দেখলাম সেই দোকানগুলোতে। যেটা বুঝলাম গ্রামের মানুষ গুলো সারাদিন খেটে খুটে এখানে বিকেল বেলায় আসে চা খেতে আর সেই সাথে টিভি দেখে। পরিবেশটা ভালোই লাগলো।

চা খাওয়া শেষ করে আমরা আর কোথাও দাঁড়াইলাম না। সোজা আমাদের বাজারে চলে আসলাম। আমাদের ইচ্ছে ছিল রাতের সময়টা আমরা অন্য একটা সুন্দর জায়গায় গিয়ে কাটাবো। কিন্তু সেদিন কমিউনিটির হ্যাংআউট ছিলো। তাই আমাদের রাতের ঘোরাঘুরির প্ল্যান টা ক্যানসেল করতে হলো। আর এরই মাধ্যম দিয়ে শেষ হলো আমাদের সেদিনের ঘোরাঘুরি। অনেক আগে যখন আমি এই টাইপের পর্ব লিখতাম তখন অনেকেই পছন্দ করত সেগুলো পড়তে। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন আর কমিউনিটিতে নেই আর কয়েকজন আছে। যা হোক আশা করি আপনাদের ভাল লেগেছে পর্বটি । আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

20230619_2107145.gif

Sort:  

Hi, friend! I enjoyed reading your great post!

  • You also have yellow tractors. My son is very fond of tractors of any color. Our whole family shouts with one voice: “Look, look, there is a tractor going there!” When they see this car on the street. The child likes to look at tractors, especially when they are driving on the road or working.

  • cold sherbet - is it sweet? In my understanding, sherbet is something solid, similar to halva)

  • with a bicycle across the river - you are great fellows!

 last year (edited)

cold sherbet - is it sweet? In my understanding, sherbet is something solid, similar to halva)

It is sweet liquid and cold.

Glad to know you liked my article. I also like to see the tractor when it is running in the field. I am glad to hear about your son. Praying for my nephew. 💕💞

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

সময়ের সাথে সাথে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। আর সেই সাথে বন্ধুর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। তবে আপনারা সবাই মিলে কিন্তু দারুন সময় কাটিয়েছেন। বৃদ্ধা মহিলাটি সত্যি অনেক ভালো মনের মানুষ। তবে নাতনিগুলো একটু ফাজিল আছে বোঝাই যাচ্ছে🤭।

 last year 

অচেনা উদ্দেশ্য রওনা দিয়ে দাদী পেয়ে গেলেন বৃষ্টির সময়টা বেশ ভালোই কেটেছিল তাহলে আপনাদের।ব্রিজ হওয়াতে যাতায়াতের বেশ সুবিধা হয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের।ভালো লিখেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টেটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অচেনা উদ্দেশ্যে দারুন মজার ঘোরাঘুরিই করলেন ভাইয়া। বৃদ্ধ মানুষটি দাদী ও হয়ে গেলো।উনি যে মিশুক তার মুখ দেখেই বেশ বোঝা যাচ্ছে। রাস্তার পাশের শরবত স্বাস্থ্যসম্মত নয়, তারপরেও তেষ্টা মেটাতে খেতে হয়।আমি কখনও বাইরে পানি জাতীয় কিছু খাই না।যাক সবাই মিলে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

 last year 

তাহলে আমরা অপেক্ষায় থাকলাম দাদীর সাথে পুনরায় সাক্ষাৎ করার জন্য ।🤩আসলেই এমন কিছু মুহূর্ত যেগুলো ভুলা যায় না কখন কোন পরিস্থিতিতে কোথায় কোন মানুষের সাথে পরিচি হয় । সেদিন ভালোই মজা করেছি বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হয়েছে সুন্দর একটা দিন ছিল

 last year 

আপনারা তো বেশ মজাই করেন ভাইয়া। একেবারে অচেনার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন। বেশ সুন্দর সুন্দর জায়গায়ও ঘুরলেন দেখছি। এত বন্ধু বান্ধব একত্রে থাকলে তো রাস্তার জিনিস একটু আকটু খাওয়াই যায়। তবে আমি ভাবছি ঐ বৃদ্ধ মহিলা বৃদ্ধ না হয়ে যদি সুন্দরী আর ইয়াং কোন মেয়ে হতো তাহলে তো বাড়ির ভিতরে যাওয়াই হতো। হি হি হি।

 last year 

আমারও অচেনা উদ্দেশ্যে ঘুরতে খুবই ভালো লাগে কারণ অনেক কিছু জানা যায় শেখা যায় আর অনেক ভালই লাগে। বৃষ্টির সময়টাতে প্রকৃতির সৌন্দর্য যেন আরও বৃদ্ধি পায়। ঘুরতে যে বৃষ্টির সম্মুখীন হলেন এবং একটি নতুন বাড়িতে যেয়ে আপনারা আশ্রয় নিলেন সেখানে যে একজন দাদি হয়ে গেল। দাদির হাসি দেখে মনে হচ্ছে দাদি খুব মিশুকে মানুষ সম্পূর্ণ বিষয়টি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। অচেনা উদ্দেশ্য বিষয়গুলো আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 last year 

সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাই।

 last year 

এই পুরো গল্পের মধ্যে দাদির সাথে কুসল বিনিময় টি সব চেয়ে মজার ছিল হা হা হা।দাদির নানতীদের জন্য তার সাথে একটু ভাব জমানোর চেষ্টা করছিল হা হা হা।যাই হোক আপনার ছোট ভাই গুলোর মানের আশা পূর্ণ হোক 🙂
আর একটা বিষয় মজার ছিল সেটা এই সময়ে মাটির রাস্তা।

 last year 

আশা পূরণ হলে লাভ হয় নাহ্? 😆

 last year 

😆😆😆

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62164.65
ETH 2439.44
USDT 1.00
SBD 2.67