মাঝ রাতের জার্নি ।
হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন। গত কালকে আমি ঢাকা থেকে এমারজেন্সি বাড়িতে চলে এসেছি। রওনা দিয়েছিলাম গত পরশুদিন এবং বাড়িতে পৌঁছেছি গত কালকে। ইমার্জেন্সী বাড়িতে আসার কারণ হলো আমার প্রচন্ড এলার্জি সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আমি আমার শহরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একটি ডাক্তারকে দেখাই। উনার কাছে দেখাবো বলে ঢাকা থেকে চলে এসেছি। যাই হোক সেই গল্পটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
গত পরশুদিন বিকেল বেলায় আমি একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কয়েকদিন যাবত আমার এলার্জি প্রবলেমটা অতিরিক্ত আকার ধারণ করেছে। আর এই কারণে আমার সবসময় কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করতো। ঘুম থেকে উঠার পর আমি সমস্যাটা আরো বেশি অনুভব করছিলাম। সাথে সাথে আমি আমার রুমমেটের রাহুল কে বললাম বাড়ি যাবা নাকি?? আপনারা তো জানেন আমি এলাকায় কেমন ঘুরাঘুরি করি। যখন যেটা ইচ্ছা সেটাই করি। বেশি ভাবনা চিন্তা করা লাগেনা। তো সেরকমই রুহুল ও সাথে সাথে রাজি হয়ে গেল। আমার বন্ধু পাপ্পু হানিফ টিকিট কাউন্টারে ফোন দিয়ে একটা টিকিট কেটে দিল। আমাদের বাস ছিল রাত দশটায়। আমরা রাতের খাবার না খেয়ে ওরকমই সবকিছু গোছগাছ করে রওনা দিয়ে দিলাম। আমরা সিএনজি নিয়েছিলাম বাস কাউন্টার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য। আমরা সাড়ে নয়টা নাগাদ বাস কাউন্টারে পৌঁছে গিয়েছিলাম।
দশটার দিকে আমরা বাসে উঠে পড়লাম। আমাদের সিট ছিল A3 এবং A4 অর্থাৎ ড্রাইভার এর পিছনেই। আমরা একবারে সামনের ভিউ দেখতে দেখতে যাত্রা করতে পারব। বাসের একদম সামনের দিকে বসায় আমাদের বাস যখন যাত্রা শুরু করল তখন ভাইস.সিটি-ভাইস.সিটি একটা ফিল পাচ্ছিলাম। রাস্তায় তেমন জ্যাম না থাকায় আমাদের ড্রাইভার সাহেব ঝড়ের গতিতে বাস টানতে লাগল। আমরা পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে পৌছালাম ঠিক যখন বারোটা বেজে ৩ মিনিট।
ফেরিতে ওঠার জন্য আমাদের বাস অনেকক্ষণ ওয়েটিং এ ছিল। প্রায় ২০ মিনিট হবে। ওয়েটিং টাইমে পাশ দিয়ে দেখলাম ঝাল মুড়িওয়ালা যাচ্ছে। মন চাইলো একটু ঝাল মুড়ি খেতে। বেশি করে ঝাল দিয়ে মামা ১০ টাকার ঝালমুড়ি মাখিয়ে দিল। বেশ মজাদার ছিল খেতে। রাহুল আর আমি ভালোই সময় কাটাচ্ছিলাম। কোন প্যারা নাই। যাহোক, ২০ মিনিট কেটে যাওয়ার পর আমাদের গাড়ি ফেরিতে উঠে গেল। ফেরিতে উঠে এত সুন্দর কিছু ভিউ পেলাম যেটা ক্যামেরাতে প্রকাশ করা তো সম্ভবই না, আবার বললেও কোনভাবে প্রকাশ করা পসিবল না।
লোকেশনঃ- QRM7+PJ7 a [Google plus code]
ডিভাইসঃ- Redmi Note 9 Pro Max
বেশ কয়েকটা ছবি নিয়েছিলাম। কিন্তু ছবিগুলো ততোটা স্পষ্ট না। শুধু ফিল করছিলাম: প্রচন্ড বাতাস বইছে, গরমের সময় গায়ে হাওয়া লাগছে, আপন গতিতে ফেরি ছুটে চলেছে নদীর বুকে, চারিদিকে নিরবতা, নিস্তব্ধতা। কে যেন পাশের একটা গাড়ি থেকে রোমান্টিক সুন্দর একটা গান ছেড়ে দিয়েছে। জাস্ট ইমাজিন.... চোখটা বন্ধ করে এই পরিবেশে আপনি বসে আছেন। সত্যিই এই মুহূর্তটা সেদিনের বাস জার্নিকে আরও অনেক বেশী আনন্দদায়ক করে দিয়েছিল।
কেটে গেল বেশ কিছুক্ষণ। ততক্ষণে আমাদের ফেরি পারে ভিড়েছে। বাসে আবারও আরাম করে বসে পড়লাম আমি আর রাহুল। ড্রাইভার আবারো ঝড়ের গতিতে টানতে শুরু করল। রাস্তা পুরো ফাঁকা। আমারা প্রথমে আন্দাজ করেছিলাম আমাদের বাড়ির পাশের স্টেশনে নামতে আমাদের প্রায় সকল চারটা পাঁচটা বেজে যেতে পারে। কিন্তু আমরা অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমরা যখন আমাদের কাঙ্খিত স্টেশনের পৌছালাম তখন ঘড়িতে বাজে রাত দুটো। আমাদের রিসিভ করতে ইতিমধ্যেই স্টেশনে চলে এসেছে আমার দুটি ছোট ভাই এবং একটি বন্ধু। ওরা সারারাত ঘুমায়নি আমাদের রিসিভ করতে আসবে বলে।
খুব ভালো লাগলো ওদেরকে এতদিন পরে দেখে। যাইহোক, এরপর আমরা চিন্তা করলাম কিছু খাওয়া দাওয়া করে যেতে হবে। কারন এত রাতে বাড়ি গিয়ে কপলে খাবার নাও জুটতে পারে। এই জন্য হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে আমরা সবাই সাদা ভাত আর সাথে চিকেন আর ডাউল নিয়ে নিলাম। অবশেষে পরিপূর্ণ তৃপ্তি। তবে জার্নি করে অন্যান্যবার যেরকম একটা অস্বস্তি কাজ করে, ওরকম কোন অস্বস্তি কাজ করছিল না। অনেক আরামে আসতে পেরেছি পুরো পথটা। যাইহোক, এরপর বাইক চালিয়ে গল্প গুজব করতে করতে চলে এলাম বাড়িতে।
অবশেষে পৌঁছে গেলাম বাড়িতে। আমার টার্গেট সাতদিন বাড়িতে থাকব। দেখা যাক সাত দিন কেমন কাটে। তো আজকে এ পর্যন্তই। দেখা হবে আবার নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
সত্যি ভাই ছবিগুলো দেখে আমি রোমে থেকেই কিছুটা ফিল পাচ্ছিলাম। আসলে যেহেতু সদর ঘাট এলাকায় থাকি তাই রাতের এই দৃশ্যগুলো মাঝে মাঝেই চোখে পড়ে। তবে আমি কখনো লঞ্চ এ ভ্রমণ করি নাই। ইচ্ছে আচ্ছে কোয়াকাটা যাবো, তখন আরো ভালো ভাবে রাতের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জার্নির অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ❣️
সত্যি ভাইয়া আপনি অনেক জার্নি করতে পারেন। এটা খুব একটা ভালো দিক অনেকে আছে জার্নি সহ্য করতে পারেনা। এত রাতে খোলা আকাশের নিচে ঝাল মুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা। ঝাল মুড়ি আমার খুব পছন্দ তবে খুব একটা ঝাল ভালো লাগেনা। ফেরিতে উঠতে আমার কেন জানি খুব ভয় লাগে ভাইয়া। ফেরিতে উঠিয়ে আমি চোখ বন্ধ করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকি। যাইহোক খুব ভালো লাগলো আপনার আজকের পোস্টটি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গভীর রাতের জার্নি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া এই গরমের সময় এলার্জির সমস্যাগুলো সচরাচর সবারই হয়ে থাকে। এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত না হয়ে আপনি দ্রুত চিকিৎসা নিতে চলে গেছেন এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত। কারণ এলার্জি সমস্যা আসলেই খুব বিরক্তিকর। খুব ভালো করেছেন যে ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার সঙ্গে পরামর্শ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। যাই হোক রাতের জার্নি গুলো আসলেই অনেক উপভোগ্য হয়। এসময় রাস্তায় কোন জ্যাম থাকে না তাই গাড়ির ড্রাইভার সাহেবরা খুব দ্রুতই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারে। আর সে কারণেই আপনি রাত বারোটায় ফেরিঘাট আর দুইটা বাজতেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছে গেছেন। খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাড়িতে সাত দিন থাকতে পারলে আমার বিশ্বাস এলার্জি প্রবলেম কেটে যাবে। কারণ ঢাকা শহরের এই গরমে সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলত। অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি নিজেও ডাস্ট এলার্জি তে ভুগি ভীষণ রকম। নিজের ওপর এত বিরক্ত লাগে মাঝে মাঝে। কি আর বলবো ,,,
তবে রাতের জার্নি করতে আমি খুব পছন্দ করি ভাই। গাড়িতে উঠলে আমার ঘুম হয় না একদম। চারপাশের পরিবেশ এত ভালো লাগে। কিন্তু বাড়ি থেকে রাতের জার্নি একদম পছন্দ করে না। আর ফেরিঘাটের অভিজ্ঞতা আমার জীবনে একবার হয়েছে। শীতের মাঝ রাতে । ওই অনুভুতি গুলো বলে বোঝানোর নয়। ভালো একটা সময় কাটুক ভাই। ❤️
আপনি পারেনও বটে,জার্নি করতে।সেই দিন শুনলাম ঢাকায় আসলেন,আবার আজকে চলে গিয়েছে।যাই হোক ছবিগুলো বেশ সুন্দর। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ
ভাই আপনার কি এলার্জি সমস্যা এতটাই যে ঢাকা থেকে বাড়ি চলে আসতে হল। যাইহোক জার্নিটা কিন্তু দারুণ হয়েছে। গাবতলী থেকে মাত্র 2 ঘন্টায় ফেরিঘাট তারমানে রাস্তা কতটা ফাঁকা ছিল বোঝাই যাচ্ছে। আশা করি বাড়ীতে আপনার সময় দারুন কাটবে। শুভকামনা রইল
আশা করছি ভালোই কাটবে।তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মেনে চলা শুরু করবেন ভাইয়া।নাহলে জীবন কয়লা হয়ে যাবে।
ভাইয়া আপনার এলার্জির সমস্যা হয়েছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। আসলে বর্তমানে এলার্জির সমস্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে প্রত্যেককেই সাবধানতার সাথে চলাফেরা করতে হবে। আমার যতটুকু মনে হয় পানি দূষণ এবং পানির সমস্যা থাকলে এই এলার্জির সমস্যা আরও বেড়ে যায়। আপনার সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। তবে যাই হোক আপনি আপনার জার্নির গল্প অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে ফেরিঘাটের সেই ফটোগ্রাফিগুলো দেখেই অনুমান করতে পারছি সেই মুহূর্তটি। মনে হচ্ছে যেন ক্ষণিকের জন্য আমিও সেই মুহূর্তের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি আপনার অনুভূতি ও ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ♥️♥️♥️
রাতে গাড়িতে জার্নি করতে আমার খুব ভালো লাগে।কেননা এসময় রাস্তা ফাঁকা থাকে এবং বাহিরের বাতাস থাকে যেখানে আবহাওয়াটা খুবই ভালো লাগে। তবে ভাই আপনার এলার্জিতে এত সমস্যা হয়েছে যে ঢাকা থেকে বাড়ি চলে গেলেন----- এটা কিন্তু খুবই অবাক লাগছে।এ বিষয়ে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো ভাই এটা কিন্তু খুবই জ্বালায়। আরেকটি কথা হচ্ছে আপনি তো সেদিন আসলেন ঢাকা এর ভিতর আবার বাড়িও চলে গেলেন। এভাবে যাওয়া আসার মাঝে থাকা আসলে ভালো প্রথম প্রথম একটু থাকতে কষ্ট হয়. কিন্তু আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে পারবেন।
প্রথমে আপনার অসুস্থতার কথা শুনে খারাপ লাগল এলার্জি আমাদের সবার একটি কমন সমস্যা। তবে আপনার উচিত নিয়মিত নিম খাওয়া আর তার মধ্য মধু দিয়ে জুসের মত করে নিবেন ।আশাকরি অল্পদিনের মধ্যেই ভাল ফলাফল পাবেন। এবার আসি আপনার ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার গল্প। আপনি যে কাজেই বা যেখানেই যান না কেন সব সময় একটু আলাদা ভাবে ইনজয় করতে চান। যা এবার ভালই করতে পেরেছেন। আমি একবার বাসায় যাওয়ার সময় ড্রাইভার এর পেছনের সিটে বসেছিলাম আসলে সেখানে বসে পুরো ভিউ খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায় তবে আপনি যদি এ ওয়ান এ টু তে বসতেন তাহলে আরো খুব সুন্দর ভাবে দেখতে পেতেন। তবে আপনার ফেরি পারাপারের সময় যে অনুভূতি পেয়েছেন তা শুনে আমার খুবই ভালো লাগছে ।
নদীর বুক চিরে রাতের নির্মল বাতাস অনুভব করে এত সুন্দর ভাবে নিরিবিলি পরিবেশে পদ্মা পার হয়েছেন। তবে আর কিছুদিন পর হয়তো এইগুলো গল্প না শোনা যেতে পারে কারণ পদ্মা সেতু হওয়ার পর আপনি হয়তো তখন পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করবেন খুব অল্প সময়। সেই গল্পও আপনার থাকে জানব। যাইহোক সুস্থভাবে স্বস্তিদায়ক ভাবে বাসায় ফিরেছেন শুনে খুবই ভালো লাগছে।
আসলে আপু A1, A2 সিটের সামনে গ্রিল থাকে না। আমরা A3,A4 এ বসে গ্রিলে পা দিয়ে শুয়েছিলাম। ভালই লাগছিল।