কেমন অচেনা লাগে !!
হ্যালো।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। গত কিছুদিন ধরে লেখাপড়ার ভালই প্রেসারে আছি। আগামী কাল আমার শেষ পরীক্ষা। কালকে পরীক্ষা টা হয়ে গেলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। যাই হোক আজকের আলোচনা শুরু করি।
আমি মানুষ, আপনি মানুষ, আমরা সবাই মানুষ। কিন্তু আমাদের মধ্যে কেমন একটা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে না?? খেয়াল করেছেন কি?? আমরা দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি। একটু রোবটিক টাইপের। মানুষ সমাজে বাস করতে অভ্যস্থ সেই আদিকাল থেকেই। আর সমাজে বাস করার যে উপকারিতাগুলো বা ভালো দিক গুলো, তার লিস্ট টা যেন দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমাদের মানুষের মধ্যে পারস্পারিক যে ভালোবাসা, বন্ধন ঐক্য নীতি এই বিষয়গুলো আর আগের মতন দেখা যায় না। হিংসা-বিদ্বেষ, নোংরা রাজনীতি, পরনিন্দা এগুলো ব্যাপক হারে বেড়েই চলেছে দিনকে দিন।
মানুষের মধ্যে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস এর প্রবণতা টাও এখন অনেক কম। পরিচিত মানুষদের মধ্যেই বিশ্বাসের ব্যাপারটা কমে গেছে। আর অপরিচিত মানুষদের প্রতি বিশ্বাস করার কোন অবস্থাই এখন আর নেই। চিটার, বাটপার, মিথ্যাবাদী, সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজ, স্বার্থপর চারিদিকে ভরে গেছে। মানুষ বিশ্বাস করবেই বা কিভাবে। একটা মানুষের বিশ্বাস যখন প্রতিনিয়তই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় তখন তার মধ্যে ধীরে ধীরে বিশ্বাসের প্রতি অবিশ্বাস জন্ম নিতে থাকে। আমরা অমানুষ হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। একে অপরের প্রতি আন্তরিক হওয়া, বিশ্বাস অর্জন এগুলোর মূল্য কত বেশি সেটা মানুষ একসময় ঠিকই উপলব্ধি করতে পারবে। কিন্তু তখন খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
সমাজে অমানুষ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো নৈতিক শিক্ষার অভাব, প্রচন্ড লোভ লালসা, আর সমাজে দুর্নীতির অনুকূল পরিবেশ। কোন মানুষ যখন বার বার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে লিপ্ত হয় তখন ধীরে ধীরে তার মধ্যে পাপ বোধের অনুভূতিগুলো নিহত হতে থাকে। তখন সে পাপ করেই বেশি সুখ পায়। পাপ কাজ না করে থাকাটাই তার জন্য কষ্টের। অনেক বেশি নেশার মতন হয়ে যায় ব্যাপারটা।
কেউ যখন স্বার্থপরের মতন আচরন করে, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে প্রতিনিয়ত নিজেকে জড়িয়ে ফেলে তখন সমাজের মধ্যে আর সেই আন্তরিকতাটা থাকেনা। আন্তরিকতা পূর্ণ সমাজে বসবাস করে যে কতটা সুখ, সেটা আমরাই বুঝতে শুরু করেছি। কিন্তু যাদের বোঝার প্রয়োজন তাদের কোনো খোঁজ নেই। অর্থলোভ মানুষকে নিকৃষ্ট করে ফেলে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। আমরা যদি সবাই একে অপরের বিপদাপদে এগিয়ে আসি, সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিই, সব আপদ-বিপদ একসাথে মোকাবেলা করি তাহলে সমাজটা কতই না সুন্দর হতো। স্বপ্নের মত হতো সবকিছু। কারোর আর কোন কষ্ট থাকতো না। প্রত্যেকটা মুহূর্ত হত আনন্দময়। পথে-ঘাটে বেরোলেও সুখের সন্ধান পাওয়া যেত।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
শহরের কথা চিন্তা করুন। একটি ফ্ল্যাটে অনেকগুলো ফ্যামিলি বাস করে। একটি ফ্যামিলি আরেকটি ফ্যামিলির পাশাপাশি থাকে। কিন্তু কারো সাথে কারো সম্পর্ক নেই। হয়তো দেখা হয় কথা হয় কিন্তু আন্তরিকতা নেই। বিপদাপদে কেউ এগিয়ে আসতে চায় না সহজে। শহরের কথা আর কি বলবো। গ্রামের যে অবস্থা!! গ্রাম ছিল আগে মানুষের মানুষের ভালবাসায় পরিপূর্ণ একটি স্থান। কিন্তু এখন নোংরা রাজনীতি ঢুকে লোভ-লালসা ঢুকে মানুষের প্রতি মানুষের সেই ভালবাসাটা আর নেই। গ্রামে নিজের পুরো এলাকাটা ছিল একটা পরিবারের মতন। সবাই সবার পরিচিত। দেখা হলেই কথা বলা, কোন একটা অনুষ্ঠানে সবাই একসাথে আনন্দ করা, কারোর বিপদ হলে সবাই মিলে সেখানে উপস্থিত হওয়া।।। কতই না সুখের ছিল। আর এখনকার পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন।
নব্বইয়ের দশককে বলা হয় গোল্ডেন সময়। আমরা ওই সময় গ্রামের যে পরিবেশটা দেখে এসেছি তা এখন আর মিলাতে পারিনা। স্মৃতির পাতায় শুধু রয়ে গেছে। আমরা গল্প করি, কল্পনা করি, কিন্তু সেটা আর এখন বাস্তবে গিয়ে দেখতে পাইনা। আফসোস!!! আর কখনো ঐরকম সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে উঠবে কিনা জানা নেই। তবে আশায় থাকি।।।।। আর কিছু বলার নেই। আজ আমি যাচ্ছি। দেখা হবে আবার পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
সময়ের সাথে সাথে আমাদের মনুষত্ববোধ পাল্টে যাচ্ছে। তাইতো আমরা অন্যের বিপদে এগিয়ে আসতে চাই না। অযথা ঝামেলা মনে করে অন্যের পাশে বিপদের সময় দাঁড়াইনা আমরা। এটা শুধুমাত্র সম্ভব হয়েছে আমাদের মানসিকতার কারণে। কারণ আমরা সময়ের সাথে সাথে নিজেদেরকে এতটাই পাল্টে নিয়েছি যে অন্যের বিপদে আর এগিয়ে আসতে চাই না। সত্যি আগের দিনগুলো অনেক ভাল ছিল। যে সময়টাতে সবাই নিজের পাড়া-প্রতিবেশী এবং অন্যের বিপদে এগিয়ে আসতো।
অথচ সবাই মিলেমিশে বাস করার মধ্যে কতই না আনন্দ।
আসলেই ঠিক ভাই। বর্তমানে পৃথিবী যতই ডিজিটাল হচ্ছে ততই মানুষের মানবতা, সততা, উদারতা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আমরা সভ্য মানুষগুলো সবাই চলে যাচ্ছি অসভ্যের কাতারে। বর্তমান প্রেক্ষাপটের চরম সত্য বিষয় নিয়ে আপনি পোস্ট করেছেন ভাই। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাই। এরকম উৎসাহ পেলে আরো লিখব।
ভাইয়া আপনার পোষ্টটি পড়ে অনেক ভাল লাগলো। সত্যিই আমাদের নৈতিক শিক্ষার অভাব। বিশেষ করে সবার মনের ভিতর হিংসা ভরে গেছে। কেউ কারো ভাল দিকটা দেখতে পারে না। আপনি অনেক গুলো মূল্যবান কথা বলেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ।
ধীরে ধীরে যে অবস্থা হচ্ছে তাতে আগামী দশ বছর পর কি যে হবে সেটাই ভাবছি।
ভাইয়া আপনার লেখার প্রত্যেকটি লাইন খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ কারণ আপনি সঠিক সময়ে ঠিক কথাগুলো তুলে ধরেছেন। আপনার কথা একদম মিলেই গেছে, আমি যে বাসায় থাকি কারও সাথে কারও পরিচয় নেই আমার। আগ বাড়িয়ে যদি পরিচয় হতে চাই না বলবে আনকালচার, গায়া অথবা কোন ছেলে ধরা এই ধরনের বিশ্রি মন্তব্য করে বসে থাকবে। আর গ্রামের কথা কি বলবো সারাদিন অন্যের সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন মানুষ। এখন মানুষ আর মানুষ নাই অমানুষ হয়ে গেছে। সবাই ছুটছে টাকার পিছনে, সুদ খাওয়ার পিছনে, বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে জড়িত হচ্ছে দিন দিন। বলতে গেলে শেষ হবে না ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে যথাসময়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনি একদম চরম সত্য কথা কমেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু।
আগে গ্রামের চিত্রটা আমার কাছেও ভিন্ন লাগতো।এখন গ্রামে গেলেই মনে হয় কেমন যেনো স্বার্থপর মনোভব।আর শহরের কথা বলাটা হাস্যকর!
হুম আপু। আগে কত সুন্দর ছিল সবকিছু।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন ভাই। মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করা শুরু করেছিল যে কারণগুলোর জন্য তার অনেকগুলোই এখন মানুষের ভেতর থেকে চলে গিয়েছে। আর আসলেই এখন গ্রামগুলোকে আর আগের গ্রামীন পরিবেশের সাথে মিলাতে পারিনা। সবার ভেতর পরশ্রীকাতরতা ঢুকে গিয়েছে। আগের সেই আন্তরিক গ্রামীণ পরিবেশ আর দেখতে পাই না।
তবুও গ্রামে যখন আসি অনেকদিন পর তখন সেই চিরচেনা মাটি আর ফসলের গন্ধ এখনও মুগ্ধ করে।