আমাদের ধানি জমি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

1667320918694-01.jpeg

হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। গ্রামের পরিবেশ কিন্তু অনেকটাই ঠান্ডা এখন। শীতকাল আসলেই গোসল সেরে রোদে যাওয়ার অভ্যাস আমার ছোটবেলা থেকেই। দুপুর বেলা গোসল করে এবং বিকেল টাইমে খুবই ভালো লাগে মাঠে এসে হাটাহাটি করতে। বিকেলে রোদটা তো খুবই দারুন লাগে।

যখন ধান পাকার সময় আসে তখন ধানের মাঠে গেলে খেয়াল করবেন একটা সুন্দর ঘ্রাণ ভেসে আসছে। এই ঘ্রাণ সত্যিই মন মাতানো। আমাদের বাড়ির পাশে আমাদের এক টুকরো জমি রয়েছে। সে জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। ধানগুলো পেকেও গেছে। কিছুদিন পরেই কাটতে হবে। এই মুহুর্তে ধানি জমির পাশ দিয়ে হাটাহাটি করার সময় বাতাসে পাকা ধানের সুঘ্রাণ পাই । আজ ধানি জমির পাশ দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎই মনে পরলো অনেক বছর আগের একটি ঘটনা।

1667320892714-01.jpeg

1667320871968-01.jpeg

সে সময় আমাদের বাড়ির পাশের অনেক খানি জমিতে ধান চাষ করেছিল। কিন্তু একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল সেটা হচ্ছে পোকার উপদ্রব । আমার বাবা চিন্তিত ছিলেন এ ব্যাপারে। এর একটা সমাধান ও ছিলো। জমিতে পাখির বসার জায়গা করে দিতে পারলে পোকার উপদ্রব কমানো যেতো। পাখি জমির বিভিন্ন জায়গায় বসে ধানের পোকা গুলোকে ধরে ধরে খেয়ে নিতো। এটা একদম প্রাকৃতিক সমাধান।

এখন পাখির বসবার জন্যে সবাই ছোট ছোট আড় বানিয়ে রাখতেন জমির মাঝে। এটা আমাদের জমিতেও করার প্রয়োজন ছিলো। বাবা তো ব্যস্ত মানুষ, উনার সময় ছিলোনা হাতে। আমি চিন্তা করেছিলাম নিজেই সব বানিয়ে ফেলবো। পাটকাঠি দিয়ে বানাতে হতো সেগুলো। ঠিক এই 'Π' আকৃতি দেখতে হতো। দুটো পাটকাঠির মাথায় হরিজন্টাল আরেকটি পাটকাঠি বেধে ভার্টিকাল পাটকাঠির দুটি অংশ মাটিতে পুঁতে দেয়া হয়। আর উপরে বসে পাখিরা পোকামাকড়ের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতো আর সুযোগ পেলেই থাবা দিয়ে খেয়ে নিত।

1667320957822-01.jpeg

1667320994416-01.jpeg

1667321015043-01.jpeg

আমাদের সারা জমিতে মোট ২০ থেকে ২৫ টি আড় এর প্রয়োজন ছিলো। আমি বানাতে শুরু করার কিছু সময় পর-ই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছিলো। আমার মনে আছে পুরোটা সময় বৃষ্টিতে ভিজে আড় গুলো বানিয়েছিলাম। বানানো শেষ করার পর খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম। এরপর ওগুলো জমিতে পুঁতে দেয়া হয়েছিল। আসলে সেদিন খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম আমি। অনেক সময় ধরে পরিশ্রম করে যখন নিজের কাজের শেষটা দেখা যায় তখন সত্যিই অনেক ভালো লাগে। আর কৃষি কাজ আমার সব সময়ই অনেক টানে। কিন্তু পরিশ্রম করতে পারিনা বেশি এজন্য কৃষি কাজে বেশি একটা উপস্থিত করতে পারিনা নিজেকে।

যাইহোক আপনাদের সাথে পুরানো ছোট্ট একটি স্মৃতি শেয়ার করলাম। এখন বর্তমানে ফিরে আসি। আমাদের জমির ধান কাটার সময় চলে এসেছে প্রায়। ধান কাটার সময় যদি আমি গ্রামে থাকতে পারি তবে মুহুর্ত গুলো শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আজ আমি এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টে ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।

ছবিগুলো তোলা হয়েছে:- Xiaomi Redmi ফোন দিয়ে



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

ভাই আজকে আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো এবং আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আপনার মত আমিও আমার বাবার সাথে আড় বানিয়েছিলাম। আপনি বৃষ্টিতে ভিজে এই আড়গুলো বানিয়েছেন আসলে, পাখিগুলো যখন পোকাগুলো খায় তখন ধানের খুব উপকার হয়। আর আমাদের জমি রয়েছে আমি বিষয়টি বুঝতে পেরেছি।আর যখন কোন কাজ কষ্ট করে শেষ করা যায় তখন খুবই ভালো লাগে আপনি ঠিকই বলেছেন। যাইহোক ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আরে বাহ ভাই তো দেখি কৃষক হয়ে গেছে বৃষ্টি ভিজে আড় পুতেছেন ৷ জি ভাই জানিনা কেন আগের চেয়ে ধানের অনেক ধরনের রোগ হচ্ছে ৷ যার জন্য কৃষক অনেক কষ্টের ফসস নষ্ট হচ্ছে ৷
আর ধান তো পেকে গেছে আর হয়তো কয়েকদিন পর কাটতে পারবেন ৷
ভালো লাগলো দেখে আমিও যেহেতু গ্রামে থাকি বুঝি বিষয় গুলো ৷ আসলে প্রায় কৃষক তার জমিতে আড় পুতে রাখে ৷
ধন্যবাদ ভাই!!!!

আসলে মানুষের হাতে এখন সময়ের কোথায়, যে প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করে পাকা ধান রক্ষা করবে। কারণ যাদের অনেক জমি রয়েছে তাদের জন্য এটা বেশ সময় সাপেক্ষ তাও হয়তো পুরোপুরি সফলতা আসে না। এজন্যই সময় বাঁচানোর জন্য এবং পুরো ফসল সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করে। যাই হোক আপনি আপনার সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করেছেন এটাই বেশ ভালো ছিল। তবে আপনি কিন্তু তার পাশাপাশি দুর্দান্ত কিছু ফটো শেয়ার করেছে।

অনেক সময় ধরে পরিশ্রম করে যখন নিজের কাজের শেষটা দেখা যায় তখন সত্যিই অনেক ভালো লাগে।

এটা আমিও বিশ্বাস করি সুমন দা।

 2 years ago 

শীতকালেই সবাই মিষ্টি রোদ্দুর খুঁজে পেতে চায়।পাকা ধানের সুগন্ধি আমার ও খুব ভালো লাগে।তবে বর্তমানে পোকার আক্রমণ খুবই বেশি ফসলে।পাখি বসার ব্যবস্থা ছোটবেলায় চোখে পড়লে ও এখন আর দেখি না।পাখি খুবই উপকারী।দারুণ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন দাদা,ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধানক্ষেতে বসে যে পোকা টা ধানের পোকা খাই সেটার নাম সম্ভবত ফেসে। এই পদ্ধতি টা আমাদের এলাকায়ও অবলম্বন করা হয়। এটা বৈজ্ঞানিক একটি পদ্ধতি। ধন্যবাদ ভাই আপনার ছোটবেলার স্মৃতি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।

 2 years ago 

আমি গ্রামের বাড়ি যাইনা কবে থেকে তা প্রায় ভুলেই গিয়েছি। আমাদেরও কিছু ধানী জমি আছে তবে সব অন্যকে দিয়ে দেয়া। নিজেদের কখনো চাষ করা হয়নি। ভাই একটা বিষয় জানতে ইচ্ছে করছে। এই পাখিগুলো যখন পোকা খায় তখন ধান খায়না নাকি এরা পাখিরা ধান খায়না। ধন্যবাদ স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আশা করি ভাইয়া, ভালো আছেন? আজকে আপনার পোস্টটি দেখে খুব ভালো লাগলো। আপনাদের ধান গুলো দেখি প্রায় পরিপক্ক হয়ে গেছে। আসলে আপনার মতোন আমারও মাঝে মাঝে কৃষি কাজ করতে খুব ভালো লাগে। বৃষ্টিতে ভিজে আড় গুলো বানানোল মুহূর্ত বেশ ভালো ছিলো। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন ভাইয়া ‌

 2 years ago 

জমিতে যখন পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায় তখন একটি ন্যাচারাল প্রক্রিয়ায় সে গুলোকে দমন করা যায় যেটা আপনি প্রয়োগ করেছেন। একটা সময় বাজারে যখন এত উন্নত মানের কোন কীটনাশক ছিল না তখন কিন্তু আপনার ব্যবহৃত এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জমি থেকে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমানো হতো।

ভাই আপনাদের জমিতে ধান তো বেশ ভালোই হয়েছে মনে হচ্ছে, নবান্নের নতুন উৎসবে নতুন ধানের পিঠা খাওয়াবেন কিন্তু হা হা হা।

 2 years ago 

আমার কাছেও ভালো লাগে পাকা ধানের ঘ্রানটা।তবে সিদ্ধ করা হলে ঘ্রানটা কেমন জানি হয়ে যায়।যাই হোক দারুন একটা জিনিস জানতে পারলাম,পোকার উপদ্রব কমাতে যে পাখির বাসা বানাতে হয়।আচ্ছা ভাইয়া ঐদিন যে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে আড় বানিয়ে ছিলেন,তারপর কি পাখি আড়ে বসে পোকার উপদ্রব কমিয়ে ছিলো?যাই হোক পরবতী ধান কাটার পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ

 2 years ago 

আমরা সকলেই কৃষকের সন্তান ভাই। কৃষি আমাদের একমাত্র অবলম্বন। বেশ দারুন গান হয়েছে আপনাদের জমিতে। অগ্রহায়ণ ে গ্রামে থেকে ধান কাটা মাড়াই করার আনন্দই আলাদা। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65