সে এক বিশাল অভিজ্ঞতা।
আসসালামু আলাইকুম । কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন। গতকাল ছিলো শুক্রবার, নামাজ কালাম পড়ে এসে খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় শুয়ে একটু রেস্ট নিতে কার না ভালো লাগে। কিন্তু কাল দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম ঢাকা থেকে নড়াইলের উদ্দেশ্য। ঢাকা ত্যাগ করার মুহূর্তে আনন্দটা বেশ ভালই ছিল আমার মধ্যে।
পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। ঢাকায় খুব ইম্পরট্যান্ট কিছু কাজ থাকার কারণে বাসায় আসতে পারিনি। আবার ক্লাস শুরু হওয়ার উপক্রম। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি চলে আসলাম । কিছুদিন হয়তো ক্লাস মিস যাবে কিন্তু অনেকদিন বাড়িতে আসা হয় না। পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে না আসলে কি হয়?? তবে প্রথমে আসছি আপুর বাসায়, এরপর এখান থেকে নিজ বাড়িতে রওনা দিব দুদিন পর। গতকাল দুপুর তিনটার দিকে ব্যাগ পত্র গুছিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম যাত্রাবাড়ির উদ্দেশ্যে।
যাত্রাবাড়ী এসে বিশাল এক ব্যাড নিউজ শুনলাম। নড়াইলের উদ্দেশ্যের ডাইরেক্ট বাস একটাই, সেটা হলো নড়াইল এক্সপ্রেস। কোন কারণে নড়াইলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রত্যেকটি বাস ই ছিলো বন্ধ। কি আর করা। ভেঙে ভেঙে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না। একটা বাসে উঠলাম, বিকেল ৪ টায়। বাস ছাড়তে ছাড়তেই বেজে গেল প্রায় পাঁচটা। এরপর বাস চলতে শুরু করল। এটা একদম লোকাল বাস। যেখানে সেখানে থামে। আপনারা তো জানেন মাওয়া হাইওয়েতে যাওয়া আসা করে কতটা মজা। কিন্তু এই বেয়াদব বাস টার জন্য মজাটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
পদ্মা সেঁতু পার হয়ে যখন আমি ভাঙ্গাতে পৌঁছালাম তখন বাঁধলো আসল বিপত্তি। বাস আর যাবে না। ভাঙা পর্যন্তই তার শেষ ঠিকানা। আবার ওখান থেকে ভাটিয়া পড়ার উদ্দেশ্যে আমাদের যেতে হবে। আমার সাথে অপরিচিত এক ভাইয়ের দেখা হল সেও আমার মতই ভাটিয়া পাড়ায় যাবে। দুজনে একসাথে ভাঙ্গায় একটি বাস কাউন্টারের সামনে প্রায় ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম। এরপর বাস আসলো, বাসে চড়ে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত আসলাম। ভাটিয়াপাড়া নেমে এখন আমাদের যেতে হবে লোহাগাড়া। লোহাগড়া পর্যন্ত ওই ভাইটিও যাবে আমার সাথে। ভাটিয়াপাড়া নেমে একটি ভ্যানে উঠলাম, ভ্যানে ওঠার একটা কারণ ছিল। ওখানে অবশ্য ইজিবাইক আর অহরহর মোটরসাইকেল ছিল। কালনা সেঁতুটা দেখতে অনেক সুন্দর। ভ্যানে উঠেছিলাম যেন সেঁতুটা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে করতে যেতে পারি।
ভ্যান চলছিল সাইড লেন দিয়ে। দারুন উপভোগ্য ছিল পুরো সময়টা। যদিও আসতে ভীষণ কষ্ট হয়েছিল তারপরেও ভালো লাগছিল ওই মুহূর্ত। ভ্যানে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছি। ১০ কিলোমিটার পাড়ি দেয়ার পর উঠতে হয়েছিল সিএনজিতে। সিএনজিতে ১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছি, এরপর আবার ভ্যানে উঠতে হয়েছে। ভ্যান থেকে আবার আরো একটা ভ্যানে উঠতে হয়েছিল। এই করতে করতে আমি রাত দশটার সময় এসে আপুদের বাসায় পৌঁছেছি। তবে পথে কষ্ট হলেও পুরো জার্নিটা অ্যাডভেঞ্চার পূর্ণ ছিল।
যাইহোক, আপুদের বাসায় দুদিন থেকে আবার নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিব। অনেকদিন পর গ্রামে যাব, অনেক ঘুরাঘুরি করব। সবাই এখন বাড়িতে, খুব মজা হবে। বাড়িতে ৩ দিন থাকার ইচ্ছে আছে। আপনাদের সাথে অনেকদিন গ্রামের মোমেন্ট শেয়ার করা হয়না। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টে ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ্ হাফেজ।
আজকের মর্নিং ছবি। অনেকদিন বাদে কুয়াশা দেখলাম। দারুন অনুভূতি।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
লোকাল বাসে উঠলে আর ভোগান্তির শেষ নেই,আপনি দুর্ভাগ্য বশত নড়াইল এক্সপ্রেস গাড়িটি সেদিন পাননি,বন্ধ ছিল এজন্য।তাই এতো ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়েছে।লোকাল বাসগুলো ভাঙ্গা পর্যন্তই বেশি আসে,কারণ ওগুলো ঢাকার বাস মূলত এজন্য।যাক তারপরেও অপরিচিত ভাইয়ের সাথে ভাটিয়াপাড়া থেকে আবার লোহাগাড়া পর্যন্ত গিয়েছিলেন।এতো ভোগান্তির মধ্যেও ভালো সময় যাচ্ছিল আপনার।আপনার আপুর বাসা থেকে গ্রামে যাবেন তিনদিনের জন্য তাহলে গ্রামের মোমেন্ট ও আমরা দেখতে পাবো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।
সর্বনাশ ভাই আমার তো আপনার পোস্ট পড়েই ক্লান্তি লাগছে। মনে হচ্ছে আপনি বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে গিয়েছেন। অথচ দূরত্ব হিসাব করলে খুব বেশি পথ না। এই ধরনের জার্নি একা করলে খুব একটা সমস্যা হয় না। তবে সাথে পরিবার-পরিজন থাকলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনি যে সহিসালামতে আপনার বোনের বাসায় পৌঁছাতে পেরেছেন সেটাই অনেক বড় ব্যাপার। পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাইয়া আপনি না পড়ালেখায় অনেক মনযোগ দিয়ে ছিলেন😉😉,এর মধ্যেই বাড়ি চলে গেলেন।যাই হোক ভ্যানে করে অন্ধকারে হালকা আলোতে পথ পাড়ি দেওয়ার মজাই আলাদা। মাঝে মাঝে আসলেই ভালোই লাগে এত অ্যাডভেঞ্চার পূর্ণ জার্নি।ভাইয়া আপনার গ্রামের মোমেন্ট দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ
ভাই আপনার পোস্টে পড়ার পরে আমার কাছে মনে হচ্ছে আপনি ঐদিন অনেক ক্লান্তি অনুভব করেছিলেন। আপনি যখন পদ্মা সেঁতু পার হয়ে ভাঙ্গাতে পৌঁছান তখনই জানতে পারলেন বাস আর যাবে না আসলে বিষয়টি তখন অনেক খারাপ লাগে ভাই। পরে যাই হোক আপনি আপনার চেনা লোক পেয়েছিলেন একটি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আবারও টিকিট কাউন্টারে ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে পোষ্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।