প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ব্যবহারের অনুভূতি।
গতকাল ঢাকাতে এসেছি। বাইকে আসতে হয়েছিল। বাস জার্নি আমার প্রচন্ডরকম বিরক্ত লাগে। একটা আপু আছে, যিনি আগের বার রাগ করেছিলেন। এবার শুনলেও রাগ করবে। এজন্য এখনো জানাই নি। আসলে উপায় ছিলো না। আই হেট বাস জার্নি। তাছাড়া বাইকে আসতে সময় অনেক কম লাগে। বাসে আসতে সময় লাগে ৮ ঘন্টা। কিন্তু বাইকে ৪ ঘন্টা সময় লাগে। যাইহোক, গতকাল সকাল ১০:৩০ এর দিকে রউনা দিয়েছিলাম। আমরা সাধারণত পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকাতে আসি। আবার কখনও কখনও যমুনা সেতু হয়েও যাওয়া হয়। তবে ঐ পাশ দিয়ে গেলে সময় টা বেশি লাগে। গতকাল আমরা যখন পাটুরিয়া ফেরিঘাটের রাস্তায় ঢুকবো এমন সময় মনে হল এবার পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে না গিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দারুণ হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। তখনই টার্ন নিয়ে ফরিদপুরের রাস্তায় ঢুকে পড়লাম। ওইখান থেকে পদ্মাসেতু ছিল ৮১ কিলোমিটার।
আমরা খুব সুন্দর ভাবেই এগুতে থাকলাম। আমরা হিসেব করে দেখলাম আমাদের ২৫-৩০ কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হবে এই পাশ দিয়ে গেলে। কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই রাইডিং করতে করতে এক পর্যায়ে আমরা ভাঙ্গা গোল চত্বরে গিয়ে পৌঁছলাম। তখন আকাশে খুব মেঘ করেছিল। ওয়েদার টা ছিল দারুন । ঐখানে যেহেতু রাস্তার সৌন্দর্যটা অমায়িক, এজন্য দু'মিনিট দাঁড়াতে মন চাইলো ।
কিছু সময় ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখলাম পাশেই ইয়াবড় দুটি বেলুন উড়িয়ে রেখেছে। এরপর হঠাৎই বৃষ্টির উপস্থিতি টের পেলাম। বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো তখন আমরা বাইকে উঠে একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। কিন্তু এখানে রাস্তার দুই দিকে রেলিং উঁচু করা। এখানে রাস্তার বাইরে যাওয়ার কোনো পরিবেশ ছিল না। আর বৃষ্টির মধ্যে যে কোথাও দাঁড়াবো আশ্রয় নিতে, সেরকম কোনো উপায়ও ছিল না। কিছুদূর যেতেই খেয়াল করলাম একটা বাস রেলিং এর অপর পাশে দাঁড়িয়ে আছে। বাসের মধ্যে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে। বাইক পাশেই রাখা, আমরাও বাইক পাশে রেখে বাসের মধ্যে গিয়ে অপেক্ষা করলাম কখন বৃষ্টি কমে আসে।
একটু আগে যে বেলুন উড়তে দেখেছিলাম, কিছু ছোট ছোট ছেলেপেলে ওই বেলুনগুলো পেড়ে নিয়ে নিজেরা খেলতে খেলতে অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। বেশ মজা পেলাম বিষয়টি দেখে। যাইহোক বৃষ্টি অনেক সময় ধরে হয়েছিল। আমরা ততক্ষনই ওই বাসের মধ্যে বসে ছিলাম। প্রায় আধাঘণ্টা পর যখন বৃষ্টির প্রকোপটা কমলো তখন আমরা রওনা দিলাম আবারো। ভাঙ্গা-মাওয়া হাইওয়ে টা কতটা সুন্দর সেটা তো আপনারা জানেন। দারুন মজা ড্রাইভ করে।
অনেকগুলো ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। পেছনে বসে বসে প্রচুর ছবি তুলতে পেরেছিলাম । কারণ আমি পিলিয়ন ছিলাম। ছোট ভাই রাহুল ড্রাইভ করেছে পুরো পথ। ভাঙ্গা গোল চত্বর থেকে পদ্মা সেতু ছিল ৩৪ কিলোমিটার দূরে। একদম ৩০ মিনিট সময় লেগেছিল আমাদের পদ্মা সেতু পর্যন্ত যেতে। গত পরশুদিন আমাদের অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে গেছেন। আর গতকাল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। আর প্রথম দিনেই আমরা পদ্মা সেতু পাড়ি দেবো। ভাবতেই ভালো লাগছিল। যখন ঘড়ির কাঁটায় একদম রাইট দুটো বাজে তখন আমরা পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে গিয়ে পৌঁছাই। আমরা যখন গেলাম তখন গাড়ির একেবারেই প্রেসার ছিল না। আমাদের সামনে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা গাড়ি ছিল। এর পরে আমরা টোলবক্সে গিয়ে ১০০ টাকা টোল দিয়েছিলাম।
টোল দেয়ার অনুভূতিটাও দারুন ছিল। টোল পরিশোধ করার পর যখন আমরা ব্রিজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম তখন ওইখানকার সিনারিওটা দারুন লাগছিল দেখতে। মুগ্ধ হয়ে শুধু তাকিয়ে ছিলাম। শুধু দেখছিলাম কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর রুপ। পদ্মা সেতুর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যাবার সময় অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছি। এগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।
অবশেষে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার প্রথম দিনেই আমরা সেতু ব্যবহার করে পদ্মা নদীর ওপর প্রান্তে পৌঁছে গেলাম। সকালে খাবার খেয়ে বেরিয়েছিলাম। প্রচন্ড খিদে লেগেছিল। ব্রিজ পার হয়ে এপারে এসে দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম। আমরা চারটার দিকে বাসাতে এসে পৌঁছেছিলাম। আমাদের আসতে মোট সময় লেগেছে সাড়ে ৫ ঘন্টা। কিন্তু এর মধ্যে এক ঘন্টা বাদ দিতে হবে। কারণ বৃষ্টির জন্য দাঁড়িয়েছিলাম এবং খাওয়া-দাওয়া করেছি। তাহলে সাড়ে ৪ ঘন্টায় আসা সম্ভব, এটা বুঝতে পেরেছি।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে আসলে ৪ ঘন্টা সময় লাগে। সে ক্ষেত্রে আধাঘন্টা বেশি সময় লাগবে যদি কোন স্থানে না দাড়িয়ে চলে আসা যায়। যাই হোক আজ এ পর্যন্তই। এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে । সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
পদ্মা সেতু যেটা আমাদের স্বপ্নের সেতু প্রথম দিনের অনুভূতিটা কেমন ছিল জানিনা কিন্তু আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো ।চারিপাশের সুন্দর পরিবেশ যেটা সত্যিই অনেক উপভোগ্য ।এই ধরনের সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করতে সবার পছন্দ করে অনেক ভালো অনুভূতি ছিল।
আপনিও চলে আসুন আজি।
এখন আর যেতে দিচ্ছেনা ভাইয়া কি করে যাব 🙄🙄
পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের সেতু। পদ্মা সেতুতে ঘুরতে যাওয়ার আমার খুবই ইচ্ছা। আশা করি খুব শীঘ্রই একদিন পদ্মা সেতুতে গিয়ে ঘুরে আসব। আপনি ঠিক বলেছেন ভাইয়া বাস জার্নি খুবই বিরক্ত এবং অনেক সময় লাগে। কিন্তু বাইক জার্নি যেমনি ভালো লাগে তেমন কম সময়ও লাগে। খুব কম সময়ে কোন একটা জায়গা থেকে ঘুরে আসা যায়। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ রাস্তাগুলোতে আমার মনে হয় বাইক জার্নি খুবির রিক্স। গতকালকেও দুইটা বাইক অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল। আপনি পদ্মা সেতুতে ঘুরতে গিয়ে খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। বেশ সুন্দর লাগছিল ।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি সব কিছুতেই প্রথম।সেতু উদ্বোধন হতে না হতেই সেতু ব্যবহার করে ফেলনেন।সাথে বৃষ্টি তো বোনাস।লাক ভালো হলে যা হয়।যাই হোক ছবিগুলো বেশ দারুন তোলেছেন পিছন থেকে।ইশ কি সুন্দর আবহাওয়া। সব মিলিয়ে অসাধারণ অনুভূতি। ধন্যবাদ
ভাই আপনার প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ভ্রমণের গল্পটা বেশ মজার ছিল। বুঝতেই পারছি আপনি কতটা আনন্দ উৎপন্ন অনুভব করছে। আপনার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছে যে আপনার সাথে আমিও আছি। দারুন ছিল অনুভূতিগুলো তবে আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি মনে হয়েছে যেন সবুজের সাথে সাদৃশ্য রেখে পুরো মেঘের খেলা। আপনার আনন্দের অনুভূতি গুলো বুঝতে পেরেছি আসলে যে আনন্দের কথা লিখে বা বলে বোঝানো যায় না। তবে আপনার প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি ছিল এক একটা ওয়ালমেট চোখ জুড়িয়ে গেছে। মনে হচ্ছে যেন স্বপ্নের সেই পদ্মা সেতু স্বপ্নের একটা জগৎ। আমাদের সাথে এত সুন্দর আনন্দময় জার্নিয়ের গল্প এবং অনুভূতিগুলোর সাথে ফটোগ্রাফি শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম ভাইয়া।
ভাইয়া আপনি আজকে প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ব্যবহারের অনুভূতি শেয়ার করেছেন ভালো হয়েছে। আপনার মাধ্যমে পদ্মা সেতু পদ্মা সেতু রং চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম। আপনার পোস্ট ভিজিট করে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি🤲
ভাইয়া আজকে আপনি পদ্মা সেতু ভবন করেছেন শুনে অনেক ভালো লাগলো। এবং আরো ভালো লাগলো পদ্মা সেতুর ব্যবহারের অনুভূতি শুনে। আজ আপনার পোস্টের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর এত সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। প্রতিটি ফটোগ্রাফি দারুন ছিল ভাইয়া ।
ভাইয়া পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর চালু যখন হলো তার প্রথম দিনেই আপনি পদ্মা সেতু ভ্রমণ করে চলে এসেছেন। এটা আসলে খুবই আনন্দের একটি বিষয় যে পদ্মা সেতু ঘুরে আসা। তাছাড়া প্রথম দিকে যাওয়ার অন্যরকমের অনুভূতি থাকে। যাওয়ার পর বৃষ্টিতে ভিজিয়ে এলেন সেটাও কিন্তু মন্দ নয় কারণ বৃষ্টিতে এমন সুন্দর মুহূর্ত বৃষ্টিতে ভিজতে ভীষণ ভালো লাগলো। তবে একটি বাসে কিছুটা নিরাপদ সময় কাটিয়েছেন। সবমিলিয়ে দারুন সময় অতিবাহিত হয়েছে আপনার।
ঠিক বলেছেন আপু। প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ব্যবহার করার আনন্দটাই অনেক বেশি ছিল।
আমারও উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু তুই না বলে চলে গেলি কাজটা একদমই ঠিক করিস নাই। এইবার ঢাকা থেকে বাড়ি আয় একসঙ্গে আবার যাব কিন্তু।
ঈদের আগে চলে আস। এক সাথে বাসায় যাব।
পদ্মা সেতু আমাদের গৌরবের একটি বিষয় ।।বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেতু হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। পদ্মা সেতুতে ঘোড়ার অনুভূতি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ইনশাল্লাহ কিছুদিনের মধ্যে আমরাও ঘুরতে যাব পদ্মা সেতুতে।।
ঠিক।।। অনেক গৌরবের বিষয়।
এই সেতুটা হওয়ায় আমাদের অনেক ডেভলপ হবে।।
ভাইয়া আমার কাছেও বাস জার্নি একদম ভালো লাগেনা। আমি বাইকে করে ঘুরাফেরা করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আর তাই আমার বাড়ি কুড়িগ্রাম হওয়া সত্ত্বেও আমি মোটর বাইকে করে মোট তিনবার ঢাকা গিয়েছিলাম। আর একবার কুড়িগ্রাম থেকে সিলেট জার্নি করেছিলাম মোটরবাইকে। আমার এখান থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এবং সিলেটের দূরত্ব ৬৫০ কিলোমিটার। আর যখন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ জানতে পেরেছি তখনই মনে স্থির করেছিলাম প্রথম যেদিন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে সেদিনই আমি বাইকে করে ট্যুর দিব। কিন্তু আমার ব্যবসায়িক ঝামেলার কারণে যাওয়া সম্ভব হলো না। প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ব্যবহারের অনুভূতিটুকু পড়ে আমার পদ্মাসেতুতে যাওয়ার ইচ্ছেটা মনের ভেতর আঁকু বাকু করছে। ভাই খুবই সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন পদ্মা সেতুর। বৃষ্টির পরে আবহাওয়া টা এতটাই স্বচ্ছ ও সুন্দর হয় তা বলার বাইরে। আর এই সুন্দর মুহূর্তের ফটোগ্রাফি সত্যি দারুন হয়েছে। প্রথম দিনেই পদ্মা সেতু ব্যবহার অনুভূতিটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।