মানিয়ে নিতে হবে।
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামুয়ালাইকুম। আজ আমি পোস্ট লিখতে বসেছি, ঘড়িতে এখন ঠিক বারোটা বাজে। দুপুর ১২ টা নয়, এটা রাত বারোটা। এখন ছিল আমার জন্য পারফেক্ট ঘুমের টাইম। কাল সকালে অনেক জার্নি করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রয়োজনীয় কাজবাজ অবশ্যই অবশ্যই সেরে তারপর আমার বের হতে হবে। এই পোস্ট দুপুরের পরে পাবলিস্ট করবো। সারাদিন সময় পাবো না পোস্ট লেখার। এইজন্য আগেভাগেই কাজ সেরে রাখা।
অনেকদিন যাবত বাড়িতে ছিলাম। ঈদ কাটাইলাম পরিবারের সাথে। ঈদের ৮-১০ দিন আগে আমার আপুকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলাম আমি। এটা নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম আপনাদের সাথে। যারা আমার পোস্ট পড়েছিলেন তাদের হয়তো মনে আছে। আমার দুই ভাগ্নে ও এসেছিল সাথে। এবারের ঈদ পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে করতে পেরে খুবই ভালো লেগেছিল। বাড়ি ভড়া মানুষ ছিল। ভাগ্নের দুরন্তপনা, সবসময় এদিক-ওদিক ছোটাছুটি, বাজি ফোটানো, সবমিলিয়ে বাড়িটা সবসময় আনন্দে মুখরিত হয়ে থাকতো। ঈদ শেষ হওয়ার দশ দিন পর আবার আপুরা ব্যাক করল নড়াইলে। আপুর সাথে আমার ওয়াইফ ও গেছে। আমার ওয়াইফের বাসা আপুর বাসার পাশেই। আমার ছোট ভাইয়ের কলেজ খোলায় ও চলে গিয়েছে শহরে৷ সবার এমন চলে যাওয়ার পর বাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।
বাহির হতে যখন বাড়িতে আসি তখন বাড়িটা কেমন নিস্তব্ধ লাগে। এজন্য আমার সবসময় ভালো লাগে যখন শুনি খুশির কিছু সামনে আসছে। ওই আগ মুহূর্তে আমার বেশি ভাল লাগে'। আনন্দ সামনে রাখাই বেশি আনন্দের। যাই হোক এখন আমার আব্বু এবং আম্মুর জন্য খারাপ লাগছে। কারণ আগামীকাল আমিও চলে যাব। বাড়িটা আরো ফাঁকা হয়ে যাবে। শুধু আব্বু আম্মু থাকবে বাড়িতে। কিছুই করার নেই। ভার্সিটি খুলেছে, আমাকে যেতেই হবে।
আসলে জীবনটাই এমন। কোন মায়ায় আপনি বেশিক্ষণ আটকে থাকতে পারবেন না । আপনাকে যেতে হবে। বহু পথ পাড়ি দিতে হবে। আর এজন্য অনেক আপন জায়গা ত্যাগ করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। ভেবে দেখুন আমরা যখন স্কুল লাইফ শেষ করেছিলাম তখন স্কুল ছেড়ে আসতে আমাদের কতটা খারাপ লেগেছিল। কিছু বন্ধুদের সাথে আর দেখাই হবে কিনা এমন সন্দেহ নিয়ে ছেড়ে আসাটা সত্যিই বেদনা দায়ক ছিল। যেদিন আমি স্কুল লাইফের শেষ ক্লাস করেছিলাম সেদিন আমার খুবই খারাপ লাগছিল এটা ভেবে যে, এই বন্ধুদের সাথে এক রুমে বসে কখন নাই ক্লাস করা হবে না আর। বুক ভরা কষ্ট নিয়ে যখন আমরা কলেজে পদার্পণ করেছিলাম তখন ধীরে ধীরে কলেজের মায়াতেও পড়ে গেছিলাম। কলেজে অনেক ভালো বন্ধু পেয়েছি। কলেজ লাইফ যখন আবার শেষ করেছি তখন কলেজ ছেড়ে আসতেও ভীষণ খারাপ লেগেছিল। কিন্তু আসতে হয়েছে। এটাই বাস্তবতা , এটাই স্বাভাবিক ।
এটাই যখন বাস্তবতা তখন আমাদেরকে মেনে তো নিতেই হবে। মেনে নেয়া শিখতে হবে। পরিস্থিতি যেমনই হোক সেই পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। কোন কিছুর মায়ায় পড়ে গেলে সেখানেই আটকে থাকাটাও বোকামি, যদি অন্যত্রের প্রয়োজনটা আপনার কাছে অধিক গুরুতর হয়।
আমার জীবনে চলার পথে অনেক অনেক বন্ধু পেয়েছি। কিন্তু কিছু কিছু ভালো বন্ধুর সাথে এখন দেখাই হয় না আর। প্রয়োজনের তাগিদে তারা এক জায়গা আর আমি এক জায়গা। জীবন তো আমাদের একটাই। এমনটা তো নয় যে, পরিস্থিতির বার বার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। আমরা যা কিছু ত্যাগ করতেছি তার মানে ওই সময়ের সবকিছু চিরতরে পিছনে ফেলে রেখে আসতেছি। প্রত্যেকটা মানুষের কাছেই এই ছেড়ে যাওয়ার বিষয়গুলো আনওয়ান্টেড। একজন গার্মেন্টস কর্মী ঈদ ফুরোতে না ফুরোতেই আবার ছুটে যায় কর্মস্থলে। বহুদিন পর পরিবারের সাথে দেখা, কিন্তু তারপরেও মায়া ত্যাগ করে তাকে ছুটে চলে যেতে হয় দু'মুঠো ডাল ভাত জোগাড়ের উদ্দেশ্যে। প্রত্যেকটা মানুষের উদ্দেশ্য বা কর্মে ভিন্নতা থাকলেও অনুভূতির বিষয়বস্তুটা একই। যা কিছু হয়ে যাক, বাস্তবতার কাছে আমাদের সবাইকেই মেনে নিতে হবে।
যাইহোক, কাল সকালে রওনা দিব ঢাকার উদ্দেশ্যে। সারাদিন জার্নির উপর থাকতে হবে। বাসায় গিয়ে আবার সব কিছু কেনাকাটা করতে হবে। কারণ নতুন বাসায় উঠতেছি। কাল অনেক ধকল যাবে। আজ অনেক রাত হয়ে গেলো। পোস্ট লিখা শেষ করে ঘুমিয়ে পড়বো। কাল পোস্টটি পাবলিস্ট করে দিব। ঢাকায় পৌঁছে বাসা ঠিক করার অনুভূতি শেয়ার করব ইনশাআল্লাহ্। যাইহোক সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভালোয় ভালোয় পৌঁছে যান ঢাকায়
এই করি কামনা,
নতুন বাসার অভিজ্ঞতা জানতে
নতুন করে দিব ,নতুন পোস্টে হানা।
হাহাহাহা।।। সেই আশায় রইলাম।
আসলেই এক সাথে পরিবারের সাথে সময় কাটালে,পরে সবাই চলে ঘর একেবারে মনে হয় পানিতে পরে আসে।ঈদে আমরা সব ভাই বোন মা বাবা সবাই এজ সাথে হয়েছিলাম,পরে প্রয়োজনের তাগিদে যার যার বাসায় চলে যাওয়ায় বাবা মায়ের মন খারাপ। যাই হোক ঢাকাতে স্বাগতম ভাইয়া।আশা করি জর্নিটা এটা ভাল হবে। ধন্যবাদ
কি আর বলবো ভাই!স্কুল শেষ করে কলেজে উঠেছি।মেসে থাকি এখন।ইদ শেষ করে মেসে আসার দিন কতটা খারাপ যে লাগছিলো তা বুঝানোর মতো না।
যাইহোক,সাবধানে থাকবেন।শুভ কামনা রইলো 🥰
সত্যি বলতে জীবনের এমন কিছু সময় থাকে যা মন না চাইলেও করতে হবে ।যেমন আপনি আপনার আব্বু আম্মু কে বাড়িতে একা রেখে নিজ গন্তব্যে যেতে হবে ।ভাইয়া এমন সময় গুলো হয়তো ভিন্নভাবে সবার জীবনেই আসে আর মানিয়ে নিতে হয় ,হবেই সবাইকে ।কারণ জীবন এমনই ,জীবনের গতি ধারা গুলো ভিন্ন হলেও কিন্তু সবার জন্যই এক।
সত্যিই পরিবারের একজন না থাকলে বাড়িটা অনেক শুন্যতা কাজ করে।তাছাড়া আমি যেদিন স্কুল জীবন ছেড়ে চলে এসেছিলাম তখন খুবই খারাপ লেগেছিল, এখনো খারাপ লাগে।স্কুল জীবনের বন্ধুগুলিকে কখনো ভুলা যায় না।তবুও সবাই অন্যত্র চলে গিয়েছে।আপনার জার্নি সুন্দর হোক দাদা।
জ্বি আপু,,, আপনি ঠিক বলেছেন। বিষয়গুলো সত্যি কষ্টের।
আসলে ভাই ঈদের ছুটিতে আমাদের বাড়িতে অনেক হইহুল্লার মেতে উঠেছিল। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের হাসি এবং খেলাধুলায় পুরো বাড়ি যেন আনন্দে মুখরিত ছিল, কিন্তু ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে সকলেই তার গন্তব্য চলে যায়। আসলে এটা নিয়ম শত কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলে যেতে হবে, জীবনের তাগিদে সঞ্চয় এর উদ্দেশ্যে। যাই হোক আসলে বাড়ি থেকে যাওয়াটা খুবই কষ্টকর। তারপরে চলে যেতে হয়। অনেক রাত হয়েছে জেগে জেগে আপনি পোস্টা রেড়ি করলে। সারাদিন অনেক ব্যস্ত থাকবেন এবং ঢাকায় গিয়ে বাসায় ম্যানেজ করতে হবে, যাই হোক বাসার উঠার অনুভুতি আমরা পরে জানতে পারব। আপনার জন্য সুস্থতা কামনা করছি।
এগুলোর জন্যই পরে বেশি মন খারাপ লাগে।
আশা করছি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনার সবকিছু যেন ঠিকঠাক হয়ে যায় এবং আপনার জার্নিটা যেন একেবারেই নিরাপদ হয়। শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
চলে আসলাম অবশেষে। রেস্ট করতে হবে এখন।
আপনার লিখা গুলোর মায়ায় পড়ে গেলাম। মনে পরে গেলো সেই আগের কথা, তবে একটা কথা কি সহজে বলতে পৃথিবীতে যদি একটা কথা থাকে সেটা হচ্ছে ....আমি যাচ্ছি ... ,কথা তা শুনতে যতটা সহজ মনের দিক থেকে ততোটা কঠিন , অনেক সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি আপু, আমি যাচ্ছি কথাটা অনেক কঠিন।
আপনার কথাগুলো শুনেই আমার মনের মধ্যে কেমন জানি হচ্ছে। কিছুদিন পর আমাকেউ আপনার মতো বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। কীভাবে থাকব এই এলাকা এই বাড়ি ছাড়া ভাবলেই কেমন জানি লাগছে। কিন্তু জীবন ও জীবিকার তাগিদে এটা মেনে নেওয়াই লাগবে। যাইহোক ভাই আপনার জন্য শুভকামনা। আশাকরি নতুন জায়গাই সহজেই মানিয়ে নিবেন।।
ঠিক বলেছ ছোট ভাই। এটাই বাস্তব।
কিছুদিন আগে আপনার আপু এবং আপনার ভাগ্নেরা আপনাদের বাসায় এসেছিল এটা আমরা সকলেই জানি। যখন সবাই একত্রিত হয় তখন অনেক ভালো লাগে। আর যখন আমরা নিজেদের ব্যস্ত জীবনে বা নিজের প্রয়োজনের তাগিদে যে যার মতো আলাদা হয়ে যাই তখন খুবই খারাপ লাগে। তবে কিছুই করার নেই। বাস্তবতার কাছে আমরা সবাই অনেক অসহায়। সবকিছুকে পিছনে ফেলে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হয়। হয়তো পরিস্থিতি সবকিছুকে মানিয়ে নিতে বাধ্য করে। আশা করছি আপনার আগামী পথ চলা আরো সুন্দর হবে এবং নতুন জায়গায় নতুন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হবেন। ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। 💓💓💓