বিদায় কলকাতা।
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। কলকাতায় শেষ দিন এর শেষ পর্বে লিখেছিলাম আমাদের রুমে আসতে আসতে বেজে গিয়েছিল রাত ১২ঃ৪০ বা তার আশেপাশে। আমরা ব্যাগপত্র সবকিছুই গুছিয়ে ফেলেছিলাম রুমে এসেই। চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল ঘুমে। তবুও সব কিছু ঠিকঠাক করে তারপর দু'ঘণ্টার জন্য ঘুমাতে গেছিলাম। কারণ সকালে তো আর সময় পাওয়া যাবে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে যেতে হবে।
সবকিছু রেডি করে রেখে ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় একটা থেকে দেড়টা বেজে গেছিলো। শর্ট টাইম এর মধ্যে একটা ঘুম দিয়ে দিলাম। আমি যখন ঘুম থেকে উঠি তখন সম্ভবত চারটা বাজে। ঘুম থেকে উঠে পাশের রুমে গিয়ে দেখি হাফিজ ভাইও উঠে পড়েছে। এরপর আমরা ফ্রেশ হয়ে নিলাম। গতরাতে গুছিয়ে রাখা ব্যাগপত্র নিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেলাম বেরিয়ে পড়ার জন্য। অবশেষে কলকাতাকে বিদায় জানানোর পালা।
ব্যাগ পত্র নিয়ে চলে আসলাম নিচে। এত সকালে রাস্তা একদম ফাঁকা ছিল। একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম সাথে সাথেই। আমরা এখান থেকে সোজা চলে যাব কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনে। ট্যাক্সিতে বসে কলকাতার সকালের ফাঁকা রাস্তা গুলো দেখতে দেখতে আসছিলাম। এত সকালেও সিগনাল মানার একটা প্রবণতা ছিল সকলের মাঝেই। আমরা পাঁচটা দশ মিনিটের দিকে স্টেশনে পৌঁছাই।
সাড়ে পাঁচটার দিকে আমরা স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করি। এরপর আমাদের ইমিগ্রেশন শেষ করে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে গিয়ে বসি। ইমিগ্রেশন শেষ করতে করতে ছয় টা ১৫ বাজে। ট্রেন ছাড়বে সাড়ে সাতটায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পালা। সকালবেলা কিছু নাস্তা করা হয়নি। এজন্য খুব খিদে লেগে গেছিল। একবারে ট্রেনে উঠেই খেতে হবে তাছাড়া উপায় ছিল না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমরা সাতটার দিকে ট্রেনের মধ্যে ঢুকতে পারছিলাম। ব্যাগ পত্র সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে রেখে যখন সিটে বসলাম তখন একটু চাপমুক্ত লাগছিল। কারণ এখন শুধু বসে থেকেই বাংলাদেশের চলে যাব। মাঝে আর কোন ঝামেলা নাই।
সাড়ে সাতটার কিছুক্ষণ পরেই ট্রেন ছাড়লো। জানালা দিয়ে সব কিছু দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর খাবার আসলো। প্রচন্ড খিদে লাগছিল আমার। কিছু খাবার পেয়ে সকালের নাস্তাটা সেরে নিলাম। এরপর ধীরে ধীরে চলতে থাকলো আমাদের মৈত্রী এক্সপ্রেস। সকাল দশটার সময় আমরা গেদে স্টেশনে পৌঁছালাম। ওই সময় আমার ফোনে থাকা গ্রামীন সিমে নেটওয়ার্ক পেল হঠাৎ করে। কি দারুন একটা অনুভূতি লাগছিল যে দেশের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। লক্ষ্য করলাম ইন্ডিয়ান টাইম জোন থেকে বেরিয়ে হঠাৎ করেই ফোনের টাইম বাংলাদেশি টাইমের শিফট হল। ওই সময় বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ার নেটওয়ার্ক দুটো পাচ্ছিলাম। দুটো সিমই লাগানো ছিল ফোনে। বাংলাদেশের টায় টুজি পাচ্ছিল কিন্তু ইন্ডিয়ান টায় ফোরজি পাচ্ছিল। ওই সময় আমি আমার বাড়িতে ফোন দিলাম। এই সময় আমার খুব সুন্দর একটি অনুভূতি হচ্ছিলো। যে অবশেষে আমার নিজের দেশের সিম দিয়ে নিজের দেশে ফোন দিতে পারতেছি।
এরপর মাঠে ঘাটের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে চলতে থাকলাম। পুরাদাহ জংশন দিয়ে - ভেড়ামারা দিয়ে - রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে চলছিলাম আমরা। দীর্ঘক্ষণের জার্নি ক্লান্তি ভাব আসতে শুরু করল। ওই সময় দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেছিল। এরই মধ্যে আমরা দুপুরের খাবারও পেয়ে গেলাম হাতে। দুপুরে খাবারটা আমার কাছে মজা লাগছিল। সকালের স্যান্ডউইচ টাও অবশ্য আমি খুবই মজা করে খেয়েছি। যাই হোক দুপুরের খাবারও শেষ করে নিলাম এরপর একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছাতে আমাদের চারটা বেজে গেছিলো। এত বড় একটা জার্নি শেষ করে অবশেষে বাংলাদেশের মাটিতে পা দিলাম। একটুও দেরি করিনি। এরাইভ্যাল সিল মারার পর বাইরে এসেই একটা উবার নিয়ে চলে আসি আমরা। আমি আমার এরিয়াতেই নেমে গেছিলাম। ওই মুহূর্তে ভাইদের বিদায় জানালাম। @moh.arif আর @hafizullah ভাইয়ের সাথে প্রথম ট্রাভেল ছিল এটি আমার। খুব ভালোভাবেই শেষ করলাম। অনেক স্মৃতি থেকে যাবে। তিনজন অনেক স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরলাম। ভাইদের বিদায় জানিয়ে আমি সোজা আমার বাসায় চলে আসলাম। এরই মাঝে শেষ হলো কলকাতা ভ্রমণের চ্যাপ্টার। আল্লাহ্ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
অবশেষে কলকাতাকে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশে চলে এলেন।অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে নিজের মাটিতে পা রাখার যে শান্তি তা অন্য কিছুতেই নেই।আমি যখন কলকাতা গিয়েছিলাম ভাইয়া যত দেশ থেকে কলকাতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম ততই যেনো বুকে একটা চাপা কষ্ট অনুভব করছিলাম।আপনার ফোনে আপনি গ্রামীণ ফোনের টুজি দেখে যে আনন্দ অনুভব করছিলেন সেই ফিলটা আমি অনুভব করলাম।সকাল সাড়ে সাতটায় ট্রেন ছেড়ে দিল।আপনি খুব সুন্দর সুন্দর কিছু প্রকৃতির ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। খুবই ভালো লাগলো। এরপর ঢাকা এসে যে যার গন্তব্যে চলে গেলেন।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।