সুলতান ডাইনে একদিন।
হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। গতকালকে বাসায় চলে এসেছি ঢাকা থেকে। গতকাল সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে রওনা দিয়েছিলাম। বাসায় এসে পৌঁছেছি দশটায়। মাএ ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় গেলেছে। বাসে আসতে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। আর এখনতো টিকিট পাওয়া দুষ্কর। আমার এক বন্ধুর জন্য টিকিট খুঁজতে গিয়েছিলাম সেদিন। কোথাও টিকিট পাইনি। বাজে একটা অবস্থা। মোটরসাইকেলে আসাটাই অনেক সহজ। কিন্তু মোটরসাইকেলে আসলে অনেকের রাগ শুনতে হয়। যাক অবশেষে ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসলাম। বাড়ি আসার আনন্দটাই ভিন্ন রকমের। আসার সময় খুব ভালো লাগা কাজ করে।
যাইহোক কালকে তো বাসায় এসেছি। রাত্রের ঘটনা বলি। এমনিতেই প্রচুর আনন্দের মধ্য দিয়ে কাটছিল সময়। কারণ সকাল হলেই বাসায় যাব। আমার রুমমেট আমার এক বন্ধু আছে। সেদিন রাত্রে ওর রেজাল্ট হল। আমার বন্ধুটা বন্ধু হিসেবে একটু বেশিই ভালো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ও ক্লিয়ার ভাবে কোনো সেমিস্টারেই পার হতে পারে না। তো কালকে যে রেজাল্টটা দিল, ও একেবারে ফ্রেশ ভাবে পার হতে পেরেছে এই সেমিস্টার। কিন্তু এখানে আরও একটা সমস্যা ছিল। ও ভুলভাল একটা ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজাল্ট দেখতে গিয়েছিলো। ওই ওয়েবসাইটে রেজাল্ট দেখাচ্ছিলো না। ও একটু রুমের বাইরে ছিল। আমি ফোন দিলাম তখন বলতেছিল যে এবারও ও ক্লিয়ার ভাবে বেরোতে পারেনি। ওর মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সবার আনন্দটাই যেন অনেকটা ফিকে হয়ে গেল। এরপর রুমে আসলো। ছোট ভাই রাহুল আরেকবার চেক দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইটে ঢুকলো। তখন আমরা সবাই একসাথে দেখলাম ও খুব ভালোভাবেই বেরিয়ে গেছে। রেজাল্ট টাও অনেক ভালো এসেছে।
বন্ধুর মুখে হাসি ফুটল। ও চরম খুশি হয়েছিল কারণ এই প্রথম ক্লিয়ার ভাবে বের হতে পেরেছে। তখন আমরা সবাই অনেক খুশি। বন্ধু বলল যে আজকে আমাদের ট্রিট দিবে। অনেকের কাছেই শুনেছি সুলতানের কাচ্চি নাকি অনেক সুস্বাদু আর অনেক জনপ্রিয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ওইখানে যাব। খুব আনন্দের সহিত গেলাম সুলতানে।
ধানমন্ডিতে যেই সুলতান ডাইন অবস্থিত সেখানে গিয়েছিলাম আমরা। দোতলায় এ গিয়ে কোন সিট পাইনি। উনারা বল্লো চারতলায় ফাঁকা আছে ওইখানে গিয়ে বসতে। ৪ তলায় চলে গেলাম। ওখানে যথেষ্ট ফাঁকা ছিল। ওইখানে গিয়ে বসলাম এরপর মেনু কার্ডে দেখলাম কি খাওয়া যায়। উনাদেরকে জনপ্রিয় সেই কাচ্চি দিতে বললাম। যেটার জন্য অনেক বেশি নামকরা সুলতান। অর্ডার দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসলো । বুঝাই যাচ্ছে রেডি ছিল। আমরা তিনজন এর একটা প্যাকেজ নিয়েছিলাম।
সত্যি কথা বলতে এটি অনেক সুস্বাদু ছিল, কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু পুরান ঢাকার যে হাজীর বিরিয়ানি খেয়েছিলাম ওখানকার তুলনায় স্বাদের দিক থেকে অনেক নিচে থাকবে এটি। খাবার দিয়েছিল যথেষ্ট বেশি তিনজনের হিসেবে। আমরা চারজন থাকলেও খেতে পারতাম। আমরা পুরোপুরি শেষ করতে পারিনি।
যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম। ভালই তৃপ্তি পেলাম, এরপর আমরা চলে আসলাম। তিনজনের যে প্যাকেজ টা নিয়েছিলাম সেটার সাথে একটা পানি নিয়েছিলাম, আর পরে সেভেনআপ নিয়েছিলাম। সবমিলিয়ে ১৫০৯ টাকা বিল হয়েছিল। এরপর রুমে এসে আমরা অনেক সময় ধরে আড্ডা দিলাম। ঘুম আসছিল না সহজে। একটা আনন্দ কাজ করছিল যে কাল সকাল হলেই বাড়ি চলে যাব। রাহুল যেহেতু ড্রাইভ করবে ওকে ঘুমাতে বললাম আর বন্ধু পাপ্পুর সাথে ছাদে গিয়ে রাত দুটো পর্যন্ত আড্ডা দিলাম। এরপর রুমে এসে সহজে ঘুম আসছিল না। ঘুমোতে ঘুমোতে আমার প্রায় তিনটে বেজে গিয়েছে। সবেমাত্র গভীর ঘুমে ডুবে গেছি। এরপরে রাহুলের ডাকাডাকি শুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।
আমাদের প্ল্যান ছিল পাঁচটার দিকে বেরিয়ে পড়বো। এই জন্য সাড়ে চারটার দিকে ঘুম থেকে উঠতে হয়েছিল। উঠে ফ্রেশ হয়ে সবকিছু গোছগাছ করতে করতে পাঁচটা বেজে গেছিল। মাত্র দেড় ঘন্টা ঘুমাতে পেরেছিলাম৷ এর পরে মনে আনন্দ নিয়েই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। পাপ্পু ও আমাদের সাথে গিয়েছিল এগিয়ে দিতে। আমরা তিনজন রাস্তার মোড়ে গিয়ে প্রথমেই তিনজন তিন কাপ চা খেয়ে নিলাম। রাস্তা তখন একেবারে ফাঁকা। চা খাওয়া শেষ করে বন্ধু পাপ্পুকে বিদায় জানিয়ে আমরা রওনা দিয়ে দিলাম। অন্যান্য সময়ে ঢাকার মধ্য থেকে জ্যাম ঠেলে বের হতে প্রায় আধা ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেযায়, সেখানে আমরা মাত্র দশ পনেরো মিনিটের মধ্যে মেন হাইওয়ে রোডে চলে আসলাম।
এরপর চার ঘন্টা সময় নিয়ে আমরা বাড়িতে এসে পৌঁছে গেলাম। দশটার দিকে সকালে এসে বাড়িতে সকালের খাবার খেয়েছি। যদিও ফেরি ঘাটের ওপার থেকে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি খেয়ে নিয়েছিলাম। সব মিলিয়ে জার্নি টা সুন্দর ছিল। আমি এখন ঈদের ছুটিতে বাসায় আছি। সবারই এই ঈদের ছুটি অনেক আনন্দের সাথে কাটুক সেই কামনা করি। আজ আমি এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনি আসার সময় মোটরসাইকেলে ঢাকায় এসেছিলেন সেটা শুনে আমার ভয় লেগেছিলো, আপনি আবারো বাড়িতে মোটরসাইকেলে গিয়েছেন যদিও খুব অল্প সময়ে যেতে পেরেছেন এটা শুনে ভালো লাগলো কিন্তু খুবই রিস্ক। আর ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আছেন এজন্য আসলে খুবই ভাল লাগবে এটাই স্বাভাবিক, যদিও আমি এখনো বাড়িতে যাইনি। আর আপনার সুলতান ডাইন গিয়ে যে বিরিয়ানি খেয়েছেন তার স্বাদের কথা বলতে বলেছেন হাজি বিরিয়ানি খেয়েছিলেন তার থেকে এর স্বাদ নিচে থাকবে এটা শুনে আসলে আমি দিন গুনছি কবে আমি হাজী বিরিয়ানি খেতে যাব। আর আপনার মত স্বাদ উপভোগ করব। ধন্যবাদ ভাই আপনার এই মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া আপনি ঈদের ছুটিতে বাসায় গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। এই সময় টিকিট পাওয়া খুবই দুষ্কর ব্যাপার। তার উপর রাস্তাঘাটে যে পরিমাণ জ্যাম তাতে জার্নি অনেক কষ্টের হয়। তবে আপনি খুব সহজেই বাসায় চলে গিয়েছেন জেনে খুশি হলাম। কাচ্চি দেখে মনে হচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু ছিল। অনেক লোভনীয় লাগছে দেখতে। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।♥️♥️♥️
নাহ আপনি আর ভালো হলেন না। কেন যে আপনার বাসার লোকজন পিটায় না আপনাকে বুঝি না😡😡।
সুলতান ডাইন তো আমার বিপদের সঙ্গী। যখন রান্না করতে ভালো লাগে না তখন ঘরে বসে ফুডপান্ডায় সুলতান ডাইনের কাচ্চি অর্ডার করি। খেতে অসম্ভব ভালো লাগে। আমরা অবশ্য দুইজনের টা অর্ডার করি। কারণ পরিমান অনেক বেশি থাকে। তা দিয়েই আমাদের হয়ে যায়। তাছাড়া ফুড পান্ডায় ডিসকাউন্ট ও থাকে। লাস্ট বার যখন অর্ডার করলাম তখন দেখলাম যে ডিসকাউন্ট টা নেই। পরে 750 টাকা দিয়ে অর্ডার করলাম।
যাই হোক বন্ধুর রেসাল্ট উপলক্ষে ভালো একটা ট্রিট পেয়েছেন।
ভাইয়া তো আনন্দের উপর আনন্দে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে। তবে ভুলভাল ওয়েবসাইটে ঢুকে বন্ধুর মন খারাপ ছিল। কিন্তু আপনাদের ছোট ভাই পুনরায় চেক করতে গিয়ে সুখের হাসি ফুটল মুখে। সেই আনন্দে ট্রিট সুলতানের কাচ্ছি খাওয়া। নাম শুনেই যেন জিভে জলপড়ছে। তবে বাড়ি যাওয়ার সময় হলে এমনিতেই ঘুম হয় না। হাজার চেষ্টা করলেও চোখে ঘুম আসে না। মনের ভিতরে এমন একটা অনুভূতি কাজ করে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার আজকে তিন দিন যাবত কোন ঘুম নেই, কখন বাড়ি যাব সেই চিন্তায়। আমাদের মাঝে আপনার আনন্দ অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা।
সুলতান ডাইন এর কাচ্চি একবার খেলে সে স্বাদ মুখে লেগেই থাকে। যেহেতু পুরান ঢাকার হাজী বিরিয়ানি আমি খাইনি তাই দুটোর কম্পেয়ার করতে পারলাম না।
বন্ধুর রেজাল্ট উপলক্ষে বেশ ভালই ট্রিট পেয়েছেন।
আট ঘন্টার জার্নি চার ঘন্টায় শেষ করেছেন। শুনতে অবাক লাগলেও আমিও যখন বাইকে বসি তখন এভাবেই হাই স্পিডে ড্রাইভ করতে বলি।
সব মিলিয়ে আপনার পোস্টটি পড়ে আমার বেশ লাগলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
যাক,আপনার বন্ধুর ঘটনা পড়ে ভালো লাগলো।কয়দিন পর আমার ও একই অবস্থা হবে।সুলতান'স ডাইনের কাচ্চি জাস্ট অসাধারণ।
কি বলেন ভাইয়া ৮ ঘণ্টার রাস্তায় মাত্র ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিটে পৌঁছে গেছেন 😲। তাহলে তো এভাবে মোটরসাইকেলে করে আসা যাওয়া করা উচিত। ভাইয়ার বাড়ি মনে হচ্ছে বরিশাল।
উফ ভাইয়া হাজী বিরিয়ানি গুলো দেখে লোভ সামলাতে পারছি না। খেতে পারলে একটু ভালো হতো। যাইহোক ভাইয়া আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
এর আগে আমি সুলতান ডাইন এ খেয়েছি। এদের কাচ্চি আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। বসুন্ধরা শাখায় গিয়েছিলাম আমি। যাই হোক বন্ধু ট্রিট খেতে বেশ ভালোই লাগবে ভাই। সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন আপনি। আর সুন্দর মুহূর্তটাকে আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
যাক ভালই হল ঈদের ছুটিতে সুস্থভাবে বাড়িতে আসতে পেরেছেন। আমাদের ভাই মন্দভাগ্য। আমাদের ছুটি মাত্র দুদিন।
যাইহোক জেনে ভালো লাগলো আপনার বন্ধু এবার সেমিস্টার পেরিয়ে গেছে। আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারছি বাসায় আসতে খুব চমৎকার একটি সময় কাটিয়েছেন। ভাল খাবার দাবাড়ও হয়েছে। এককথায় কিছু কোয়ালিটি সময় পার করেছেন।
ভাই এই সুলতানে খাওয়া নিয়ে বেট ধরে একটা ভিডিও বানিয়ে রেখেছি বন্ধুকে নিয়ে। দেখি কবে লাগে। দেখা হলে আপনাকেও বলবনি কারণ টা। ভালো ভাবে ঝামেলা ছাড়াই যে বাড়ি যেতে পেরেছেন এই অনেক। ঈদে পরিবার নিয়ে ভালো একটা সময় কাটুক এই শুভ কামনা রইলো।