ভেড়া দিয়ে পিকনিকের গল্প।
প্রিয় বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
আশা করছি সবাই অনেক ভাল আছেন৷ সবাইকে জানাচ্ছি একটি সুন্দর সকালের শুভেচ্ছা। গত পর্বে পিকনিকের জন্য ভেড়া কেনার গল্প শেয়ার করেছিলাম। এই পর্বে শেয়ার করব পিকনিকের গল্প। যেদিন আমরা ভেড়া কিনেছিলাম সেদিন রাতেই পিকনিক করেছি। রবিবারের আড্ডা চলার সময় অবশ্য কয়েকটি ছবি ও আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।
গত পর্বেই বলেছিলাম আমাদের কিনে আনা ভেড়ার মাংস হয়েছিল টোটাল সাড়ে বারো কেজি। পিকনিকের জন্য আমরা মাংস রেখেছিলাম ৫ কেজি। আমাদের বেশি মাংস প্রয়োজন ছিল না কারণ মানুষ অল্প। আবার ছোট ভেড়া কিনলে তার মাংস ততটা ও টেস্ট হয় না। এজন্য আগে থেকেই আমরা প্ল্যান করেছিলাম বড় ভেরা কিনব কিন্তু প্রয়োজনীয় মাংস রেখে বাকিটা বিক্রি করে দিব।
পিকনিকে আমরা মানুষ ছিলাম মোট ১০ জন। পাঁচ কেজি মাংস এনাফ ছিল। আর বাকি মাংসটুকু বিক্রি করে দিয়েছি। আমাদের পিকনিকের প্ল্যান ছিল গতকাল অর্থাৎ ভেড়া কেনার পরের দিন। এই প্ল্যানটা আগেই করেছিলাম কারণ আমাদের গতবারের অভিজ্ঞতা ছিল ভেরা কিনে এনে তারপর সেদিনই সবকিছু করে পিকনিক করতে করতে দেরি হয়ে যায় বেশি। কিন্তু এবার ভেড়া অনেক দ্রুতই কিনে এনেছিলাম যার কারণে সেদিনই পিকনিক করার মতন এনাফ সুযোগ ছিল। তারপরও সেদিন করা হতো না, কারণ আমাদের সাথে পিকনিকে অংকন ও ছিল। ওদের নবমীর দিনে ও থাকতে পারবেন এটাই স্বাভাবিক। ওর পিকনিক করার খুব ইচ্ছা ছিল তাই ওর কথা চিন্তা করে একদিন আগেই করা হলো।
যাইহোক পিকনিকের লোকেশন ছিল বাজারের একদম মাঝখানে রতন কাকার দোকানের সামনে। পাশেই একটি ডেকোরেশন এর দোকান ছিল সেখান থেকে যাবতীয় যা কিছু প্রয়োজন নিয়ে এসেছিলাম। আর বাজারের পর্ব টা সকাল সকালই সেরে ফেলেছিলাম। মুদিখানার বাজার, কাঁচা বাজার সবকিছু শেষ করে আমরা একেবারে রেডি ছিলাম। এরপর অপেক্ষায় ছিলাম কখন বাজার ফাঁকা হয়। বাজার যখন ফাঁকা হবে তখন শুরু করবে আমাদের রান্না বান্না।
রান্না শুরু করতে করতে বেজে গেল সাড়ে ন'টা । আমাদের একজন রাধুনী আছে, পিকনিক হলে ওই রান্না করতে পারে ভালো। তাই আমরা ওকে দিয়েই সব সময় রান্না করাই। আমাদের তেমন কোন কাজ থাকে না। শুধু আড্ডা দেওয়া আর ঘুরে বেড়ানো। গতবারের অভিজ্ঞতা থেকে জানি ভেড়ার মাংস তেমন একটা সুস্বাদু না। কিন্তু সেটা একেবারে ভুল প্রমাণ হয়, আর আমরা আগে থেকেও ব্যাপারটা মোটামুটি জানতাম যে বড় ভেড়ার স্বাদ আগের মত হবে না। মাংস যখন কষানো হলো তখন খেয়ে মনে হচ্ছিল খাসির মাংস থেকেও বেশি টেস্ট। বড় ভেড়া কিনে লস হয়নি, ভালোই হয়েছে।
সম্পূর্ণ রান্না শেষ হতে হতে এগারোটা বেজে যায়। রাত বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে ডাউল ঘন্টোর আইটেম টা আর করা হয়নি। এরপর সবাই দোকানের মধ্যে রেডি হয়ে গেলাম পিকনিকের খাবার খেতে। এবারের একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল একটা স্পেশাল জায়গা থেকে দই আর মিষ্টি এনেছিলাম। ওই জায়গার দইটা মারাত্মক সুস্বাদু। যাইহোক এগারোটার দিকে আমরা প্রস্তুতি নিলাম খাওয়া-দাওয়া করার জন্য। সবাই দোকানের মধ্যে বসে পড়লাম।
সবাই খাওয়া-দাওয়া শুরু করলাম। প্রচুর মাংস রয়েছে, যার যেমন ইচ্ছা নিয়ে খেলাম। কেউ কেউ খুবই কম খায় আবার কেউ কেউ বেশি খায়। সব মিলিয়ে মাংস শেষে শেষই করতে পারিনি। অবশ্য খুব বেশি বেচে যায়নি, একজন খেতে পারবে এরকম বেচে গেছিল। মাংসটা দুর্দান্ত স্বাদের ছিল। এত ভালো লেগেছিল যে পরবর্তীতে কোন একদিন আবার ভেড়া দিয়ে পিকনিক করার মতন চিন্তাভাবনা করে রেখেছি।
ভাত গোস খাওয়া শেষে সেভেন আপ তারপর দই মিষ্টি খেয়ে খাওয়ার ইতি টানলাম। তৃপ্তির ঢেকুর তুলে উঠে পরলাম। একেবারে যাকে বলে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া, সে রকমটাই হয়েছিল। এরপর সব ঠিকঠাক করে নিজেদের মধ্যে একটু আলোচনা, গল্প, আড্ডা চললো। বাজার তখন একেবারেই ফাঁকা। পুরো বাজারের মধ্যে শুধু আমরাই। এরপর আসতে দিলাম প্রত্যেকেই যার যার বাড়ির দিকে চলে আসলাম।
এভাবে শেষ হলো আমাদের ভেড়া দিয়ে পিকনিকের দিনটি। আসলে আমাদের এই পিকনিকটা শুধুই পিকনিক নয়। এটি আমাদের বহু আগে থেকে প্ল্যান করা এবং এটা আমাদের একটা অনুভূতি বলা যেতে পারে। কিছুদিন পর রতন কাকা দেশের বাইরে চলে যাবে। এটাই তার সাথে দেশের বাইরে যাওয়ার আগে শেষ পিকনিক। গত দুই বছর আগের সাথে মিল রেখে আমরা দারুন একটা পিকনিক সম্পন্ন করলাম। পুরো গল্পটা আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। পোস্টা স্মৃতি হিসেবে রেখে দিলাম ওয়ালে। আল্লাহ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
রবিবার আপনারা পিকনিক করেছিলেন।ভেড়ার মাংস সারে বারো কেজি হলে ও দশ জনের জন্য পাঁচ কেজি রেখে বাকি মাংস বিক্রি করে দিলেন।বড় ভেড়ার মাংস খেতে খুব টেস্ট বললেন।আসলে ভেড়ার মাংস কখনও আমার খাওয়া হয়নি।বাজার ফাঁকা না হলে রান্না তো শুরু করা যাবেনা।তাই রাত ৯ টায় রান্না শুরু হলো।আর রাত ১১ টায় রান্না শেষ হলো।খুব মজা করে সবাই খেয়েছেন।গল্প,আড্ডা করেছেন।দই,মিষ্টি খেয়ে পিকনিক শেষ করলেন।অনুভূতি গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য। সব সময় এমন হাসি-আনন্দে কাটাবেন এমনটাই আশাকরি।
অনেক ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
এর আগেও মনে হয় পড়েছিলাম আপনার পিকনিক করার গল্প। আপনি কিন্তু দারুন মজার মানুষ। আড্ডা আর আনন্দ উদ্দীপনায় বেশ ভালোই কেটেছে আপনাদের পিকনিক। ভেড়ার মাংস কখনও খাওয়া হয়নি। এত বড় ভেড়ার মাংস কি আর এত কম মানুষ খাওয়া যায়? তাই বাকী মাংস বিক্রি করে দিয়ে ভালোই করেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জ্বী আপু এজন্য বিক্রি করে দেওয়া। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আরে ভাই বিক্রি করে দিলেন কেন। আমাদের দাওয়াত দিলেও পারতেন। চলে আসতাম একদম। ইশ আপনাদের খাওয়ার কথা শুনে এখন তো আমার ভেড়া দিয়ে পিকনিক করতে মন চাচ্ছে। যাক একদিন আমরা এবিবির সবাই মিলে ভেড়ার মাংস দিয়ে পিকনিক করবো।
বাহ্ তাহলে তো দারুণ হবে। আমাদের এলাকায় করতে হবে পিকনিক।
রান্না সেই টেস্ট হয়েছিল। দীর্ঘ দুই বছর পর ভেড়ার মাংস খাওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম ছিল। সবচেয়ে বড় বিষয় অনেকদিন পর সবাই একসাথে হতে পেরেছি। এরকম পিকনিক আমরা অনেক করেছি কিন্তু অনেকদিন পর আবার এরকম পিকনিক করতে লাভ এটাই অনেক বড় পাওয়া। বেঁচে থাকলে আবার হবে এরকম সুন্দর আয়োজন।
ইন শাহ আল্লাহ। নেক্সট ইয়ারে
আপনাদের পিকনিক করার গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে দশ জনের জন্য ৫ কেজি মাংস এনাফ ছিল। যাইহোক রান্নাটা খুব ভালো হয়েছিল এবং আপনারা খুব তৃপ্তির সাথে খেয়ে ছিলেন যেনে ভালো লাগলো। যাক একটা জিনিস জানতে পারলাম যে ছোট ভেড়ার মাংস অত স্বাদ হয় না বড় ভেড়ার মাংস বেশি স্বাদ হয়। তাহলে যদি কখনো ভেড়ার মাংস দিয়ে পিকনিক করার বা ভেড়ার মাংস খাওয়ার ইচ্ছা করে তাহলে বড় ভেড়ার মাংসই কিনতে হবে দেখছি। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনাদের পিকনিক করা সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
ছোট সাইজের খাসি এবং ভেড়ার মাংস খেতে তেমন সুস্বাদু লাগে না। বড় সাইজের ভেড়া কিনে খুব ভালো কাজ করেছেন। সেজন্য খেতে দারুণ লেগেছিল। পিকনিক করার মজাই আলাদা। সবাই মিলে আড্ডা দিতে এবং একসাথে খাওয়া দাওয়া করতে খুব ভালো লাগে। কোরিয়াতে থাকা অবস্থায় হরিণ কিনে এভাবে পিকনিক করেছিলাম। আপনার পোস্টটি পড়ে সেই স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আসলে এইসব স্মৃতি গুলো আজীবন মনে থাকবে আমাদের। যাইহোক সবমিলিয়ে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন আপনারা। এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলেই সুন্দর সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি সারা জীবন মনে গেঁথে থাকে। আপনার মন্তব্যটি খুব ভালো ছিল। ধন্যবাদ ভাই।