পিকনিকের জন্য ভেড়া কিনতে যাওয়ার গল্প।
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আজ সকাল সকাল পিকনিকের জন্য ভেড়া কেনার গল্প নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের সামনে। গত পরশুদিন আমরা বেড়া দিয়ে পিকনিক করেছি। প্ল্যান করা ছিল অনেক আগে থেকেই। পুজো ছুটিতে সবাই বাড়িতে। আর সবাই বাড়িতে একসাথে এখন পাওয়া যায় না কোন অকেশন ছাড়া। তাই আমাদের আগে থেকেই প্ল্যান করা ছিল এই পুজো ছুটিতে পিকনিক করবো।
গত দুই বছর আগেও আমরা ভেড়া দিয়ে পিকনিক করেছিলাম। আর সেবার ভেড়া কিনতে গিয়ে যা ঘটনা ঘটছিল তা সারা জীবন মনে রাখার মত। সারাদিন পার করে ফেলেছিলাম এক ভেড়া কিনতে। পুরো চর ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল ভাড়া কিনতে। তারপর সেই ভাড়া নিয়ে আসায় আবার কত কাহিনী। তবে মজা পেয়েছিলাম প্রচুর। যাইহোক এবারও যেহেতু প্ল্যান করেছিলাম, তো গত পরশুদিন আমরা গিয়েছিলাম ভেড়া কিনতে। ভেড়া কেনার পার্টটা আমাদের কাছে অনেক ইন্টারেস্টিং ছিল তাই আমরা মজা করে ৭-৮ জন গিয়েছিলাম। এবার আর হেঁটে যাইনি। এবার বাইক নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ গতবার হেঁটে গিয়ে জীবন তেজপাতা হয়ে গিয়েছিল।
আমরা বাইক নিয়ে রওনা দিলাম এরপর চরে একটা জায়গায় গিয়ে পরামর্শ করলাম কোন সাইডে আগে যাওয়া যায়। পরামর্শ করে সামনে এগোতে থাকলাম। সামনে একটা পাড়া ছিল, সেখানে এক মুরুব্বী বসে ছিল। ওনার কাছে জিজ্ঞেস করলাম আমরা ভেড়া কিনতে এসেছি, এখানে কোথায় পাওয়া যাবে। উনি বললেন আমাদের বাড়ি থেকেই মাত্র ৪টে ভেড়া কিনে নিয়ে গেল ব্যাপারীরা। উনারা এখনো হয়তো বেশি দূরে যেতে পারেনি, একটু আগেই এখান থেকে বেরিয়েছে। এরপর উনাকে আমাদের বাইকের চড়িয়ে আমরা সামনের দিকে যেতে থাকলাম ওই বেপারীদের ধরার উদ্দেশ্যে। মুরুব্বীটা বেশ ভাল ছিল। আমাদের হেল্প করার জন্য আমাদের সাথে চলে আসছিল।
কিছুদূর যাওয়ার পরই সেই ব্যাপারীদের পেয়ে গেলাম। চারটা বড় বড় সাইজের ভেরা নিয়ে যাচ্ছিলেন। গতবার আমরা ছোটভেড়া কিনেছিলাম। কিন্তু এবারেটা আনেক বড়। যাইহোক এবার শুরু হল দরদাম করা। যে মুরুব্বী আমাদের সাথে আসলো উনি আগেই আমাদের কাছে বলে দিছে ৩৯ হাজার টাকা দিয়ে তারা চারটা কিনছে। যেহেতু ব্যাপারীরা এটা করেই তাদের পেট চালায় তাই এখান থেকে তো অবশ্যই তাদের কিছু লাভ রাখতে হবে। আমরা তাদেরকে কিনা দাম থেকে ৫০০ - ৬০০ টাকা লাভে দিতে চেয়েছিলাম।
ওনারা দাম চাচ্ছিল ১৩ হাজার টাকা। আমরা প্রথমে ১০ হাজার বলেছিলাম। এরপর ১০ হাজার ৫০০। ততক্ষণে ওখানে প্রচুর লোক জমে গেছে। ব্যাপারটা বেশ ভালই লাগছিল দরদাম করতে। যাইহোক, দামে পোষাচ্ছে না বলে উনারা নিয়ে যাবে, আবার আমাদেরকে দিয়ে দেবে এই সব মিলিয়ে অনেক ক্যাচাল হল। শেষমেষ ১০৭০০ টাকায় ফিক্সড করা হলো। নিয়ে নিলাম সবচেয়ে তরতাজা দেশাল টা। এবার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ভাড়া কেনা হয়ে গেল। যদিও মনে হচ্ছিল আরেকটু ঘোরাঘুরি করার পর পেলে ভালো হতো। হিহিহি।
এরপর ভেড়া নিয়ে বাড়ি আসার পালা। ঘটনা হচ্ছে আমরা তো সবাই বাইক নিয়ে গেছি। এখন বেড়াকে তো আর হেঁটে নিয়ে আসা যাবে না। রাহুল রিপন আর রাজু যে বাইকে ছিল ওদের বাইকে ওদের এক পাশে ভেড়াটাকে উঠিয়ে নিল। এক সাইডে অর্থাৎ পায়ের উপর নিয়ে ওভাবেই আসতে হলো। এরপর আর আমরা কোথাও দাঁড়াইনি সোজা চরের সরু রাস্তা দিয়ে বাড়ির দিকে আসতে থাকলাম।
আমরা ধারণা করেছিলাম ১২ থেকে ১৩ কেজি মাংস হবে। শেষমেষ ১২.৫ কেজি মাংস হয়েছিল। যেমনটা আমার ধারণা করেছিলাম তেমনটাই পেয়েছি। বেড়া জবাই থেকে শুরু করে মাংস বানানো পর্যন্ত সে আরেক কাহিনী। জবাই করার লোক পাচ্ছিলাম না শেষমেষ আমাদেরকেই জবাই করতে হয়েছিল। জবাই করার পর চামড়া ছিলা, মাংস বানানো সেগুলোও আমরাই করেছি।
মাংস বানাতে বানাতে দুপুর দুটো বেজে গিয়েছিল। এরপর মাংসগুলো ফ্রিজের রেখে আমরা বাড়িতে চলে গেছিলাম যার যার মত।
পিকনিকের গল্প শেয়ার করব নেক্সট পর্বে। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী পর্বে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
এর আগেও আপনার একটা পোস্টে মাধ্যমে জানতে পেয়েছিলাম যে আপনারা দুই বছর আগে একবার ভেড়া দিয়ে পিকনিক করেছিলেন। যদিও সেই পোস্টটা আমার দেখা হয়নি তবে এবারের এই পোস্টটা দেখে নিলাম। আপনারা তো দেখতে বেশ তাড়াতাড়ি ভেড়াটা পেয়ে গিয়েছিলেন। আর বাইকে করে ভেড়া আনার দৃশ্যটা বেশ মজার ছিল। যাইহোক পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এবার খুব দ্রুতই ভেরা কিনা হয়েছে যেটা কখনো ভাবি নি । ভাগ্যে যা হবার তাই ছিল এবারও দারুণ মজা হয়েছে। প্রতিবছর এরকম সুন্দর মুহূর্ত পিকনিকের মাধ্যমে উপভোগ করতে পারবো সেটাই প্রত্যাশা করি। এই পোস্ট স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে আবারও স্মৃতির পুনরাবৃত্তি হবে।
একদম ঠিক।
ভাইয়া এইবার যদি ভেড়া কিনেন তাহলে আমাদের সাথে নিয়েন ভাইয়া। আমরা ভেড়ার ব্যবসা করি এবং আপনি যদি নিজে এসে নিয়ে যাইতেন ভাইয়া। আমি অনেক খুশি হতাম। গত দুই বছর আগেও ভাড়া দিয়ে পিকনিক করছেন
বাহ। ভেড়ার গোস্ত অনেক ভালো লাগে এবং ভেড়ার গোশত সবসময় তো পাওয়া যায় না ।একটা মানুষ যদি খেতে ইচ্ছা করে তাহলে একটা কিনে জবাই করে খেতে হবে তাছাড়া এমনিতেও ভেড়ার গোশত কোথাও কিনতে পাওয়া যায় না। ভেড়া মানুষ শখ করে পোষে। যাক মুরুব্বীটা বেশ ভালোই হেল্প করছে আপনাদের। প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনারা খুব সহজে ভেড়া পেয়ে গেলেন। যাক ভালই। ভেড়া আনতে তো দেখছি অনেক কষ্ট হয়েছে। মাঝখানে বসিয়ে নিলে সবথেকে উত্তম হতো। দুইজন থাকলে ভালো হতো একটা গাড়িতে। পিকনিকের গল্প দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম ভাইয়া
আসলেই সব মিলিয়ে সে দিনটা দুর্দান্ত ছিল। আর মাঝখানে বসিয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল না আসলে কারণ আমরা প্রত্যেকটা গাড়িতেই তিনজন করে ছিলাম।
ভাই এটা পুরো অ্যাডভেঞ্চার ছিলো তবে আমি এটা মিস করে গেছি। অনেক ইচ্ছা ছিলো এই অ্যাডভেঞ্চারে অংশগ্রহণ করার কিন্তু পূজার ব্যস্ততার কারণে আর সেটা হয়ে ওঠেনি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
হুম তুমি মিস করছো।
তাতে কি সামনে ভেড়া পিকনিক আবার হবে।
আসলে ভাইয়া ভেড়ার মাংসে প্রোটিনের মাত্রা বেশি। তবে আপনারা দেখছি ভেড়া দিয়ে পিকনিক করেছেন তবে আমরা ভেড়া দিয়ে কখনো পিকনিক করি নাই। তবে আপনার এই পিকনিকের ভেড়াটি দেখে খুবই পছন্দ হলো এবং ১০৭০০ টাকা দিয়ে শেষমেষ ভাড়াটি কিনে ফেললেন এবং পিকনিকের জন্য তৈরি হয়ে গেলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভাইয়া এখনো দাওয়াত দিলেন না 😭 তাই ঝটপট দাওয়াতটা দিয়ে দিন ।চলে আসব ভেড়ার মাংস খেতে আর আপনাদের সাথে পিকনিকের আড্ডা দিতে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য
আচ্ছা আপনি চলে আসেন। আবার পিকনিক হবে 🥳
বাইকে ভেড়া নেওয়ার ছবিটা দেখে আমি হাসতে হাসতে শেষ। ঐ দুই বেচারার কি হাল হয়েছিলো হাহাহা। ভেড়াটা হয়তো মনে মনে বলতেছিলো এরা আমাকে এভাবে নিয়ে যাচ্ছে কই। যাক পিকনিক এর পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই। নিশ্চিত অনেক মজার হবে।
হেহেহে,, আর উপায় ছিলো না নিয়ে আসার 😜
আপনাদের ধারণার কাছাকাছি চলে গেছে ভেড়ার মাংস। ভেড়ার মাংস কখনো খাওয়া হয়নি। এই আপনার পোস্টেই দুইবার দেখলাম বিষয়টি। বেশ দরদাম করার পর দেখছি ভেড়া টা কিনতে পেরেছেন। দেখতেও বেশ সুন্দর ছিল ভেড়াটা। আপনার শেয়ার করা গ্রামের সুন্দর প্রকৃতির ফটোগ্রাফি গুলো বেশ চমৎকার ছিল। দারুণ করেছেন ফটোগ্রাফি গুলো ভাই।
আগেরবারের ভেড়া কেনার ঘটনাটা কিন্তু মারাত্মক রকমের মজার ছিল।
পুজোর ছুটিতে সবাই একসাথে হলেন আর পিকনিক করলেন।আসলেই অকেশন ছাড়া ঐভাবে সবাই এক জায়গায় হওয়া সম্ভব না। ভেড়া এবার অনেকটা বড়ো সাইজের পেয়েছিলেন।সব মিলিয়ে দারুন মজা করেছেন আপনারা বুঝতে পারলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভাই ভেড়া কিনতে গিয়ে তো চমৎকার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আর একটু আগে গেলে তো সেই মুরুব্বির কাছ থেকে আর একটু কম দামে ভেড়া কিনতে পারতেন মনে হচ্ছে। তবে আপনারা মনে হচ্ছে সবচেয়ে বড় সাইজের ভেড়াটা কিনতে পেরেছেন ১০,৭০০ টাকা দিয়ে। বাইকে উঠিয়ে ভেড়া নিয়ে আসার দৃশ্যটা দারুণ ছিলো। যাইহোক বেশ ভালোই মাংস হয়েছে তাহলে। ১২.৫ কেজি মাংস তো অনেক। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। পিকনিক করার পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। আশা করি খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন আমাদের সাথে।
একদম ঠিক বলেছেন। যদি একেবারে ওই মুরুব্বির কাছ থেকে কিনতে পারতাম তাহলে 1000 টাকা কমিয়ে নিতে পারতাম।