যাত্রাপথের গল্প।
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন বন্ধুরা সবাই? গত দুদিন যাবত আমি খুবই ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করছি। গত কিছুদিন যাবত আমি বাড়িতে সম্পূর্ণ একাই ছিলাম। আমার আব্বু আম্মু ছোট ভাই সবাই আমার আপুর বাসায় ছিল। আমার আপুর বেবি হয়েছে। এই সময়ে ফ্যামিলিকে তো পাশে থাকতেই হয়। যে কদিন বাড়িতে আমি একা ছিলাম খাবার-দাবারের ভালোই কষ্ট হয়েছে। যাইহোক এখন সময় এসেছে আম্মুদের বাড়ি ফেরার। ইতিমধ্যেই আব্বু আর ছোট ভাই বাড়ীতে চলে এসেছে। কিন্তু আম্মু আপুর পাশে আরো কয়েকটা দিন থাকবে বলে স্থির করেছিল। আর এখন আম্মুও বাড়ি ফিরবে। অনেকদিন হলো আপুর বাসাতে অতিবাহিত করলো।
যেহেতু আমার বাসা থেকে আপুর বাসা অনেক দূরে তাই আম্মু একা আসতে পারবে না। আমাকেই নিয়ে আসতে হবে। আর আমার ওয়াইফ ও আপুর বাসাতেই রয়েছে। কারণ ওর পরীক্ষা চলছে। আমার ওয়াইফ আপুর বাসা থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছে। যাইহোক, গত পরশু আমার কিছু কেনাকাটা করতে হয়েছে এজন্য শহরে গিয়েছিলাম।আর গতকাল যেহেতু আসার প্ল্যান ছিল তাই গত পরশু আমার ওয়াইফ কে দিবে বলে একটি গিফট কিনেছিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক করে রেখেছিলাম। প্ল্যান ছিল ২৭ তারিখ সকাল সকাল বেরিয়ে পড়বো।
কিন্তু সকালে আর সকাল সকাল বেরোতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার কমিউনিটিতে যে সকল কাজ ছিল সেগুলো সেরে খাওয়া-দাওয়া করতে করতে প্রায় দশটা বেজে গিয়েছিলো। খাওয়া-দাওয়া করে রেডি হতে হতে আমি বের হতে পেরেছিলাম এগারোটার দিকে। এগারোটার দিকে বের হয়ে আমি প্রথমেই একটা ইজি বাইকে চড়ে বসি। আমাদের বাসা থেকে আপুদের বাসায় যেতে দেড়শ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। সমস্যাটা হচ্ছে যাতায়াত ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না। ইজিবাইক, সিএনজি, বাস, ভ্যান ইত্যাদি যানবাহনযোগে শেষ পর্যন্ত আপুদের বাসায় পৌঁছাতে হয়। আর বাংলাদেশের যাতায়াত ব্যবস্থা সব জায়গাতেই মোটামুটি এরকমই।
আমি ১১ টা ৪০ মিনিটের দিকে বাসে উঠেছিলাম আমাদের জেলা শহরের টার্মিনাল থেকে। টার্মিনাল থেকে আমরা যারা বাসে উঠেছিলাম তারা বসার সিট পেয়েছিলাম খুব আরামেই। কিন্তু যখন কিছুদুর আসলাম তারপর থেকে যারা বাসে উঠছিল তাদের সবাইকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছিল । এই বিষয়টা আমার খুবই খারাপ লাগে । বিশেষ করে অসুবিধা হয় বেশি মেয়েদের। এত ভিড়ের মধ্যে চাপাচাপি তে মেয়েদের দাঁড়িয়ে থাকা সত্যিই খুব বাজে দেখায়। আমি হয়তো নিজের সিট সেক্রিফাইস করি আপনারা অনেকেই হয়ত করেন, কিন্তু এটা কোন স্থায়ী সমাধান নয়।
যাইহোক, যশোরে পৌঁছানোর পর আমার আবারো বাসে উঠতে একটুও ইচ্ছা করছিল না। এইজন্য ভাবলাম সিএনজিতে যাব। যদিও বেশি সময় লাগবে তারপরেও ভাল লাগবে। এরপর একটা সিএনজিতে উঠে আমি আমার নেক্সট গন্তব্যে গেলাম।
পরবর্তী গন্তব্যে যেয়ে আবারো বাসে উঠে আমাকে যেতে হবে। কিন্তু এবারও বাস ইগনোর করে একটা ইজিবাইক নিয়েছিলাম । এই ইজিবাইক গুলো বেশিদূর যায়না। ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত যায় সর্বোচ্চ। যখন ইজিবাইকের রাস্তা ফুরিয়ে এলো তখন আবার একটি ভ্যান নিয়ে নিলাম। ভ্যানে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে। দুইপাশের খোলা হাওয়া, হাইওয়ে দিয়ে চলা। দারুন লাগছিল। তবে কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই প্রচুর প্রচুর ছবি তুলেছি আমি ।
কেন এই ছবিগুলো যে তুলেছি সেটা আমি নিজেও জানি না । আজকে পোস্টের মধ্যে সেগুলো থেকে কয়েকটা শেয়ার করে দিলাম।
আমার আপুর বাসাতে পৌঁছতে প্রায় ৫ টা বেজে গিয়েছিলো। আপুর বাসাতে পৌঁছে প্রথমেই ফ্রেস হয়ে নিলাম। আর ঠিক তখনই বাহিরে বৃষ্টি শুরু হল আর সাথে ঝড়ো হাওয়া। আর একটু লেট হলেই আমার এই বৃষ্টির মধ্যেই ভিজতে হতো। সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। সকালে অল্প কিছু খেয়ে এসেছিলাম। ফ্রেশ হয়ে সাথে সাথেই পেট পুরে খাবার খেয়ে নিলাম। এরপর আমার ওয়াইফের জন্য নিয়ে আসা সেই গিফটা ওয়াইফকে দিলাম। ও খুবই খুশি হয়েছে দেখে।
মাঝেমধ্যেই আপুদের বাসাতে আসি কিন্তু কখনো শেয়ার করা হয়নি আপনাদের সাথে। আজকে শেয়ার করলাম। হঠাৎ করে ইচ্ছে হলো আর হঠাৎ করেই শেয়ার করে ফেললাম। আগামী দুদিন হয়তো কমিউনিটিতে আমি একটু কম অ্যাভেলেবেল থাকতে পারব। এজন্য আমি খুবই দুঃখিত। খুব শীঘ্রই বাড়িতে ফিরে আবার কিছু ট্রাভেল ব্লগ আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনার যাত্রাপথের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। যাত্রাপথে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলেছেন সেগুলো অনেক ভাল লেগেছে কারণ ছবিগুলো একদম স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার। আর সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত অনেক লম্বা একটি জার্নি করেছেন। আপনার ভ্রমণ কাহিনীর গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান 💚
মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে গ্রামে যেতে খুব ভালো লাগে গ্রামের পরিবেশ গুলো আসলে খুব চমৎকার হয়। শহরের কোলাহল থেকে যদি হঠাৎ করে গ্রামে যাওয়া হয় তখন একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনি খুব ভালোভাবে পৌঁছাতে পেরেছেন এবং যাত্রাপথের অনেক মজার মজার বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন খু ভালো লাগলো। আপনার ভিন্নধর্মী কিছু ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লাগলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
শুনে খুশি হলাম যে আমার ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ভাইয়া আমার ছবি গুলো ভালো লাগেছে,তবে একটা না বললেই নয়।সব কিছুর ভালো এবং মন্দ দিক আছে।তা হলো যোগাযোগ ব্যবস্তা ভালো না বিদায় আপনি ইজি বাইক ভ্যানে করে গিয়েছেন।আমার কিন্তুু ভ্যান জার্নি ভালো লাগে।আর যাই হোক ভাবির গিফটা দেখতে পারলাম না।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
ফাঁকা মাঠের মাঝখান দিয়ে যদি কোন রাস্তা থাকে, সেই রাস্তা দিয়ে ভ্যানে চড়ে যেতে সত্যিই দারুণ লাগে।
ভাইয়া,কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই প্রচুর ছবিগুলো তুলেছিলেন আর সেই ছবিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অসাধারণ সুন্দর লাগছে এই প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবিগুলো দেখতে। আপনার স্ত্রীকে দেবার জন্য যে গিফটটি আপনি কিনেছিলেন সেটিও আমাদের দেখিয়ে দিলেন ভাইয়া,দেখে খুব ভালো লাগলো। স্ত্রীদের মাঝেমধ্যে গিফট করলে তাদের মন ভাল থাকে এই কথাটি আপনার দেয়া গিফট দেখে মনে পড়ে গেল। আগে থেকেই প্ল্যান করে ভাবির জন্য গিফট কিনেছেন আর সেটি অনেকদূর রাস্তা বয়ে নিয়ে গেছেন, এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আপনার আম্মু ও আমাদের ভাবিকে নিয়ে ভালোভাবে নিজ বাসায় ফিরে আসেন এই কামনা করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। আমি ইতিমধ্যেই ফিরে এসেছি।
মামা হওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আশাকরি আপনার বোন ও ভাগ্নি দুজনে খুব সুস্থ আছে।আপনার ভ্রমণ কাহিনী খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেন। দেখে খুবই ভালো লাগলো আপনার ফটোগ্রাফ গুলো খুবই অসাধারণ হয়েছে। ভাবিকে গিফট দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া আপনার যাত্রা পথের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো আপনি ঐশী আপুর জন্য গিফট নিয়ে গেছেন। গিফট পেয়ে আপু নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে। আশা করছি আপনার বোনের বাসায় অনেক সুন্দর সময় কাটছে। অনেক সুন্দর সময় কাটান এবং ভাল থাকুন এই প্রত্যাশাই করছি ভাইয়া। সেইসাথে আপু এবং আপনার পথ চলা যেন অনেক বেশি সুন্দর হয় এই কামনাই করছি।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু। আমি ইতিমধ্যেই বাসা তে ফিরে এসেছি।
আপনার যাত্রা কাহিনী বলে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি যাত্রাপথে কয়েকটি পরিবহন পরিবর্তন করেছেন,যা আমি একটি বিরক্তিকর কাজ বলে মনে করি।যাত্রাপথে পরিবহন পরিবর্তন করতে আমার খুবই বিরক্ত লাগে।কিন্তু বর্তমানে রাস্তা গুলো খুবই উন্নত করা হচ্ছে আশা করা যায় ভবিষ্যতে এরকম ভোগান্তির শিকার আর হব না। সর্বোপরি আপনার ভ্রমণ কাহিনীর পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে আপনার ভ্রমণ কাহিনী তুলে ধরার জন্য।
যাত্রাপথে এমন বাহন পরিবর্তনের ঝামেলাটা বেশি মনে হয় যদি সাথে আরো কেউ থাকে। নিজে থাকলে অবশ্য কোনো সমস্যা মনে হয় না আমার কাছে ।
ভাইয়া আপনার যাত্রা পথের গল্পের পোস্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। যাত্রাপথের ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া। ভাইয়া আপনার আপু ও আপুর সন্তান সুস্থ থাক এই কামনা করি৷ আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
শুভকামনা জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
আপনার আপুর বাসায় যাত্রাপথের অনেক সুন্দর বর্ণনা করেছেন ভাইয়া। আসলে বর্তমান যাতায়াত ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়ায় সময় বেশি লাগে। বাসে মেয়েরা দাড়িয়ে গেলে খুবই কষ্ট হয়। অন্য দিক থেকে দেখতে গেলে উপর মহলের মানুষগুলো যদি সচেতন হয় তাহলে হয়তো এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে যাই হোক আপনি আমাদের প্রিয় ভাবির জন্য গিফট নিয়ে তার সাথে দেখা করতে আপনার আপুর বাসায় গিয়েছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আশা করছি আপনি খুব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসবেন এবং আমাদের মাঝে সময় দিবেন এই কামনা করছি। আপনার জন্য এবং ভাবীর জন্য শুভকামনা রইলো।
জি ভাই আমি ইতিমধ্যেই বাড়িতে চলে এসেছি। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
বেশ দারুন একটা জার্নি করেছিস তুই দোস্ত। অনেকদিন ধরে তোকে বলছি আমাকে একদিন সঙ্গে নিয়ে যাস আপুর বাসায় কিন্তু তুই আমার কথা রাখিস না। যাইহোক নেক্সটে আবার গেলে আমাকে অবশ্যই নিস।
অবশ্যই বন্ধু।। আমরা সবাই একসাথে বাইক নিয়ে একদিন যাব। এখন তো একটা কাজ নিয়ে গেছিলাম।