আমার ঈদের দিন।
হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামুআলাইকুম।
কেমন আছেন আপনারা সবাই? আপনাদের ঈদ কেমন কাটলো? এবার ঈদ ছিল সম্পূর্ণ বৃষ্টিময়। অনেকেই ঈদের অনুভূতির পোস্ট শেয়ার করেছেন, আমি দেখেছি। আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে পোস্টগুলো দেখতে বিশেষ করে ঈদের দিনের কিছু ফটোগ্রাফি। তবে এবারে আমি ঈদের দিনের কোন মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারিনি। কিন্তু ঈদের দিন কিভাবে কাটল সেটাই শেয়ার করব আজকে।
ঈদের দিন ঘুম থেকে উঠেছি খুব ভোরে। ঘুম থেকে উঠেই পেন্ডিং যত কাজ ছিল সব সেরে ফেলেছি দু ঘণ্টার মধ্যেই। বিশেষ করে কুরবানী ঈদে একটু সকাল সকাল ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এজন্য হাতে বেশি সময় ছিল না। কাজ সেরে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে নিলাম খুব দ্রুত। আমাদের ঈদের জামাত হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে আটটায়। আমাদের ঈদগায় প্রত্যেক বছর একটু লেটেই ঈদের জামাত হয়। ঈদুল আযহার জামাত এর থেকেও আগে হওয়া উচিত। যাইহোক খাওয়া দাওয়া সেরে রেডি হয়ে সবাইকে ঈদ সালামি দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম নামাজ পড়তে।
ঈদগাহে গিয়ে জানতে পারি ঈদের জামাত নয় টায় করা হয়েছে। পর্যাপ্ত মানুষ এসে পারেনি তখন পর্যন্ত তাই আধা ঘন্টা বিছানো হয়েছে। যাইহোক এরপর ৯টার সময় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ শেষ করে কবর জিয়ারত করতে যাই সবাই। কবর জিয়ারত শেষ করে পরিচিতজনদের সাথে কোলাকুলি আর হালকা আলাপচারিতা চলতে থাকলো। এরপর ঈদগা থেকে আসার সময় এক প্যাকেট পেঁয়াজু কিনে নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম। দ্রুতই বাড়িতে আসতে হলো কারণ অনেক কাজ রয়েছে।
বাড়িতে এসে লুঙ্গি গেঞ্জি পড়ে চলে গেলাম একদিনের কসাই হতে। আমাদের বাড়ির পিছনের অংশের এরিয়াটা অনেক বিশাল। আমার সব চাচারাই আমাদের এখানে আসে সবাই একসাথেই কুরবানী দেয়। আসলে এটা আমার কাছে উৎসবের মতন লাগে। খুব ভালো লাগে এই মুহূর্তটা। সবাই এক জায়গায় হয়ে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হওয়া। খুব দ্রুতই আমরা কোরবানীর কাজ শেষ করি। সেদিন ছাগলের চামড়া ছুলতে ছুলতে আমার হাতের আঙ্গুল ব্যথা হয়ে গিয়েছিল। আমাদেরটা শেষ করে এক চাচার ছাগলের চামড়া ছাড়াতেও হেল্প করেছিলাম। সেদিন অনেক মানুষ ছিলাম আমরা, আর কোরবানীও ছিল মোট ছয়টা।
কোরবানী দেওয়া পর্ব শেষ করে সবাই একসাথে বসেছিলাম মাংস বানাতে। সবাই একসাথেই কাজ করেছি যেন দ্রুত কাজ শেষ করতে পারি। কাজের মাঝখানেই প্রচুর বৃষ্টি নেমেছিল কিন্তু আমাদের তেমন সমস্যা হয়নি। কাজের জায়গায় আগে থেকেই ত্রিপল দিয়ে ছেয়ে নিয়েছিলাম। বারোটার আগেই আমাদের টার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। এরপর কাজ শেষ করে সোজা রুমে।
এবার শুধু অপেক্ষা কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া দাওয়ার। অপেক্ষায় রইলাম যতক্ষণ পর্যন্ত রান্না শেষ না হয়। ঐশী আর আম্মু আগে থেকেই রান্নার সবকিছু রেডি করে রেখেছিল। মাংস বাড়িতে আসার সাথে সাথেই চুলায় চড়িয়ে দিয়েছে। একটার দিকেই রান্নাবান্না সব কমপ্লিট। প্রত্যেকটা কোরবানি ঈদের দুপুর বেলা আমি প্রচুর খেতে পছন্দ করি। এই দিনে খাওয়ার একটা আলাদা তৃপ্তি আছে। গরিব ধনী সবাই এই দিনে ভালো-মন্দ খেতে পারছে। এজন্য ভালো কিছু খেতে বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায় এই দিনে।
যাই হোক আমি বসেছিলাম এক গামলা নিয়ে। ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত আর কষানো খাসির মাংস। আহ্ কি যে লাগছিল !! এমন খাওয়াই খেয়েছিলাম পরে আর বেশি নড়তে পারিনি। হাহাহা।। পেট টান করে শুয়ে পড়েছিলাম। এরপর বিশাল একটা ঘুম দিয়েছি। কুরবানী ঈদের দিন তেমন একটা কোথাও যাওয়া হয় না কারণ এ দিনে সবাই ব্যস্ত থাকে আর ব্যস্ততা শেষে সবাই একটু ক্লান্ত থাকে। যদিও সন্ধ্যার সময় একটু বাইরে গিয়েছিলাম কিন্তু বেশিক্ষণ বাইরে থাকিনি, আবার বাড়িতে চলে এসেছিলাম।
কোরবানি ঈদের রাতে আমাদের এখানে আবার সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া হয়। তার জন্য রান্নাবান্নার আয়োজন শুরু হয়েছিল সন্ধ্যা সাতটা থেকে। বিরিয়ানি রান্না করা হয়েছিল প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জনের। এই আয়োজনটাও আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। সমাজের সবাই একসাথে বসে খাওয়া-দাওয়া করা এটা অনেক আনন্দের। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের বাপ চাচারা এমনটা করে আসছেন।
এটাই ছিল আমার ঈদের দিনের গল্প। যদিও আমি একটু দেরিতেই শেয়ার করলাম। এবার বৃষ্টির জন্য তেমন একটা ঘোরাঘুরি করতে পারি নাই। আর কদিন আছে ছুটির। এর মাঝে আবার অনেক কাজও আছে হাতে। এরপর চলে যেতে হবে আবার সেই ঢাকায়। যাইহোক, আজ এখানেই তাহলে বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ঈদের দিনের জন্য একদিনের কষাই হয়েও বেশ তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করেছেন দেখছি। ঈদের দিন সবাই একটু বেশ পরিমাণে খাওয়া দাওয়া করে। আপনিও তাই করেছেন। এবার বৃষ্টি বেশ বাঁধার সৃস্টি করে কোরবানির কাজে। কিন্তু আপনাদের তেমন কষ্ট হয়নি পূর্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। ঈদে বেশ ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন সেই সাথে আনন্দ । ঈদের দিনের মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ঈদ মোবারক ভাইয়া। পরিবারের সবাইকে নিয়ে খুব সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো।আমাদের এখানে সারাদিন বৃষ্টি ছিল।খুব একটা ভালো লাগেনি সেদিনের বৃষ্টি। রাতে সবাইকে একসাথে নিয়ে বিরিয়ানি করে খাওয়া সত্যি ই খুব আনন্দের।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই কোরবানির ঈদের দিন আসলে সকাল সকাল হয়ে থাকে। দ্রুত নামাজ শেষ করে সবাই কোরবানির জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আপনার মত আমিও একদিনের জন্য কসাই হতে হয়। তবে ভাই খুব ভালো লাগে কাজ করতে ঐদিন। কোরবানির ঈদের দিন আসলে কোথাও বেড়ানো যা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে সন্ধ্যা আপনারা বিরানি রান্না করেছিলেন ২৫-৩০ জন এই সবাই মিলে একত্রিত ক্ষার মজাটা অন্যরকম। আর আপনার খাওয়ার কথাটা শুনে আমার ভীষণ হাসি পেয়েছিল। যাহোক অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ঈদের দিনে আপনাদের এলাকাতে বৃষ্টির সমস্যা হয়েছিল না এটা শুনে খুবই ভালো লাগলো। ঈদের দিনে আমাদের এলাকাতেও বৃষ্টি হয়েছিল না কিন্তু ঈদের পরের দিন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। ভালো বুদ্ধি করেছিলেন আগে থেকেই ত্রিপল দিয়ে জায়গাটা ঠিক করে নিয়েছিলেন।
পাগল নাকি ছাগল হবে, সুমন দা....?
আসলে আমি কখনো নিজের হাতে বড় কোনো প্রাণী এমনকি মুরগি পর্যন্ত কখনো মারিনি, আমার খুব ভয় করে। এজন্য তো এখন প্রায় খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি বললেই চলে মাংস। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ঈদের দিনটা।
তবে সুমনদা আপনি কি এক গামলা মাংস খেয়ে হজম করতে পেরেছেন। আসলে গামলার সাইজটা কত বড় ছিল এটা জানার খুব ইচ্ছা রইলো। 🤭🤭
হায় হায়। ছাগল হবে।
সেদিন গামলায় খাওয়া শেষ করে ৩ ঘন্টা পর আবার মেরেছিলাম।🤭