ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা সন্ধ্যে বেলা।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

হ্যালো বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই? ইতিমধ্যেই মোটামুটি শীতের আবির্ভাব দেখা যাচ্ছে সব জেলাতেই । গত তিনদিন ধরে প্রায় সব জায়গায় হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টির আগে তেমন একটা শীত ছিল না। মূলত প্রতিবছরই শীতের আবির্ভাব ঘটার পূর্বে এমন হালকা বৃষ্টিপাত দেখা যায়। এই বৃষ্টির পরপরই লেপ গায়ে দেয়ার মত শীত চলে আসে। শীত প্রিয় মানুষের জন্য এই সময়টা খুবই রোমান্টিক। আজ তিনদিনের যা অবস্থা!! আকাশ প্রায় সারাদিনই মেঘলা থাকে। আর মাঝেমধ্যেই তুষারপাতের মত ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এমন বৃষ্টির জন্যই ঘর থেকে তেমন একটা বেরোনো হচ্ছে না।

গতকাল দুপুরে কমিউনিটির সকল কাজকর্ম সেরে দুপুর বারোটার দিকে ফ্রি হয়েছিলাম । দু-তিন দিন ধরে বৃষ্টি হাওয়ায় পরিবেশটা ভীষণ ঠান্ডা। হাতে যা কাজ ছিল সবগুলো শেষ করে সোজা লেপের মধ্যে। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পরে চিন্তা করলাম এই বৃষ্টি বাদলের কারণে কোথাও বেরোনো হচ্ছে না। এরপর ফোন দিলাম এক ছোট ভাইকে আর আমার এক বন্ধুকে। আমরা প্ল্যান করলাম আমাদের বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে, গড়াই নদীর তীরে গিয়ে একটু সময় কাটাবো। সেখানে চন্দন চা, হালিম,নেহারি এগুলো পাওয়া যায় । দুপুর ২ টা ২৮ মিনিটে বাসা থেকে বের হলাম। আমি যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন বৃষ্টি হচ্ছিল না। তবে আকাশ খুব মেঘলা ছিল।

1636973552098-01.jpeg

আমি আর আমার বন্ধু রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। বাকি যাঁরা যাবে আমাদের সাথে তারা আমাদের এখানেই আসতেছিল। ৫/৭ মিনিট পর সবাই চলে আসলো আর আমরা বাইক নিয়ে একসাথে রওনা দিলাম। বাইকে উঠার পর বাতাসে মনে হচ্ছিল একদম বরফ হয়ে যাচ্ছি। আগে থেকে ধারণা করেছিলাম প্রচন্ড শীত লাগবে যাওয়ার সময় আর আসার সময়। এ জন্য একটা হুডি পড়ে গিয়েছিলাম। তারপরও প্রচন্ড শীত লাগছিল। ওভাবেই আমাদের গন্তব্য পর্যন্ত গেলাম। যাওয়ার পর প্রথমেই হতাশ। আমরা যে দোকানটা উদ্দেশ্য করে গিয়েছি সে দোকানটা এখন পর্যন্ত খুলেনি। কি আর করার, আর একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে গড়াই নদীর পাড়ে গিয়ে বসলাম। জায়গাটা খুবই সুন্দর লাগলো। আমি এপর্যন্ত কোন দিন ই এখানে আসিনি। গড়াই নদীতে প্রায় সবসময়ই স্রোত থাকে। গতকাল আমরা যখন গেলাম তখনও ছিল। আমরা যেখানে গিয়ে বসলাম তার পাশে একটি চায়ের দোকান ছিল। সেখান থেকে সবার জন্য এক কাপ করে রং চা অর্ডার দিলাম।

1636973644938-01.jpeg

1636973700673-01.jpeg

পরিবেশটা খুবই ঠাণ্ডা ছিল। আর বাতাসে এসে শরীরটা একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে । এমন অবস্থায় এক কাপ গরম চা সত্যিই অসাধারণ ছিল। চা খাওয়া শেষ করে আমরা অনেকক্ষণ ওখানেই বসে ছিলাম এরপর বাইক নিয়ে আরও সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম সামনে একটি ছোট্ট দোকানে চটপটি বিক্রি করছিল সেখান থেকে চটপটি খেলাম সবাই এক বাটি করে। চটপটিওয়ালাকে বলেছিলাম প্রত্যেকটা বাটিতে বেশি করে কাঁচা ঝাল দিতে। মোটামুটি ভালই ঝাল হয়েছিল চটপটিতে। চটপটি খাওয়া শেষ করে ঝালমুড়ি খেয়েছিলাম। ঝালমুড়িতে একটু বেশি লবণ দিয়ে ফেলেছিল। যার কারণে পুরোটুকু খেতে পারিনি। যাইহোক ঝাল মুড়ি খাওয়া শেষ করে আমরা আবার বাইকে উঠে ওই এলাকাটা একটু ঘুরে দেখলাম।

1636973780911-01.jpeg

1636973745730-01.jpeg

এরপর সোজা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। পথে দেখতে পেলাম এক জায়গায় ভাপা পিঠা বানাচ্ছে। কিন্তু সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়নি। যার কারণে আর দাঁড়ালাম না। সম্পূর্ণ হয়ে গেলে খেয়ে আসতাম। এরপর আবার রওনা দিলাম। এতক্ষণ অনেকটা সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার দিকে আরো বেশি ঠান্ডা লাগছিল। বাইকের পিছনে বসে আমার হাত দুটো পকেটের মধ্যে রেখে দিয়েছিলাম। হাত যখন বের করতেছিলাম তখন একদম বরফের মত ঠান্ডা লাগছিল। এরপর আমরা কিছুক্ষনের মধ্যে আমাদের এলাকায় এসে পৌছালাম। এলাকায় এসে পৌঁছানোর পর সবাই বলল বাজারে যেতে। গেলাম বাজারে। বাজারে গিয়ে ঘন্টাখানেক কাটানোর পর বাড়িতে চলে আসলাম। অনেকদিন পর একটু ঘুরাঘুরি করলাম। আশা করি আবহাওয়া আবার ঠিক হয়ে গেলে মাঝেমধ্যেই ঘুরতে যাবো আর আপনাদের সাথে মুহূর্তগুলো শেয়ার করব।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকেন সুস্থ থাকেন । খোদা হাফেজ।


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

ভাইয়া আপনি মনে হয় প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে খুব বেশি ভালোবাসেন ।সত্যিকথা বলতে আমরা সবাই প্রকৃতিকে ভালবাসি প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ভালবাসি ।আপনার প্রতিটি পোস্ট প্রতিটি ভ্রমণকাহিনী বেশিরভাগ নদীকেন্দ্রিক। নদী আমাদের মায়ের মতো তবে একটা কথা কি শীত নেমেছে নদীর আশেপাশে প্রচন্ড বাতাস শীতল বাতাস গরমের সময়ে বাতাস আমাদের প্রশান্তি দিলেও শীতের সময় বেশ ভোগাই ।আরেকটা যে বিষয় আপনি বরাবর বন্ধু প্রিয় মানুষ সেটা আপনার পোস্ট পড়েই আমি বুঝে গিয়েছি। বন্ধুদের সাথে আপনি ঘুরতে পছন্দ করেন সময় কাটাতে পছন্দ করেন ।প্রতিদিন বিকেলবেলা মনে হয় আপনি আপনার বন্ধুদের নিয়ে একটি সুন্দর দিন কাটানোর জন্য বের হন। দিনশেষে আমাদের সার্থকতা কোথায় আমি মনে করি একটি ভালো দিন পার করায় আমাদের জীবনের সবথেকে বড় সার্থকতা ।

 3 years ago 

আপনি সবগুলো কথাই একদম ঠিক বলেছেন। বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আমার খুবই ভালো লাগে। যদি কোনো ব্যস্ততার কারণে দু-একদিন কোথাও না যাওয়া হয় তার পরের দিন একটু বেশি দূরে ঘুরতে যাই আমরা সবাই একসাথে।

 3 years ago 

আসলে শীতকালে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকতে বেশ ভালো লাগে।খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাই। বিশেষ করে বিকেল বেলা নদীর তীরে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগে। চটপটি,হালিম বেশ মুখরোচক খাবার। আমি আপনার জায়গায় হলে ভাপা পিঠা খেয়ে চলে আসতাম। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

পিঠা খেতে চেয়েছিলাম কিন্তু একটু দেরী হবে বলে আর খাইনি। কারণ ওই জায়গাটা আমাদের বাড়ী থেকে বেশ দূরে অবস্থিত।

 3 years ago 

ভাই আমাদের এই দিকে একটু বেশি ঠান্ডা কারণ আমাদের দিনাজপুর জেলা হিমালয়ের কাছাকাছি এজন্য একটু বেশি ঠান্ডা। তাছাড়া সব জায়গাতেই ঠান্ডা পড়েছে।

 3 years ago 

হুম শীতের আগমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।এই ২-৩ বৃষ্টির কারণে আমার ও প্রচন্ড ঠান্ডা লেগেছে।সব শেষে আপনি চটপটির স্বাদ নিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে আপনি দারুন সময় পার করছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই।

 3 years ago 

শীতের সকাল , শীতের হালকা শীতল হাওয়া , তার সাথে কুয়াশা ঘেরা চারিদিক , সুন্দর এই মুহূর্তে পেয়ে গেলেন এক কাপ রং চা , জায়গা টা অনেক সুন্দর , একটি বোট গাছের নিচে , ঠিক যেন রমনার বটমূল , সব কিছু ঠিক ঠাক , মাঝে চটপটি দিয়ে দিলেন মাথা নষ্ট করে , এটাই আর ভালো লাগলো না।

 3 years ago 

ভাইয়া দুপুর থেকে বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করলেন। আপনারা গড়াই নদীতে ঘুরতে গিয়েছিলেন, গড়াই নদীটি খুবই সুন্দর একটি নদী। বেশ ভালোই ঘোরাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া দিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

গড়াই নদী সত্যি অনেক সুন্দর। হ্যাঁ বৃষ্টির কারণে মুটামুটি ভালোই শীত পড়েছে। মাঝে মধ্যে অবসর সময়ে ঘুরা আমিও পছন্দ করি। আর পানির কোন দেশে বেরানোর মজাই আলাদা। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

খুব সুন্দর একটি জায়গায় ঘুরে এলেন ভাইয়া৷ তবে এই যে শীতের আমেজে,একবার যদি ঠান্ডা লেগে যায়, তাহলে খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যাবে। সাবধানে থাকবেন। আর আপনার এই মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন,খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

আপনার অনুভূতি টা কিন্ত দারুন ছিলো ভাইয়া, যদিও এইভাবে এখনো এই শীতের মৌসুমে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। আপনার নদীর পাড়ে যাওয়া ,চা খাওয়া ,চটপটি খাওয়া বাইকে ঘুরতে যাওয়া সব মিলিয়ে ব্যাপার টা উপভোগ করতেছিলাম । শীতের মৌসুম আসলেই অনেক জোস লাগে, কিন্ত শীতের আগে এই বৃষ্টি ভালো লাগলেও একটি বিরম্বনার সৃষ্টি করে বিভিন্ন কাজে। এমন অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

শীতের সময় আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে সকালের কুয়াশা।

সে তো এক অন্য রকম অনুভূতি ভাইয়া। ভাবলে এমন টা হয়-ভোর সকাল,খালি রাস্তা আর সকালের কুয়াশা হাটতে বের হয়েছেন,জোস একটা ব্যাপার তাই না ভাইয়া? হিহিহিহি

 3 years ago 

সত্যিই ,আমাদের এখানে ও কয়েকদিন ধরে মেঘলা আকাশ তার সঙ্গে হালকা বৃষ্টির প্রভাব।শীতকালে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি বড়োই অস্বস্তিকর।যাইহোক শীতকালে জমিয়ে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভ্রমণ করতে ও খুবই মজার।যেহেতু আপনি মেঘলা দিনে নদীর তীরে ভ্রমণ করতে গিয়েছিলেন সেহেতু নদীর তীরে শীতল হওয়া বইছিল।এই হওয়া খুবই ভালো লাগে ,তবে একটু বেশিই শীতল।দাদা ,চটপটিটা দারুণ ছিল👌।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

নদীর আশেপাশে একটু শীত বেশি থাকে। কিন্তু আমি শীতের প্রটেকশন হিসেবে বেশি কিছু নিয়ে গিয়েছিলাম না। এইজন্য শীত করছিল অনেক।

 3 years ago 

এবার থেকে অবশ্যই নিয়ে যাবেন ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57408.28
ETH 3079.77
USDT 1.00
SBD 2.31