সঠিক সময়ের সঠিক শিক্ষা।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

fantasy-2861107_1280.webp

আমরা মানুষ। স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকি। আর আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কিছু না কিছু স্বপ্ন থাকে। স্বপ্ন ছাড়া আপনার জীবনটা পানসে মনে হবে। আপনি আজকে খুব খারাপ সময় পার করছেন, কিন্তু আপনার মনের মধ্যে যদি কোনো বড় স্বপ্ন থেকে থাকে সেটা আপনাকে খারাপ সময়টা পার করতে সাহায্য করবে। আপনি অনেক বেশি শক্তি পাবেন আপনার জীবনের চড়াই-উৎরাই পার দেওয়ার জন্য। এটাতো পরিপক্ক জীবনের থিওরি। কিন্তু আমাদের জন্মের পর যখন আমাদের শিক্ষা জীবন যখন শুরু হয়, অর্থাৎ প্রাইমারি লেবেল। ওই সময়টায় আমাদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা বা কোনো স্বপ্ন দেখা সত্যি হাস্যকর। কারণ আমরা ওই সময়টাতে সঠিকভাবে কোনো সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে পারিনা।

দুঃখজনক ব্যাপার হলো প্রাইমারি লেভেলের শিক্ষকরা এবং পরিবারের গার্জিয়ানরা একটা অদ্ভুত নিয়ম চালু করেছে। স্কুলে গেলে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করা হয় তুমি বড় হয়ে কি হতে চাও? গার্জিয়ানরা ও জানে স্কুলে গেলে তার বাচ্চাদের এই প্রশ্নটা করা হবে। এ জন্য আগে থেকেই বাচ্চাদেরকে মুখস্ত করিয়ে দেয়া হয় বড় হলে তুমি ইঞ্জিনিয়ার হবে অথবা তুমি ডাক্তার হবে অথবা সাইন্টিস্ট হবে বা অন্যান্য কিছু। এটি শুধু স্কুলে বলার জন্য নয়। বাড়িতেও এমনটা হয়ে থাকে। একটা ছোট শিশুর মনে গেঁথে দেওয়া হয় যে তুমি বড় হয়ে এই হবে, সেই হবে।
girls-6143072_1280.png

ওই সময়টাতে কোন বাচ্চার জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের সময় নয়। এ বিষয়ে গার্জিয়ানরা বড়ই অন্যায় করে থাকে বাচ্চাদের সাথে। আসলে গোড়ায় গলদ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়। আমি মনে করি একটি বাচ্চা যখন প্রাইমারি লেবেলে থাকে তখন নৈতিকতার শিক্ষা তাদের জন্য বেশি দরকারি। একটি বাচ্চা আসলে কি করতে চায় তার ভালোলাগাটা কোন জায়গা এগুলো অনুধাবন করতে হবে আর তাঁকে সেই দিকেই বেশি উৎসাহিত করতে হবে। সে যেন ওইটাই ভালোভাবে করতে পারে। যখন একটা শিশুর মনে আনন্দ থাকবে তখন সে যেটাই করবে সেটা খুব ভালো ভাবেই করতে পারবে। আমাদের সমাজের শিক্ষাব্যবস্থা এমন যে একটা বাচ্চা যখন স্কুলে যায় তখন তার যে ওজন তার থেকে বেশি ওজনের ব্যাগ তার কাঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় । শিশু মস্তিষ্কে প্রথমে যেটাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয় সেটা তাদের মধ্যে খুব ভালোভাবে গেঁথে যায়। এজন্য ওই সময়টাতে তাদের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানের ছেলেপেলের নৈতিকতার অবনতি এতটাই বেশি যে তাদের সাথে বেশি কথা বলা যায় না। নিজেকে অপমানিত হতে হয়। কথাবার্তার মধ্যে নেই কোন শালীনতা । এগুলোর দায়ভার পরিবারকে নিতে হবে কারণ ছোটবেলা থেকে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গুলোই মাথার মধ্যে ঢুকানোর চেষ্টা করেছে। কোন ধরনের নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। এইসব ছেলেপেলে যখন বড় হবে তখন গার্জিয়ানরাই এটা বুঝতে পারবে তারা কী ভুলটা করেছে। কারন তারা নিজেরাই সম্মান পাবে না। সেজন্য শিশু জীবন থেকে তাদের জীবনের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ না করিয়ে ভালো মানুষ কিভাবে হতে হয় সেটা শিক্ষা দেওয়াটা জরুরি।

mountain-6643768_1280.webp

প্রত্যেকটা মানুষের প্রতিভা ভিন্নরকম। বড় হয়ে যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের। নিজের ইচ্ছা আগ্রহ আর বিভিন্ন ভালোলাগা কে কেন্দ্র করে, জীবনে বড় কিছু হতে চেষ্টা করার জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে। এজন্য শুরুটা হতে হবে সঠিক শিক্ষা দিয়ে। একটি নির্দিষ্ট বয়সে যাওয়ার পর প্রত্যেকটি মানুষই তার নিজের মতো করে স্বপ্ন দেখা শুরু করবে। আর সেই স্বপ্নটাকে পুঁজি করে তার জীবনের লক্ষ্যে সে নিজেই পৌঁছে যেতে পারবে । স্বপ্ন ছাড়া তো আমরা কেউই চলতে পারিনা। এইজন্য স্বপ্নটাকে সঠিক সময়ে দেখতে দেওয়া উচিত। একটি মানুষ তখনই সবচেয়ে বেশী সফল হতে পারে যখন তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তার মধ্যে যথেষ্ট শক্তি থাকে। আর এই শক্তিটা হলো ওই লক্ষ্যের প্রতি ভালো লাগা, ভালোবাসা।


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

আসল কথা হচ্ছে আমরা যখন ছোট ছিলাম আমাদের মনে এমনভাবে গেঁথে দেয়া হয় যে আমাকে হয় ডাক্তার অথবা ইন্জিনিয়ার হতেই হবে অর্থাৎ টাকা তৈরির মেশিন রুপে চিন্তা করা হয়। আর একটা বিষয় সন্তানদের নিয়ে এমন একটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় একটি নাম্বার কম পেলেই সেরেছে। অমুক পেলো তমুক পেলো তুই কেন পেলিনা। আরে ভাই সবাই কি সবজান্তা সমশের হয়ে জন্মাবে নাকি। আসলে পিতা মাতার এগুলো বোঝা উচিত আর সন্তানকে প্রকৃত মানুষ রুপে তৈরি হবার সুযোগ করে দেয়া উচিত। খুব চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাই। খুব ভালো লাগলো।
শুভ কামনা রইল ভাই 🥀

 3 years ago (edited)

একেবারেই বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন ভাইয়া। এ যেন গার্জিয়ানদের মাঝে একটি প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে তাদের ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে, তাদের ছেলেমেয়েদের মেধা থাকুক আর নাই থাকুক।তাদের উপর জোর করেই যেন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাবা মায়ের ইচ্ছে কে। আপনার লেখাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো, অনেক সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন।

 3 years ago 

আমি এখন খুবই অস্থিরতার মধ্যে দিনপাড় করছি। কিন্তু আমি ভবিষ্যতের লক্ষ্য স্বপ্নের কথা ভেবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছি। যেটা ভাই আপনার পোস্টেও বলেছেন।

এবং ছোটবেলা স‍্যাররা জিজ্ঞেস করলে আমিও কিন্তু বলতাম আমি ডাক্তার হব😄😄। তবে ছোটবেলা আমি এইবেলা ভাবতাম আমি খেলোয়ার হব ওই বেলা ভাবতাম আমি পাইলট হব😄😄।

এবং বর্তমান সময়ের ছেলে মেয়েদের শালীনতার কথা কী বলব😐। এর জন্য বাবা মা দায়ী। বাবা মা সন্তানকে সময় দেয় না। টিভির সামনে বসিয়ে দেয় নিজের কাজের জন্য। ওই ছেলে টিভি স‍্যোসাল মিডিয়ায় যা দেখবে তাই তো শিখবে।

 3 years ago 

বর্তমানের ছেলেপেলের নৈতিকতার অবনতি এতটাই বেশি যে তাদের সাথে বেশি কথা বলা যায় না। নিজেকে অপমানিত হতে হয়। কথাবার্তার মধ্যে নেই কোন শালীনতা । এগুলোর দায়ভার পরিবারকে নিতে হবে কারণ ছোটবেলা থেকে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গুলোই মাথার মধ্যে ঢুকানোর চেষ্টা করেছে।

আসলে ভাই অনেক সুন্দর একটা বিষয় তুলে ধরেছেন।
যুবকদের এইসব খারাপ আচরণ বা নৈতিকতার জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে পিতামাতা বা অভিভাবক।
ছোটকালে আদর্শের ব্যপারে শিক্ষা দেয়া হয়নি।
যাইহোক অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

নৈতিকতার শিক্ষা টাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আমরা প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা এবং আমাদের প্রত্যেকের স্বপ্নগুলোও হয় ভিন্ন। কিন্তু এই স্বপ্ন দেখার ও স্বপ্নপূরণের একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। কিন্তু এ কথা আমরা অনেকেই বুঝতে শিকার হয় না যার ফলে আমরা একজনের স্বপ্ন অন্য জনের ওপর চাপিয়ে দেই, আর এর ফলস্বরূপ শুধু ব্যর্থতায় আসে জীবনে। তাই জীবনে সফল হতে হলে নিজের ভালোলাগাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত এবং আমাদের সবাইকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। এবং শিশুর ছোটবেলায় সে কী হবে তা নিয়ে মাথা ব্যাথা না করে তাকে নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান করতে হবে এবং সে বড় হয়ে কি হবে বা তার স্বপ্ন কি সেটা তার ওপরই ছেড়ে দিতে হবে, তবেই আমাদের সমাজ উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছাবে।
ভাই আপনি খুব সুন্দর শিক্ষামূলক একটি পোস্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ভাইয়া বরাবরের মতই আপনার পোস্টে কিছু না কিছু শিক্ষণীয় বিষয় থাকে। আর আপনি যে বিষয়টি আজকে উপস্থাপন করেছেন সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমাদের সময়কার শিক্ষা ছিল,বাবা-মা বলতো রাস্তায় ভড় দের সালাম দিবে। আর আমরা যদি দেখতাম বড় ভাই, বাবা, চাচারা রাস্তা দিয়ে আসছে তখন লুকায় থাকতাম ভয়ে। আর এখন রাস্তায় বের হইলে বা দোকানে গেলে নিজেদের সম্মানের ভয়ে নিজেরা লুকিয়ে থাকতে হয়। এখনকার ছেলেমেয়েরা আত্মসম্মানবোধ মান ইজ্জত এগুলো কি জিনিস জানেই না। আর ভাইয়া শিক্ষার কথা বলছেন হ্যাঁ এটা সত্য যে ছোটবেলা থেকেই কিছু না কিছু স্বপ্ন থাকে। আর গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে শিক্ষকরা পর্যন্ত জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়। আমি একটা বাস্তব পরিস্থিতির শিকার ছিলাম সেটা হচ্ছে আমাদের ক্লাসে 1 থেকে 20 পর্যন্ত যাদের রোল নাম্বার ছিল তাদেরকে জোর করে সাইন্স সাবজেক্ট নিতে বাধ্য করতো। নিজের ইচ্ছার কোন মূল্য থাকে না মা-বাবা শিক্ষকদের কাছে। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন। এত সুন্দর শিক্ষনীয় একটা বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইল ভাইয়া।

 3 years ago 

অসাধারণ একটি শিক্ষনীয় পোস্ট। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মানুষের জীবনে সফলতা এসে থাকে। সবাই স্বপ্ন দেখে কিন্তু বাস্তব জীবনে তা সফল করা সহজ কাম্য নয়। বাস্তব জীবনের চিত্র গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

শিশুদের মস্তিষ্কের আসলে কোন কিছু সেট করে দিলে সেটা দীর্ঘদিন তাদের হৃদয় থেকে যায় সেই বিষয়টা আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার বাস্তব জীবন থেকে ছোটবেলা থেকে উপলব্ধি করে এসেছি। এমন অনেক শিক্ষা খুব ছোটবেলায় পেয়েছি যে গুলো আজও মনে গেঁথে আছে। তাই আমি মনে করি আপনার সাথে একমত হয়ে যে, ছোটবেলায় তাদেরকে আমাদের নিজেদের কোনো ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তারা নিজেরাই একসময় সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে তারা কি হবে। একদম ঠিক বলেছেন যে, শুরুটা হওয়া উচিত সঠিক শিক্ষা দিয়ে।

 3 years ago 

আসলেই ভাইয়া দেখা যায় বেশিরভাগ মানুষের সফলতা আসে না একটাই কারণে সেটা হচ্ছে আমাদের স্বপ্নগুলো নিজের ইচ্ছেতে থাকেনা আমাদের স্বপ্নগুলো আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। নিজের কাজের প্রতি ঠিক তখন ভালোবাসা থাকে যখন কাজটা নিজের স্বপ্ন থাকে তখনই।

আপনি সবসময় খুব সুন্দরভাবে কথা গুছিয়ে লিখেন যেটা পড়লেই আসলে বুঝতে পারা যায় ।অনেক মানুষ আছে যাদের কথা অনেক সুন্দর হয় কিন্তু সেটি কঠিন ভাষায় থাকার কারণে সহজেই বুঝা সম্ভব হয় না।❤️❤️❤️❤️

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া,,ছোটবেলা থেকেই আমাদেরকে ধরে বেদে দেওয়া হয়,বাবা মা এর ইচ্ছে অনুযায়ী. অথচ তখন ও আমারা বুঝি না,জীবনের লক্ষ মানে কি.বাবা মা ইচ্ছে অনুযায়ী মরো কিংবা বাঁচো আমাদের ইচ্ছে পূরন করতে হবে.

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57431.51
ETH 3085.99
USDT 1.00
SBD 2.35