ফ্রিল্যান্সিং
হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? বহুদিন পর জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আজকে আমি একটা ভিন্ন রকম টপিক নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের কমিউনিটি তে অনেক ইউজার আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত। বাংলাদেশে বহু ফ্রিল্যান্সার আছে যারা প্রতিনিয়ত সফলতার সাথে বিভিন্ন রকম কাজ ডেলিভারি দিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিয়েই আজকের আলোচনা।
প্রথমত প্রত্যেকটি মানুষ যখন লেখাপড়া করে বা লেখাপড়া শেষ করে ওই মুহূর্তে সবাই খোঁজখবর নিতে আসে। দুর্দিনে খোঁজখবর নিবেনা এরা। কিন্তু মাঝে মধ্যে খোঁচা দিতে ঠিকই চলে আসবে। এই ধরুন আপনি কেন চাকরি পাচ্ছেন না ? আপনি কেন এই করছেন.. সেই করছেন...? তারা কি এটা বোঝেনা যে আপনার জীবন নিয়ে টেনশন আপনারই বেশি। আমাদের জীবনে তাদের এইসব আলগা কেয়ারিং এর কোনো প্রয়োজন নেই। তারা আসলে ভালো সহ্য করতে পারে না। এজন্যই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন টাইপের খোঁচা মারতে চলে আসে। বাংলাদেশে চাকরির বড়ই অভাব। এখানে চাকরী করতেই হবে এমন কোন কথা নেই। বাংলাদেশে বহু ফ্রিল্যান্সার আছে যারা তাদের লাইফটাকে সেটেল করে নিয়েছে ফ্রিল্যান্সিং করে।
ফ্রিল্যান্সিং হল এমন একটা পেশা যেখানে কারো উপর ডিপেন্ড করতে হয় না। নিজের স্কিল ব্যবহার করে Self-reliant হওয়া যায়। বাংলাদেশ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অবস্থান করছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের মতে বাংলাদেশ আছে দুই নাম্বারে এবং ভারত আছে এক নম্বরে। বাংলাদেশে প্রায় ৮ লাখ বেকার ফ্রিল্যান্সিং করে নিজেদের ব্যবস্থা নিজেরাই করে নিয়েছে। অফিশিয়াল তথ্যমতে এই সংখ্যাটা এরকম। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাটা ১০ লাখের ও বেশি। কারণ অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন বাইয়ারের কাজ পার্মানেন্টলি পেয়ে গেলে তাদের সাথে আনঅফিশিয়ালী কন্টাক করে কাজগুলো করে দেওয়া হয়। সেগুলোর অফিশিয়াল কোনো তথ্য না থাকায় সংখ্যাটা অনেক কম দেখায়।
বাংলাদেশ এবং ভারতে এত ফ্রিল্যান্সার তৈরি হওয়ার কারণ কি?? বাংলাদেশ-ভারতে বেকারের সংখ্যা প্রচুর। আর এখানে শ্রমের মূল্য টাও অনেক কম। বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি তাদের ছোট থেকে বড় বিভিন্ন ধরনের কাজ গুলো এমপ্লয়ি দিয়ে না করিয়ে এভাবে অনলাইন আস্কিং এ দিয়ে রাখলে তারা বেশি মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়। অনেক সময় অল্প মূল্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ হরহামেশাই করে দিচ্ছে ভারত বাংলাদেশের বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সাররা। এখানে শ্রমের মূল্য কম কিন্তু বেকার সমস্যা থাকায় বেকারদের কাজ অনলাইনে খুঁজে নিতে হচ্ছে। এতে করে বেকাররা বেকারত্ব ঘোচাচ্ছে এবং বিভিন্ন কম্পানি অল্প মূল্যে কাজ করিয়ে নিতে পেরে বেশি লাভবান হচ্ছে।
সময়ের সাথে সাথে দেখা গেছে বাংলাদেশ এবং ভারতে বহু দক্ষ ফ্রিল্যান্সার গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা তো এখন প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিটেন্স নিয়ে আসছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সরকার এতে উৎসাহ দেয়ার জন্য ২.৫% প্রণোদনাও দিচ্ছে। আসলে এখন মানুষ অন্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনছে। অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কেউ পছন্দ করেনা। "স্বনির্ভরশীলতা" সত্যিই মানসিক দিক থেকে বড় একটি তৃপ্তি পাওয়া। এত সুন্দর একটি পেশা, এত শান্তির একটা পেশা, যেটা সমাজের মানুষ ততটা ভাল চোখে দেখেনা। এটা সমাজের একশ্রেণীর মানুষের প্রবলেম। কিন্তু সবসময় চাইবো আমার দেশের ফ্রিল্যান্সাররা এগিয়ে যাক। বিশ্বদরবারে তাদের সুদক্ষ হাতের কাজ দেখিয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক এবং প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে আনুক।
ফ্রিল্যান্সিং আসলে এমন একটি পেশা এখানে প্রচুর স্বাধীনতা আছে। কিন্তু নিজের স্কিল অবশ্যই স্ট্রং রাখতে হবে। শুধুমাত্র টাকার নেশায় যারা ফ্রিল্যান্সিং এর পিছনে ছুটে ( উইদাউট স্কিল) তাদের অনেকেরই আমি ঝরে পড়তে দেখেছি। তারা অনেক হাইভে উঠে যায়। এরপর আবার নিমিষেই ঝরে যায়। এ জন্য সবসময়ই দক্ষতার গুরুত্ব রয়েছে। দক্ষ হয়ে যে কোন সেক্টরে পদার্পণ করাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। হুটহাট যে কোনো জিনিসই ভালো নয়।
হুটহাট কোনো জিনিসই যে ভালো নয় তার প্রমান আমাদের বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তেও অহরহ পাওয়া যায়। এখানে যারা দক্ষতার সাথে ব্লগিং করছে তারা প্রতিনিয়তই ভালো আর্ন করছে, যেটা আমাদের চোখে সব সময়ই পরে। কিন্তু যারা শুধুমাত্র টাকা ইনকাম করবে এই নেশায় এখানে এসেছিল, এখন পর্যন্ত তাদের একজনও টিকে নেই। প্রত্যেকেই ঝরে গেছে। তাদের মধ্যে ব্লগিং এর প্রতি কোন প্রকার ভালোলাগা ছিল না। আর যারা ব্লগিংকে ভালোবাসে, এঙ্গেজমেন্টকে ভালোবাসে, সবার সাথে সহাবস্থান করতে ভালোবাসে তারা এখানে সুন্দর একটি পরিবার তো পেয়েছেই এবং অর্থ উপার্জন করছে। আশা করি তাদের ভবিষ্যৎ আরো অনেক সুন্দর হবে। যাই হোক আজকে এ পর্যন্তই। দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
সত্যই তাই,আমি কি করছি না করছি তা নিয়ে বাহিরের লোকেরই যত মাথা ব্যাথা।
অনেকসময় এমনও দেখেছি যে,তারা এভাবে বলে-সারাদিন ঘরের মধ্যে থাকে,আবার দুই হাত ভরে খরচও করে।যখন তাদের বলি,তারা আবার বুঝেনা।বলে না এ ছেলে বলছে এটা বাট করে অন্যকিছু।
তাদের এড়িয়েই কাজ করতে হবে।বুঝ হইলে এমনি বুঝবে।ভালো লিখেছেন ভাই, শুভ কামনা রইলো 🧡🤍
যেকোনো কাজেই নিজের ভালোবাসাটা অসম্ভব প্রয়োজন।তা না হলে সফল হওয়াটা প্রায় অসম্ভবের সমান।
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাই আমাদের ক্যারিয়ার নিয়ে আমাদের চেয়ে অন্যের টেনশন টা বেশি কেন রে ভাই। বাংলাদেশের মানুষ এখনো বিশ্বাস করে ফ্রীল্যান্সিং করে কিছু করা যায়। তাদের ধারণা আজ এটা আছে কাল থাকবে না। যাইহোক ফ্রীল্যান্সিং বিষয়ে দারুণ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন। এগুলো আমাদের জানা উচিত। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
বেকার সমস্যা দূরীকরণে বাংলাদেশের শিক্ষিত বেকার যুবকরা নিজের দক্ষতায় বিভিন্ন রকমের ব্লগিং বা ফ্রিল্যান্সিং এসব কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। আসলে সবাই তাদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে নিজের সফলতা অর্জনের চেষ্টা করছে। এজন্য যদি অন্য কেউ তাকে অপমান করে বা ছোট করে তাহলে সেটা তার মানসিকতার সমস্যা। তবে যাই হোক আমরা সকলেই আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি এবং ব্লগিং করতে ভালোবাসি। আশা করছি যতদিন এই প্লাটফর্মে কাজ করবো ততদিন সঠিকভাবেই কাজ করবো ও মন থেকে ভালোবেসে কাজ করবো। অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষনীয় কিছু কথা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।💓💓💓
ভাই আপনার আজকের পোষ্টে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য জানলাম। বাংলাদেশ যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্বিতীয় পজিশন এ আছে এ তথ্য জানা ছিল না। আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন যারা অন্যের ভালো সহ্য করতে পারে না তারাই এভাবে খোঁচা মারতে পছন্দ করে। বর্তমানে আমাদের দেশের তরুণ সমাজের উচিত সরকারি চাকরির পেছনে এভাবে না ছুটে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিজেই করে নেয়া। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।