ম্যাজিক বক্সে বন্দি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা।
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজ আমি একটি ভয়াবহ সমস্যার কথা চিন্তা করলাম। একটা জেনারেশন থেকে আরেকটা জেনারেশনের মধ্যে পার্থক্য কতটা বেশি হতে পারে সেটা আমরাই সবচেয়ে ভালো জানি বোধহয়। বিষয়টি বুঝতে বেশি কাঠ খড় পুড়ানোর প্রয়োজন নেই। আমাদের ছোটবেলার জীবনটা কেমন ছিল এখনকার ছেলেপেলের লাইফটা কেমন সেটা দেখলে বোঝা যায়।

প্রত্যেকটা সিজনেই আমরা কোন না কোন ভিন্ন ভিন্ন রকমের খেলাধুলা বা উৎসবে মেতে থাকতাম। এই যেমন এখন ঘুড়ি ওড়ানোর পারফেক্ট সময়। ছোটবেলায় স্কুল থেকে এসে গোসল খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দৌড়ে চলে যেতাম মাঠের পাশের বাগানে। সাথে নিতাম চার-পাঁচটা নারিকেল পাতার শলা, পুরনো পেপার আর সুঁতা। বাগানের পাশেই ছিল একটি বড় বাউলার গাছ। কখনো কখনো এমন হয়েছে ভাতের আঠা দিয়েও ঘুড়ি বানিয়েছি। প্রায় দিনেই নতুন নতুন ঘুড়ি বানানো আর টুটা সুতো দিয়ে উড়িয়ে সেগুলো শেষ বেলায় সুতা সহ ঘুড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে আসা ছিলো আমার হ্যাপিনেস৷

এখনকার ছেলেপেলেকে ঘুড়ি উড়াতে দেখিনা খুব একটা। এখন খুব অল্প কিছু ঘুড়ি আকাশে দেখা মেলে মাঝে মধ্যে। অথচ এই টাইমটাতে আমাদের সময় আকাশটা ছেয়ে থাকতো রংবেরঙের ঘুড়িতে। এখন সবার হাতেই ফোন। আর এই ফোনই সবাইকে ধ্বংস করে দিল।

আমাদের বাড়ির পাশে একটি বড় খাল ছিল। ওটাকে আমরা জোলা বলতাম৷ এ সময় পানি থাকতো না আর কচুরিপানা গুলোও শুকিয়ে যেত। গোল্লাছুট খেলার জন্য একদম পারফেক্ট ছিল। বিকেল বেলা হলেই সবাই চলে আসতো মাঠে কাউকে আলাদাভাবে ডাকতে হতো না। গরমের সময় খেলাধুলা করতে করতে ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা হয়ে যেত। পুরো শরীর একদম ভিজে পানি গড়িয়ে পড়তো। সন্ধ্যায় যখন খেলা শেষ হতো তখন সবাই একসাথে বসে জিরিয়ে নিতাম। মাঝেমধ্যে খেলায় দেরি হয়ে গেলে বাড়ি থেকে মায়েরা ছুটে আসতো আর বকা দিতে দিতে বাড়ি নিয়ে যেত।

আমাদের বাড়ির পাশে সেই জায়গাটা আগের মতই আছে। আমাদের পরবর্তীতে কোনো ছেলেপেলে কে সেখানে খেলতে দেখিনি আর। এরা থাকে কোথায়? এদের বিনোদনের ব্যবস্থা কী? এদের বিনোদনের ব্যবস্থা এখন ম্যাজিক বক্সে বন্ধি। আর এই ম্যাজিক বক্সই সবাইকে ধ্বংস করে দিল।

হাজার রকমের খেলাধুলা, দুষ্টুমি আর বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল সে সময়। এখনকার জেনারেশন এক ভয়ংকর অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অল্প বয়সে ফোন অ্যাডিক্টেড হয়ে গেলে সেটার ভয়াবহতা চরম মাত্রায় পৌঁছে যাবে। এর খারাপ ইফেক্ট সমাজের প্রত্যেকটা পরিবারেই দৃশ্যমান হবে খুব শীঘ্রই। অশ্লীলতার মাঝে ডুবে থাকা এখন খুবই সহজ। আপনার সন্তানের দিকে নজর রাখুন।

children-1822704_1280.jpg

Source



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy


20240320_225328_0000.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

20230619_2107145.gif

Sort:  
 2 months ago 

সেই সময় অপেক্ষায় থাকতাম কখন স্কুল ছুটি হবে বাড়িতে গিয়ে নিজের বানানো ঘুড়ি নিয়ে মাঠের দিকে ছুটবো। যখন ছুটি পেতাম সবার আগে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করতাম । ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করেই আগে ঘুড়ি নিয়ে মাঠের উদ্দেশ্যে ছুটে চলে যেতাম। বাতাস যদি না থাকে তাহলে ঘুড়ি উড়াতে পারবো না। কি আনন্দ পেতাম কখনো ঘুরে ছিঁড়ে চলে গিয়েছে আবার তার পিছনে দৌড়ে চলে গিয়েছে। আবার কখনো গাছের ডালে বেঁধে আছে কিছুই করার থাকতো না। আবার বাড়িতে এসে ঘুড়ি বানিয়ে মাঠের দিকে দৌড়ে চলে যেতাম।

 2 months ago 

আসলেই ভাই এই ম্যাজিক বক্স সবাইকে একেবারে শেষ করে দিয়েছে। আমরা তো ছোটবেলাটা উপভোগ করতে পেরেছি। কিন্তু এখনকার ছেলেমেয়েদের জন্য আফসোস হয়। তারা শৈশবটা উপভোগ করতে পারলো না,আবার যে পরিমাণে মোবাইলে আসক্ত, এতে করে চোখে চশমা দিতে হবে তাড়াতাড়ি। এছাড়া অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে নানান ধরনের অসুখ বিসুখ শরীর বাসা বাঁধবে। প্রতিটি অভিভাবকের উচিত ছেলে মেয়েদের দিকে ভালোভাবে খেয়াল রাখা। নয়তো সামনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পরতে হবে। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 months ago 

আসলেই! একটা জেনারেশন থেকে আরেকটা জেনারেশন এর পার্থক্য যে হুট করে কতটা হয়ে যেতে পারে, তারই উৎকৃষ্ট প্রমাণ যেন আমরা চোখের সামনেই দেখতে পারছি। এখনকার বাচ্চারা যেন আসলেই ম্যাজিক বাক্সের মায়ায় এমনভাবে বন্দি,, তাদের চোখে আর প্রকৃতির কিছুই টানে না! গাছে চড়া কি জিনিস, পুকুরে মাছ ধরা কি জিনিস এদের বেশিরভাগ ই জানে না!

 2 months ago 

আপনার কথাটা শুনে গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের গানটার কথা মনে পড়ছে। অজ থেকে ৩০ বছর আগেই উনি কথাটা বলে গিয়েছিলেন। পৃথিবী টা নাকী ছোট হতে হতে স‍্যাটালাইট আর ক‍্যাবলের হাতে বন্দী। অবস্থা টা এখন তাই। বতর্মান জেনারেশনের সবকিছু ঐ মোবাইল ফোনের মধ্যেই বন্দি এর বাইরে কিছু নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.12
JST 0.027
BTC 55173.73
ETH 2879.85
USDT 1.00
SBD 2.30