লোডশেডিং যখন ভালো লাগে!!
আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি লোডশেডিং নিয়ে কিছু কথা বলতে চাচ্ছি আর আমার ছোটবেলার কিছু মজার ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তাহলে চলুন শুরু করি।
অনেকদিন যাবৎ অনেক বেশি লোডশেডিং হচ্ছে বাংলাদেশে। এর কারণ দেখানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি। বিশ্ববাজারের অস্থিরতা বাংলাদেশকেও খুব ভালোভাবে নাড়া দিয়েছে। বহুদিন হলো লোডশেডিং সমস্যা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। মানুষ এক প্রকার অতিষ্ঠ প্রায়। মানুষ যখন নতুন কোন কিছুর সাথে ইউজড হয়ে যায় তখন সেটা ব্যতীত সার্ভাইভ করা একটু কঠিন হয়ে যায়। এক সময় গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ ছিল না। মানুষ তখন সুন্দরভাবেই জীবন যাপন করেছে। কিন্তু এখনতো প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক সুযোগ-সুবিধা এসেছে। জীবন যাত্রার মান সহজ হয়েছে। হঠাৎ করে মানুষের কাছ থেকে ওইসব সুবিধাগুলো যদি কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে জীবনযাত্রার মান অনেক কঠিন হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।

image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ে মেইন শহর গুলোতে হয়তো সারা দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হয়। কিন্তু গ্রাম অঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সারা দিনে তিন চার ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে হয়তো। এখন লোডশেডিং হওয়ার কারণে যেই অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ থাকে সারাদিনে গ্রাম অঞ্চলে, আমাদের ছোটবেলায় সেই অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ থাকাটাই ছিলো স্বাভাবিক ব্যাপার। ঐ সময়ে গ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ থাকত খুবই কম। আর বিশেষ করে রাত্রে বেলায় এই বিদ্যুৎ না থাকার ব্যাপারগুলোই আমাদের ছেলেমানুষি মনে অনেক বেশি আনন্দ যোগাত। নব্বইয়ের দশকের ছেলেমেয়েগুলোই বুঝবে এর আসল মজা ।
পড়ার টেবিলে একদমই মন বসতো না। পড়তে পড়তে যখনই দেখতাম বিদ্যুৎ চলে গেছে আমরা সবাই দৌড়ে রাস্তায় চলে যেতাম। আশেপাশের সব বাড়ি থেকে ছেলেপেলে গুলো লোডশেডিং হলে রাস্তায় দৌড়ে চলে আসতো। আমাদের বাড়ির উঠানে, রাস্তায় সব জায়গায় আমরা ছোটাছুটি করে বেড়াতাম, লুকোচুরি খেলতাম। আবার যেই মুহুর্তে বিদ্যুৎ চলে আসতো, মায়েরা বকাবকি শুরু করতো । তখন গিয়ে আবার পড়ার টেবিলে বসতে হতো। তখন বিদ্যুৎ থাকাটাই ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার। ।

image source & credit: copyright & royalty free PIXABAY
স্বাভাবিক সময় গুলোতে লোডশেডিং হলে আমরা ছুটি পেয়ে যেতাম। কিন্তু যখন পরীক্ষা থাকতো সামনে তখন পড়ার চাপ টা অনেক বেশি দিতো বাড়ি থেকে। তখন লোডশেডিং হলেও আর বাইরে যেতে দিত না। পড়ার টেবিলে একটা হারিকেন বসিয়ে দিত। আমি আবার হারিকেন পেলে একটা মজার কান্ড করতাম মাঝেমধ্যে। বাবা যখন আপেল কিনে নিয়ে আসতো, সে আপেলের উপরে নরম প্লাস্টিকের যেই খোসা থাকতো, ওইগুলো ছিড়ে ছিড়ে হারিকেনের গরম কাঁচের সাথে ধরতাম। কাঁচ অনেক গরম থাকায় ওই খোসা গুলো গলে গলে ফুরিয়ে যেত। আমি খুব মজা পেতাম। আর হারিকেনের কাঁচের অবস্থা বারোটা বেজে যেত। কাঁচের গায়ে অসংখ্য দাগ পড়ে যেতে। পারে এটা দেখে আম্মু খুব বকা দিত।
আমাদের ঘরে ঐসময় হারিকেন এবং বাতি দুটোই ছিল। রাত্রে কোন কিছু রান্না করার প্রয়োজন হলে আম্মু বাতির আলোতে রান্না করতো। আর হারিকেন আমাদের পড়ার টেবিলে থাকতো। দিনগুলো সত্যিই অনেক মজার ছিল। নব্বইয়ের দশকের ছেলেপেলে ওই দিনগুলোর অনুভূতি কখনো ভুলতে পারবে না। তবে নব্বই দশকের পরের ছেলেপেলে গুলো কখনোই এই অনুভূতিগুলো বুঝতে পারবে না। এটা গ্যারান্টি। যাই হোক, সেই সময় গুলো অসাধারন ছিল। ফিরে পাওয়া যাবে না আর কখনই। কেরোসিনের গন্ধ নাকে আসলেও সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে। সবটাই স্মৃতিতে রয়ে গেছে। আপনাদের ছোটবেলার অনুভূতিগুলো আশা করি কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

ভাইয়া শহরে তো দৈনিক ৩/৪ ঘন্টা করে লোডশেডিং দিচ্ছে। গ্রামে সব মিলিয়ে ৩/৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ দিচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধার পরে বিদ্যুৎ না থাকলে ছেলে মেয়েরা পড়তে বসতে চাই না। সামনে আবার পিএসসি পরিক্ষা। কি যে করবো কিছু বুঝতে ছিলা। ধন্যবাদ ভাইয়া সমসাময়িক একটি পোষ্ট করার জন্য।
লোডশেডিং এত হতে থাকলে সত্যি এটা বড় একটা চাপের বিষয়। স্বাভাবিক জীবন যাপনে একটা বড় সমস্যা আর আরেকটা কথা যেটা লন্ঠন দেখে খুব ভালো লাগলো আমার। পুরনো কিছু স্মৃতি মনে পড়ল। ধন্যবাদ এই লেখাটির জন্য।
নব্বই দশকের ছেলেমেয়েরা যে অনুভূতির সাক্ষী ছিল আজকালকার সময়ের ছেলেমেয়েরা সেই অনুভূতিগুলো কখনোই কল্পনা করতে পারে না। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে তাই তো সব কিছুর উন্নতি হয়েছে। এখন আর লোডশেডিং এর মাঝে তারা আনন্দ খুঁজে পায় না। বরং বিরক্তি খুঁজে পায়। অনেকে তো হারিকেন চিনেইনা। আমি যেহেতু আমার বাবার চাকরীর সুবাদে শহরে থাকলাম তাই লোডশেডিং এর মুহূর্ত গুলো খুব একটা ভালো কাটেনি। যখন লোডশেডিং এর সময় ঘরে মমবাটি জ্বালানো হত তখন গলে যাওয়া মম খাতার উপরে ফেলে নাম লেখার চেষ্টা করতাম। আবার সেগুলো তুলে তুলে মোমের উপরে দিতাম।
তবে ভাই আমি একটু হলেও পেয়েছি সেই ভাগ্যের ছোয়া।
আমার ৫/৬ বছর পর্যন্ত হয়তোবা হারিকেনের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল।তারপর থেকে আজও আর দেখা নেই।
চাচু,আমি আর বাবা হারিকেনের আলোয় একসাথে ভাত খেয়েছি,আফছা আফছা ভাসছে স্মৃতিগুলো।
লোডশেডিং নিয়ে কিচ্ছুই বলবোনা,কারণ এখন আমি অন্ধকারে বসে ঘর্মাক্ত দেহে মশার কামড় খেতে খেতেই কমেন্ট করছি🙂।
ছোট বেলাটার কথা মনে আবার ও মনে করিয়ে দিলেন ভাইয়া । যদি হয় লোডশেডিং আর আকাশে থাকে চাঁদ তবে লুকোচুরি খেলা আর কে আটকায় আমাদের । এরপর যেন কারেন্ট আসাটায় আমাদের জন্য বিরক্তির কারণ ছিল । কারণ আবার তো ডাক পড়বে পড়তে বসার জন্য ।
হারিকেন নিয়ে আমি ও কিছুটা মজার কান্ড করতাম বার বার আলো কমানো বাড়ানো ছিল পড়া বাদ দিয়ে খেলা । ল্যাম্প হলে তো ফু দিয়ে নিভিয়ে দিয়ে বলতাম দমকা বাতাসে নিভে গেছে ।
আসলে সবারই ছোট বেলার ছোটাছুটি, দুরন্তপনা কেমন যেন অদ্ভুদ ভাবে মিলে যায়। ওই সময় ৯০ এর দশকে আমরা যখন গ্রামে যেতাম। তখন পল্লী বিদ্যুতের লাইন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যরকম উন্মাদনা কাজ করত। কারেন্ট যাওয়ার পর বিশেষ করে চাঁদনী রাতে আমরা নানান ধরনের খেলায় মেতে উঠতাম। কিন্তু আমার হারিকেন জ্বালিয়ে পড়তে একদমই মন বসতো না। তারপরে কারেন্ট গেলে সবাই একত্রিত হয়ে লুকোচুরি ও গোল্লাছুট খেলতাম। এখন সব স্মৃতি ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল ।আসলেই ছোটবেলায় যখন লোডশেডিং হতো তখন আমাদের অনেক ভালো লাগলো । বিদ্যুৎ না থাকলে দৌড়ে রাস্তায় চলে যেতাম যেয়ে সবাই একসাথে আড্ডা দিতাম গল্প করতাম কিন্তু আম্মু অনেক বকুনি দিত । যখন বিদ্যুৎ থাকতো না তখন কি মজা লাগতো আর বসতাম না পড়তে ।পরীক্ষার সময় অনেক চাপ পড়ে যেত ।আসলেই শহরে বিদ্যুৎ একটু কম যায় ।গ্রাম অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ লোডশেডিং বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে ।ধন্যবাদ ভাইয়া ছোটবেলার কথা আবার আমাদেরকে পুনরায় মনে করে দেওয়ার জন্য ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়তে পড়তে কখন যে শৈশবের দিনগুলোর মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। ছোটবেলায় যখন পড়তে বসতাম তখন মনে মনে শুধু চিন্তা করতাম তখন লোডশেডিং হবে। লোডশেডিং হলেই বই বন্ধ করে খুশি মনে সবাই বাড়ির উঠোনে খেলতে যেতাম। আমাদের বাড়িতে যেহেতু অনেক সদস্য ছিল তাই চাচাতো ভাইগুলোর সাথে অনেক আনন্দ করতাম। সেই সময়টাতে লোডশেডিং যাওয়ার কষ্ট কখনোই মনে হয়নি। মনে হতো যেন লোডশেডিং এর সময়টা আমাদের জন্য অনেক বেশি আনন্দের ছিল। ভাইয়া আপনি আপনার শৈশবের স্মৃতিগুলো তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ❤️❤️
ভাই রাতের আকাশে চাঁদ থাকবে আর একটু গরম আবহাওয়া সেই সময় যদি লোডশেডিং হয় তাহলে কিন্তু সবচেয়ে বেশি মজা হয়। সমবয়সী ছেলেমেয়েরা একসাথে চাঁদনী রাতে রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করতে বেশ ভালো লাগতো। ছোটবেলার সেই স্মৃতিগুলো এখনো খুব মনে পড়ে।
বর্তমানে লোডশেডিং খুবই খারাপ অবস্থায় আছে দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকেনা খুবই বাজে অবস্থায় আছি আমরা সবাই।আমাদের বাড়ি একদম গ্রামে ছিল বিদ্যুৎ ছিলনা বছর পাঁচেক আগে বিদ্যুৎ এসেছে আমাদের এলাকায়। আমরা ছোট বেলায় হারিকেন দিয়ে পড়াশোনা করেছি, বিকাল হলেই হারিকেনের চিমনি ছাই দিয়ে ডলে ডলে তারপর পরিস্কার কাপড় দিয়ে খুব ভালো করে মুছে নিতাম যাতে বেশি আলো হয় আর পড়তে সমস্যা না হয় এভাবেই অনেক বছর কাটিয়েছি, তারপর আসলো সৌরবিদ্যুত তখন একটু হলেও সমস্যার অবসান ঘটলো। তবে আমি মনে করি সেই দিন গুলোই অনেক বেশি ভালো ছিল। খুব মিস করি সেই হারিকেনের আলো কে।