সুযোগ পেয়ে ছুটে চলা।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

বৃষ্টিভেজা দিনগুলো কেমন কাটছে আপনাদের? মাঝেমধ্যে বৃষ্টি ভালো লাগে আবার একভাবে দুই তিন দিন যাবত আকাশ মেঘলা সাথে বৃষ্টি, এই পরিবেশটা অনেক সময় বোরিং লাগে। আজ কয়েকদিন যাবত পরিবেশটা তো এমনই যাচ্ছে। এজন্য বেশি একটা বেরোতে পারছিনা বাড়ি থেকে। অনেকদিন হলো তেমন একটা ঘোরাঘুরিও করা হচ্ছে না। তাই চিন্তা করলাম বিকেলের দিকে বৃষ্টি কোন মত কমলেই বাইরে যেতে হবে। শুধু আমার এই অবস্থা না। আমরা যারা বিকেলে একসাথে ঘুরাফেরা করি তাদের প্রত্যেকেরই একই অবস্থা। অনেকদিন যাবত তেমন কোথাও যাওয়া হয় না। তাই গতকাল দুপুরে সবাই মিলে চিন্তা করলাম আজ তিনটার দিকে বের হব। তিনটার দিকে মোটামুটি রেডি হয়ে বসে আছি, কিন্তু দেখি আবার হঠাৎ বৃষ্টি। মেজাজটা গরম ই হয়ে গেল। তারপর অপেক্ষা করতে করতে প্রায় ২ ঘণ্টা পর দেখলাম বৃষ্টি মোটামুটি কমে গেছে। তারপর আর দেরী না করে সবাই বেরিয়ে পড়লাম।

আমি রেডি হয়ে রাস্তার উপর গিয়ে দেখলাম বন্ধু আমার চলে এসেছে। এরপর আমিও ওর সাথে বাজারের দিকে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর কিছু ছোট ভাইয়েরা ও চলে আসলো। কোথাও গেলে ওরা সবসময় একসাথেই থাকে।বাজার পার হয়ে একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে ওখানে একটা ফাঁকা জায়গা দেখে দাড়াইলাম। সামনেই ছিল পদ্মা নদীর কোল অর্থাৎ শাখা নদী যেটাকে বলে। জায়গাটা বেশ সুন্দর নিরিবিলি। সামনের প্রাকৃতিক দৃশ্য টাও অনেক মনোরম। আর নদীতে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে আমার কাছে বরাবরই অনেক ভালো লাগে। এখানে প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন সদস্যের জেলেদের ২ টা দল, তারা নদীতে জাল ফেলে এরপর দুই দিক থেকে সবাই একসাথে টেনে উপরে উঠায়।

1634640614616-01.jpeg

1634640642578-01.jpeg1634640670181-01.jpeg

যেকোনো জেলেই এখানে ইচ্ছে করলেই মাছ ধরতে পারে না জাল দিয়ে। বড়শিতে যে কেউ ধরতে পারবে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু জাল দিয়ে মাছ ধরা শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক জেলেদেরকে পারমিশন দেওয়া আছে। আর যাদেরকে পারমিশন দেওয়া আছে তারা একটা নির্দিষ্ট পার্টির লোক। প্রত্যেক বছর এই পুরো কোল একটা নির্দিষ্ট পার্টি নিলামে কিনে নেয়। এরপর তারা এখানে মাছ ছাড়ে। আর প্রাকৃতিকভাবে যে মাছগুলো থাকে সেটা এক্সট্রা লাভ। যে বছর যে পার্টি নিলামে কোলটি কিনে নেবে সেই পার্টির নিজস্ব জেলেরাই সারাবছর মাছ ধরতে পারবে। এটাই নিয়ম। আমরা অনেকক্ষণ যাবৎ এই মাছ ধরার দৃশ্য গুলো এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। প্রায় ১৫ মিনিট পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকেও তেমন একটা জাল গোছানো দেখতে পারি নাই। কারন এটা খুবই ধীর গতিতে চলে। অনেকক্ষণ লাগে তাদের জাল পুরোপুরি গুটিয়ে নিতে।এজন্য আর বেশিক্ষণ দেরী না করে ওখান থেকে আমরা চলে আসলাম।
1634640703795-01.jpeg

একটু সামনের দিকে একটা বাগান ছিল। সেই বাগানের মধ্যে আমরা গিয়ে নদীর পাড়ে বসলাম। এরপর দেখতে পেলাম একটি ছোট বাইচের নৌকা আপন ছন্দে আমাদের দিকে এগিয়ে আসতেছে। কিছুদিন পূর্বে আমাদের এলাকায় নৌকাবাইচের মেলা হয়ে গেল। কিন্তু আমি ঢাকায় ছিলাম এজন্য দেখতে পারি নাই। খুবই মিস করেছি। প্রতিবারই নৌকাবাইচের মেলা ধুমধাম করে উদযাপন করা হয় আমাদের এই অঞ্চলে। তবে শুনেছি এবারের মেলায় নাকি ছোট ছোট সাইজের বাইচের নৌকা আসছিল। এই নৌকাটি দেখেই বুঝলাম মেলার ই নৌকা হয়তো কোন কারনে এ দিক দিয়ে আবার ঘোরাফেরা করতে এসেছে। কারণ তারা মাঝে মধ্যেই এরকম প্র্যাকটিস করে বেড়ায়।

1634640788993-01.jpeg

1634640756596-01.jpeg

অনেকক্ষণ যাবৎ নদীর পারে এরকম বসে সময় কাটানোর পর হঠাৎ শুরু হলো গুড়িগুড়ি বৃষ্টি । এজন্য সবাই ঐ স্থান থেকে দ্রুত প্রস্থান করলাম। একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে একটা স্কুলের ঘরে গিয়ে উঠলাম। আমাদের মধ্যে একজনকে পাঠালাম ওই হালকা বৃষ্টির মধ্যেই বাজারে যেয়ে জিলাপি কিনে আনতে। স্কুল ঘরের বারান্দায় বসে বসে জিলাপী খাচ্ছিলাম আর বৃষ্টিময় সময়টা উপভোগ করছিলাম ভালই লাগছিল। অনেকদিন পর বাইরে আসলাম তো এই জন্য দ্রুত বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু তবুও তো যেতে হবে। প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র কেনার ছিল বাজার থেকে। ওগুলো কিনে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

1634640854019-01.jpeg

1634640816425-01.jpeg

আমরা যখন বাড়ি ফিরছিলাম তখন রাত হয়ে গিয়েছিল। আকাশটা মেঘলা আকাশের চাঁদ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। চারিদিকে বিদঘুটে অন্ধকার আর গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। মাথায় বৃষ্টির পানি পড়ছিল। বাড়িতে আসতে আসতে মাথা প্রায় ভিজে গিয়েছে। তবুও ভালোই লাগছে আজ বাহিরে বেড়াতে পেরে।

ডিভাইস: Redmi Note 9 pro max
লোকেশন: পদ্মা নদীর পাড়।


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

ভাই আপনার এই প্রাকৃতিক পরিবেশের ছবিগুলো দেখলেই আমার মন চলে যায় ওই ওই সবুজের পরিবেশে। অনেকদিন হয় এমন পরিবেশে সময় কাটানো হয় না। আপনার ছবিগুলো দেখেই লোভ লেগে গেলো, এখন মনে হচ্ছে আমারও একটু ঘুরতে যাইতে হবে।

 3 years ago 

এমন পরিবেশে সময় কাটালে মন মেজাজ দুটোই ভালো থাকে।

 3 years ago 

আপনার পোস্ট টা পড়ে বুঝতে পেরেছি আপনার বিকেল টা অনেক ভালো কেটেছে।কিন্তু বৃষ্টি মাঝে মধ্যে একটু দুষ্টুমি করেছে । সত্যিই ভাই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির দিনে কোথাও বসে জিলিপি খাওয়ার মজাই আলাদা কিন্তু বৃষ্টির পানি যদি মাথায় পড়ে জ্বর আসার আশঙ্কা থাকে বেশি । ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার করার জন্য

 3 years ago 

আমার সাথে যে বন্ধুটা গিয়েছিলো ওর বৃষ্টির পানি মাথায় পড়ে জ্বর এসে গেছে ঠান্ডা লেগে গেছে।

 3 years ago 

আসলেই ভাইয়া কোথাও যাওয়ার সময় বৃষ্টি চলে আসলে যা বিরক্ত লাগে। আমি গত ৩ দিন বাসা থেকে বাইক নিয়ে বের হই নাই বাসে চলাফেরা করছি শুধু বৃষ্টির জন্য। ভিজে ভিজে বআসায় এসেছেন এটাও কিন্তু একটা ফিল কাজ করে👌👌🥰🥰🥰❣️❣️

 3 years ago 

বৃষ্টির দিনে যারা অবসর থাকেন তারা বেশি ইনজয় করতে পারে।

 3 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন ভাই।

 3 years ago 

সত্যি বলেছেন ভাইয়া, বেশি বেশি কোন কিছুই ভালো লাগেনা, হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি ভালো লাগে বা বেশি গরমের মধ্যে বৃষ্টি টা ভালো লাগে । কিন্তু সব সময় বৃষ্টি পড়েই যাবে আকাশ মেঘলা হয়ে থাকবে। আশেপাশের অবস্থা সেতসেতে কাদা কার হয়ে থাকবে,
এইগুলো সত্যিই মানা যায় না, আর বৃষ্টির মধ্যে বাইরে যাওয়ার তো কথাই উঠেনা।
কিন্তু ভাইয়া যাই বলেন, বৃষ্টির দিনের ছবিগুলো কিন্তু অসাধারণ হয়। আপনার ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে ছবিগুলোর মধ্যে প্রকৃতির মাতৃত্ব রূপ ফুটে উঠেছে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

মেঘলা দিন কিন্তু আমার অনেক সুন্দর লাগে। চারিদিকে কেমন একটা অন্ধকার অন্ধকার ভাব থাকে কিন্তু বৃষ্টি হয় না আর পরিবেশটাও ঠান্ডা। হালকা শীতের সময় সকালের দিকে হালকা কুয়াশা ও থাকবে। এরকম পরিবেশন সবচেয়ে বেশি পছন্দ।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি বিকেল কাটিয়েছেন। আপনার কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত ও এর বর্ণনা খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। নৌকা বাইচের ছবিটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। বর্তমানে সচরাচর এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় না। আজকাল নৌকা বাইচ প্রায় বিলুপ্তির পথে। আপনার এই ছবিটি দেখে ছোটবেলায় নৌকাবাইচ দেখতে যাওয়ার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। যাইহোক ভাইয়া আপনি এই বৃষ্টি ভেজা দিনে বিকেলে খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। বৃষ্টি ভেজা দিনে প্রকৃতি আরও নতুন রূপে সেজে উঠে। আপনি বৃষ্টি ভেজা এই দিনে নদীর পাড়ের প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেছেন। ভাইয়া এই সুন্দর মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অনেক ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ওটা আসলে ওদের প্র্যাকটিস চলতেছিল। একটা মাত্রই নৌকা এদিকে এসে ঘুরে যাচ্ছিল। প্র্যাকটিস করতে করতে আসছিল এদিকে।

আপনি ঘুড়তে অনেক পছন্দ করেন সেটা আপনার পোস্ট পরেই বুঝলাম। ভাইয়া আপনাদের এলাকাটা অনেক সুন্দর দেখছি। পাশে নদী এবং নদীর মধ্যে নৌকা বাইচ চলে। নৌকা বাইচ আমার দেখার খুব ইচ্ছা। বৃষ্টির ভাব দেখলেই চেষ্টা করবেন সেফটি সঙ্গে করে রাখার। শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া।

 3 years ago 

নৌকা বাইচ প্রায় সবারই অনেক ভালো লাগে। কিন্তু আমার অতটা ভালো লাগেনা।

 3 years ago 

শেষের ছবিগুলো দেখে কেমন ভয় ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে কোন ভৌতিক কাহিনীর কোন ছবি অথবা আপনারা কোনো ভৌতিক জায়গায় যাচ্ছেন আর আপনার ঘুরোঘুরি দেখে আমারও ঘুরাঘুরি করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ছেলেমানুষ নয় তাই জন্য আপাতত কিছু করার নেই! আপনার ছবি দেখে দিন কাটিয়ে দিতে হবে।

 3 years ago 

দিনের বেলায় ওটা আসলে একেবারে প্রপার একটা জায়গা। সামনে বাজার, বাম পাশেই নদী, সবসময় কোলাহল যুক্ত থাকে। কিন্তু রাতের বেলা বৃষ্টি হচ্ছিল তো,, পথে ঘাটে যেমন কোনো মানুষ ছিল না। আর বাইকের হেড লাইটের আলোতে ওরকম ভৌতিক লাগছিল।

 3 years ago 

প্রচন্ড ভৌতিক,তারপর ভুতে ভয় হয় আমার।

 3 years ago 

আমারও ঘুরাঘুরি করতে খুব ভালো লাগে। আপনার পোষ্টটি পড়ে ঘোরাঘুরি করার ইচ্ছাটা আরো বেশি বেড়ে গেলো। আপনি অসাধারণ কিছু ছবি ক্যাপচার করেছেন তা দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুব সুন্দর একটি বিকেল আর করেছে। আর রাতের ছবি গুলো দেখে মনে হচ্ছে কোন ভৌতিক এলাকায় যাচ্ছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার ছোট ভ্রমন কাহিনী আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

তুমিও তো কম ঘুরাঘুরি করো না। 😅

 3 years ago 

আপনার পিচ পিচ চলে যাবো। আবার

 3 years ago 

গত দুই তিন দিন ধরে বিকেলবেলা এক পশলা বৃষ্টি হয়ে যায় যেটা একেবারে মন্দ নয় কারণ পরিবেশটা অনেক শান্ত এবং ঠান্ডা থাকে। এরকম বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি এবং আড্ডার আনন্দই অন্যরকম। অনেক চমৎকার হয়েছে ছবিগুলো বিশেষ করে মেঘলা আকাষের যখন ছবিগুলো তোলা হয়েছে সেগুলো দেখতে অনেক ভালো লাগছে।

 3 years ago 

আমার তো মনে হচ্ছে এই বৃষ্টির পরেই শীত নেমে যাবে।

 3 years ago 

না ভাই। গরম পরবে আবার। নভেম্বরের মাঝামাঝি শীত শুরু হবে মনে হচ্ছে

 3 years ago 

বেশ কিছুদিন হয়ে গেল বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো হয় না এলাকায় না থাকার কারনে।আপনার লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে এখনই এলাকায় ফিরে যাই। নদীর যে ছবিটা আপনি দিয়েছেন প্রথমে ওটা দেখেই আমার ইচ্ছে করছে এক দৌড়ে নদীর পাড়ে চলে যাই। ধন্যবাদ ভাই মনটা ভালো করে দেয়ার জন্য।

 3 years ago 

আপনাদের জন্য শহরে থাকা তো আরো কষ্টকর।। গ্রামে চলে যান সেটাই ভালো হবে।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাই। শহর আমার আর ভালো লাগে না। আবার আমাদের শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 66794.56
ETH 3501.55
USDT 1.00
SBD 2.71