পানি!!

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো বন্ধুরা। আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি অনেক ভাল আছেন। গত কিছুদিন ধরে আবার অসহ্য গরম অনুভব করছি। বৃষ্টির খুব প্রয়োজন। যত বেশি গরম ততো বেশি পানি পানি পিপাসা অনুভব করি আমরা। আজ থেকে তিন বছর আগের একটা ছোট্ট ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

আমি প্রথম ঢাকাতে এসেছিলাম ইন্টার্নি করার জন্য। আমি তখন মোহাম্মদপুরেই থাকতাম। মোহাম্মদপুরে বন্ধুর বাসাতে উঠেছিলাম। আমাদের বাসা ছিল পাঁচতলায়। বাসায় লিফট ছিল কিন্তু প্রত্যেক দিন দুপুরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে লিফট বন্ধ থাকতো। সময়টা ছিল তুখোড় গরমের। সপ্তাহে ইন্টার্নি ছিল আমাদের তিন দিন। সকাল দশটা এগারোটার দিকে যেতাম, আর দু'ঘণ্টা ইন্টার্নি করে আবার বাসায় চলে আসতাম। বাসায় আসতে আসতে একটা দুটো বেজে যেত মাঝেমাঝে। আমি থাকতাম মোহাম্মদপুরের আমার ইন্টার্নি ছিল তেজগাঁও। বেশ অনেকখানি পথ।

মোহাম্মদপুর আমরা যে বাসায় থাকতাম ওই বাসায় পানি খাওয়ার সিস্টেম ছিল পানি ফুটিয়ে তারপর ঠাণ্ডা করে। এই প্রসেসে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যখন আমার পানি পিপাসা লাগছে ওই সময়টাতে যদি পানি গরম থাকে তাহলে খুবই কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। আর এই সমস্যা প্রায় প্রতিনিয়ত ফেস করতে হত। একদিন দুপুর ১ টা কিংবা দুটোর দিকে আমি ইন্টার্নি করে ফিরছিলাম। ঐদিন আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। আমি সকালে না খেয়েই ইন্টার্নিতে গিয়েছিলাম। সকালে রান্না হয়নি। সেদিন আমি ইন্টার্নির ওই জায়গাটা থেকে বাসা পর্যন্ত সম্পূর্ণ হেঁটে এসেছিলাম। প্রচন্ড গরমে আমি ঘেমে একদম নেয়ে উঠেছিলাম। প্রচন্ড কষ্ট হয়েছিল এত দূরের পথ এই গরমের মধ্যে হেঁটে আসতে। তো আমি যখন বাসায় চলে আসলাম তখন দেখলাম ওই সময় লিফট বন্ধ। আমার প্রচন্ড পানি পিপাসা লাগছিল মনে হচ্ছিল ঠাণ্ডা এক গ্লাস পানি খেতে পারলে শান্তি লাগতো। কিন্তু আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। এজন্য আমি পানি কিনতে পারিনি৷ সেদিন ভেবেছিলাম উপরে গিয়ে যে পানি আছে সেটাই খাবো। যাইহোক লিফট বন্ধ থাকায় পাঁচতলা অব্দি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠেছিলাম।

সবচেয়ে বড় কষ্ট পেয়েছিলাম এবার। উপরে উঠে দেখলাম বাসায় একটুও পানি নেই। সবেমাত্র ফুটানো হচ্ছে। প্রচণ্ড গরম, চা বানিয়ে খাওয়ার মতন অবস্থা। তখন আমার এতটা কষ্ট লাগছিল কি আর বলব। পানি পিপাসা খুবই কষ্টের, তারপর যদি হয় এত গরমের সময়।

সময়টা পার হয়ে গিয়েছে কিন্তু কেন জানি না, ওই দিনের ঘটনাটা আমার এখনো মনে পড়ে। আমার গত তিনমাস আগে আবারও ঢাকাতে সেটেল হতে হয়েছে। আমি প্রথমে ধানমন্ডিতে ছিলাম। ওইখানেও পানি ফুটিয়ে খাওয়া হত আর এই জন্য ঠান্ডা পানি খেতে মন চাইলে অনেক অনেক পানি কেনা হয়ে যেত। ঢাকা শহরে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানির অভাব এটা আপনারা সবাই জানেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পানির কষ্ট করা কিন্তু কারো পক্ষেই সম্ভব হয়না। গ্রাম অঞ্চলে তো অফুরন্ত পানির উৎস রয়েছে। টিউবয়েল থেকে ঠান্ডা বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায় যখন তখন। কিন্তু ঢাকা শহর,, এটা কল্পনাও করা যায় না। আমি একটা হিসাব করেছিলাম: যে পরিমাণ পানি ক্রয় করা হয়, সেটা যদি যোগ করি তাহলে এক বছরে যে অর্থ ব্যয় হবে সেটা দিয়ে একটা ছোটো ফ্রিজ ও পিওরইট ফিল্টার কিনে নেওয়া সম্ভব।

IMG_20220803_173039.jpg

IMG_20220803_173215.jpg

IMG_20220803_173529.jpg

আমি এই মাসে বাসা চেঞ্জ করে মোহাম্মদপুরে এসেছি। আমি চেয়েছিলাম কোন ধরনের ঝামেলা না রাখতে। এজন্য আজ একটা পিওরইটের ফিল্টার কিনে নিলাম ৷

IMG_20220803_175813.jpg

IMG_20220803_174842.jpg

পিওরইট ফিল্টারের দাম রেখেছে ৩৬০০ টাকা। কিন্তু নতুন লটে যে ফিল্টার গুলো আসবে সেগুলোর দাম নাকি ৪২০০ টাকা পড়বে। আমি কথাটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পিওরইট এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকে আমিও দেখলাম সত্যিই ওখানে ইতিমধ্যেই দাম বাড়িয়ে লেখা রয়েছে। দেরি না করে ৩৬০০ টাকা দিয়েই ওইটা নিয়ে চলে আসলাম। অবশেষে পানি সমস্যার সমাধান।

একটা বিষয় ভালো লাগছে যে উনারা এক বছরের ওয়ারেন্টি দিয়েছে। আর এক বছরের মধ্যে কোন প্রবলেম হলে উনাদের ফোন দিলেই বাসায় এসে ঠিক করে দিয়ে যাবে। যাইহোক দেখা যাক কেমন সার্ভিস দেয়। আজ আমি তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে নতুন কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

সময়টা পার হয়ে গিয়েছে কিন্তু কেন জানি না, ওই দিনের ঘটনাটা আমার এখনো মনে পড়ে।

কিছু কিছু স্মৃতি আছে যেগুলো ভুলা যায় না। হয়তো বারবার মনে পড়ে। বিশেষ করে নিজের জীবনের কষ্টের অনুভূতিগুলো বারবার মনে পড়ে। অনেকটা পথ হেঁটে এসে এরপর ৫ তলার উপরে ওঠা সত্যি অনেক কষ্টে ছিল। এরপর যদি এক ক্লাস ঠান্ডা পানি পাওয়া না যায় তাহলে দম ফেটে মরার মত অবস্থা তৈরি হয়। তবে যাই হোক সময় চলে গিয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আপনি আপনার খুবই প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ওয়াটার পিউরিফাই কিনেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া। ♥️♥️

 2 years ago 

ভাই আপনার পানির পিপাসার গল্প শুনে খারাপ লাগলো ভাই। বাহিরে গেলে প্রচন্ড গরমে বেশি পানির পিপাসা লাগে। তবে এখন ব্যবস্থা করেছেন ভালো উদ্যোগ ওরকমভাবে আর সমস্যায় পরতে হবে না।

 2 years ago 

পানির সমস্যা আমার মনে হয় সব চেয়ে বড় সমস্যা । আর কেনা পানির কথা কি বলবো যারা নলকুপের বিশুদ্ধ পানি খেয়ে অভ্যস্ত থিক দায়ে না পড়লে পানি কিনবে বলে মনে হয়না ।। এমনি আমি কোথাও দুই একদিনের জন্য বেড়াতে গেলে যদি পানি কেনার প্রয়োজন মনে হয় চেষ্টা করি দুই লিটার পানি সঙ্গে নেওয়ার । না হয় দুই কেজি ওজন বেশি টানা লাগলো ।
আপনার সেদিনের ঘটনা শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো । এতটা পথ বেয়ে এসে পাঁচ তলা সিড়ি ভেঙ্গে উঠে যদি চায়ের মত ঠান্ডা! পানি পান করতে হয় । তবে এই দুঃখে শহর ছাড়তে মন চাইবে ।

খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছেন ফিল্টার কিনে । আর হাতে হাতে লাভ ও হয়ে গেল । হা হা

 2 years ago 

খুব কষ্ট লাগলো পড়ে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার আকুলতা দেখে ।হে , ভাইয়া এটা কিনে ভালোই করেছেন । আমিও এটা ইউজ করি । ধন্যবাদ আপনাকে ।

 2 years ago 

দাদা ফিল্টার করার পরেও ফুটিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।ওয়াসার পানির যে অবস্থা তাতে মনে হয়না শুধু ফিল্টার দিয়ে কাজ হবে। আজ আপনার গরম পানির স্মৃতি থেকে আমারো প্রথম মেসে ওঠার স্মৃতি মনে পরে গেল।আমরা আগে ফুটাতাম তারপর কিছুটা ঠান্ডা করে ফিল্টার এ রেখে দিতাম।

ভাই আমার এখানে আরেক সমস্যা, ফিল্টার আছে ঠিকই কিন্তু কেউ পানি ভরবে না ঠিক মত। মাঝে মাঝে বাইরে থেকে ক্লান্ত হয়ে এসে দেখি পানি নেই এক ফোঁটা । কেমন লাগে ! একটা বোতল লুকিয়ে রাখতাম পানি ভরে, সেটাও দেখে ফেলেছে, মাঝে মাঝে দেখি ওটাও শেষ। তবে পিউরইটের সার্ভিস বেশ ভালো। আশা করি প্রবলেম না আর কোন।

 2 years ago 

আসলে কিছু স্মৃতি মানুষের মনে দাগ কেটে যায় সেটি থাকে বহুদিন, তেমনি একটি স্মৃতি ছিল আপনার, সময়টা যদিও কেটে গেছে কিন্তু এখনও সেই অনুভূতিটা আপনার মধ্যে রয়ে গেছে, যদিও আপনার সেই অনুভূতিটা ছিল কষ্টের ,আজ সময়ের পরিবর্তনে জীবনটাই পাল্টে গেছে, খুবই ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে, আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই।

 2 years ago 

আসলে ভাইয়া ঔদিনের আপনার পানির ঘটনা পড়ে অনেক কষ্ট লাগলো। আমি ২০১৫ সালে ভার্সিটি কোচিং করার সময় মগবাজারে ছিলাম। তখন পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খেতাম। পানি ফুটালে পানির কোন মজাই লাগে না। তারপরও তৃষ্ণা মিটাতে খেতাম। যায়হোক আপনি পিওরইট ফিল্টার কিনে পানির সমস্যটা সমাধান করে ফেললেন।
পিওরইটের নিরাপদ পানি খান সুস্থভাবে জীবন যাপন করুন।

 2 years ago 

গল্পের প্রথম দিকটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো টাকা না থাকলে মানুষ কতটা অসহায় সেটা আপনি খুব ভালো ভাবেই উপলব্ধি করেছেন ভাইয়া। আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া পানির পিপাসা সবচেয়ে কষ্টের। ঢাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে পানির সমস্যা পানি ফুটিয়ে খেতে গেলে অনেক সময়ের দরকার রাতে পানি ফুটিয়ে রাখলে সকালে খেতে গেলেও মনে হয় গরম লাগে। পিওরইট কিনে খুবই বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন এটা একদম ঝামেলা মুক্ত। আমি অনেক বছর ধরে ব্যবহার করছি। এটা নষ্ট হওয়ার মতো তেমন কিছু নেই কয়েকমাস পর পর জার্মকিল টা পাল্টাতে হবে এতটুকুই। সুন্দর একটা গল্প শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।🙏🙏

 2 years ago 

ভাইয়া,আপনার সেদিনের ঘটনা শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো । ভাইয়া আমি জানি শহরে পানির সমস্যা হয়ে থাকে তাই আমি কোথাও গেলে কষ্টকর হলেও বাড়ি থেকে বোতল ভর্তি করে পানি নিয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত ভালো লাগলো যে আপনি ফিল্টার কিনে খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60596.21
ETH 2611.46
USDT 1.00
SBD 2.64