আফটার বৃষ্টি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা।
কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজ সকাল সকাল আপনাদের সাথে গতকাল রাতের একটা ঘটনা শেয়ার করতে চলে এলাম। গত কিছুদিন যাবত প্রচন্ড গরম পড়তেছে। এই ভ্যাপসা গরমের মধ্যে সবাই চাতক পাখির মতো চেয়েছিল কখন একটুখানি বৃষ্টি হয়, পরিবেশটা কখন ঠান্ডা হয় । আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ রহমতে অবশেষে রহমতের বৃষ্টির দেখা। আর এই বৃষ্টির সময়ের একটা অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তাহলে চলুন শুরু করি।

গতকাল হ্যাংআউটে জয়েন করার পর জানতে পারলাম দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। তখন ভেবেছিলাম হয়তো ঢাকাতেও বৃষ্টি হতে পারে। কমিউনিটির অফিশিয়াল হ্যাংআউট যখন শেষ হলো ঠিক তার কিছুক্ষণ পর বাহিরে লক্ষ করলাম শীতল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। গতকাল সারাদিন বাইরে কোথাও যাইনি। সারাদিনটা রুমেই কাটিয়েছি। হ্যাংআউট শেষে ছোট ভাই রাহুল এবং বন্ধুর সাথে সিদ্ধান্ত নিলাম এই রাতে ঢাকা শহরে রিকশায় ঘুরবো । পরিবেশটা ঠান্ডা হচ্ছে, বেশ মজা হবে। তাছাড়া রাতে ঢাকা শহর অনেকটাই ফ্রি থাকে। নেই কোন যানজট। চলাফেরা করে দারুন মজা। এজন্যই বেরিয়ে পড়লাম তিনজন। বেরোনোর কিছুক্ষণ পর লক্ষ্য করলাম হালকা বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। ওভাবেই কিছুদুর হেঁটে যাওয়ার পর বৃষ্টির প্রকোপ যখন বাড়তে লাগল তখন একটি ছাউনির নিচে গিয়ে তিনজনই বসে পড়লাম। তখন বৃষ্টির প্রকোপ প্রচন্ড বেড়ে গেছে। সাথে হালকা বাতাস। আমরা বসে বসে বৃষ্টির সৌন্দর্য দর্শন করছিলাম। বেশ উপভোগ্য ছিল।

pexels-photo-2067057.jpeg
imagesource

কিছুক্ষণ বৃষ্টি হওয়ার পর যখন বৃষ্টি প্রায় থেমে গেল, থেমে গেল বলতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো তখনও। এর মধ্যেই আমরা হাঁটা শুরু করলাম। হালকা গুড়ি গুড়ি ওই বৃষ্টি যখন গায়ে এসে পড়ছিল তখন বেশ দারুন একটা অনুভুতি ফিল করছিলাম। তখন আমরা ছিলাম ঠিক পিলখানার পাশেই। ওখানে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান ছিল। চা'এর দোকান তখনও খোলা ছিলো। তিনজন তিন কাপ চা নিলাম। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভেজা, আর সাথে রং চা খাওয়া। সত্যিই অতুলনীয় সুন্দর মুহূর্ত ছিল। চা খাওয়া যখন শেষ হলো, তখন ভাবলাম বৃষ্টির সময় এখন খিচুড়ি খেতে পারলে মন্দ হয় না। তখন প্রায় সব রেষ্টুরান্ট অফ হয়ে গেছে। ভাগ্য গুনে একটা রেস্টুরেন্টে খোলা পেলাম। সেখানে গিয়ে কাঙ্খিত খিচুড়িও পেয়ে গেলাম।

আপনার সাথে ছবিগুলো শেয়ার করতে পারছিনা কারন আমি ফোন নিয়ে গেছিলাম না। তিনজন তিন প্লেট খিচুড়ি নিয়েছিলাম। কিন্তু আমার মেজাজটা হয়ে গিয়েছিল খারাপ। এত বাজে খিচুড়ি!!! আমাদের গ্রামের ছোটখাটো একটা হোটেলেও এর থেকে ভালো খিঁচুড়ি রান্না করে। যাইহোক কিছু করার নেই। খিচুড়ি খাওয়া শেষ করে আমরা বাইরে আসলাম। আমাদের প্রধান প্লান ছিল রিকশায় ঘুরবো। একটা রিক্সা নিয়ে নিলাম কিছু সময়ের জন্য। প্রায় আধা ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট আমরা শুধুমাত্র রাস্তা দিয়ে ঘুরে বেরিয়েছি।

pexels-photo-1829067.jpeg
imagesource

দারুন লাগছিল, পরিবেশটা ছিল ঠান্ডা, বৃষ্টি ভেজা রাস্তা, চারিদিকে আলো ঝলমল অবকাঠামো, ভেজা রাস্তায় আলোর রিফ্লেকশন। সবমিলিয়ে দুর্দান্ত ছিলো মুহূর্তটি। রিক্সায় বসে বসে আমরা আরও একটা প্ল্যান করলাম। পরের একদিন আমরা পুরান ঢাকায় যাব কাচ্চি খেতে। তবে সেদিনও রিক্সাতেই যাব। আমরা যাবো রাত্রে। রাত্রে পুরান ঢাকা গিয়ে কাচ্চি খেয়ে আবার রিক্সা করে ব্যাক করব।

যাই হোক, অবশেষে আমাদের ঘুরাঘুরি শেষ হলো। ঘুরাঘুরি শেষ করে আবার বাসার দিকে চলে এলাম। বাসায় এসে দেখলাম আমাদের রুমটা অনেক সুন্দর ঠান্ডা হয়ে আছে। জানলা খুলে রেখে গিয়েছিলাম তাই জন্য এই অবস্থা । কালকের ঘুমটাও জম্পেশ হয়েছিল। ঠান্ডায় ঠান্ডায় কাঁথা মুড়ি দিয়ে বিশাল একটা ঘুম। এটাই ছিল কালকের ঘটনা । মুহূর্তটা অনেক সুন্দর ছিল আমার কাছে তাই জন্য আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আজ তাহলে এ পর্যন্তই। দেখা হবে আবার পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন৷ আল্লাহ্ হাফেজ।



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

বৃষ্টির পরের গল্পটি পড়ে আমার কাছে দারুন লাগলো।ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন ঢাকায় রাতের শহর যানজট মুক্ত থাকে।এই শীতল হিমেল বাতাসে রিক্সায় ঘুরে বেড়াতে কিন্তু দারুণ লাগে। তাছাড়া জানালা খোলা থাকার কারণে আপনার মনটাও বেশি তোর হয়েছিল বলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে খুব চমৎকার একটি ঘুম দিয়েছেন।ঐ সময়টি ছিল আপনার হাজারো প্রশান্তির।♥♥

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার কালকের ঘটনা পড়ছিলাম আর আমার নিজেরই আনন্দ লাগছিল। এরকম বৃষ্টির দিনে যদি রিকশায় ঘুরতে পারতাম। আহ কি মজা। আর একটা কড়া লিকারের চা। অবশ্যই দুধ চা রং চা আমি খাই না। খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বৃষ্টির মধ্যে। খুব ভালো লাগলো শুনে। কিছুটা হলেও আপনি আস্তে আস্তে ঢাকার সাথে এডজাস্ট হয়ে যাচ্ছেন। শুভকামনা রইল আপনার আগামী দিনগুলোর জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু। আপনি প্রথম দিন থেকেই সাহস দিয়ে আসছেন। চেষ্টা করছি... আশা করি খুব সহজেই পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারব।

সত্যি আপু.. বৃষ্টির পর এক কাপ কড়া লিকারের চা সত্যি অতুলনীয়।

 2 years ago 

লোভ লাগিয়ে দিয়েছেন ভাইয়া। পরবর্তীতে বৃষ্টি হলে অবশ্যই দাওয়াত দিবেন। দুই ভাইবোন মিলে একসঙ্গে চা খাব।

 2 years ago 

ওক্কে আপু। কথা কিন্তু ফাইনাল। 🥳

 2 years ago 

100%।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন গতকালকে হ্যাংআউট শেষ হওয়ার মাত্র এই জোড়া হাওয়া বইতে লাগলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার একটা ভুল হয়ে গিয়েছিলো, আর সেটা হচ্ছে আমি প্রচুর ঠান্ডা শরবত খেয়ে ছিলাম। তারপরে জোড় হাওয়া ঠান্ডা বাতাস বেশ ভালই লাগছিল। রাত্রে ফ্যানের হাওয়া তে এতটাই ঠান্ডা লেগেছে সকালে উঠে আর কথা বলতে পারছিনা। সারারাত এতটাই কাশি হচ্ছিল ঘুমাতে পারিনি। তবে আপনার আনন্দের অনুভূতি গুলো এত সুন্দর করে শেয়ার করেছে। ইচ্ছে করছিল ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে একটু বেশি আনন্দ লাগে। কিন্তু বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছেন ঘুরেছেন, চা খেয়েছে, সেই সাথে খিচুড়ি, তবে খিচুড়ি টা ভালো হয়নি। আর আমাদের সাথে এত সুন্দর করে আপনার মনের ভাবগুলো শেয়ার করার জন্য, আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন এবং ভালোবাসা অবিরাম।

 2 years ago 

অতিরিক্ত ঠান্ডা কিছু খাওয়া ঠিক না। খাওয়ার সময় মজা লাগে কিন্তু পরে বেশি কষ্ট পোহাতে হয়।

 2 years ago 

আসলেই বাড়ি কিছুদিন যাবত প্রচুর গরম পড়ছে কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না যদিও আমাদের এখানে কালকে বৃষ্টি হয়নি। তবে আবহাওয়া টা খুবই ঠাণ্ডা ছিল মনে হয় যে রাত্রে আকাশে মেঘ ছিল। আপনি এই বৃষ্টির সময় রিক্সায় ঘুরে বেড়িয়েছেন এটা কিন্তু খুবই মজার একটি ব্যাপার আমার মনে হয় আপনি খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন।

 2 years ago 

জি ভাই।। সময়টা অনেক ভালো কেটেছিল।

 2 years ago 

জি ভাইয়া রাত্রে পরে খুব বৃষ্টি হয়েছিল।আমিতো বৃষ্টি দেখে খুশিতে শেষ।আমিতো আমার রুমের সবগুলো জানালা খুলে দিয়েছিলাম বেশ ভালো লেগেছিল। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া যখন বৃষ্টি পড়ে তখন রং চা খেতে বেশ ভালো লাগে। আর সেটা যদি বাহিরে সরাসরি দেখা যায় তাহলে তো কথাই নেই। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

গরমের সময় ঘরের মধ্যে ভ্যাপসা গরম জমে থাকে। ঝড়-বৃষ্টি যদি শুরু হয় জানলা দরজা একটু খুলে রাখলে পুরো ঘরটা ঠান্ডা হয়ে যায়। বুদ্ধিটা ভালো ছিল।

 2 years ago 

কি ভাইয়া হ্যাংআউট এর পর এত রাতে এইরকম মুহূর্ত কাটানো ভাবতেই কিরকম ভালো লাগছে। এইরকম ভাবে কখনো চিন্তা করি নাই। কিন্ত যখন আপনার লেখাগুলো পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল খুবই ভালো লাগতেছে। এমনকি তৎক্ষণাৎ আমি চিন্তা করলাম এরকমভাবে আমি নিজেও একদিন উপভোগ করার চেষ্টা করব। হালকা হালকা বৃষ্টি তাও আবার রাত অনেক মজার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। কিন্তু হ্যাঁ চা খেতে গিয়ে খিচুড়ি পেয়ে গেলেন ভালো লাগলো। কিন্তু খিচুড়ি টা খারাপ ছিল এইজন্য এরপর আবার খারাপ লাগলো। আসলে এরকম অনেক জায়গা আছে সেখানকার খাবার একদমই খারাপ। এরকম সুন্দর একটা মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আশা করি আপনার ইচ্ছা খুব শীঘ্রই পূরণ হবে।

 2 years ago 

রাতের ঢাকা কিন্তু অসাধারণ ভাইয়া। সেই সাথে বৃষ্টিস্নাত রাত। অসাধারণ একটি সময় কাটিয়েছেন আপনি। রাতের ঢাকা রাস্তা অনেক ফাঁকা থাকে।মনের আনন্দের রাতের ঢাকা উপভোগ করা যায়। পুরান ঢাকার কাচ্চি খেতে আমাকে নিয়ে যাবেন কিন্তু। 😋😋।আপনার লেখা গুলো পড়তে অনেক ভালো লাগে।

 2 years ago 

সত্যি আপনি যাবেন নাকি?? গেলে নিয়ে যাবো। 🥳

 2 years ago 

আহা ছবি গুলো যদি থাকতো তাইলে আরো ভালো লাগতো। এরপর এমন দৃশ্য দেখতে গেলে অবশ্যই ফোন নিয়ে যাবেন ভাই। বৃষ্টির পর পরিবেশ খুব সুন্দর লাগে। আমাদের এইদিকে হ্যাং আউট চলাকালিন শেষের দিকে বাতার শুরু হয়। পরে এর জন্য বিদ্যুৎ চলে যায়। শেষের দিকে হ্যাং আউট এ থাকতে পারিনি আর।

 2 years ago 

গরমের সময়ে বাইরে বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসের আভাস পাওয়াটাই আনন্দের বিষয়। আর হ্যাঁ কালকে ছবিগুলো শেয়ার করতে পারলে অবশ্য আরো ভালো হতো।

 2 years ago 

ভাইয়া যাই বলেন, টাইটেলটা কিন্তু অনেককে একটু নাড়া দিবে কি বলেন। 🤪🤪

আমাদের এদিকে হ্যাঙ্গআউট শেষ হওয়ার পরপরই ভীষণ বৃষ্টি নেমেছিল।

 2 years ago 

টাইটেল দেয়ার সময় আমি নিজেও অল্প একটু ধাক্কা খেয়েছিলাম। হিহিহি

 2 years ago 

খুব ভালো কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন, বোঝায় যাচ্ছে। বৃষ্টি। ঠাণ্ডা বাতাস। চায়ের পেয়ালা। এ কয়েকটি জিনিসের একত্রতা ভালো মুহূর্ত বরাবরই নিয়ে আসে।

Coin Marketplace

STEEM 0.30
TRX 0.12
JST 0.032
BTC 63857.77
ETH 3117.63
USDT 1.00
SBD 3.87