একটি ভেজা সন্ধ্যা

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)


আজ সারাদিন ছিল ঝলমলে রৌদ্রোজ্জ্বল একটা দিন। সারা আকাশে কোন মেঘের দেখা ছিল না। সারাদিন খুব গরমও পরেছে। এই গরমের মধ্যে কোথাও যাওয়াটাও কষ্টকর। এজন্য সারাদিন আর বেশি একটা ঘর থেকে বের হইনি। কিন্তু বিকেল বেলা একটু বাইরে যেতে ইচ্ছে হলো। পরিবেশটা খুবই সুন্দর ছিল বিকেল বেলায়। পারফেক্ট একটা বিকেল বলা চলে ঘুরাঘুরির জন্য। আমি আর বাড়িতে আছি আট-দশ দিন মতো। এ কদিন একটু ঘোরাঘুরি না করলে কি চলে। তারপর তো চলে যেতে হবে ঢাকা। ওখানে তো আর ইচ্ছা মতো যেখানে সেখানে ঘুরতে পারবো না। ঢাকা শহরের বাইরে বেশি একটা ঘোরাফেরা করতে আমার ভাললাগেনা। বিচ্ছিরি একটা পরিবেশ। তার থেকে আমার গ্রাম কত্তওওও ভালো।.

যখনই বাইরে যেতে ইচ্ছা হল, তখনই আমার এক ছোট ভাইকে ফোন দিলাম। ফোন দেআর কিছুসময়ের মধ্যেই দুইজন চলে আসলো আমাকে নিতে। কোথাও বেরোলে ওদের সাথে নিয়েই বেরই। আমরা চিন্তা করলাম আজ কোথায় যাওয়া যায়। ভেবে পাচ্ছিলাম না কোথায় যাব। তারপর চিন্তা করলাম অনেকদিন বাধাঘাট নদীর পাড়ে যাওয়া হয়না। শেষে ফাইনাল করলাম আজ ওখানেই যাব। ভেবেই দিলাম ছুট। এটা ছিল আমার বাসা থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে। সাথে বাইক ছিল বলে বেশি একটা সময় লাগলো না । আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর অল্প একটু আগে আকাশের রূপ দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। একটু আগেও ছিল ঝলমলে রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশ। আর এখন হঠাৎ কালো মেঘে চারদিক ছেয়ে গেল। এটা খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটে গেল। আমিতো আশ্চর্য হয়ে গেলাম।

1631274555764-01.jpeg

1631274592030-01.jpeg

1631274647383-01.jpeg

1631274701722-01.jpeg

বাইক টা সাইডে রেখে বাধাঘাট এর উপর যেয়ে আমরা দাঁড়ালাম। তখন নদীতে প্রচন্ড বাতাস। নদী অনেকটা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। চিন্তা করলাম এই বাতাসে দাঁড়িয়ে এক কাপ কফি হলে মন্দ হয় না। ছোট ভাইকে পাঠালাম তিনজনের জন্য তিন কাপ কফি আনতে। দুই মিনিটের মধ্যে সে কফি নিয়ে হাজির। এরপর নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে বাতাস খাচ্ছি আর কফির কাপে উষ্ণ চুমুক দিচ্ছি।

1631274822595-01.jpeg

1631274789421-01.jpeg

ঠান্ডা বাতাস এসে পরিবেশটা মোটামুটি শীতল করে দিয়েছে। মনে হয়েছিল কিছু সময়ের মধ্যে বৃষ্টি আসবে। ভাবতে না ভাবতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আমার হাতের কফি কাপের মধ্যে এখনও কিছুটা কফি রয়েই গেছে। ফিলিংস নিয়ে আর খেতে পারলাম না। দ্রুত বাকিটুকু শেষ করে পাশের একটা মসজিদে আশ্রয় নিলাম।

1631274876739-01.jpeg

১৫-২০ মিনিট বৃষ্টি হওয়ার পর কিছুটা থামল । এবার আমরা আবার আগের বাধাঘাটে ফিরে গেলাম । পরিবেশটা আগের তুলনায় অনেক ঠান্ডা লাগছিল। এমন সুন্দর শীতল পরিবেশে ইচ্ছে হলো গরম গরম চটপটি আর ফুচকা খেতে। তাই নিয়ে নিলাম চটপটি আর ফুচকা। চটপটি অনেক সুন্দর ছিল, কিন্তু ফুচকা আমার তেমন একটা ভালো লাগে নাই। আমি এমনিতেই পছন্দ করি না।

1631274930961-01.jpeg

1631279077228-01.jpeg

এই জায়গাটাতে আসলে মামার দোকানের চটপটি প্রায়ই খাওয়া হয়। চটপটি খেতে খেতে লক্ষ করলাম আকাশ থেকে আবারও বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হয়েছে। কিন্তু আগের তুলনায় অনেক অল্প। আমরা চিন্তা করলাম একটু ভিজে হলেও এখন বাসায় চলে যেতে হবে। এজন্য বেশিক্ষণ দেরী করলাম না। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা সবাই চলে আসলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। বৃষ্টি না হলে আরো অনেক ঘোরাঘুরি করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু বৃষ্টির কারণে কোথাও যেতে পারলাম না। সোজা বাড়িতে চলে আসতে হলো। যাইহোক কি আর করার। এটাই ছিল আমার অপূর্ন ঘুরাঘুরি। সবাই ভাল থাকবেন। সবার সুস্থতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।

Location: here:https://w3w.co/stow.spectacle.remapping

Device : Redmi Note 9 Promax.

Follow @amarbanglablog for last updates

Sort:  
 3 years ago 

নদীর পাড়ের খোলা হাওয়ায় প্রকৃতির মাঝে ফুচকা চটপটি খাওয়ার মজাই আলাদা। নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়া আমার সবসময়ই ভাল লাগে। আমি যখন আমার গ্রামের বাসায় যাই তখন আমি মাঝে মাঝেই শেষ বিকেলে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাই। শেষ বিকেলে নদীর পাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমার অনেক ভালো লাগে। তখন আমার মনে হয় নদী যেন প্রকৃতির এক অপরূপ দান। আমার মনে হয় আপনি সেদিনের শেষ বিকেলটা খুব সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন। যদিও হালকা বৃষ্টি আপনাকে বাধা দিয়েছে তবুও যতক্ষণ সময় নদীর পাড়ের খোলা হাওয়ায় কাটিয়েছেন তাতেই বা কম কি। আপনার এই সুন্দর মুহূর্তটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আজকে দেখছি অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আকাশ যখন মেঘাচ্ছন্ন তখন নদীর তীরে বসে ঠান্ডা হাওয়ার সাথে এক কাফ কফি খেলে ভালোই লাগে। পরিবেশ টা উপভোগ করার মতোই ছিল।আবার সাথে গরম গরম চটপটি ও ফুসকা খেতে খুব ভালো লাগে।

 3 years ago 

আপনার বিকেল টা খুবই সুন্দর কাটছিল কিন্তু বার বার বৃষ্টি হানা না দিলে হয়তো বেশিক্ষণ আনন্দ করতে পারতেন।নদীর পাড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কফি খাওয়ার ফিলিংস টা সম্পূর্ণ অন্য রকম মজার লেগেছে আমার কাছে।চটপটি টা দেখতে খুবই লোভনীয় লাগছে।সব মিলিয়ে খুবই সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

মধুমতি নদীর পাড়ে এত সুন্দর একটি দৃশ্য দেখার সুযোগ হলো আপনার ছবিগুলোর মাধ্যমে। আসলে বর্ষার আকাশ টা এরকম যেখানে কোনো নিশ্চয়তা নেই যে কখন কি ঘটতে চলেছে। তারপরও মসজিদে আশ্রয় নিয়ে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে পেরেছেন আর পরবর্তী ধাপে বৃষ্টি না হলে হয়তোবা আরো চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি আমরা পেতাম। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আপনি যে খুবই সৃজনশীল একজন ফটোগ্রাফার সেটা আপনার ঐ দুটি ছবি থেকে বোঝা যাচ্ছে। একটা ছবি ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করে তুলেছেন। একই ছবি ব্লার না করে আরেকটা তুলেছেন, চমৎকার কাজ। সুন্দর একটি বিকেল কাটিয়েছেন। এইরকম একটি বিকেল কাটানোর পরে অনেকটা ফ্রেশ লাগে। ধন্যবাদ ভাই।

 3 years ago 

ভাইয়া চায়ের ছবিটা জাস্ট অন্য লেভেলের হইছে!!
আহা!কি মজাদার ব্যাপার!
হাতে চায়ের কাপ, সামনে নদী।ব্যাপারটা যেনো একদম জমে ক্ষীর!নদীর বাতাসটা গায়ে এসে লাগছে আর আস্তে আস্তে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন। ব্যাপারটা ভাবলেই মনটা যেনো একদম ভালো হয় যায়। আর সেসব যদি হয় বৃষ্টির আগ মূহূর্তে! তাহলে তো আর কথাই নেই।
আপনার ফটোগ্রাফীর কথা নতুন করে কি আর বলবো!
সবসময় ই একদম উপরের লেভেলের ফটোগ্রাফী করেন আপনি ভাইয়া।
সত্যিই দারুণ, জাস্ট দারুণ। ❤️

 3 years ago (edited)

প্রকৃতির ছবিগুলো খুবই সতেজ ও প্রাণবন্ত।নদীর পাড়ে দাড়িয়ে এলোমেলো হওয়ায় দাঁড়িয়ে কফি খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম।আলাদা একটি অনুভূতির সাথে সাথেই শীতল ও স্নিগ্ধ হওয়ায় মনকে ফুরফুরে মেজাজটাও অনুভূত হয়।খাবারগুলি বেশ লোভনীয় ছিল।অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন দাদা।একইসঙ্গে গরম,শীতল হওয়া এবং ঝিরিঝিরি বৃষ্টি উপভোগ করেছেন।অনেক ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

প্রকৃতির লীলাময় রূপ রস যেনো আমাদের মুক্ত হস্তে সৌন্দর্য ও ভালোবাসা দান করে। সত্যিই অপূর্ব প্রকৃতির ছবিগুলি।নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশে প্রকৃতির সাথে যে কথোপকথন ।সেই মনের ভাবনার প্রতিফলন বাস্তবায়ন স্বরুপ প্রকৃতি বৃষ্টি উপহার দিলো। পরিবেশকে শান্ত ও সতেজ করে দিলো। শেষ মেষ একটু ঠান্ডা অনুভবের মাঝে গরম গরম চটপটি ও ফুসকা খেয়ে নেওয়া। মুহূর্ত গুলি সত্যিই চমৎকার ছিলো। ধন্যবাদ দাদা।

নদীর ধারে বসে মুক্ত বাতাস এর সাথে এক কাপ কফি। যেনো চুমুকে চুমুকে অমৃত। তার সাথে থাকে যদি চটপটি আর ফুসকা তাহলে তো কথা বোলার কোনো অপেক্ষা ই রাখে।

খুব সুন্দর হয়ে আপনার এই পোস্ট টি।আশা করি আমরা এই পোস্ট থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবো

নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। নদীর তীরবর্তী এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটা একটু সব সময় বেশই থাকে। যেটা আপনার পোষ্টের মাঝে ফুটে ওঠেছে। বৃষ্টি ভেজা বিকেলে কাটানো আপনার সময়টা বেশ সুন্দর ছিল। সাথে খাবারগুলো।সবগুলো খাবারই আমার খুব পছন্দের। বৃষ্টির মাঝে নদীর প্রকৃতির লীলা ময় ভূমিতে সময় কাটানোর মুহূর্ত অসাধারণ হয়ে থাকে।
অনেক সুন্দর একটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, আপনাকে অনেক।ধন্যবাদ ভাইয়া এবং শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57050.09
ETH 3060.34
USDT 1.00
SBD 2.32