আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৩ || স্কুল জীবনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
আমার বাংলা ব্লগ মানেই যেনো একটির পর একটি প্রতিযোগিতা। আবারো একটি নতুন প্রতিযোগিতা এসে গেলো। প্রতিযোগিতা হবে আর আমি পার্টিসিপেট করবোনা তা কি হয় নাকি। স্কুল নিয়ে রয়েছে আমার অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা। তবে সব তো আর শেয়ার করা যাবেনা। তার মধ্যে একটি ঘটনা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যার ক্ষত আজো বয়ে বেড়াচ্ছি
সময় টা ছিলো সম্ভবত ২০০৭ সাল । আমি তখন সবে ২য় শ্রেনির ছাত্র। তবে বুঝতাম ভালোই। কারণ আমি অসুস্থতার কারণে একটু দেড়ি করেই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। সে সময়কার আমাদের দিন গুলো খুবই ভালো যেতো। আমরা থাকতাম খিলক্ষেত। তবে স্কুল ছিলো নিকুঞ্জ ১১ নাম্বার রোড এ। প্রায় ৩ কিলোমিটার হেটে প্রতিদিন স্কুল যেতা। যদিও প্রথম দিকে স্কুলে গাড়িতে করে নিতো। তবে কোনো কারণে এখন আর গাড়ি দেয়না আমাদের। তাই হেটেই যেতাম প্রতিদিন। স্কুলে যেয়ে সুন্দর মতন ক্লাস করা। তারপর বন্ধুদের সাথে খেলা সব কিছু মিলিয়ে ভালো দিন কাটতো তখন। ভালো কিছু বন্ধু পেয়েছিলাম।
সমস্যা শুরু হয় কিছু মাস পর। স্কুলেরই কিছু উপরের ক্লাস এর ছেলে মেয়েরা দল দল ভাগ করে চলতো। যেটা আমি একদমই পছন্দ করতাম না। তাই ওদের সাথে যুক্ত ও হইনি। তাই আমরা ৩ জন এক ঘরে হয়ে গেলাম স্কুলেই। তখন মিল কাট্টি খেলা হতো। মানে আমাদের সাথে কেউ থাকতোনা। কেউ খেলায় নিতোনা। সমস্যা ছিলোনা। আমরা ৩ জনই বসে গল্প করতাম। বাকি কেউ আমাদের সাথে কথা বলতে চাইতোনা। কারণ ওদের সাথে মিল ছিলোনা। এভাবেই চলছিলো আমাদের।
একদিন স্কুল এ টিফিন টাইম চলছিলো। সব পোলাপাইন বাইড়ে খেলছিলো। তবে আমাদের কেউ খেলায় নিচ্ছিলোনা। তাই আমরা স্কুল এর ভিতরই গল্প করছিলাম। একটু পর আমি বাইড়ে যাই কোনো এক কারণে। তখন কাজ শেষে স্কুল এর ভিতর যেয়ে দেখি টেবিল এর উপর উঠে আমার বন্ধুকে উপরের ক্লাস এর এক ভাই মারতেছে। তখন তো এতো কিছু বুঝতাম না। আমি দৌড়ে চলে যাই থামাতে। কিন্তু টেবিল এর উপর হওয়াতে সুবিধা করতে পারছিলাম না। তখন আমি আমার বন্ধু কে মার হতে বাঁচাতে নিজেও টেবিল এর উপরে উঠে যাই। তখনই ভাইটা আমাকে একটা লাথ্যি মারে পেট বরাবর। আমি ঘুরে টেবিল এর উপর থেকে নিচের ফ্লোর এ পরে যাই। সোজা আমার মুখটা গিয়ে পরে পাকা ফ্লোর এ। তারপর আর কিছু মনে নাই। একটু পর যখন হুশ ফিরলো দেখলাম আমার মুখ দিয়ে অনেক রক্ত পরছে ঠোট কেটে। উপলব্ধি করতে পারলাম ভিতরে কিছু ভেঙ্গে গেছে। তখন বুঝলাম আমার সামনের দিকে উপরের পাটির একটি দাঁত ও নিচের পাটির একটি দাঁত ভেঙ্গে গেছে।
তারপর আর কি। আমাকে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলো। আর ওই ছেলেটিকে সাথে সাথে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমাকেও বাসায় দিয়ে আসা হয়। তারপর অনেকদিন স্কুল এ যেতে পারিনি। স্কুল থেকে আমার চিকিৎসার কিছু ব্যয় বহন করা হয়। উপরের পাটির দাঁত ক্যাপ করি স্কুল এর থেকে টাকা পেয়েই। তবে যাই হোক দাঁত তো আর ফিরে পাওয়া যাবেনা।
তো এই ছিলো আমার জীবনে স্কুল এর একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা। এই ঘটনা আমি কখনই ভুলতে পারিনা। সেদিন আমি দুইটি দাঁত হারিয়ে ছিলাম। এখন হয়তো ক্যাপ বসিয়ে দেওয়া আছে। তবে আসল জিনিশ তো আসলই হয়। তবে একটা কথা আমার বন্ধু কিন্তু সেদিন আর মার খায়নি। আমাকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়ার পর অই ছেলে ভয় পেয়ে আমার বন্ধু কে ছেড়ে দেয়। এইদিক থেকে আবার আমার শান্তি। তবে দুঃখ একটাই এমন এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে পরে অনেক সমস্যায় পরতে হয়েছিলো আমাকে। বন্ধুদের সামনে যেতে পারতাম না। মুখ খুলে হাসতে পারতাম না অনেক দিন। সত্যি সেই ঘটনাটা ভোলার মতন নয়।
তো এই ছিলো আমার ঘটনা। কেমন হয়েছে জানাবেন কমেন্ট করে। ধন্যবাদ সবাইকে।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

VOTE @bangla.witness as witness

OR
আপনাদের সে বড় ভাইটি আপনার সাথে নির্দয় এর পরিচয় দিয়েছেন। অবশ্য স্কুল লাইফে এমন অনেক ঘটনা ঘটে থাকে কিন্তু কিছু বেয়াদব ছাত্র-ছাত্রী থাকে যারা এমন ভাবে আঘাত করে তা বুঝে শুনে আঘাত করে না। এতে কার কি ক্ষতি হবে কি হবে না হবে সে সম্পর্কে কোন ধারণাই রাখে না হঠাৎ মেরে দেয়। আপনার এই ঘটনাটি পড়ে সত্যি আমি মর্মাহত।
হ্যা ভাই। এমন এক ক্ষতি করলো যা আমাকে সারাজীবন বয়ে বেরাতে হবে।
ছোটবেলা একটু আকটু মারামারি হয় কিন্তু এটা মনে হয় একটু বেশি হয়ে গিয়েছে। যাই হোক বন্ধু এখন যে দাঁত গুলো রয়েছে সেগুলো আসল তো? 😁
হুম৷ সামনে দুইটা নকল। তবে স্থায়ী।