কুইজ খেলে জীবনে প্রথম ল্যাপটপ হাতে পাওয়ার অনুভূতি।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আজ আপনাদের সাথে জীবনে প্রথম ল্যাপটপ পাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি ভালো লাগবে সবার।
ল্যাপটপ কম্পিউটারের প্রতি আমার সব সময় আলাদা একটা টান থাকতো। সেই ক্লাস ফাইভ থেকেই যখন আমি প্রথম কম্পিউটার ব্যবহার করেছিলাম তখন থেকেই আমার কম্পিউটার খুব ভালো লাগতো। যদিও বাসায় কম্পিউটার বা ল্যাপটপের কথা ওইভাবে কখনো বলতে পারেনি কারণ আর্থিক সমস্যা ছিল বা সামর্থ্য ছিল না । অনেক শখ থাকলেও সেটি পূরণ করার সামর্থ্য ছিল না। তবে সখটা আমার পূরণ হয়েছিল।যদিও পূরণ হতে অনেক সময় লেগেছিল। কম্পিউটার পছন্দ হয় সেই ২০১০ সালে তবে ল্যাপটপ হাতে পেয়েছিলাম আমি ২০১৬ সালে।
সময়টা ছিল ২০১৫ সাল, তখন আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি। ভালোই দিন যাচ্ছিল তখন। হঠাৎ একদিন আমি যে কোচিং এ পড়তাম, সেই কোচিং এর থেকে ঘোষণা আসে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজনের। এমন একটি কুইজ প্রতিযোগিতা হবে যেখানে একটি ফর্ম কিনতে হবে ২০০ টাকা দিয়ে আর তাতে থাকবে ৪০টি প্রশ্ন। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে বিজয়ী হওয়ার সুযোগ থাকবে। আমি তো এই প্রতিযোগিতার কথা শুনে খুব খুশি কারণ ল্যাপটপ ছিল প্রথম পুরস্কার। দ্বিতীয় পুরস্কার ছিল একটি স্মার্টফোন। এছাড়াও আরো অনেক পুরস্কার ছিল। আমি সাথে সাথে একটি ফর্ম কিনে ফেললাম। ২০০ টাকা ধার করে নিয়েছিলাম আমার মনে পড়ে এখনো।
এখন যেমন সব উত্তর গুগল খুঁজে পাওয়া যায় তখন কিন্তু এত সুবিধা ছিল না। যদিও স্মার্টফোন ছিল ইন্টারনেট ছিল তবে সেগুলো মোটামুটি লেভেল এর। তো সেখানে অনেক প্রশ্ন উত্তর আমার জানা ছিল কারণ কিছু বুদ্ধির অংক ছিল সেগুলো আমি সহজে পেরে উঠি। বাকি প্রশ্নগুলোর জন্য আমি লাইব্রেরী থেকে আজকের বিশ্ব নামক একটি বই কিনে আনি।।তারপর শুরু হয় আমার সেই বই পড়া। বইটি ছিল প্রায় 1000 পৃষ্ঠার। আমি লাইন বাই লাইন বইটি পড়তে থাকি। তখন শুধু দিন রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা আমি শুধু ওই বই পড়তাম। অবশ্য বই পড়ে লস হয়নি ওই বই থেকে প্রায় ২০-২৫ টার মতো প্রশ্ন কমন পড়েছিল। বাকি আর চার-পাঁচটা প্রশ্ন বাকি ছিল যেগুলো আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কিছু প্রশ্ন ইন্টারনেটে খুঁজে বের করেছিলাম। বাকি প্রশ্নের উত্তর অন্যান্য বই থেকে পেয়েছি। এক এক করে আমার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর রেডি হয়ে যায়। তারপর আমি সেটি ফিলাপ করে জমা দিয়ে দেই। এমনকি যাতে আমার চান্স বেড়ে যায় সেজন্য আমি আমার ভাইয়ের নামে আরেকটি ফর্ম কিনে সেটিও পূরণ করে দিয়ে দেই।
এরপর শুরু হয় আমার অপেক্ষার পালা কখন রেজাল্ট দিবে। এই নিয়ে আমার কত চিন্তা ঘুম আসে না ঠিকমত। বারবার শুধু স্যারদের কাছে যেতাম কখন রেজাল্ট দিবে এটা জানতে। একদিন আমাদের সেই কোচিং এর যে হেড স্যার ছিলেন তিনি আমাকে ফোন দিয়ে বললেন কংগ্রাচুলেশন রাজু তোমার জন্য ভালো একটি খবর আছে দ্রুত কোচিং এ চলে আসো। আমি ভাবলাম কি আর ভালো খবর হতে পারে। চলে গেলাম কোচিংয়ে। যাওয়ার পর আমার কোচিং এর ফ্রেন্ড গুলা সবাই আমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছিল। আমি বুঝতে পারিনি তখনও কি হয়েছে। তো সামনে যে কোচিং এর দরজায় একটি পোস্টার টাঙ্গানো দেখতে পারলাম যেখানে কুইজের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে আমি দেখতে পেলাম আমি এক নাম্বারে রয়েছি মানে আমি ল্যাপটপ জিতেছি। আমার যে কি খুশি লেগেছে আমি বলে বোঝাতে পারবো না কুইজ খেলে ল্যাপটপ ব্যাপারটা ভাবতেই কত মজার লাগে। যাক এবার অপেক্ষার পালা হচ্ছে কবে ল্যাপটপ হাতে পাব তার জন্য।
এবার ল্যাপটপ কবে পাব এই চিন্তায় আমার ঘুম আসেনা। কত চেষ্টা করে ঘুমাতে ঘুম আর আসে না। তো ধীরে ধীরে আমার এসএসসি পরীক্ষা চলে আসলো। এসএসসি পরীক্ষার কিছুদিন আগে দিয়ে আমাদের কোচিং থেকে একটি পিকনিকের আয়োজন করা হয়। সে পিকনিকে ঠিক করা হয় সবাইকে প্রাইজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আমি তো শুনে খুব খুশি যে অবশেষে ল্যাপটপ হাতে পাব। পিকনিকের দিন চলে যাই। তো পিকনিকে যাওয়ার পর একটু মনটা খারাপ হয়ে যায় কারণ ল্যাপটপ হাতে পেলেও স্যার আমাকে দেবে না কারণ সামনে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে আমি একবারে হাতে পাব। তো তখন আমি স্যারকে বললাম যে স্যার আমাকে তিন দিনের জন্য দেন, আমি আবার জমা দিয়ে যাব এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে নিয়ে যাবো। তারপর বাসায় আনলাম ল্যাপটপ। বাসায় এনে তো আমি কত খুশি যে কুইজ খেলে ল্যাপটপ পুরস্কার জিতেছি। তারপর আমি তিনদিন পরে ল্যাপটপ জমা দিয়ে আসি দেন এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে আমি ল্যাপটপ স্যারের কাছ থেকে নিয়ে আসি।
জীবনে প্রথম ল্যাপটপ হাতে পাওয়ার অনুভূতি আশা করি খুবই ভালো লেগেছে। কুইজ খেলে যে আমি জিতি এটা বহু আগে থেকে হয়তো ভাগ্য আমাকে সহায়তা করে খুব। এখন হয়তো আমাদের হ্যাংআউটের বৃহস্পতিবারের কুইজের প্রশ্নের সময় অনেকে ভাবেন যে আমি সব উত্তর গুগল থেকে দেখি। তবে বিষয়টা সম্পূর্ণ ভুল। অনেক কিছু আমি নিজেও জানি। আমি যে সময়টাই চল্লিশটি কুইজের উত্তর দিয়েছিলাম তখন কিন্তু মোবাইলের ইন্টারনেট এতটা সহজ ছিল না বা ইন্টারনেটে এত তথ্য পাওয়া যেত না যেগুলো এখন পাওয়া যায়। তো এই ছিল আমার ঘটনা আশা করি সবার কাছে ভালো লেগেছে দোয়া করবেন সবাই।
খুবই খুশি হলাম আপনি এক নম্বর জয়ী এবং কুইজে ল্যাপটপ পুরস্কার পেয়েছেন জেনে। আর এভাবে আনন্দটা আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। হয়তো আপনার আনন্দে আরও অনেকেই আনন্দিত হবে। আর দীর্ঘক্ষণ পড়ালেখা করা সেটা বড় ধৈর্য্যের ব্যাপার। আপনি দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত পড়েছেন এটাও খুবই অবাক লাগলো আমার কাছে।
জ্বি ভাইয়া। অই বই টা আমি সম্পূর্ণ শেষ করেছিলাম কিছু দিন এর মধ্যেই। এই জন্যই এতো এতো সময় নিয়ে পড়েছিলাম।
কুইজ খেলে জীবনে প্রথম ল্যাপটপ হাতে পেয়েছেন। শুনে খুবই ভালো লেগেছে। ঠিকই বলেছেন আপনি ।কুইজ খেলে প্রাইজ পাওয়ার মজাটাই আলাদা আপনি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে। প্রথম বিজয়ী হয়েছেন। এবং তার জন্য আপনি অনেক পড়াশোনা ধৈর্য সহকারে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। আপনার ল্যাপটপ পাওয়ার অনুভূতিটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জ্বি আপু। সেই ল্যাপটপ ছিলো আমার জীবনের প্রথম। পড়ার কারনেই পেয়েছিলাম। আসলে ভাঘ্য সহায় ছিলো সেদিন।
আপনার ল্যাপটপ বিজয়ের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। তবে একটি বিষয় আমাকে বেশি নাড়া দিয়েছে। যে আপনি ১৫থেকে ১৬ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছেন সেটা আমার দ্বারা কখনো সম্ভব না।
আসলে চেস্টা করলে সবই সম্ভব। আমি নিজেও ভাবিনি যে এতো সময় পড়তে পারবো। তবে সামনে লক্ষ্য রেখে পড়েছি। তাই সার্থকতাও পেয়েছি।
চল্লিশটি কুইজের উত্তর দিয়ে ল্যাপটপ পুরস্কার পেয়েছেন জেনে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আসলে কিছু কিছু অনুভূতি আছে যেগুলো প্রকাশ করা যায় না। আপনার অনুভূতি আপনি আপনার লেখায় প্রকাশ করেছেন। আমার কাছে কিন্তু খুবই ভালো লেগেছে। হয়তো সে সময় তথ্য প্রযুক্তি অতটা উন্নত ছিল না। কিংবা স্মার্ট ফোনে খুব সহজে প্রশ্ন খুঁজে পাওয়া যেত না। তারপরও আপনি বিজয়ী হয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। হয়তো সেই সময় গুলো আর কখনো ফিরে আসবে না। তবে স্মৃতিগুলো সারা জীবন থেকে যাবে।
হুম অনেক অনুভূতি আছে যেগুলো ভাষায় প্রকাশ করা যায়না কখনো। তবুও আমরা চেস্টা করি সব কিছু তুলে ধরার।
নিজের যোগ্যতায় কোনকিছু করা বা জেতার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা বেশ কঠিন।আপনি সুন্দরভাবে তা করেছেন।আপনার আনন্দের মুহুর্ত সুন্দরভাবে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাদের সাথে সেই আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পেরে আমার নিজের কাছেও খুব ভালো লাগছে।
আপনি আপনার কোচিং থেকে দেয়া কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করে একটা ল্যাপটপ পেয়েছেন এটা শুনে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে আপনি একদম ঠিক কথাই বলেছেন ২০১৫ সালের দিকে মোবাইল অথবা ইন্টারনেট থাকলেও এখন যে পরিমাণে প্রশ্নের উত্তর সেখানে পাওয়া যায় তখন সেগুলো পাওয়া যেত না। তখন সবারই একটাই পছন্দের জিনিস ছিল সেটি হচ্ছে আজকের বিশ্ব।
বিজয়ী হবার পরে পুরস্কার হাতে পাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অনুভূতিটা খুবই ভালো লাগার মত একটা অনুভূতি। সে সময় মনের মধ্যে বারবার উঁকি দিতে থাকে কখন আমার স্বপ্নের জিনিসটি হাতে আসবে।
হ্যা ভাই। আজকের বিশ্ব বইটি পরে আমি অনেক কিছুই জানতে পেরেছিলাম। খুব ভালো লেগেছিলো নিজের কাছেও।
একটা কথা কী যদি মনে থাকে বিশ্বাস আর সাহস তাহলে বিজয় নিশ্চিত ৷ আপনি কুইজ খেলে ল্যাপটপ পেয়েছেন তার অনুভুতি টা বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়লাম ৷আপনার টাকা না থেকেও ধার করে নিয়ে ফ্রম কিনেছেন ৷১০০০ হাজার পৃষ্ঠার বই পড়ে তারপর অন্য বই থেকেও সগ্রহ করেছেন ৷বিষয়টি আমার নজরে সেরা ৷
চেষ্টা করলে যে সফলতা অর্জন করা যায় ৷তা আপনার অনুভুতি টি না পরলে বুঝতাম না ৷
একদম। সেই বিশ্বাস আর সাহস নিয়েই এগিয়ে গিয়েছিলাম সামনের দিকে। এবং জয়ী হয়েছি।