নিজের কম্পিউটারের সমস্যা নিজেই সমাধান করে নিলাম।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। অফিস এর কাজে ব্যস্ততায় সময় কেটে যাচ্ছে। সব সময় চেষ্টা করি ভালো থাকার। তবে যদিও ভালো থাকা নির্ভর করে পারিপার্শিক বিষয় গুলোর উপর। তবে যতটা ভালো থাকা যায় সে চেষ্টাই করে যেতে হয়। তো আজ শেয়ার করবো সমস্যায় পরে সে সমস্যা থেকে নিজের চেষ্টায় উদ্ধার হওয়ার গল্প। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের।
গতকাল ছিলো শুক্রবার। আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই আমার কম্পিউটার ব্রাউজ করছিলাম। তবে পিসিটা কেমন যেনো একটু স্লো স্লো লাগছিলো। তো এই পিসি বিল্ড করেছিলাম ২০১৭ সালের শুরুতে। এর মাঝে কোনো কাজ করাতে হয়নি। ভাবলাম কুলিং ফ্যানটা চেক করি। চেক করে দেখি কুলিং ফ্যান এ অনেক ময়লা জমে গেছে। ফলে প্রসেসর ওভারহিট হয়ে যাচ্ছে যার কারণে পিসি স্লো কাজ করছিলো। আরো কিছু দিন আগে থেকেই প্ল্যান ছিলো কুলিং ফ্যান পাল্টাবো। তাই সেই ব্যবস্থা করার জন্য আমার বন্ধু শুভো কে কল দিলাম। বললাম আমার কুলিং ফ্যান লাগবে। আর সেটাপ ওরই করে দিতে হবে। আমি এসব কম পারি। যাই হোক ও বললো ওর আছে। তাই সেটাই লাগাবে। আমিও বললাম সমস্যা নাই চলে আয়। ও চলে আসল সকালে খাওয়া দাওয়া শেষ করেই। আসার পর আমার পিসি খুললাম। কুলিং ফ্যান খুলে দেখি অনেক ময়লা আর প্রসেসর এর পাশেও অনেক ময়লা ছিলো। শুভ একটা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে থাকলো। কিন্তু সেটাপ করে দেখি ওর কুলিং ফ্যানটা একটু বড় হয়ে যায় আমার জন্য। কি আর করা। পিসি এভাবে রেখেই আমার আগের কুলিং ফ্যানটা নিয়ে চলে গেলাম মার্কেট এ। কিন্তু সেখানে ব্ল্যাকক্যাট এর কোনো কুলিং ফ্যান পেলাম না। তাই চলে আসলাম। আমার বন্ধু তার আরেক বন্ধু কে কল দিয়ে বললো একটা কুলিং ফ্যান নিয়ে আসতে। যেটা রাতে হাতে পাবো। আমি বাসায় চলে আসি। এরপর আমার আগের কুলিং ফ্যানটা খুলে ভালো মতন পরিষ্কার করি। অনেক ময়লা জমেছিলো। সব ধুলোবালি। তো সব পরিষ্কার করে আবার লাগিয়ে ফেললাম। এরপর পিসি স্টার্ট দেই পিসি তো স্টার্ট হয়না।
কি সমস্যা সেটা তো খুজেই পাচ্ছিলাম না। শুধু পাওয়ার এলইডি লাইট ব্লিংক করছিলো। ইউটিউব এ সার্চ দিলাম। প্রথমে CMOS ব্যাটারি খুলে রাখলাম বায়োস রিসেট এর জন্য। সেটায় কাজ না হওয়াতে। র্যাম দুইটা খুলে পরিষ্কার করে আবার লাগিয়ে দিলাম। এবারো কাজ হলোনা। সাথে সাথে শুভো রে কল দিলাম। ও বললো প্রসেসর খুলে দেখতে ঠিক মতন লাগিয়ে ছিলো কিনা। আমি প্রসেসর খুলে তো চক্ষু আকাশে। দেখি প্রসেসর যেখানে বসাই মাদারবোর্ড এ সেখানের অনেক গুলো পিন বেকে গিয়েছে। ধারনা করলাম শুভ যে ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে গিয়েছিলো তখনই এটা হয়েছে। সাথে সাথে শুভ কে জানিয়ে দিলাম। এবার ছবি তুলে ভালো মত পর্যবেক্ষন করলাম। যেটা আপনারা উপরের ছবি তে দেখতেই পাচ্ছেন। পিন গুলো বাকা হয়ে অবস্থা খারাপ। আমি তো ভালোই টেনশন এ পরে গেলাম। এমনি আমার হাতে টাকা নাই। তার উপর যদি মাদারবোর্ড পাল্টাতে হয় তাহলে তো অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। ১০ হাজার টাকা নিয়ে টান দিতো। শুভো বললো সমস্যা নাই পিন গুলো ঠিক করে লাগাবে। তখন আমি আর দেড়ি করলাম না। ধিরে ধিরে ঠিক করা শুরু করলাম। ছোট্ট একটা কানেক্টর দিয়ে খুবই সাবধানে পিন গুলো সোজা করে তার আগের যায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু এতোই ছোট যে খুবই কষ্ট হচ্ছিলো এগুলো করতে। দেখতেও পাচ্ছিলাম না ঠিক মতন। এরপর এক সাইড করে অন্য সাইডের আরো কয়েকটা করে শুভোর জন্য রেখে দেই।
দুপুরের খাবার খেয়ে শুভো চলে আসে আমার বাসায়। সাথে আমাদের এক বন্ধুও আসে। তারপর শুভো লেগে যায় পিন গুলো সোজা করার কাজে। ও ভালো মতন দেখে না। ও কিছু ঠিক করে প্রসেসর লাগাতে নিয়েছিলো। তখন আমার মনে হলো কিছু পিন বাকি আছে। তখন কাজে আসলো আমার সখের ফোন। ম্যাক্রো ফটো তুললাম। যেটা আপনারা উপরে দেখতে পেয়েছেন। এবার মাঝের গ্যাপ গুলোর পিন গুলো খুজে আবার যায়গা মত বসালাম। ভাগ্য ভালো যে কোনো পিন ভেংগে যায়নি। গেলে তো মনে হয় মাদারবোর্ড পাল্টাতে হতো। এবার আরো কিছু ছবি তুলে নিশ্চিত হলাম যে সব পিন ঠিক হয়েছে। তখন প্রসেসর বসিয়ে দেখলাম এবার পিসি চালু হয়েছে। একটু হাফ ছেড়ে বাচলাম। এবার রাতে আমার কুলিং ফ্যান চলে আসলে সেটা নিজেই সেটাপ করে দিলাম। ব্যাস। আমার পিসি রানিং। চিন্তা মুক্ত ঘুম হলো রাতে।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
নিজের সমস্যা নিজেই যখন সমাধান করা যায় তখন খুবই আনন্দ লাগে। আপনি তো নিজের কম্পিউটার নিজেই ঠিক করে ফেলেছেন। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি কিভাবে কম্পিউটারের সমস্যা সমাধান করলেন তা উপস্থাপন করেছেন। এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক তো করতে পেরেছি। তবে খুব ভালোই প্যারা খেতে হয়েছে।
সত্যিই ভাইয়া আপনার পোস্টটি দেখে খুবই ভালো লাগলো । কারণ নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করা খুবই ভালো একটি কাজ। আসলেই কম্পিউটারটি যদি কোন মেকানিকের কাছ থেকে ঠিক করা হতো তাহলে সেখানে কিছু অর্থের প্রয়োজন হতো। আর অন্যদিকে আপনি নিজের কম্পিউটারের সমস্যা নিজেই সমাধান করেছেন এতে আপনার ওই সমস্যাটির প্রতি একটা ধারণা এসেছে এবং অর্থের দিক দিয়েও বেঁচে গিয়েছেন। আসলে নিজের কাজের সমস্যার সমাধান নিজে করায় উত্তম। যাই হোক আপনার পোস্টটি দেখে নিজের কাজ নিজে করার প্রতি একটা আগ্রহী জেগে উঠলো ।ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে যদি নিজে ঠিক করতে না পারতাম তাহলে ১০০০০ টাকা নিয়ে টান দিতো। কারণ মাদারবোর্ড পাল্টাতে হতো।
অবশেষে তাহলে নিজের পিসি ঠিক করতে পেরেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। অনেকটাই ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলেন বোঝাই যাচ্ছে আসলে নিজের পছন্দের কিছু হঠাৎ করে নিজের পছন্দমত যদি কাজ না করে তাহলে খুবই খারাপ লাগে যদিও বন্ধুদের সাথে নিয়ে অনেকটাই ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলেন তবে শেষমেষ ঝামেলা থেকে উদ্ধার পেয়েছেন। পিনগুলো ভেঙে গেলে হয়তো বা নতুন করে আবার সেটআপ দেওয়া লাগতো। যাই হোক আপনার ভাগ্য অনেক বেশি ভালো ছিল এ ব্যাপারে। নিজের কাজ নিজে করার মাঝে এক আনন্দ আছে যে আনন্দটা আপনি পেয়েছেন। যাই হোক পুরো ব্যাপারটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যা ভাই। নিজের পিসি নিজে যে ঠিক করতে পেরেছি এটাই অনেক।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। নিজের কম্পিউটারের সমস্যা নিজেই সমাধান করেছেন দেখে বেশ ভালো লেগেছে। আসলে আপনি তো বেশ দারুন মেকানিক ভাই আপনার কাছ থেকে দেখছি কম্পিউটারের যন্ত্রের কাজ শিখতে হবে। আসলে নিজের জিনিসের সমস্যার সমাধান যদি নিজেই করা যায় তাহলে নিজের মধ্যে বেশ আনন্দ কাজ করে ভাই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হেহে আসুন ভাই। যেটুক পারি সেটুক আপনাকে শিখিয়ে দিতে পারবো।
আসলেই ভাইয়া নিজের জিনিস যদি নিজে ঠিক করতে পারা যায় তাহলে অন্য রকমের একটা ভালো লাগা কাজ করে। যেহেতু কম্পিউটার এর বিষয়ে আপনার ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই আপনি এটা ঠিক করতে পেরেছেন। আমার কম্পিউটারেও কিছুদিন যাবত সমস্যা দেখা দিচ্ছে দেখা যাক কিভাবে এটা ঠিক করা যায়।
ঠিক বলেছেন। পিন গুলো ঠিক করার পর আমার মধ্যেও আলাদা এক ভালো লাগা কাজ করেছিলো।