আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ১৭ || চাঁদপুর এর ত্রি-মোহনায় ভ্রমন।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ১৭

দেখতে দেখতে আরো একটি প্রতিযোগিতা চলে আসলো। যদিও গত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা হয়নি। কারণ সেটা আমার সাধ্যে ছিলোনা। যাই হোক এবার ঈদ এ যেহেতু ঘুরেছি তাই এটায় অংশগ্রহণ না করলে যেনো হচ্ছেইনা। তাছাড়া এমনিতেও ঘোরাঘুরির অনুভূতি শেয়ার করতামই। কিন্তু এতো দেখি এ নিয়ে প্রতিযোগিতাই এসে গেলো। এ যেনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।


Simple and Minimalistic Travel Vlog YouTube Thumbnail.png

ক্যানভা প্রো দিয়ে বানানো।

images (17).jpeg

উৎসবের ভ্রমণ কাহিনী

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়া সবাই মিলে। ঈদ আমাদের অনেক বড় একটি উৎসব। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর ঈদ যেনো এক আনন্দ নিয়ে আমাদের কাছে আসে। রোজার ঈদ মানেই বেড়াতে যাওয়া, আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা করা আর হ্যা সব চেয়ে মজার যে বিষয় হচ্ছে ঈদ সালামি। বড়দের সালাম দিয়ে ঈদ সালামি নেওয়ার মজাই আলাদা। আর এবার তো আমাদের দাদা আমাদের সালামি দিয়ে আমাদের ঈদের আনন্দ আরো অনেক গুনে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ঈদে সবাই কম বেশি ঘোরাঘুরি করে। তেমনি আমিও এবার গিয়েছিলাম আমাদের চাঁদপুরের ত্রি-মোহনায়।


IMG_20220504_180737.jpg

চাঁদপুর ত্রি-মোহনায় একটি ছবি।



ভৌগোলিক অবস্থান

চাঁদপুর মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত। যে যায়গাটাতে গিয়েছি এবার এটি ত্রি-মোহনা নামে পরচিত। এলাকার মানুষ এটাকে চাঁদপুর এর ঠোডা নামে বা বড় স্টেশন নামে জানে। এটি চাঁদপুর সদরেই অবস্থিত। চাঁদপুর সদরঘাট এর খুব কাছা কাছি এই বড় স্টেশন বা ত্রি-মোহনা। বলা চলে চাঁদপুর এর বিখ্যাত একটি যায়গা এটি। শুরুর দিকেও আমি একবার এই নিয়ে লিখেছিলাম। তবে সেবার ভালোমত বর্ননা দিতে পারিনি।



উৎসব এর ভ্রমন শুরু

ঈদের দিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিলো তাই সেদিন আর কোথাও যেতে পারিনি। তবে পরের দিন আর বসে থাকতে পারলাম না। চলে গেলাম আমার খালার বাসায়। সেখানে আমার খালাতো ভাই নিলয় ছিলো। ওকে নিয়েই প্ল্যান করলাম চাঁদপুর ত্রি-মোহনায় যাওয়ার। যেই প্ল্যান সেই কাজ। সকালে একটু বৃষ্টি হলেও দুপুরে আর হয়নি। তবে আমরা গিয়েছিলাম বিকালে। আমি আর নিলয় বিকাল ৪ টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আমরা হাঁটতে হাঁটতে মেইন রাস্তার দিকে যেতে থাকি। সেখান থেকেই সিএনজি করে যেতে হবে।

IMG_20220504_125500.jpg

আমি আর আমার কাজিন নিলয়।


আমি আর নিলয় দুজনই পাঞ্জাবি পরে বেড় হয়েছিলাম। কারণ ছবি তুলতে হবে অনেক। আর পাঞ্জাবিতে ছবি সুন্দর আসে অনেক যতদুর জানি। অনেক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর ও সিএনজি পাচ্ছিলাম না। কেউ যেতে চাচ্ছিলোনা। জানিনা কেনো। আর যেগুলা আসছিলো সেগুলায় যায়গা হচ্ছিলোনা। কারণ আমরা ৩ জন ছিলাম। কারণ পরে নিলয় এর এক বন্ধু আমাদের সাথে জয়েন হয়েছিলো। হঠাৎ দেখলাম একটা বাস আসলো। তখন বাসে করেই রওনা দিলাম বাস স্ট্যান্ড এর দিকে।


IMG_20220504_171340.jpg

আমি নিলয় ও তার বন্ধু রিকশায় করে যখন যাচ্ছিলাম।


তো যথারীতি বাস স্ট্যান্ড এ নেমে গেলাম। সেখান থেকে অটোতে করে যেতে হয় বড় স্টেশন। কিন্তু এবার ও অটো পেলাম না। তখন কি আর করা ৩ জন মিলে রিকশা নিলাম বেশি টাকা দিয়ে। শুরু হলো আমাদের ত্রি-মোহনা যাত্রা। রিকশায় যেতে অবশ্য ভালো লাগছিলো। কারণ গ্রামের পরিবেশ খুবই ভালো লাগে সব সময়। কিন্তু সামনে গিয়ে বুঝলাম যে রাস্তায় অনেক জ্যাম। কারন সবাই সেখানে ঘুরতে যাচ্ছিলো। তাই কি আর করা। অপেক্ষা করতে করতে এগোচ্ছিলাম। আমার প্ল্যান ছিলো সূর্যের ছবি তোলার। কারণ সূর্যাস্ত অনেকটাই দেখা যায় সেখান থেকে। অনেক্ষন অপেক্ষা করে আমরা রিকশা থেকে নেমে হেঁটে যেতে শুরু করলাম। কারণ খুব কাছা কাছি ছিলো।


IMG_20220504_182929.jpg

ত্রি-মোহনায় ঢোকার গেট।


গিয়ে দেখি এখানের নাম বঙ্গবন্ধু পার্ক করা হয়েছে। যাক যায়গা তো একই সমস্যা নাই। কিন্তু প্রচুর ভির সেখানে। অনেক মানুষ গিয়েছে। ঢুকতেই আমরা ৩ জন আলাদা হয়ে গেলাম ভিড় এর কারণে। আমি সেদিকে খেয়াল না দিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম ছবি তোলায়। কারণ নদীর পাড়ে গেলে ছবি না তুলে থাকা যায় নাকি। তবে আশে পাশের মানুষ এর জন্য ছবি তুলতে সমস্যা হচ্ছিলো খুব। বার বার সামনে দিয়ে চলে আসতেছিলো।


IMG_20220504_174835.jpg

মেঘনা নদীর এপার ওপার।


আমি ঘুরে ঘুরে ভালো ছবি তুলতে থাকলাম। কারণ যায়গা টা খুব সুন্দর। নদীর পাশের যায়গা গুলো এমনিতেও খুব সুন্দর হয়। তবে খুব গরম লাগছিলো। এতো মানুষ এর ভিড় একটু গরম তো লাগবেই। অনেক মানুষ ছিলো সেখানে। যা বলার বাইরে।


IMG_20220504_182638.jpg

IMG_20220504_175134.jpg

আশা করছি এবার বুঝতেই পারছেন কি পরিমাণ মানুষ ছিলো সেখানে।


এই ভিড়ের মাঝেও আমি নদীর ছবি তুলে যাচ্ছিলাম। দেখলাম অনেক মানুষ নৌকায় উটতেছে। খুব ভালো লাগলো আমার মন চাইলো উঠতে কিন্তু আমি সূর্যাস্ত মিস করতে চাইলাম না। কারণ নৌকায় অন্য সময় ঘুরতে পারবো কিন্তু সুর্যাস্ত এই সময় ছাড়া দেখা যায়না তেমন একটা।


IMG_20220504_182328.jpg

IMG_20220504_182344.jpg

অনেকে নৌকা দিয়ে নদী পার হচ্ছিলো।


মানুষ সেখানে ভালোই উপভোগ করছিলো। অনেকে ছবি তুলছিলো। অনেকে নৌকা ভাড়া করে চর এ ঘুরতে যাচ্ছিলো। অনেকে এপার হতে ওপার যাচ্ছিলো। আবার অনেকে স্পিড বোট এ করে ঘুরছিলো। বেশি ভালো লাগছিলো কিছু এলাকার ছেলে পেলে বড় নৌকা ভাড়া করে স্পিকার দিয়ে গান বাজাতে বাজাতে যাচ্ছিলো। খুব নাচা নাচি করছিলো সবাই। আমি একটা ভিডিও করেছি সেগুলা ঐ ভিডিওতে দেখতে পাবেন।


IMG_20220504_181143.jpg

IMG_20220504_181411.jpg

নদীর সাথে কিছু সেলফি তুললাম।


পরে আমি চলে গেলাম মেইন যায়গায়। যেখান থেকে অনেকটা সূর্যাস্ত দেখা যায়। বসে বসে ছবি তুলা শুরু করলাম। কারণ সব চেয়ে সুন্দর অবস্থা ছিলো সেটাই। খুব ভালো লাগছিলো।

IMG_20220504_175710.jpg

IMG_20220504_181017.jpg

সূর্যাস্তের দুই ছবি।


সূর্যাস্তের অনেক ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু সব গুলা দিতে পারছিনা। কারণ অনেক বেশি ছবি তুলেছিলাম। ট্রাইপড নিতে পারলে সুন্দর করে দেখাতে পারতাম। তবে একটি এনিমেশন বানালাম। সেটি দেখতে পারেন।


IMG_20220504_175434-ANIMATION.gif

অনেক লিখলাম। বেশি লিখে আর পোস্ট বড় করতে চাচ্ছিনা। এখন একটি ভিডিও আর আরো কিছু ছবি উপভোগ করুন।



ফটোগ্রাফির তথ্য

ডিভাইসOneplus 7t
মোডওয়াইড
লোকেশনচাঁদপুর

তো এই ছিলো আমার গ্রীষ্মকালীন ফলের গল্প। আশা করি পুরোটা পড়েছেন। কেমন হলো কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। শুভেচ্ছা রইলো সবার জন্য।


░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

New Project.gif

⋆ 🎀 𝒞😍𝓃𝓃𝑒𝒸𝓉 𝑀𝑒 🏵𝓃 🎀 ⋆
Discord | Twitter | Facebook
Steemit |Instagram | Youtube |
Sort:  
 2 years ago 

ভাই শুনছি চাঁদপুরের মানুষ নাকি একদিন আগে ঈদ পালন করে। তো আপনারা কি বাংলাদেশের মানুষের সাথে ঈদ উদযাপন করলেন নাকি চাঁদপুরের মানুষের সাথে 😁।যাইহোক ভিডিওটা অস্থির ছিল।

 2 years ago 

ঠিকি শুনেছেন। তবে চাঁদপুর এর সব যায়গায় না। অল্প কিছু গ্রামে ঈদ পালন করে সৌদি আরব এর সাথে মিল রেখে। তবে আমরা বেশির ভাগ সবার সাথেই ঈদ করি চাঁদ দেখে।

 2 years ago 

ঈদ-আনন্দ খুব সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন‌ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা খুব চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন । সত্যিই পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আশাকরি আপনি এই প্রতিযোগিতার প্রথম সারিতে অবস্থান করবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল, ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার ভালো লেগেছে যেনে খুব ভালো লাগলো।

 2 years ago 

অনেক দারুন একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন। এই জায়গাটির নাম অনেক শুনেছি, কিন্তু কখনও যাওয়া হয়নি। জায়গাটা আমার কাছে বেশ অসাধারণ লাগলো। খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন, এমনকি ভালোভাবে উপভোগ করলেন। আপনার ভ্রমণ কাহিনী শুনে ভালোই লাগলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

একদিন চলে আসুন সবাই মিলে। মজা হবে অনেক। শুভেচ্ছা রইলো।

 2 years ago 

বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো। ভিডিও সহ শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

 2 years ago 

হ্যা ভাই। ছোট ভাই নিয়ে গিয়েছিলাম। ভালো একটি দিন কেটেছিলো সেদিন।

 2 years ago 

এই ঈদুল ফিতরের সবচেয়ে মজার বিষয় আসলেই সালামি ।এ বিষয়টা ছোটবেলা থেকেই খুব ভালোলাগে। সবাইকে ঈদের সালাম দেয়া তারপর সালামি জোগাড় করা। আর তাতেই সবাই থাকে অনেক খুশি ।আপনার ভ্রমণ কাহিনী দেখে আমারও ইচ্ছে করতেছে এই জায়গাটায় গিয়ে ঘুরে আসতে। নদীর পানির ঢেউ খুব দারুণ ভাবে বয়ে যাচ্ছে। ভিডিওতে যেভাবে দেখতে পাচ্ছি মনে হচ্ছে যেন সামনা সামনি দেখলাম ।খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার ভ্রমণ কাহিনী দেখে।

 2 years ago 

হ্যা আপু। ভালই সালামি পেয়েছিলাম এবার ঈদ এ। রেকর্ড পরিমাণ সালামি ছিলো।

 2 years ago 

ওয়াও নদীর পাড়ের দৃশ্য পটভূমি দেখতে অনেক ভালো লাগছে। দারুন মুহূর্ত উপভোগ করলেন নদী পথের যাত্রা একটু বিপদজনক হলেও কিন্তু অনেক মজা হয় ভালো লাগলো আমার কাছে।

 2 years ago 

হুম ভাই। অনেক মজা করা যায় নদী পথের যাত্রাতে।

 2 years ago 

শুধু শুনেই আসছি যে চাঁদপুর ত্রিমোহনা খুব সুন্দর যে ভরপুর জায়গা আসলে কোনদিন যাওয়া হয় নি আজই প্রথম আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনটা ভরে গেল বন্ধুদের নিয়ে খুবই সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন জায়গাটিতে এতে কোন সন্দেহ নেই

 2 years ago 

আসুন একদিন। ভালো লাগবে।

 2 years ago 

বন্ধুদের নিয়ে যখন চাঁদপুর ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন এই জায়গাটায় যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। জায়গাটি আসলেই অনেক সুন্দর। তবে আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন এত লোকের ভিড় ছিল না। এখন ঈদের জন্য হয়তো এত লোক সেখানে দেখা যাচ্ছে। আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা টা ভালো ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

হ্যা সাধারন সময় অল্প ভিড় থাকে। তবে ঈদ এর সময় দেখেই এতো বেশি মানুষ।

 2 years ago 

চাঁদপুরের ত্রিমহনায় একবার ডিপার্টমেন্ট থেকে গিয়েছিলাম অনেক সুন্দর অনুভূতি পেয়েছিলাম। যখন লঞ্চ করে পদ্মার বুক চিরে মেঘনা নদীতে পা দিলাম তখন সমুদ্রের মতো অনুভূতি পেয়ে গেছিলাম। চার-পাশটা এত সুন্দর যা বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আপনার চাঁদপুরের ভ্রমন আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এবং সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন। সে অনুভূতি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হ্যা ফিলিংস টা অস্থির হয়। নদীর চারপাশ সত্যি খুব সুন্দর হয়।

 2 years ago 

খুবই সময়োপযোগী একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে। আর আপনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। আপনি আজকে চাঁদপুরের ত্রিমোহনায় ভ্রমণ করেছেন এবং তার কিছু মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আপনি যে দ্বিতীয় ছবিটা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন, সেটি কিন্তু আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

হ্যা ওই ছবিটা আমার কাছেও অনেক বেশি ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68220.71
ETH 3321.59
USDT 1.00
SBD 2.74