আমার বাইক কেনার গল্প......... পর্ব-২
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। একটু বেশি চমৎকার আছি বলা যায়। এই বেশি চমৎকার এর একটা কারণ আছে বটে। তার আগে বলে নেই সবাই একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন। দেশের অবস্থা খুব একটা ভালো না। চারিদিকে শুধু গেঞ্জাম আর গেঞ্জান। যাক সবাই সাবধানে চলাফেরা করবেন এটাই চাওয়া। তো আজ আপনাদের একটি সুখবর দিতে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে আমি একটি মোটরবাইক নিয়েছি। হ্যা ঠিকই শুনেছেন। আজ সে অনুভুতি শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। আজ থাকবে ২য় পর্ব।
তো প্রথম পর্বের পর থেকেই শুরু করছি - বাইকটা আমার খুবই পছন্দ হয়েছিলো। আমি একটু চালিয়েছিলাম তাই আরো বেশি ভালো লেগেছিলো। যেহেতু আমি নতুন বাইক চালাবো তাই হাত ও ক্লিয়ার করতে হবে। কিন্তু ও ব্যাটা তো দিবেই না। দিবেনা মানে দিবেই না। উনি বলে ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছে তো ৬০ এর নিচে বেচবেই না। আমার প্রথম বাজেট ছিলো ৩৫ হাজার টাকা। যেটা বৃদ্ধি করতে করতে ৫০ হাজার এ গিয়ে ঠেকেছে। তবুও উনি রাজি হয়নি। তাই সে বাইক বাদ দিলাম। এবার বন্ধুকে বললাম আমার বাইক খুজে দেওয়ার দায়িত্ব তোর। যেভাবেই হোক কিনে দিবি। তো ও খুজতে থাকলো অনলাইনে। অনেক খুজে কিন্তু দাম এ হলে দেখতে ভালো হয়না। আর দেখতে ভালো হলে দাম এ হয়না। তো কয়েকদিন পর একটা বাইক পেলো অনটেস্ট এর। যেটা ফ্রেশ কন্ডিশন। আমার বন্ধুরা বললো চল দেখে আসি। কিন্তু আমার তো অফিস আছে। তাই ওদের বললাম যেনো ওরা যায়। তো আমার দুই বন্ধু চলে গেলো। ওরা দেখেও আসলো। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেলার নাকি প্রস্তুত ছিলোনা। তাই সে বাইক বাদ দিলাম। পরে ওনাকে ২০০০ টাকা অগ্রিম পেমেন্ট করি শোরুম এর কাগজ গুলো ঠিক করার মতন। কিন্তু উনি অনেক ঘুরালো তাই বাদ দিলাম। যাক এরপর আরো একটা বাইক দেখলাম। তখন আমি অফিসে। আমার বন্ধু বললো যে চল দেখে আসি। আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে রাখলাম। ও বাইক নিয়ে চলে আসলো। এরপর দুজন টুক টুক করে চলে গেলাম সেই জুরাইন এর ঐদিক। বাইক দেখে পছন্দ হয়ে গেলো। অগ্রিম দিতে চাইলাম ১০০০ টাকা। আর বাকিটা দিয়ে কালই বাইক নিয়ে যাবো। কারণ তখনো আমার কাছে টাকা ছিলোনা কাছে। সব টাকা ছিলো বাসায়। কিন্তু টাকা দিতে যেয়ে শুনি অন্য কথা। নাম ট্রান্সফার এ নাকি ঝামেলা তাই তারা এই বাইক দিবেনা। আদতে অন্য এক পার্টি এসে দাম বেশি বলেছে। তাই আরকি। এখানেও ছলনার শিকার হলাম। আমি খুবই আশাহত হয়েছিলাম।
আমি তো রাগে দুঃখে ভেবেই নিয়েছিলাম যে বাইকই কিনবোনা আর। মেজাজ ধরে গিয়েছিলো। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই হচ্ছেনা। পরে আরেকটা বাইক দেখেছিলাম। সেটা ছিল কাঞ্চন ব্রিজ এর ঐদিক। তো সেটার কন্ডিশন তেমন ভালোনা। অনেক কাজ করাতে হবে। তাই বাদ দিলাম। এবার পরের দিন হঠাৎ আমার বন্ধু কল দিয়ে একটা বাইক দেখেছি দেখতে যাবো কিনা। কাগজ পাতি ঠিক ঠাক। পছন্দ হলে আজই নিয়ে আসবো। আর ভাগ্য ভালো ছিলো যে আমি সেদিন সকালেই টাকা গুলো বাসা থেকে নিয়ে ব্যাংক এ ডিপোজিট করে রেখেছিলাম। যেহেতু ওয়ালেট এ ক্রেডিট কার্ড ছিলো তাই যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলাম। অফিস থেকে আবার ছুটি নিলাম। আমাদের সুপারভাইজর তো হাসতে হাসতে বললো ভাই আপনি তো যে টাকা ভাড়া দিয়ে বাইক দেখতেছেন সে টাকায় বাইক আরেকটা হয়ে যাবে। আমিও হেসে দিলাম। এরপর কথা হলো বন্ধুর সাথে। ওরা দুজন ছিলো সোজা চলে যাবে সেখানে । আর আমি এখান থেকে যাবো। ওরা রউনা দেয়। কিন্তু আমি একটু আটকে যাই। হেড অফিস থেকে সেলস এর ম্যানেজার আসেন। সেখানে আটকে পরি প্রায় ১ ঘন্টার জন্য। এরপর বের হয়ে পাঠাও রাইড নিয়ে চলে যাই সেখানে। যেহেতু বাইক কেনার সব কিছু আমার বন্ধুর উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাই আর আমি তেমন দেখিনি। কথা হয় ওনার সাথে। শেষে আমরা অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নেই যে বাইক আজই নিয়ে যাবো। তাই ঐ বাইক নিয়েই টাকা বার করতে চলে গেলাম। নিয়েও আসলাম।
বাইকটি কিনি ৪৯ হাজার টাকায়। আমার নামে করতে হয়তো আরো ১০ হাজার টাকার মতন লাগবে। তবে এখন করা যাবেনা একদমই হাত খালি আমার। তাই অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নাই। তবে গাড়ি চালাতে সমস্যা হবেনা। গাড়িটি একটি কোম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন করা। সব কিছু দেখে শুনে বাইক নিয়ে নিলাম। যিনি মালিক ছিলেন বাইকটির তিনি খুবই ভালো লোক ছিলেন। আমার কাছে বাইকের চাবি দেওয়ার সময় কেঁদে ফেলেছিলেন। আমি বুঝে ছিলাম অনেক আবেগ ছিলো লোকটির। বাইক নিয়ে খুবই খুশি আমি। একজন খুশি তো অন্য জনের চোখে পানি। এটাই হয়তো নিয়ম। আমার জীবনের প্রথম বাইক এর চাবি পেয়ে খুব ভালো লাগছিলো। এরপর আমি আর আমার বন্ধু বাসার দিকে রউনা দিলাম। ও চালালো। আমি পেছনেই ছিলাম। এরপর তো এলাকায় এসে আমি চালাই। আবার আমার এক বন্ধুকেও নিয়ে গিয়েছিলাম দূর থেকে। এই তো আমার বাইকের স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেলো।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বেশ কয়েকদিন আগে বাইক কেনার প্রথম গল্পটা আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছিলেন। ঠিক আজকেও আমাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করেছেন। আর এ থেকে বিস্তারিত জানতে পারলাম। অবশ্যই এখন হাতখালি থাকায় নিজের করে নিতে পারছেন না এমন বিষয়টা তুলে ধরেছেন। যাইহোক বাইক কেনার বিষয় বিস্তারিত এখানে তুলে ধরেছেন, আর এ থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার বাইক কেনার বিষয়ে।
জ্বি ভাই। অবশেষে বাইকটা নিয়েই নিলাম।
আসলে সবারই প্রিয় বাইক কে কেন্দ্র করে অনেক আবেগ থাকে এজন্যই হয়তো লোকটি যখন আপনার হাতে বাইকের চাবিটা দিয়ে দিচ্ছিল তখন আবেগে কেঁদেছিল।
জ্বি ভাই। আমিও জীবনের প্রথম বাইকের চাবি হাতে পেয়ে অনেক আবেগ আপ্লূত হয়ে গিয়েছিলাম।