রাস্তা একদম ফাঁকা........

কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। তবে চমৎকার বেশিক্ষন থাকা যায়না। দেশের যা অবস্থা। সারাক্ষন ভয়ে থাকতে হয় এই বুঝি বড় কোনো ঝামেলা বেধে যায়। জীবন হাতে নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে ইদানিং। আজ আবার অবরোধ শুরু হয়েছে। তাও অফিসে আসতে হয়েছে। রাস্তায় বাস এর নাম নাই। কি একটা অবস্থা শুরু হয়েছে। আজ তা নিয়েই কথা বলবো আপনাদের সাথে।

সকালে আজ ঘুম ভাঙ্গেনি আমার। মানে ভেঙ্গেছে তবে সেটা ৭ টা ২৫ এর এলার্মে। একটু ভয় পেয়ে গেলাম। কারণ সাধারনত আমার এলার্ম সেট করা থাকে সকাল ৬ টা ৪৫ এ। তখনো আমার মনে নাই যে আজ তো অবরোধ। সমস্যা হবেনা। তাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আজ তো আর রক্ষে নেই আমার। আজ দেড়ি হয়ে যাবেই। তখনই মনে পরলো আজ তো অবরোধ। এমনিতেই বাস পাবোনা। আর একটু কষ্ট করে বাস পেলেও ৩০ মিনিট লাগবে অফিসে পৌঁছাতে। তখন আরো একটু ঘুমানোর ট্রাই মারলাম। সে ঘুম এর ডিউরেশন ৫ মিনিট। হাহা। যাক ৭ টা ৪৫ এ উঠলাম। উঠেই প্রথমে কম্পিউটার ছেড়ে আগে নিউজ দেখলাম কিছু। দেশের পরিস্থিতি কেমন সে সম্পর্কে খোজ নিতে হয়েছে আরকি। সাথে আমার এক কলিগ এর জন্য কিছু সফটওয়্যার ডাউনলোড করে নিলাম। সেটা পেন্ড্রাইভে করে নিয়ে নিলাম। এরপর চলে গেলাম গোসল করতে । এরপর গোসল শেষে এসে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম। যেটা আম্মু আগেই প্রস্তত করে দিয়েছিলেন। যাক খেয়ে আমি দ্রুতো প্রস্তুত হয়ে গেলাম অফিস এর জন্য। তখনই হঠাৎ আমার বন্ধু প্লাবন এর কল। ওর কল পেয়ে একটু অবাকই হলাম। এতো সকালে ও তো কল দেওয়ার কথা না। যাক ওর কল রিসিভ করলাম। তারপর ও জিজ্ঞেস করলো আমি কোথায়। আমি বললাম বের হয়ে গিয়েছি, ও বললো ও বের হচ্ছে। বাস স্ট্যান্ড এ দাঁড়াতে। মানে এক সাথে যাবো দুজন। ও যাবে কোর্টে। আর আমি অফিস এ।

আমি বাসার সামনে থেকেই একটা রিকশা নিয়ে বাজারে চলে গেলাম। রিকশা থেকে নেমেই ভাড়া চুকিয়ে প্রথমেই প্লাবন রে কল দিলাম। ও বললো আর বেশিক্ষন লাগবেনা। তখন আমি সেখান থেকে হেঁটে বাস স্ট্যান্ড এ চলে গেলাম। রাস্তা একদমই ফাঁকা। মাঝে মাঝে কিছু গাড়ি চলে। তবে বেশির ভাগ সময়ই ফাঁকা ছিলো। যাক এরপর আমি হাঁটতে হাঁটতে আরো সামনের দিকে চলে গেলাম। দুই একটা গাড়ি চললেও একটু পর শুধু বাইক দেখলাম রাস্তায়। না আছে প্রাইভেট কার না আছে গনপরিবহণ। আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম যে অফিস যাবো কিভাবে। আজ না যেতে পারলে সমস্যা আছে। কারণ মঙ্গল বার ছুটি নিয়েছি একটা দরকারে। আজ না যেতে পারলে মঙ্গল বার ছুটি পাবো কিনা সন্দেহ আছে। তাই যেভাবেই হোক যেতেই হবে। তবে যাবো কি ভাবে বাস ই তো আসেনা। কিছুক্ষন পর প্লাবন এসে পরলো। তখনই কিছু বাস ও আসতে শুরু করেছে। এক এক করে ৩ টা বাস ফেইল করলাম। যে মানুষ ছিলো বাসের ধারেও যেতে পারছিলাম না। একটু পর রাস্তার মাঝে দিয়ে একটা বাস আসলো। আমার বন্ধু বললো এটায় উঠতেই হবে। রিস্ক নিয়ে ওর সাথে রাস্তার মাঝেই দৌড় দিলাম। বাসে উঠেও গেলাম। প্রচন্ড ভিড়। তবুও উঠতে পেরেছি যে এটাই বেশি। আর যাই হোক বাস তো পেয়েছি।

এরপর ধিরে ধিরে বাস থেকে যাত্রী নামতেছিলো আর আমরা পেছনে যাচ্ছিলাম। কারণ সামনের দিকে অনেক ভিড়। যাক একটু পর নতুন বাজার আসার পর আমরা দুজনেই সিট পেয়ে গেলাম। তবে আমার চিন্তা ছিলো নামবো কিভাবে। বাসে যে পরিমান ভিড় ছিলো নামতে গেলে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। তাই ভাবলাম যেখানে নামবো তার অনেক আগেই সামনের দিকে চলে যাবো। কিন্তু বাস রাস্তা ফাঁকা পেয়ে এমন টান টানলো। একদম কাছাকাছি এসে গেলো। চাপ খেয়ে তো আমার অবস্থা খারাপ। তাও সামনে গেলাম। এরপর নেমে যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। এরপর সোজা সার্ভিসে চলে আসলাম।