মানব সেবায় একদিন || মুমূর্ষু রোগিকে রক্তদান।
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আমি সেবার প্রত্যয় নামক একটি সংগঠন এর সাথে জড়িত অনেক দিন ধরেই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানব সেবায় সব সময় কাজ করা। যখন যেভাবে পারি আমরা মানব সেবায় কাজ করি। রক্ত দেওয়া থেকে শুরু করে শীত বস্ত্র বিতরণ, গরিব দের জন্য খাবার সহ আরো অনেক ধরনের কাজ আমরা করে থাকি। আমি নিয়মিত রক্তদান এ অংশগ্রহন করি। এর আগে ৫ বার রক্ত দিয়েছি। আজ ৬ষ্ঠ বার রক্ত দেওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো আপনাদের মাঝে।
আমি শেষবার রক্ত দিয়েছিলাম গতবছর এর জুন মাসে। এর পর কয়েকবার রক্ত দেওয়ার চেস্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। কখনো লাগেনি। আবার কখনো করোনার ভ্যাক্সিন নেওয়ার জন্য দেওয়া হয়নি। শেষে যাই দিবো ভেবেছি । এসে গিয়েছিলো করোনার বুস্টার ডোজ এর মেসেজ। তাই আর দেওয়া হয়নি। মাঝে একবার ঠিক হয়েছিলো দিবো। কিন্তু আমাকে আগে জানায়নি। হঠাৎ বলার পর আর যেতে পারিনি। তো সেদিন রাতে হঠাৎ একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে। আমাকে কল দিয়েই বলে আমার বন্ধু জুবায়ের নাকি ওনাকে এই নাম্বার দিয়েছে। ব্লাড দরকার। আমার রক্তের গ্রুপ ও পজিটিভ। ফোন দিয়ে বললো রোগি খুবই গরিব ঘরের। তাই একটু দ্রুতো দরকার। ওনারা ম্যানেজ করতে পারছিলোনা। আমি আমার বন্ধু জুবায়ের কে কল দিলাম। কারণ তখন রাত ১০ টার বেশি বাজে । কখন যাবো আর কখন আসবো এই নিয়ে একটু টেনশন এ ছিলাম।
একটু পর রোগির স্বজন ফোন দিলো। শুনলাম হাসপাতাল আমাদের বাসার কাছা কাছি। ৫-৬ কিলোমিটার হবে হয়তো। জুবায়ের কে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করলাম কে কে যাবে? মানে আমার সাথে কে যাবে। জুবায়ের বললো ও নিজেই যাবে। তবে ও তখন ডিনার করছিলো। আমিও তখন বাসায় আসলাম ফ্রেশ হওয়ার জন্য। এসে ভালো মতন পানি খেলাম। কারণ পানি কম খাইলে রক্ত দেওয়ার সময় প্রেশার কম থাকে। এতে রক্ত যেতেও সময় লাগে খুব।
একটু পর আমি রেডি হয়ে জুবায়ের এর বাসার সামনে চলে গেলাম। তারপর ওরে কল দেওয়ার পর ও আসলো। তারপর দুজন রউনা দিলাম। পথি মধ্যে রিকশা নিলাম। তারপর সোজা বাজারে চলে গেলাম। ভাগ্য ভালো ছিলো বাস স্ট্যান্ড এ গিয়ে সাথে সাথেই বাস পেয়ে গেলাম। দেড়ি করতে হলোনা। উঠে রউনা দিলাম। যদিও সিট পাইনি। তাই দাঁড়িয়ে থাকতে হলো। তবে পথ বেশি দূরের না। রাত হওয়াতে জ্যাম ও ছিলোনা। এক টানে চলে গেলাম। ঘড়িতে সময় তখন প্রায় ১১ টা। রাস্তা পুরো নিস্তব্দ ছিলো। হাসপাতাল পুরো ফাকা ছিলো। এতো রাতে অবশ্য গার্ড ছাড়া মানুষ থাকার ও কথা না।
যেয়েই রোগির স্বজন কে কল দিলাম। বললো ৫ তালায় আছে। আমরা বললাম হাসপাতাল বিশাল বড় চিনবোনা। আপনি নিচে আসেন কষ্ট করে। তারপর উনি ১০ মিনিট এর মধ্যে নিচে এসে আমাদের নিয়ে গেলেন। ডাক্তার বললো এখন তো আর রোগিকে রক্ত দেওয়া যাবেনা। আমি একটু হতাশ হলাম। কারণ কাল আবার আসা টা একটু ঝামেলার। তখন আমরা বললাম রক্ত নিয়ে রাখা হোক। ডাক্তার বললেন ঠিক আছে। তারপর চলে গেলাম কাগজ পাতি নিয়ে ২য় তালায়। সেখানে যেয়ে কাগজ এর কাজ শেষ করলাম। তারপর রোগির রক্তের নমুনা আনতে গেলো তার বাবা। আমরা কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম।
রোগির নমুনা নিয়ে আসার পর আমাদের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। তারপর আমার থেকে প্রথমে ক্রস ম্যাচ করার জন্য নমুনা নিলো। ভাবলাম এবার বুঝি ১ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। তবে যেয়েতু আগে আমি ৫ বার রক্ত দিয়েছি তাই তিনি বললেন সমস্যা নাই এখনই রক্ত নিয়ে নিচ্ছি। তারপর আমি বেড এ যেয়ে শুয়ে পরলাম। নমুনা দিয়েছিলাম বাম হাত থেকে। তাই রক্ত দিলাম ডান হাত থেকে। ৫-৬ মিনিট এর মধ্যে রক্তের ব্যাগ ভরে যায়। তারপর আমি কিছুক্ষন শুয়ে থাকি। না হলে আবার মাথা ঘুরাতে পারে। রক্ত দেওয়ার পর কেউ সাথে সাথে উঠে যাবেন না। কারণ তখন মাথা থেকে রক্ত চলে যায় অক্সিজেন শুন্যতার কারণে মাথা ঘুরাতে পারে। তবে কিছুক্ষন পর ঠিক হয়ে যায় এটা। রক্ত দেওয়া শেষ হলে আমরা বাসায় ফিরে আসি।
তো এই ছিলো আমার রক্তদানের অনুভূতি। আপনাদের কাছে কেমন হয়েছে জানাবেন।
রক্তদান সবচাইতে মহৎ একটি কাজ আর এই কাজটি যারা করে তারা খুব আনন্দের সহিত করে সেটা আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ এত মহত এবং এত বড় একটি কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য।
ধন্যবাদ আপু সময় দিয়ে মুল্যবান মতামত এর জন্য। দোয়া করবেন আমার জন্য।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
মানব সেবার সাথে জড়িত আছেন শুনে খুবই ভালো লাগলো। শীতবস্ত্র বিতরণ ও গরিব-দুঃখীদের মধ্যে খাবার বিতরণ আসলেই খুবই মহৎ একটি কাজের সাথে আপনি জড়িত। আবার ৫ বার রক্ত দিয়েছেন রক্ত দেওয়ার কথা শুনলেই তো আমার ভয়ে শরীরের ভিতরে কাটা দিয়ে ওঠে। আপনার রক্তের গ্রুপ ও পজেটিভ তাহলে তো কমন রক্ত সবাইকেই হেল্প করতে পারবেন ।আপনার বন্ধু জুবায়েরকে সাথে নিয়েই আপনি রক্ত দিতে যাবেন এটা ভালো সাথে একজন থাকলে ভালো হয়। ৫-৬ মিনিটের মধ্যেই রক্তের ব্যাগ ভরে যায় তাহলে তো খুব দ্রুতই রক্ত বের হয়ে আসে ।খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।
এই ধরনের সামাজিক কাজগুলো করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এর আগে পাঁচবার রক্ত দিয়েছেন এখন ষষ্ঠবার দিয়েছেন তাও আবার একজন গরীব মানুষকে ।আসলে আপনার মত সমাজের সচেতন মানুষরা এভাবে একজনের পাশে একজন এগিয়ে আসা উচিত। রক্ত দেওয়ার কারণে একটি মানুষের জীবন বেঁচে যায়। আপনি সব সময় যেন এমন সামাজিক কর্মকাণ্ডগুলো করে যেতে পারেন দোয়া করি।
এখন হয়তো আরো বেশি হতো। তবে দু একবার যেয়েও ফেরত আসতে হয়েছে। তাই আরকি।
এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো যে আপনি মানব সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। রক্ত দেওয়া মহৎ গুণ যদিও অনেকেই এই মহৎ গুণ এর কাজ করতে খুবই ভয় পায়। আমিও আপনার মত একজন রক্ত যোদ্ধা এ পর্যন্ত ৬বার দিয়েছি সপ্তমবার দেওয়ার চেষ্টা করছি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল এরকম বিপদে-আপদে সকলের পাশে থাকবেন আশা করি। মানব সেবার কথা মনে পড়লেই একটি চরম মনে পড়ে যায় সেটা হচ্ছে,,সকলের তরে সকলে মোরা প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
জ্বি ভাইয়া। মানুষ এর বিপদের দিনে যদি পাশে আসতে পারি তাইলে সত্যি খুবই ভালো লাগে আমার কাছে।
ভাইয়া আমার কাছেও শুনে অনেক ভালো লাগলো যে আপনি মানব সেবা নিয়োজিত রয়েছেন। এর আগেও আপনি পাঁচ বার রক্ত দিয়েছেন এবার নিয়ে ছয়বার। বিপদের সময় অপরিচিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন শুনে খুশি হলাম। এভাবে এগিয়ে যান ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে
আসলে নিজেও এমন অনেক বিপদের মুখোমুখি হয়েছি তাই অন্য কারো বিপদ দেখলে চুপ থাকতে পারিনা।
রক্ত দেওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে থাকা উচিত। কারণ সঙ্গে সঙ্গে উঠলে বেশ ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। মানবতার সেবায় রক্তদান সত্যি অনেক ভালো একটি কাজ ভাই। ৬ ষ্ঠ বার রক্ত দান করার জন্য অভিনন্দন। এভাবেই মানুষের পাশে থাকেন। আপনার জন্য শুভকামনা।।
একদম ভাই। কিছুক্ষন শুয়ে থাকলেই ভালো হয় শরীর এর জন্য।
ভাই কোথায় বলে মানুষ মানুষের জন্য যদি মানুষ মানুষের পাশে না দারায় ৷ তাহলে তো মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়ে কিছুই হলো না ৷
কথা আছে জীবে প্রেম করে যেই জন ৷ সেই জন সেবিছে ঈশ্বরে৷ ভাই আশা করি এভাবেই মানব সেবায় নিয়োজিত থাকবেন ৷
ধন্যবাদ ভাই আপনার জন্য শুভকামনা
একদম ভাই। দোয়া করবেন যেনো সব সময় মানব সেবায় নিয়োজিত থাকতে পারি আমি।