আমার নতুন বাইক || আমার রেড ভেলভেট।

কি অবস্থা সবার। আশা করি আপনারা সবাই জোশ মুড এ আছেন। আমিও আছি চমৎকার। নির্বাচনের কারনে পাওয়া ছুটিটা বেশ কাটছে আমার। আপনারা অনেকেই জানেন যে আমি বাইক কিনেছিলাম ২ মাস আগে। তো সে বাইক সেল করে এবার অন্য একটি বাইক নিয়েছি। আজ সে নিয়েই কথা বলবো আপনাদের সাথে।

বাইক নেওয়ার সখ আমার বহু আগের থেকেই। আল্লাহর রহমতে সে সখ আমার পুরন হয় গত বছর এর নভেম্বর মাসে। বাইকটি বেশ ভালো ছিলো। তবে এর ব্রেকিং সিস্টেমটা ছিলো একটু আদিযুগ এর। অর্থাৎ সামনে পেছনে দুই চাকায়ই ছিলো ড্রাম ব্রেক। যেহেতু আমার মেইন রোডে চলাচল করতে হয় তাই ব্রেকটা ছিলো আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণের। এবিএস এর এই যুগে ড্রাম ব্রেক খুব একটা মানানসই না। আবার দেখা গেলো গতির ক্ষেত্রেও মাঝে মাঝে ঝামেলায় পরতে হতো। ধরুন পাশে দিয়ে একটা গাড়ি যাচ্ছে। আমার সামনের একটি গাড়ি ওভারটেক করতে হবে সেক্ষেত্রে সিসি কম হওয়াতে তেমন একটা সুবিধা পেতাম না। আর এর জন্য মাঝে মাঝে ঝামেলাও হতো। পেছন থেকে হর্ন শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে যেতাম। এ জন্য ইচ্ছা হচ্ছিলো একটু উচ্চ সিসি এবং ডিস্ক ব্রেক এর গাড়ি কেনার। তাই অপেক্ষা ছিলাম ভালো গাড়ি হাতে পাওয়ার। গাড়িও আসতে ছিলো সামনে অনেক। কারন আমাদের ইয়ামাহাতে এক্সচেঞ্জ অফার চলছিলো। যেখানে পুরাতন গাড়ি দিয়ে কিছু টাকা যুক্ত করে নতুন ইয়ামাহার গাড়ি পাওয়া যেতো।

একদিন এক্সচেঞ্জ এর একটা গাড়ি আসলো। যার মডেল ছিলো হরনেট। এটি হোন্ডা কোম্পানির গাড়ি। এটি ছিলো হরনেট এর স্পেশাল এডিশন। গাড়িটি ছিলো লাল রঙ এর। যা দেখেই আমি প্রেমে পরে যাই এর। তখনই আমি গাড়িতে বসে চেক করতে থাকি যে উচ্চতায় সমস্যা হয় কিনা। দেখলাম একদম পার্ফেক্ট আমার জন্য। তখনই প্রবল ইচ্ছা জাগলো মনে গাড়িটি নেওয়ার জন্য। বলতেও থাকলাম কয়েকজন কে। কিন্তু দু দিন পর শুনলাম আমার কলিগ গাড়িটি নিবে। আমি একটু আশাহত হলাম। এরপর উনি একদিন গাড়িটি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার জন্য চাবি নিলেন। সাথে আমিও গাড়িটি চালিয়ে দেখলাম। সত্যি বলতে গাড়ি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার পর আমি এর প্রেমে পরে যাই। তবে যেহেতু আমার কলিগ গাড়িটি নিবে তাই একটু কষ্টই পেতে থাকলাম মনে মনে । কিন্তু পরদিন একটি টিভিএস রেইডার আসার পর উনি বললেন সেটা নিবে। তখন আমিও বললাম সেটাই নেন আমি তাইলে হরনেট নিবো। তাই তখনই আমি আমার গাড়ি বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দেই ফেসবুক এর মার্কেট প্লেস এ। পর দিন কয়েকজন কাস্টমার আসলো গাড়ি দেখতে। একজন এসে আমার গাড়িটি পছন্দ করে বলে যে পরেরদিনই নিবে। আমিও বললাম তাইলে পরের দিন হরনেট নিয়ে নিবো। তো এরপরের দিন আমার গাড়ির ডিল হলো। সাথে আমি আরো কিছু টাকা ম্যানেজ করে রাখলাম । তো আমার কাছে মোট ছিলো ৮৫ হাজার টাকা। যেটা আপাদত অফিসে জমা দিয়ে বাইক নিয়ে যাবো।

তো ওই কাস্টমার তো আসেনা। এইদিকে আমারো তর সইছে না যে কখন হরনেট খানা নিবো। ওনারা আসতে আসতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেলো। তাও শুনি আজ না কাল সকালে নিবে। এইদিকে এক্সচেঞ্জ এর গাড়ি গুলো দেখার জন্য লোক আসছে। আমি তো ওনারা ঢুকতেই বলতে থাকলাম হরনেট বাদে অন্য গুলা দেখেন। এইদিকে আমার গাড়ি নিতে যারা আসছে তারা বলতেছে সকালে আসবে। তখন আমি বললাম ভাই এই যে এক্সচেঞ্জ এর গাড়ি নিতে আসছে। যদি হরনেট সেল হয়ে যায় তাইলে আর আমি সেল করবোনা। তখন ওনারা রাতেই বাইক নিয়ে গেলো। তখন আমি সব টাকা নিয়ে স্যার এর কাছে গেলাম। গিয়ে স্যার কে বললাম। তখন স্যার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখে বললো ঠিক আছে নেও। টাকা যেনো ঠিক ঠাক দিয়ে দেই। আমিও বললাম। ঠিক আছে। এরপর চাবি আর গাড়ির কাগজ পাতি নিয়ে চলে আসলাম। কিছু তেল রেখেছিলাম ।সেটা ঢেলে বাইক স্টার্ট দেওয়ার ট্রাই করলাম। কিন্তু ৪/৫ দিন বসে থাকার কারনে স্টার্ট নিচ্ছিলোনা। অনেক্ষন পর স্টার্ট নিলো। এরপর সেটা চালিয়ে বাসায় চলে আসার। এভাবেই আমার নতুন আরো একটি বাইক নেওয়া হয়ে গেলো।