ছেলে বেলায় আমার ৩ টি পছন্দের খেলা
হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।
সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার আজকের পোস্ট। কি খবর আপনাদের সবার? আমি তো আজ সেই চিল মুড এ আছি। কারণ আজ আবহাওয়া অনেকটাই শীতল। আর আমার কাছে এই শীতল আবহাওয়াই অনেক ভালো লাগে। গরম সহ্য করা আমার পক্ষ্যে সম্ভব নয়। কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। এখনো তো গরম আসেনি তবুও আমি এখনই ঘামিয়ে শেষ হয়ে যাই বলা চলে। যাক আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার ছোট বেলার কিছু খেলা নিয়ে। যে খেলা গুলো আমি নিজে খেলেছি সেগুলো নিয়েই বলবো। তো আর কথা না বড় করে চলুন ফিরে যাই আমার মূল টপিক এ।
মার্বেল খেলা
মার্বেল খেলার সাথে আপনারা অনেকেই পরিচিত। আমি অনেক মার্বেল খেলেছি ছোট বেলায়। এ নিয়ে অনেক স্মৃতি আছে আমার। কয়েক নিয়মে মার্বেল খেলা যেতো। একটা আছে ১০/২০। এই নিয়মে একটা ছোট গর্তের মতন থাকে যেটাকে পিল্লি বলে। শুরুতেই যে কয়জন খেলোয়ার থাকবে সে কয়জন নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে মার্বেল গুলো পিল্লির দিকে ছুটে মারবে। যে পিল্লির সব থেকে কাছে থাকবে সে আগে শুরু করবে। এরপর থেকে পিল্লিতে ফেললে ১০ পাবে। আর অন্য প্লেয়ার দের মার্বেল এ টার্গেট করে মারতে পারলে আরো ১০। এভাবে যে সবার আগে ১০০ করতে পারতো সেই জিতে যেতো। আরেকটা খেলা ছিলো সেটাও এমনই তবে সেটাতে অন্য প্লেয়ার কে টার্গেট করতে পারলে মার্বেল জিতা যেতো। অন্য আরেকটা খেলা ছিলো সেটার নাম ছিলো নাক্কি শুট। যেখানে এক সাথে ৪ জন খেলোয়ার পর্যন্ত খেলতে পারতো। যোগ চিহ্নের মতন বড় একটি চিহ্ন আঁকা হতো। সেটায় রোমান সংখ্যায় ১-৪ পর্যন্ত লিখে দেওয়া হতো। যেগুলো কে আমরা বলতাম নাক্কি, দৌয়া, টিয়া, চৌয়া। নাক্কি হচ্ছে এক এভাবে বাকি গুলো সিরিয়ালে ২,৩,৪। ৪ টি করে মার্বেল এর পর সব হিসেব করা হতো। একজন প্লেয়ার আনবে অন্য জন্য বলবে কোন ঘরে যেতে হবে। বাকি ৩ ঘরে চাইলে মার্বেল রাখতে পারবেন। যে ঘরে যেতে বলা হয় সে ঘরের সাথে যদি মিলে যায় তাহলে সেটা শুট হয়। এক্ষেত্রে বাকি সব ঘরের মার্বেল তখন সে পেয়ে যায়। আবার যদি অন্য ৩ ঘরের সাথে মিলে যায় তাহলে যে ঘরে মিলেছে সে ঘরে যে কয়টা মার্বেল ছিলো তাকে সেটা দিতে হবে। এভাবেই খেলা হয়ে থাকে এই খেলা। আমার অনেক মজার স্মৃতি আছে। আব্বুর কাছে অনেক মার খেয়েছি এই মারবেল খেলা নিয়ে। আবার এলাকায় যখন খেলতাম কিছু বড় ভাই ছিলো তারা আমাদের খেলতে দেখলেই আমাদের থেকে সব মার্বেল নিয়ে যেতো। তখন অবশ্য অনেক রাগ হতো যে কেনো নিবে। এখন সেগুলো মনে পরেই হাসি পায় খুব।
লাটিম খেলা
ছোট বেলায় খেলা গুলোর মধ্যে লাটিম খেলাও আমার খুবই পছন্দের ছিলো। লাটিম শব্দটি মনে পরলেই আরো কিছু শব্দ মনে পরে যায়। যেগুলো হচ্ছে তুলতুলা, খরখরা। লাটিম এর আল থাকে। সেটার কারণে লাটিম কখনো সুন্দর ভাবে ঘুরে আবার কখনো উলটা পালটা ঘুরে। কখনো এমন স্মুথ ভাবে ঘুরে যে মনে হয় হাতের মাঝে তুলো আছে। আর এটাকেই বলি তুলতুলা। আর কখনো তো হাতে রাখা যায়না এটাকেই বলি খরখরা। আগে আমি অনেক সুন্দর ভাবে লাটিম এর ভালোভাবে ঘোরার কাজ করতে পারতাম। তবে এখন আর মনে নাই। লাটিম নিয়ে যে খেলা গুলো খেলতাম সেগুলর মধ্যে ঘরকোপ আর বেল্লাপার ছিলো অন্য রকম। ঘরকোপ মজা হতো। বেল্লাপার ও মজার ছিলো। ঘরকোপ এ যারা চোর হতো তারা ঘরের ভিতর লাটিম রাখতো। অন্যরা ঘরে তাদের লাটিম ঘোড়াতো। মাঝে মধ্যে চোরদের লাটিমের উপর কোপ পরতো তাই এর নাম হয়েছে ঘর কোপ। আর বেল্লাপার খেলায় বেশি মজা হতো কারণ এতে যে চোর থাকতো তার লাটিমকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হতো লাটিম এর আঘাতে আঘাতে। একবার সে দাগ পার করতে পারলে তখন সবাই মিলে লাটিম এর আল দিয়ে চোর এর লাটিম এ হাত দিয়েই কোপ লাগাতাম। অই লাটিম এর অবস্থা খারাপ হয়ে যেতো তখন। মাঝে মাঝে লাটিম ভেংগে পরতো। সেটাকে আমরা গোশত বলতাম। হাহাহা। মনে পরলেই হাসি পায় খুব।
লুকোচুরি খেলা
এই খেলা নিয়ে অনেক স্মৃতি আছে আমার। এটা এখন আর খেলা হয়না। বা কাওরে খেলতেও দেখিনা খুব একটা। আমার কাছে মনে হয় আমাদের ওই জেনারেশনটাই সেরা এক সময় কাটিয়েছিলো তখন। ছিলোনা কোনো ফোন ছিলোনা অন্য কোনো প্রযুক্তি। কারেন্ট চলে যাওয়া মানেই আমাদের এক চিল্লানি দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়া। এরপর সবাই এক সাথে হয়ে আমরা খেলোয়ার গোছাতাম। সবাই এক হলেই আমাদের নিজেদের মধ্যে বাটাবাটি শুরু হতো। হাতের এপিঠ ওপিঠ এর মাধ্যমে বাটতাম। যে চোর সে খুজবে। বাকিরা সবাই লুকাবে। চোর কে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে পাঠানো হতো। এরপর সবাই মিলে আমরা লুকিয়ে থাকতাম। তারপর চোর সবাইকে খুজতো আমাদের। খুজে পেলে তো ভালোই ১ টিভ , ২ টিভ দিতো। আর যদি আমরা চোর এর পিছনে যেয়ে চোর দেখার আগেই তাকে ছুয়ে টিলো দিয়ে দিতাম তাহলে চোর আবার যাইতো। আর যদি সবাইকে খুজে বের করতে পারতো। তাইলে প্রথমে যাকে দেখতো সেই হতো চোর। এভাবেই খেলা হইতো আমাদের। খেলতে খেলতেই এক সময় কারেন্ট চলে আসতো। তখন একটু খারাপ লাগতো। আবার পরের দিন এর জন্য অপেক্ষা। আবার মাঝে মধ্যে দুইবার কারেন্ট যেতো সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যেই। তখন তো আমরা বেশি খুশি হতাম।
তো এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট এ। আশা করি ভালো লেগেছে আপনাদের। কেমন হলো জানাবেন।
░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░
আমি রাজু আহমেদ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি বাঙ্গালী তাই বাংলা ভাষায় লিখতে ও পড়তে পছন্দ করি। ফোন দিয়ে ছোটখাট ছবি তোলাই আমার সখ। এছাড়াও ঘুরতে অনেক ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ছোটবেলায় আপনার পছন্দের খেলাধুলার নাম শুনে বেশ ভালো লাগলো। এই খেলা গুলো দেখতাম ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বেশি ইনজয় করে। ছোটবেলায় আমিও লুকোচুরি অনেক খেলেছি। কিন্তু লাটিম এবং মার্বেল খেলা হয়নি। লুকোচুরি খেলা বেশ ইনজয় করে খেলতাম। আপনার পোস্টটি দেখে খুবই ভালো লাগলো।।
লুকোচুরি খেলাটা বলতে গেলে আমাদের জাতীয় খেলা ছিলো।
ছেলেবেলায় আমরা অনেক খেলার সাথেই পরিচিত ছিলাম। তবে সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমি কখনোই লাটিম ঘুরাতে পারতাম না। মার্বেল খেলেছিলাম অনেক। আর লুকোচুরি খেলেনি এমন মানুষ খুবই কম আছে। সব মিলিয়ে আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল বারবার।
হুম আপু। সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে গেছে আমাদের।
ভাইয়া আপনার পছন্দের সাথে আমার পছন্দ অনেকটাই মিলে গিয়েছে। ছোটবেলার সেই সুন্দর স্মৃতিগুলো আজও ভুলতে পারিনা। তবে বিশেষ করে লাটিম খেলা এবং লুকোচুরি খেলা আমার খুবই ভালো লাগতো। আপনার দেয়া পোস্টটি পড়ে আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আসলে সময়ের সাথে মানুষের জীবনের অনেক পরিবর্তন ঘটে ।
লাটিম খেলা তে অনেক বেশি মজা করতাম আমরা। ঘরকোপ খেলায় ফত্তুর হলে যা মজা হইতো বলার বাহিরে।
ছেলেবেলায় নিয়ে আপনার তিনটি খেলার কথা জেনে খুবই ভালো লাগলো আমার মনে হয় শুধুমাত্র আপনার এই তিনটি খেলাই পছন্দ না প্রায় ছেলেবেলায় প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ে এই তিনটি খেলা অনেক বেশি প্রিয় যদিও মেয়েরা তেমন একটা লাটিম খেলতে পারে না। ব্যক্তিগতভাবে আমি লার্টিন খেলা অনেক বেশি পছন্দ করতাম এই লাটিম খেলার জন্য যে কত মারধর খেয়েছি বলে বোঝানো যাবে না। অনেক মার খাওয়ার পরেও এই লাটিম খেলা বাদ দিতে পারতাম না হাহাহা।
একদম ভাই।। কতধরনের খেলাই না ছিলো আমাদের লাইফে।
ছোটবেলায় আমরাও এই ধরনের খেলা অনেক খেলেছি। তবে পিল্লি কেটে মার্বেল খেলার নিয়ম টা আমাদের এখানে একটু ভিন্ন ছিল। তবে নাক্কি শুট খেলার নিয়মটা একদম সেম।আর হ্যাঁ লাটিম খেলার নিয়মটাও একটু ভিন্ন ছিল। তবে লুকোচুরি খেলার নিয়মটা সিম। যাইহোক আজকে আপনার এই পোস্টটি পড়ে ছোটবেলার অনেক খেলাধুলার স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
পিল্লি কেটে খেলতেন কিভাবে?