ঈদ এ বাড়ি ফেরা [পর্ব--২ (শেষ পর্ব)] || ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হে লো আমার বাংলা ব্লগ বাসী। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভালো আছেন। আমিও অনেক ভালো আছি। আবার ও হাজির হলাম একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করি সবার ভালো লাগবে।



আশা করি সবাই ভাল আছেন তো আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার এই ঈদে বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা। আজ থাকবে ২য় ও শেষ পর্ব। আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবেন

20220502_164812-COLLAGE.jpg

images (17).jpeg

ঈদ এর বাড়ি ফেরা

আপনারা যারা আমার গত পর্ব পড়েছেন তারা জানেন যে আমি গতকাল ঈদের জন্য বাড়িতে এসেছি। তো সেই অনুভূতি গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করা। গতকালের পর থেকেই শুরু করছি।

বাস থেকে আমাদের গুলিস্থানের অন্য এক জায়গায় নামিয়ে দিয়েছিল। আমি প্রথমে সেই জায়গাটা চিনতে পারিনি তারপর যখন চিনতে পারলাম আমি আর আম্মু একটু সামনের দিকে চলে গেলাম। কারণ সদরঘাট যাওয়ার বাসগুলো সেখান দিয়েই যায়। আমাদের কষ্ট করে বেশিদূর হাঁটতে হয়নি একটু যাওয়ার পরে আমরা সদরঘাটের বাস দেখতে পেলাম। তো আমি আর আমি মিলে গিয়ে উঠে গেলাম এখানেও বাচালার আগেই বলেছিল যে ভাড়া ২০ টাকা যদিও সেখান থেকে সদরঘাটের ভাড়া হচ্ছে ১০ টাকা। কি আর করা আমাদের তো যেতেই হবে তাই উঠে গেলাম খুব বেশি একটা ভিড় ছিল না।


IMG_20220501_055548.jpg

খুব জ্যাম ছিলো।


বাসে ভিড় না থাকলেও রোডে খুব জ্যাম ছিল। বাস এগোচ্ছিলোই না। একটু বিরক্ত লাগতে ছিল কারণ মনে হচ্ছিল যে বাস এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। কি আর করা বসে থাকতে হল বাসে। একটু পর কন্টাকটার এল ভাড়া নিতে আমি আমার আর আম্মুর বাস ভাড়া মিটিয়ে দিলাম। তারপর অপেক্ষা জ্যাম কমার। এইভাবে ধীরে ধীরে আমরা ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছাকাছি পৌঁছে যাই। সেখানে গাড়ি নামিয়ে দেয় তারপর সেখান থেকে রিকশা বা হেঁটে যেতে হয়। আমি দুইটা রিক্সাকে জিজ্ঞেস করলাম কত নিবে সাধারণত ২০ টাকা ভাড়া থাকে সেখান থেকে সদরঘাট। কিন্তু তারা চাইলে যা শুনতে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না তারা ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দাবি করেছিল খুব রাগ হচ্ছিল। তাই হেটেই রওনা দিলাম ঘাটের দিকে।


IMG_20220501_061710.jpg

আরো অনেকেই হেটে রওনা দিয়েছিলো।


শুধু আমরা এসেছিলাম এমনটা নয় আরো অনেক মানুষ হেঁটে রওনা দিচ্ছিল কারণ করারই বা কি আছে ২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিয়ে কে ই বা যাইতে চায়। তাছাড়া সামনে অনেক জ্যাম ছিল। হাঁটতে তেমন একটা খারাপ লাগছিল না কারন অনেক মানুষ ছিল পাশে। এভাবে হেঁটে হেঁটে আস্তে আস্তে চলে গেলাম সদরঘাটে যেদিক থেকে আমাদের চাঁদপুর লঞ্চ ছাড়ে। এটাকে লালকুঠি ঘাট বলে।


IMG_20220501_062237.jpg

অনেক মানুষ সেখানে।


ঘাটে যেয়ে তো আমার চোখ কপালে। এতো মানুষ। তখন ভোর ৬ টা আর এতো ভিড়। তো যাইহোক ভিড় ঠেলে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম। ঘাটের ভিতর টিকেট কেটে ঢুকতে হয়। তাই আম্মুকে এক যায়গায় রেখে আমি টিকেট কাটতে চলে গেলাম।

IMG_20220501_062311.jpg

IMG_20220501_062346.jpg

টিকিট কাউন্টার


প্রতিটি টিকেট ১০ টাকা করে। এটা শুধু ঘাটে ঢোকার টিকেট। তো আমি গিয়ে দুইটা টিকেট নিলাম। তারপর আমি আর আম্মু ভেতোরে যাওয়ার চেস্টা করলাম অনেক ভিড় ছিলো। তাও ধীরে ধীরে চলে গেলাম ভেতরে। গিয়ে দেখলাম ঘাটে অনেক গুলো লঞ্চ আছে। সব গুলোই ভরা ভরা ছিলো৷ আমরা ঠিক করতে পারছিলাম না যে কোন লঞ্চ এ উঠবো। একটা লঞ্চ শুনলাম ৭ টা ২০ এ ছাড়বে। তাই ভাবলাম সেটাতেই উঠে যাই।


IMG_20220501_062548.jpg

আমরা এই লঞ্চ এ করে বাড়িতে আসি।


উপরের ছবিতে দেখতেই পাচ্ছেন কতো ভিড় ছিল লঞ্চ এ। আমি আর আম্মু উঠে গেলাম চট করে। উঠেই পেছনে ২য় তালায় চলে গেলাম। সেখানে প্রথমে সিট এ বসলাম কিন্তু আম্মুর গরম লাগছিলো। তাই ডেক এ চলে গেলান ফ্যান এর নিচে। আম্মু চাদর বিছিয়ে বসে ব্যাগ গুলা ঠিক মতন রেখে দেয়। তারপর আমি চলে যাই ছাদে। ছাদে গিয়ে অন্য লঞ্চ গুলোর দিকে তাকিয়ে দেখি ভালোই ভিড় সেগুলোতে। এমন কি ছাদেও মানুষ রয়েছে অনেক।


IMG_20220501_063415.jpg

ছাদেও অনেক মানুষ


সব গুলো লঞ্চ ভরা ছিলো। কিছু কিছু লঞ্চ অন্য যায়গা থেকে ভরাট হয়ে এইদিকে আসছিলো। আমি কিছু ছবি তুললাম। ভালোই লাগলো ছবি তোলার পর। আকাশ একটু মেঘলা ছিলো। সূর্য মামা উকি দিচ্ছিলো।


IMG_20220501_063558.jpg

লঞ্চ এর ছাদে একটি সেলফি তুললাম


এরপর আমাদের লঞ্চ ছেড়ে দিলো। খুব ভালই লাগলো। আমি মাঝে নিচে যেয়ে অনেক্ষন রেস্ট নিলাম। এভাবে প্রায় ৩ ঘন্টা ৪০ মিনিট পর চাঁদপুর ঘাটে পৌছে গেলাম। মাঝে দিয়ে আমি টিকিট কেটে ফেলি। ১৫০ টাকা করে ছিলো ডেকের ভাড়া। লঞ্চ থামানোর পর আমরা নামানোর জন্য এগোতে থাকলাম। সেখানেও অনেক ভিড়। তবে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম।


IMG_20220501_111103.jpg

সবাই নামছে


লঞ্চ থেকে নেমেও অনেক ঝামেলার শিকার হতে হয়। কারণ সেখান থেকে সিএনজি ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছিলো। তাই আমি আর আম্মু হেঁটেই চলে গেলাম। অনেকদূর গিয়ে তারপর একটা অটো নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম।

হয়েছিল আমার মত বাড়ি ফেরার গল্প। আশা করি সবার কাছে ভালো লেগেছে। সবাই ভাল থাকবেন, ধন্যবাদ।



░▒▓█►─═ ধন্যবাদ ═─◄█▓▒░

New Project.gif

⋆ 🎀 𝒞😍𝓃𝓃𝑒𝒸𝓉 𝑀𝑒 🏵𝓃 🎀 ⋆
Discord | Twitter | Facebook
Steemit |Instagram | Youtube |
Sort:  
 2 years ago 

কিছুটা ভোগান্তি হলেও সুস্থ ভাবে যে আপনারা দুজন বাড়ি পৌঁছতে পেরেছেন এটাই অনেক।
ঈদ আসলেই সকল যানবাহন এর ভাড়া যে হারে বাড়ে তা দেখলে আসোলেই খুব রাগ লাগে।
যাইহোক পরিবার পরিজন নিয়ে খুব ভালো ভাবে ঈদ কাটিয়েছেন আশা করি। শুভ কামনা রইলো আপনার ও আপনার পরিবার এর জন্য।

 2 years ago 

সুস্থভাবে যে বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এটা অনেক বড় ব্যাপার। সত্যি বলতে লঞ্চে করে যাতায়াতের কথা শুনলেই আমার কেন যেন খুব ভয় লাগে। আমি এখন পর্যন্ত লঞ্চে উঠি নি কখনো। আমাদের দেশে প্রধান প্রধান উৎসব লাগলে সবখানে ভাড়া দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যায় এবং প্রচন্ড রকমের দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রাপথে। এই সমস্যাগুলো থেকে যে কবে মুক্তি পাব আমরা! যাই হোক ভালো ভাবে পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করবেন এমনটাই প্রার্থনা করি। ঈদের শুভেচ্ছা রইল ভাইয়া।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই ঠিকমতো বাড়ি আসতে আসতে পেরেছি এটাই ভালো লাগছে খুব। লঞ্চে উঠতে পারেন বড় বড় লঞ্চ গুলো তে কোনো সমস্যা হয় না। ছোট ছোট লঞ্চ উঠবেন না যেমন নারায়ণগঞ্জে ছোটো লঞ্চ গুলো আছে না ওগুলো তেমন একটা ভাল না চাঁদপুর, বরিশাল সবচেয়ে বড় লঞ্চ গুলো আছে ওগুলো খুব নিরাপদ।

 2 years ago 

ঈদ মানেই বাড়ি ফেরার ধুম সবাই নিজ নিজ কর্মে ব্যাস্ত ৷ আর এই ঈদ এলেই কে কোথায় থাকুক থাকুক পরিবারের সাথে ঈদ কাটাবে বলে বাড়ি ফেরা ৷ আর পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ যে কতটা আনন্দ যা বলে বোঝানো সম্ভব না ৷
সে যতই ভোগান্তি হোক না কেন ৷দেখে বোঝা যাচ্ছে মানুষ আর মানুষ একদম গাদাগাদি ৷
যাই হোক ভাই আপনি নিরাপদে বাড়ি ফিরুন আর আপনার পরিবার মিলে ভালো ঈদ কাটানো এই কামনা

 2 years ago 

ঠিক ভাই যতই ভোগান্তি হোক যতই গাদাগাদি হোক বাড়ি যেতে পারলে খুব ভালো লাগে।

 2 years ago 

ঈদে বাড়ি ফেরার অনুভূতিটা আসলেই মজার। মজার সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে আপনি সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন আপনার বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা। এটা ঠিক বলেছেন ঈদ উপলক্ষে কিছু শ্রেণীর মানুষ ভাড়া কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। লঞ্চে অনেক মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। আসার পথে সাবধানে আসবেন। শুভ হোক আপনার ঈদ যাত্রা। ঈদ মোবারক।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই ঠিক আছে ঈদ হিসাবে বোনাস নিবে ঠিক আছে নাও তুমি দশ টাকার পাঁচ টাকা বাড়ানো কিন্তু তারা 10 টাকার ভাড়া 50 টাকা 100 টাকা পর্যন্ত দাবী করে।

 2 years ago 

আসলে সদরঘাটের এই রাস্তাটা ঈদের সময় অনেক জ্যাম থাকে। যাইহোক সুস্থভাবে বাড়িতে ফিরে এসেছে নেটে অনেক কিছু ভাই। আর বাড়ি যাওয়ার খুব সুন্দর একটি দৃশ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে গ্রামের বাড়ি হচ্ছে একটা নাড়ির টান থাকে। খুব সুন্দর করে উপস্থাপনা করেছেন ভাই আমাদের মাঝে সবকিছু। ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি মুহূর্ত আমার সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য। আর সবশেষে জানাই ঈদ মোবারক।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই জ্যাম থাকলেও দিন শেষে বাড়ি আসতে পেরেছি ঠিকমতো এটাই অনেক শান্তি।

 2 years ago 

ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে ফিরছেন আলহামদুলিল্লাহ। সুস্থ হলে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন কিনা অবশ্যই জানাবেন। তবে দোয়া করব মায়ের ধন্য মায়ের কোল অসুস্থ শরীরে ফিরে যান। ঈদের দিনটা আত্মীয়-স্বজনের সাথে যেন ভালোভাবে ইনজয় করতে পারেন সেই দোয়া ও শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই আপনাদের দোয়ায় সুস্থ আমাদের বাড়ি এসে ঈদ করলাম খুব ভালো লাগছে এর জন্য। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.11
JST 0.030
BTC 67689.07
ETH 3801.39
USDT 1.00
SBD 3.55