💗আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২০ || আমার জীবনে প্রথম প্রেমের অনুভূতি🌹[10℅ shy-fox]💗

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


🌹আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২০💗
মাতৃভাষায় নিজের মতামত প্রকাশ করে ব্লগ করার মতো আনন্দ আর কোথাও নেই। যেটা শুধু রয়েছ আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে। এত সুন্দর একটি পরিবার আমাদের উপহার দিয়েছে আমাদের সবার প্রাণ প্রিয় @rme দাদা। আর দাদা আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে অন্যরকম একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন।আসলে প্রথম প্রেমের অনুভূতি প্রতিযোগিতাটি দেখতে আমার খুবই ভাল লাগল। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা সকলের প্রথম প্রেমের অনুভূতি গুলো জানতে পারবো। পুরনো সেই স্মৃতি গুলো জানতে পারবো। প্রতিটা মানুষই প্রেমে পরে, আর প্রেম নিয়ে অনুভূতি বুকের মধ্যে জমা রয়েছে। সেই জমাকৃত অনুভূতিগুলো এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা জানতে পারব। তাই দাদাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে দেওয়া জন্য। তাই আমার বুকের ভিতরে লুকানো সেই প্রথম প্রেমের অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম। আসলে প্রথম প্রেমের অনুভূতি এবং প্রথম প্রেম কখনো ভোলা যায়না।হৃদয়ের মাঝে জায়গায় করে থাকে সারা জীবন।


few-gb2741c915_1280.png


Source

প্রেম নিয়ে আমার কিছু কথা বা অনুভূতি💗
প্রেম আসে স্বর্গ থেকে।প্রেম বয়সভেদে আসে না। মানুষের জীবনে কখনো প্রেম আসে। সে নিজেও বোঝেনা। প্রেম মানে না কোন বাধা,প্রেম মানেনা কোন শক্তিকে। সকল শক্তিকে জয় করে নেয় এই প্রেমের বন্ধনে। আসলে প্রেমহীন জীবন কখনো কল্পনা করা যায় না। প্রেমহীন জীবন যেন জীবন নয়। যে মানুষের জীবনে প্রেম নেই সে কখনো মানুষ নয়। শুধু মানুষ নয়, পশুপাখি এবং অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক দেখা যায়। আসলে প্রেম একটি নদীর ঢেউ মতো কখন কার জীবনে চলে আসে বলা যায় না। কেউ হয়তো এই ঢেউয়ে হাবুডুবু খেয়ে তলিয়ে যায়। আবার কেউ হয়তো হাবুডুবু খেয়ে নিজেকে শক্ত করে নিয়ে উঠে দাঁড়াতে পারে। আসলে প্রেম মানুষের জীবনে হঠাৎ করে চলে আসে। আর এই প্রেম আসে হৃদয়ের অনুভূতি থেকে। হৃদয়ের অনুভূতি কখনো থামিয়ে থাকা যায়না। হৃদয়ের অনুভূতি সব সময় প্রকাশ করে থাকে প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে। সব সময় প্রিয় মানুষটির হাতে হাত রেখে পথ চলতে ইচ্ছা করে। প্রেম মানুষকে একে অপরের সাথে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ করে। যে সম্পর্ক পৃথিবীর সকল বাধা বা শক্তিাে অর্জন করতে পারে। আসলে একটি স্বর্গীয় থেকে আসে প্রেম মানুষের হৃদয়ে এমনভাবে বাসা বাদে মানুষ এই প্রেমকে কখনোই ভুলতে পারে না। আসলে প্রথম প্রেমের অনুভূতি এবং মানুষের জীবনে প্রথম প্রেম যখন আসে তখন মানুষ অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। সে অনেক কিছুই যেন হারিয়ে ফেলে এবং সেই হারানো জিনিস গুলো খুঁজে পায় প্রিয় মানুষটির মধ্যে। তাই প্রেম মানুষের হৃদয়ের গভীর থেকে তৈরি হয়।তাই এই প্রেম কখনো ভোলা যায়না।


আমার জীবনে প্রথম প্রেমের অনুভূতি🥰

couple-g181c71fc7_1920.jpg


Source


২০১৩ সাল আমি তখন ক্লাস ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণীতে উঠেছি। ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন ভর্তি হয়েছে।জানুয়ারি ১৫ তারিখ এই দিনটি ছিল নবীন বরণ অনুষ্ঠান।ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।ফুল দিয়ে তাদের বরণ করা হবে।এই অনুষ্ঠানে দায়িত্ব ৭ম শ্রেণীর ওপরে পরেছে। আমারা সকল স্টুডেন্টরা স্যারদের সাথে নিয়ে অনেক রকম আয়োজন করেছি।তখন ষষ্ঠ শ্রেণীর স্টুডেন্টদের আমাদের ফুল দিয়ে বরণ করতে হবে। আর আমরা ফুল দিয়ে বরণ করতে ছিলাম। এমন সময় একটি মেয়ে যার নাম ছিল সোনিয়া।সোনিয়া ছিল সেই গ্রামের চেয়ারম্যান এর মেয়ে। সেও ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। তাকে আমি একটি ফুল দিয়ে বরণ করলাম। তাকে বরণ করতেই বুকের মাঝে ক্যামন জানি একটা অনুভূতি হলো, যা আমি নিজেই বুঝতে পারলাম না, কেন এমন হলো আমার বুকের মাঝে, মাথার মধ্যে এই প্রশ্নটা গুরপাক খাচ্ছিলো।ফুলটা আমি ছনিয়াকে দিলাম, তারপর নিজের কাছে খুব লজ্জা লাগতেছিল,তখন আমি আর কাউকে ফুল দিলাম না,দুরে গিয়ে বসে নিলাম।আর লুকিয়ে লুকিয়ে ছনিয়াকে দেখতে ছিলাম।


নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছিল দুপুর দুইটা পর্যন্ত। এই দুইটা পর্যন্ত আমার ভিতর অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করতেছিল। আর আমি মাঝে মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে সোনিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখতাম তার হাসি মাখা সেই মুখটি এবং সোনিয়ার আশেপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করতে ছিলাম। হয়তো সোনিয়া সেদিন বুঝতে পেরেছিল, সে ছেলেটা আমার দিকে এতো কানো তাকাই,তবে আমার তাকানো অনুভুতি হয়তো সেদিন সোনিয়া বুঝতে পেরেনি।তারপরে যখন সোনিযা স্কুলে আসতো আমি প্রতিদিন তাকে দেখতে ষষ্ঠ শ্রেনীর ক্লাসের দরজা পাশে দারিয়ে একবার হলেও দেখতাম।কিন্তু আমি খুবি বেশি লাজুক ছিলাম বলে কিছি বলার সাহস পেতাম না।তারপরে আমি আমার প্রিয় বন্ধু মারুফাকে বললাম আচ্ছা সোনিয়া মেয়েটাকে কেমন লাগে তোর।আমার কিন্তু মেয়েটাকে দেখলেই ভালোলাগে।ক্লাসে আমার রোল ছিলো দুই আর মারুফার ছিল এক তাই আমাদের বন্ধুতের সম্পর্কটা খুবি ভালো ছিল।তখন মারুফা আমাকে বললো সোনিয়া আমাদের গ্রামেরই চেয়ারম্যান এর মেয়ে।সোনিয়া মেয়েটা অনেক ভালো,সোনিয়ার মাও খুবি ভালো কিন্তু সোনিয়ার বাবা খুবই কড়া আর রাগি মেজাজের মানুষ। তুই যদি সোনিয়াকে কিছু বলিস তাহলে কিন্তু ওর বাবা জানতে পারলে তোর অনেক বড় সমস্যা।আমি চায়না তোর কোন সমস্যা হোক।আর অনেক মেয়ে আছে পছন্দ কর আমি বলে প্রেম করে দেবো কথা দিলাম।কিন্তু আমার বুকের মাঝে যে সোনিয়া আগেই জায়গায় করে আছে এটা আর মারুফা বুঝতে পারলো না।

sunset-g21d67a79e_1920.jpg


Source

যাইহোক মারুফার কথা মাথায় রাখলাম, ভাবলাম যদি এখন সোনিয়াকে কিছু বলি,সোনিয়া মনের কি অবস্থা জানি না, যদি সোনিয়া তার বাবাকে বলে দেয়। তাহলে তো আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।তারপর আমার আরও একটি সমস্যা ছিল তা হলো আমি সোনিয়াকে দেখলে খুব বেমি লজ্জা পেতাম।যা কারণে সোনিয়ার সামনে গিয়ে কথা বলতে সাহস পাচ্ছিলাম না।এভাবে আমি আড়াল থেকে এবং দূর থেকে সোনিয়াকে দেখতাম।দূর থেকে তাকিয়ে চোখের ভাষা বঝানোর চেষ্টা করতাম।আসলে একটা মেয়েকে সাত দিন কিংবা পাঁচ দিন যদি একটা ছেলে ফলো করে তাহলে সেই মেয়েটা ঠিক বুঝতে পারে, কিন্তু আমি সোনিয়াকে পুরো ছয়টা মাস ধরে দূর থেকে দেখতে লাগলাম , আসলে ওকে দূর থেকে দেখতে যেন ভালোই লাগতো,আমার কোন বিরক্ত লাগতো না। আমি প্রায় প্রতিদিন রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম, যে রাস্তা দিয়ে সোনিয়া বাড়ি যেতে।ঐ রাস্তায় ব্রিজের পাশে বসে থাকতাম। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে ওর ক্লাসের সামনে দিয়ে ঘুরতাম। আমি ভাবতাম হয়তো সোনিয়া আমার এই বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছে। যাই হোক এক দিন বৃষ্টি ভিজে বন্ধুদের সাথে মাছ ধরতে গিয়ে ছিলাম যার কারনে আমার প্রচন্ড জ্বর হয়।যে কারণে আমি সাত দিন স্কুলে যেতে পারিনি। আর এই সাতদিন সোনিয়ার সঙ্গে দেখা হয়নি। কিন্তু আমার মনটা স্কুলে পড়ে ছিল।বারবার মনে হচ্ছিলো আমি কবে সুস্থ হব, কবে আমি স্কুলে যাব,তারপর সোনিয়া হাসি মুখ দেখবো। আমার আর সাত দিন বাড়িতে থাকতে মোটেও ভালো লাগতেছিল না।সেদিন ছিল শুক্রবার, আমার বন্ধু মারুফা বিকেল বেলা হঠাৎ আমাদের বাড়িতে আসলো। বলল কিরে তুই স্কুলে যাস না কেন। বললাম আমার প্রচন্ড জ্বর। মাও বলল মারুফাকে ওর প্রচন্ড জ্বর হওয়ার কারণে স্কুলে যেতে দেয়নি।তখন তো আমাদের ফোন ছিল না যার কারণে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে মারুফ আমাকে বলল তোকে একটা খবর দিব।শুনলে তোর জ্বর ভালো হয়ে যাবে। বললাম কি সত্যি কি খবর দিবি বলনা। মারুফা বলতে চাচ্ছিল না।আমি জোড় করাতে বললো সোনালী আজকে তোর খোঁজ নিল,আমার কাছে।


মারুফার মুখে সোনিয়ার কথা শুনতে পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আরে সোনিয়্ আজকে আমার খোঁজ নিয়েছে, সত্যিই আমার খুবই ভালো লাগতেছিল। মনে হচ্ছিল আমার যেন কোন জ্ব।র নেই আমি আনন্দে সত্যি সেদিন এটাতে খুশি হয়েছিলাম সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি মারুফাকে হাত ধরে বললাম বন্ধু সোনিয়া কি বলেছে আমাকে বল, তখন মারুফা আমাকে বলল তুই অনেকদিন স্কুলে যাস না তো তাই আজকে আমি আর সোনিয়া একসাথে বাড়িতে দিকে যাচ্ছিলাম তখন সোনিয়া আমাকে বলল আচ্ছা আপু তোমার বন্ধু রায়হান ভাইয়া স্কুলে আসে না কেন? আমি বললাম ও কেন যে আসেনা আমি জানি না।আজকে তাহলে ওর বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেব, তখন সোনিয়া বলল ঠিক আছে আপু তুমি খোঁজ নিয়ে আমাকে একটু জানাইও।পরের দিন সকাল বেলা জ্বর আমাকে আর মানকে পাররো না, আমাকে স্কুলে যেতেই হবে, মা আমাকে যেতে দিবে না। আমি বললাম ওষুধ খেয়েছি এখন আর আমার খারাপ লাগছে না। যদি খারাপ লাগে তাহলে আমি বাড়ি চলে আসব। মা বলল ঠিক আছে যদি একটু খারাপ লাগে বাড়ি চলে আসবি।আমি স্কুলে সকাল-সকাল আসে দেখি সোনিয়া আসেনি। আমি রাস্তা পাশে গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম।কিছু সময় পর দেখি সোনিয়া আসছে, আমি সোনিয়াকে দেখে খুবই আনন্দিত হলাম। সোনিয়া আমাকে দেখে হাসলো এবং আমার কাছে চলে আসলো, বলল ভাইয়া আপনার কি হয়েছিল। স্কুলে কেনো আসেননি।সোনিয়া মুখে প্রথম কথা শুনে আমি অবাক চোখে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।যে মেয়েটাকে এতদিন দূর থেকে দেখেছি, মনের ভিতর তাকে নিয়ে আমার কল্পনা রাজমহল তৈরি করেছি, সে আজকে আমার সামনে এসে কথা বলছে। আমার বুকের ভিতর হার্ট এতটা স্পিডে মারতেছিল মনে হচ্ছিল হয়তোবা আমার হার্ট এখন বের হয়ে যাবে। তারপরে আমি ওকে বললাম আমার অনেক জ্বর ছিল, যার কারণে আমি আসতে পারিনি। সেনিয়া তখন আমাকে বললে স্কুল ছুটির পর, স্কু্লের পিছনে বটতলায় আপনি থাকবেন, কিছু কথা আছে বলার আপনাকে!


couple-gb5224035a_1280.jpg


Source

জ্বর নিয়ে আমি ক্লাসে আসলাম।ক্লাস কারতে আমার একটুও মনে ছিল না। কারণ সোনিয়ার কথা আমার কানে বাজতে ছিল। সে আমাকে কি বলতে চাই, আর কি বলবে। কখন স্কুল ছুটি হবে। এটা নিয়ে আমার মনের ভিতরে কৌতূহল সৃষ্টি হলো। আমি মারুফাকে বললাম দোস্ত আজকে সোনিয়া আমাকে দেখা করতে বলেছে। কি করবো বলতো। আমিতো ভয় পাচ্ছি। তখন মারুফা বলল ঠিক আছে আমি তোর সাথে যাবো বন্ধু সমস্যা নেই,কোন ভয় নেই আমিতো আছি।মারুফার কথাতে অনেক সাহস পেলাম।স্কুল ছুটি হলো, আমি মারুফাকে নিয়ে স্কুলের পেছনে বটতলায় আসলাম। একটু পরে দেখি সোনিয়া আসলো। সোনিয়া আসাতে মারুফা একটু দূরে দাঁড়ালো। বললো তোমরা কথা বলো, আমি দূরে আছি। আমি দেখছি কেউ আসে কিনা।তখন সোনিয়া বললো ভাইয়া আপনি আমাকে অনেকদিন হলো ফলো করেন। এটা আমি জানি, কিন্তু আমি আপনাকে বুঝতে দেয়নি,কারণ আপনি যে আমাকে ফলো করেন, এটা আমার ভালই লাগতেছিলো।কিন্তু আপনি স্কুলে না আসাতে আমার কানো জানি খুব কষ্ট হলো।সোনিয়া কথা শুনে আমার হার্টবিট বেড়ে গেলো।তখন আমি মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কি বলবো ভাষা পাচ্ছিলাম না। তখন শুধু একটা কথাই বলেছি সোনিয়া আমি জানিনা তোমাকে দেখলে আমার ভালো লাগে, আর তোমাকে না দেখতে পেলে আমার খুবই কষ্ট হয়,জানি না আমার কি হয়েছে।তখন সোনিয়া তার ব্যাগ থেকে একটি ডায়েরি বের করে আমার হাতে দিলো এবং আমার হাতে ডাইরিটি দিতেই তার হাতটি আমার হাতের সাথে স্পর্শ লাগল। সত্যিই সেই স্পর্শে আমার বুকটা কেঁপে উঠলো। তখন সোনিয়া বললো আপনার তো অনেক জ্বর হাত যেন আগুনে পুড়ে যাচ্চে। এখুনি বাড়ি যাবেন আর ঔষধ খাবেন।আর যখন সুস্থ হবেন ডাইরি খুলে দেখবেন, আমার মনের কথা লেখা আছে।


এই বলে সোনিয়া চলে গেল এবং মারুফা বলল কি হয়েছে দোস্ত, সোনিয়া কি বলল তোকে। বললাম দোস্ত তোকে এসব বিষয়ে পরে বলবো। আমার এখন প্রচন্ড জ্বর খারাপ লাগছে। বাড়ি যেয়ে ওষুধ খাব। কালকে তোর সাথে কথা হবে। মারুফা বললো ঠিক আছে বন্ধু বাড়ি গিয়ে ওষুধ খাবি ঠিকমত। আমি বাড়িতে আসলাম। বাড়িতে গিয়ে আমার আর ভালো লাগতেছে না,কখন আমি ডাইরিটা খুলে দেখবো। আমার মনটা অস্থির হয়ে আছে। মা আমাকে জোড় করে খাইয়ে দিলো এবং সাথে ওষুধও খেয়ে আমি একটু শুয়ে আছিলাম। তারপরে আমার রুমের দরজা লাগিয়ে আমি ডায়রির পাতা খুলতে দেখতে পেলাম।প্রথম পাতাতেই লেখা আমার সপ্নের রাজা R।আরটি ছিলো একটি লাভের মধ্যে লেখা।ডাইরির সকল লেখা আমি মন দিয়ে পড়লাম। আসলে ডাইরিতে শুধু আমাকে নিয়ে লেখা ছিলো।আমি কবে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলাম কিভাবে ওকে লুকিয়ে দেখেছি। সব গুলো যেন সোনিয়া এই ডায়েরিতে লিখে রেখেছে। আসলে সোনিয়া খুব ভালোভাবেই প্রথম থেকেই বুঝতে পেরেছিলো আমি লুকিয়ে সোনিয়াকে দেখি। সেগুলো বুঝে সুন্দরভাবে ডায়েরিতে লিখে রেখেছে।তবে আমাকে বুঝতে দিত না।ডাইরিতে সোনিয়া মনের কথা গুলো পড়ে সত্যিই আমার খুবি আনন্দের হচ্ছিলো।এতটা আনন্দ হচ্ছিল আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আসলে জীবনে প্রথম প্রেম আর এই প্রথম প্রেমের এতটা যে ভালো লাগে আমি তখনই বুঝেছিলাম।

mountain-gcd4d7958f_1920.jpg


Source

সারাটা রাত অনেক হাসিখুশি ছিলাম। এই হাসিখুশি কারণে আমার জ্বর কোথায় পালিয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। পরেদিন সকালবেলা স্কুলের পথে রওনা দিলাম। মনে অনেক আনন্দ। সত্যিই এতটা আনন্দ হচ্ছিল যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি একটি কাগজে লিখলাম, সোনিয়া তোমার সাথে কথা আছে স্কুল ছুটির শেষে বটতলায় আসবে। এটা লিখে আমি স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলাম।সোনিয়া আসলো তখন আমি সেটা সোনিয়ার হাতে দিলাম।তারপর ক্লাসে রুমে চলে গেলাম।স্কুল ছুটি হল, আজকে বটতলায় গিয়ে দেখি সোনিয়া আগে এসে দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওর সামনে গেলাম সাহস আগের চায়কে অনেক বেড়ে গেছে আমার বললাম সোনিয়া তোমার মনের কথাগুলো সব আমি জানতে পেরেছি। আর আমার খুবই ভালো লেগেছে। রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি। তোমাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। সোনিয়া বললো আপনাকে আমার খুবি ভালো লাগে।দুজন পাশাপাশি বসে মনের কথাগুলো আদান-প্রদান হচ্ছে। সত্যিই এই মুহূর্তটা যে কত আনন্দের ছিল। আমি আপনাদের এখন ভাষায় প্রকাশ করতে বুঝাতে পারছি না। আসলে জীবনে প্রথম প্রেম, আর জীবনের প্রথম কোন নারী আমার পাশে বসে তার মনের কথাগুলো আমাকে বলছে। এই মুহূর্তটা যে কত আনন্দের আমি বুঝাতে পারব না। তখন খুবই ভালো লাগতেছিল। আর সোনিয়া বলতেছিল যে আপনাকে আমার ভালো লাগে অনেক,তবে আমার বাবা খুবই রাগী মানুষ, যদি আমাদের এই ভালোবাসা মেনে না নেয় তাহলে আপনি কি করবেন, আমি বললাম সেটা পরে দেখা যাবে। এখন এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে না। তখন সোনিয়া বললো ঠিক আছে আজকে তাহলে আমরা চলে যায়। আবার একদিন দেখা হবে। তখন সোনিয়া আমার হাত ধরলো।হাতটা ধরাতে বুকের মাঝে কেমন যানি অনুভূতি তৈরি হলো। আমি তখন বললাম কখনোই কোন চিন্তা করবে না, আমি আছি তোমার সাথে, আর তোমাকে নিয়ে আমার জীবনের পথ চলব।এই বলে সোনিয়ার কপালে একটা চুমু দিলাম। চুমুটা দুটি হৃদয়কে আরও গভিরে নিয়ে আসলো। সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। জীবনে প্রথম ভালবাসার মানুষ আর তাকে কপালে চুমু দেওয়ার পরে সোনিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরল এবং বলল আমি আপনাকে কখনো ছাড়বো না।আমিও বললাম তোমাকে আমিও ছাড়বো না কোন দিন। তারপরে আমরা আবার বাড়ির দিকে রওনা দেবো।তখন সোনিয়া বললো আপনা মনের কথা গুলো কাগজে লিখে আমাকে দিবেন।তখন আমি বললাম ঠিক আছে তুমিও লিখবা কিন্তু, সোনিয়া বললো আচ্ছা, আজকে যাই তাহলে।


তারপরে সোনিয়া এবং আমি আমাদের মনের কথাগুলো চিঠির মাধ্যমে প্রকাশ করতাম। কাগজে লিখে মনের কথা প্রকাশ করা যে খুবি আনন্দের। সোনিয়া তার মনের কথাগুলো চিঠির মাধ্যমে আমাকে দিতো এবং আমরা মাঝেমধ্যে দেখা করতাম বটতলাতে। আমাদের প্রেম খুবই ভালো চলতেছিল।জীবনের প্রথম প্রেম আর প্রথম প্রেমের সম্পর্ক যে এতটা ঘনিষ্ঠ হয়। আমি সোনিয়াকে না পেলে জীবনে বুঝতাম না। তার কথা চিন্তা করা, তাকে নিয়ে ভাবনা। সত্যি প্রেমের মুহূর্তগুলো অনেক আনন্দের ছিল এভাবে চলে গেল দুই বছর। আমি তখন ক্লাস টেনে উঠলাম এবং সোনিয়া ক্লাস নাইন আমাদের সম্পর্কটা ভালোই চলছিলো। হঠাৎ সম্পর্কের মাঝে একটা ঝড় আসলো। সেটা হলো আমি যে সোনিয়াকে চিঠি লিখেছি।সেই চিঠিগুলো সোনিয়া খুব যত্নসহকারে তার টেবিলের ড্রয়ারে তালা দিয়ে রেখেছিল।আর সোনিয়ার বাবা সোনিয়ার কাছে একটি তার গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দিয়েছিল। সে কাগজটা সোনিয়া অন্য জায়গাতে যত্ন সহকারে রেখেছে। কিন্তু সোনিয়ার বাবার খুবই প্রয়োজন হয়। আর সোনিয়ার বাবা ভাবে এই ড্রয়ারের এর ভিতরে এই কাগজটি দেখেছে। সে জন্য তালা ভেঙে।আর ড্রয়ার থেকে আমার সকল চিঠিগুলোর সোনিয়ার বাবার হাতে পড়ে যায়। আর সেগুলো পড়ে তার মাথায় রক্ত উঠে যায়।আর সোনিয়ার বাবা সোনিয়ার কাছে একটি তার গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দিয়েছিল। সে কাগজটা সোনিয়া অন্য জায়গাতে যত্ন সহকারে রেখেছে। কিন্তু সোনিয়ার বাবার খুবই প্রয়োজন হয়। আর সোনিয়ার বাবা ভাবে এই ড্রয়ারের এর ভিতরে এই কাগজটি দেখেছে। সে জন্য তালা ভেঙে।আর ড্রয়ার থেকে আমার সকল চিঠিগুলোর সোনিয়ার বাবার হাতে পড়ে যায়। আর সেগুলো পড়ে তার মাথায় রক্ত উঠে যায়।


sunset-gcc423c4c7_1920.jpg

Source


শুরু হয়ে গেল আমার ভালোবাসার কালো অধ্যায়। সেটা আমি জানিনা পরের দিন সকালবেলা মনে আনন্দ স্কুল এ এসেছি। স্কুলে এসে দেখি সোনিয়া নেই। ক্লাস শুরু হয়ে যায়। তাও সোনিয়ার দেখা নেই।আসরে সোনিয়া স্কুলে আসেনি।তারপরে কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন লোক আসলো তারা আমার বন্ধুদের বলছে, ক্লাস টেনের রায়হানকে। তারা বলল আমার কথা। আমি বললাম যে আমি রায়হান।তখন আমাকে বললো তোমাকে ওই দোকানে ডাকছে। চলো তোমার সাথে কথা বলবে। আমার মনে কোন ভয় নেই। জানিনা কি হবে, এটাও নিয়ে কোনো ভাবনা নেই। হয়তো কেউ আমাকে খুঁজতে এসেছে।আমি দোকানে গেলাম গিয়ে দেখি কয়জন লোক। তাদের মধ্যে একজন বলছে আমাকে চেনো। আমি বললাম জ্বী আঙ্কেল আপনাকে আমি চিনতে পারছিনা। বললো আমি এই গ্রামের চেয়ারম্যান। তখন আর আমার বুঝতে বাকি নেই চেয়ারম্যানকে। আমি মাথা নীচু করে বসে আছি। বলল আমার দিকে তাকাও। এই কন্ঠ শুনে আমার বুকের ভিতর কাপাকাপি। আমিতো ভয়ে শেষ।তখন আমাকে বললো তোমার সাহস কত বড়, তুমি আমার মেয়েকে চিঠি দাও।আমি কিছু বলার সাহস পায়নি। সে বলল যদি নেক্সট টাইমে তোমার সাথে ওর কোন কথা বলা বা ওকে কোনো চিঠি দেওয়া দেখি। তাহলে হাত-পা ভেঙে এই স্কুলের সামনে ঝুলিয়ে রাখবো। এটা যেন মাথায় থাকে। এই বলে সে চলে গেল। আসলে এই কথাগুলো শুনে আমার বুকের ভিতর কেমন জানি লাগতেছিল। আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম।আমি এই কথাগুলো আমার বন্ধু মারুফাকে বললাম। মারুফা বলল যে ওর বাবা তো ভালো না। ওর বাবা অনেক খারাপ কাজও করে পারে। তোকে কখন মেরে দেয় তার মারতে বুকে একটুও কাঁপবে না। তুই সাবধানে থাকিস,আর কথা না বলাই ভালো হবে। এই কথাগুলো শুনলাম। তার পরের দিন স্কুলে আসলাম। স্কুলে এসে দেখি সোনিয়া এসেছে। সোনিয়া আমার কাছে বলল, ভাইয়া ঝামেলা তো হয়ে গেছে। আমার বাবা তো জেনে গেছে। এখন যদি আপনার কিছু করে। আমি বললাম তাহলে কি করব, তোমার সাথে কি কথা বলব বন্ধ করবো।সোনিয়া বললো আমি থাকতে পারবো না আপনার সাথে কথা না বলে। আমার সাথে কথা বলতেই হবে। আমি সোনিয়ার এই কথাতে যেন ভয় সরে গেল এবং তার বাবার হুমকি আমার কাছে তুচ্ছ মনে হল। আবার আমি সোনিয়ার সাথে কথা বলতে লাগলাম। কিন্তু সোনিয়ার বাবাই স্কুলের অন্যান্য ছাত্রদের বলে রেখেছে আমি যদি ওর সাথে কথা বলি, এই খবরটা জানি দেওয়া হয়।সুমন নামে সোনিয়ার বাড়ির পাশে এক ছাত্র ছিল আমার সাথেই পড়তো, সেই সুমন সোনিয়া বাবাকে বলে দেয়।


যার কারণে সোনিয়ার বাবা সেদিন সোনিয়াকে অনেক মারধোর করে। সোনিয়া তার বাবাকে বলে ছিলো রায়হানের কেন দোষ নেই, তাই সোনিয়াকে তার বাবা প্রথম সেদিন অনেক মেরেছিল এবং স্কুলে এসে আমাকেও গালে দুইটা থাপ্পড় মারল। তার থাপ্পড়ে যেন আমার গাল ফুলে গেল এবং আমাকে টেনে আমাদের স্কুলের অফিস রুমে নিয়ে আসলো। নিয়ে এসে আমাদের হেডমাস্টারকে ডেকে বলল কব ছাত্র পালেন আপনারা। যে ছাত্ররা প্রেম করে বেড়ায়। আপনারা কি শিক্ষক হয়েছেন ছাত্রছাত্রীকে কন্ট্রোল করতে পারেন না।আজকের মধ্যে টি সি দিয়ে এই ছাত্রকে স্কুল থেকে বিদায় করবেন না। হলে আপনাদের খবর আছে। আসলে এলাকার চেয়ারম্যান।এভাবে স্যারদের বলার কারণ স্যারা অনেক ভয় পেয়ে যায়। যার কারণে আমাকে টি সি দিতে বাধ্য হয়। আমার বাবাকে ডাকা হয়। আমার বাবা সবকিছু শুনে বাবা আমাকে অনেক বকা এবং মারও দিয়েছিল। যার কারণে আমাকে টি সি নিয়ে অন্য একটা স্কুলে ভর্তি হতে হয়।অন্য একটা স্কুলে ভর্তি হয়। তবে আমি মারুফার সাথে কথা বলে বলেছিলাম মারুফা তুই আমার একটা উপকার কর তুই শুধু আমার সাখে সোনিয়া একবার দেখা করা। আমি একবার দেখা করতে চাই। যত যাই হোক, আমি তো অন্য স্কুলে ভর্তি হয়ে গেছি।আর এই গ্রামেও আমার আশা নিষেধ, একবার লাস্ট দেখা করব। বারবার হাত জোড় করে অনুরোধ করাতে মারুফা বললো ঠিক আছে তোদের আমি দেখা করব।আমার মামাদের গ্রামের নদী রয়েছে। সেই নদীর পাড়ে তুই আসবি। প্রায় একমাস পরে সোনিয়াকে নিয়ে মারুফা এসে নদীর পাড়ে। আমি মারুফাদের আশার অপেক্ষা বসে ছিলাম। নদীর পাড়ে আসার পর সোনিয়া আমাকে দেখেই কান্না করতে করতে আমাকে জোরিয়ে ধরলো। জোড়িয়ে ধরে কোন কথা না বলে অজরে কান্না করতে ছিলো। সত্যি সেই মুহূর্তটা যে কত কষ্ট ছিল।আমার প্রিয় মানুষ আমার বুকে তারপরেও চোখ দিয়ে যেন কষ্টের পানি বয়ে চলছে। সেই কষ্টটা আমি এখনো ভুলতে পারিনি। আমার দুচোখ দিয়ে পানি ঝরছিল।কষ্ট বুক ফেটে যাচ্ছিলো।আসলে প্রিয় মানুষটিকে হারানোর কষ্ট যে এতো বেশি ঐ দিন বুঝতে পেরেছি।তারপর সোনিয়া চলে যেতে লাগলো আমার হাত ধরে বললো তোমাকে আমি কখনো ভুলতে পারবো,আমাকে ভুলে যেওনা আমি আপনার অপেক্ষা থাকবো।আমি কোনো ভাষা না পেয়ে শুধু বলে ছিলাম তোমার অপেক্ষা সারা জীবন থাকবো।

desert-g3cf8ffac1_1920.jpg

Source

বুকের মধ্যে সোনিয়ার সেই ভালোবাসা নিয়েই অপেক্ষা করতেছিলাম। এভাবে কয়েক বছর চলে গেল। আমি এসএসসি পাস করলাম এবং কলেজে ভর্তি হলাম হলাম। এসএসসি পাশের পর আমাকে দামি একটা মোবাইল কিনে দেয়। সেই মোবাইলে আমি ফেসবুক খুলেছি এবং ফেসবুকের আমার নাম্বারো দিয়েছিলাম। সোনিয়া প্রায় ৩ বছর পরে আমার ফেসবুক একাউন্টে খুজে পায় এবং ফেসবুক একাউন্টে থেকে আমার নাম্বার জোগাড় করে, ২০১৯ সালে রোজার ঈদের রাতে আমাকে কল দেয়।কলটি আমি রিসিভ করি আমি স্বপ্নেও ভাবিনি এটি সোনিয়ার কল। নাম্বার অচেনা প্রথম কলটি আমি ধরিনি। দ্বিতীয়বার কল দিয়েছে। আমি কলটি ধরেছি, কোন কথা নেই, কোন শব্দ নেই। কে হতে পারে আমি একের পর এক বলছি কে আপনি, কথা বলুন কথা বলেন কথা বলছেন না কেন, সে চুপ করে রয়েছে কেনো। তিন মিনিট চলে যায় সে কোন কথা বলে না। তারপরে ফোনটা আমি কেটে দেই। পাঁচ মিনিট পরে আবার আমাকে কল দেয়। আমি তখন রেগে যাই, কে আপনি, ফোন দেন কথা বলেন না। এরকম ভাবে বলতে থাকি ওপাশ থেকে কোন শব্দ নেই। তারপরে ফোনটা আবার আমি কেটে দেই, আবার ফোন দেয়। আমি তখন রেগে বলি আপনি যদি কথা না বলেন, তাহলে ফোন দেন কেন। আপনার নাম্বার কিন্তু ব্ল্যাক লিস্টে রাখব। বারবার বিরক্ত করছেন, এমনিতেই ঈদের রাত আমার অনেক কাজ আছে। আর বিরক্ত ভালো লাগছে না। তারপরেও পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ। কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আমার কিরকম যেন লাগল। কান্নার শব্দ খুব চেনা। সত্যিই কান্না আর কান্না করতে লাগল আমি চুপ হয়ে গেলাম।


কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম এই কান্নার আওয়াজটি আর কারো নয়, এই কান্নার আওয়াজ আমার সেই ভালোবাসার প্রিয় মানুষ সোনিয়ার কান্নার আওয়াজ। সত্যি তার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আমার কান্না চলে আসলো।আমি বললাম এত দিন পর কই ছিলে,নাম্বাব কিভাবে পেলে। তুমি আমাকে কি ভুলে গেছো। আমি মারুফার কাছে কতো তোমার খোঁজ নিয়েছি কিন্তু মারুফা আমাকে তোমার খোঁজ দিতে পারেনি, তুমি বলে আর গ্রামে থাকো না শুনেছি ঢাকাতে থাকো।সোনিয়া বললো তোমার সাথে আসি যোগাযোগ করতে চেয়েছি কিন্তু যোগাযোগ করার কোন ব্যবস্থা ছিলো না।অনেক দিন পর তোমার নাম্বরটা পেয়েছি কিন্তু কল দেওয়ার সাহস পাচ্ছিলাস না, কিন্তু আজ আর থাকতে পারলাম না,তোমাকে একটা কথাই বলতে আজকে কল দিয়েছি,আমি একটা কানো তোমার হাজার কথা শোনতে আমি রাজি, বলো তুমি,সোনিয়া কান্না কন্ঠে বললো তোমার কথা রাখতে পারিনি। এই বলে কান্না শুরু করে দিল। আমিও তখন ভাবিনি কি কথা রাখতে পারিনি।তার কান্না শুনে বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো,তারপর সোনিয়া আমাকে বলল আমি তোমার বউ হতে পারলাম না। তোমার বউ হয়ে সারা জীবন তোমার বুকে মাথা রাখতে পারলাম না। আমার বাবা আমাকে জোর করে আমার খালাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। আমি কতবার যোগাযোগ করতে চেয়েছি তোমার সাথে কিন্তু যোগাযোগ করার কোন রাস্তা আমি পাইনি। আমার বিয়ের আগে খালাতো ভাইকে বলেছিলাম তোমার কথা সে আমার কথা শোনেনি, সে বাবার কথা শুনে আমাকে জোর করে বিয়ে করেছে।সে আমাকে বিয়ে করলেও। সে আমার মনে জায়গা করে নিতে পারেনি। আমার মনটা এখনো তোমার কাছে আছে। আমার এই হৃদয়ের মাঝে আছো শুধু তুমি। তোমাকে আমি কখনো ভুলতে পারবো না এবং ভুলতে চাইও না। আজও আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি, কিন্তু কপালের হয়তো লেখা ছিলনা তোমার বউ হওয়া। তাই হয়তো এই অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। তুমি আমাকে মাপ করে দিয়ো। আমি চুপচাপ শুধু কথা শুনতেছি, আর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি যেন কোন ভাষায় পাচ্ছিলাম না। কি বলব সত্যিই আজ যেন আকাশটা আমার মাথার উপর ভেঙ্গে পরল। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কিছু বলার ভাষা পাচ্ছিলাম না।


broken-heart-g6882d1846_1920.jpg

Source

তারপর সোনিয়া আমাকে বলল তুমি চুপ হয়ে আছো, কিছু একটা বলো তুমি হয়তো এরপর থেকে আমার সাথে আর কোনদিন যোগাযোগ করবে না। তবে আমি চাই তুমি ভালো থাকো, সুখে থাকো। আমার চাইতে ভাল মেয়ে তোমার জীবনে আসুক তুমি সুখে থাকো, আমি এটাই দোয়া করি। আমি তোমার সুখ দেখতে চাই। আমার জীবনে কোন সুখ হলো না। আমার হৃদয়ে তুমি আছো, আর তুমিই থাকবে, এটা দূর থেকে আমি সারা জীবন তোমাকেই ভালোবেসে যাবো।ভালোবাসার মানুষ দূরে চলে গেলে এতো রাতে কষ্ট হয় এবং এত কান্না পাই আমি সেদিন বুঝেছিলাম। আমি সেদিন আমার কোন ভাষা ছিলো না। শুধু আমার চোখ বেয়ে জল পড়তে ছিল। তারপরে আমি সোনিয়াকে বললাম ঠিক আছে তুমি আমার হৃদয়ে আছো, তুমি থাকবে আর সারা জীবন আমি তোমাকে ভালবেসে যাব।তোমার শরীরটা হয়তো আমার কাছে থাকবে না কিন্তু তোমার মন সৃতি জড়ানো মায়াভরা ভালোবাসা আমার কাছেই থাকবে।তুমি যদি পারো মাঝেমাঝে আমাকে ফোন দিয়ে কেমন আছি, সেটা খোঁজ খবর নিল আমি খুবই খুশি হব।সোনিয়া বললো আমি সেটাই চেয়েছিলাম। আমার খুব ইচ্ছা ছিল তোমার সাথে মাঝে মাঝে কথা বলবো। আমি ভেবেছি এতকিছু জানার পর তুমি হয়তো আর কথা বলার সুযোগ দিবানা।সত্যিই তুমি মহান তোমার এই সুযোগে আমি খুবই খুশি। ভালো থেকো পরে কোনদিন কথা হবে, এই বলে সোনিয়া ফোন কেটে দিল।


সোনিয়াকে নিজের করে পাওয়ার যে সপ্ন ছিলো সেটা এখানেই সমাপ্তি হলো।তারপরে সোনিয়ার সাথে আমার অনেক কথা হয়েছে মাঝেমধ্যেই কিন্তু সারা জীবন একসাথে চলার যে স্বপ্ন, এই স্বপ্নটা আর ছিল না। সত্যিই সোনিয়াকে হারিয়ে যে কতটা কষ্ট পেয়েছি এটা আমি বলে বুঝাতে পারব না। আসলে আজকে গল্পটা লিখলে আমার জন্য কান্না চলে আসলো। জীবনের সেই সৃতি গুলো চোখের সামনে ভাসছে। কিভাবে আমি সোনিয়াকে হারিয়ে ফেলেছি। আসলে আজও আমি সোনিয়াকে ভুলতে পারিনি। আজও আমি সোনিয়াকে খুব মিস করি এবং সোনিয়ার দেওয়া স্মৃতি আজও আমার কাছে রয়েছে। আর সোনিয়া দেওয়া সেই ডাইরির পাতাগুলো আমি মাঝে মাঝেই পড়ি এবং ডাইরির পাতাগুলো লেখা স্পর্শ করলে মনে হয়, আমি যেন সোনিয়ার হাতয়ে স্পর্শ করছি। সত্যি সোনিয়া আমার হৃদয়ে আছে, আর সারা জীবন আমার হৃদয়ে থাকবে, কখনো কোনদিন আমার হৃদয়ে জায়গা থেকে দূরে সরে যাবে না।তারপর প্রেমে আমি অনেক পড়েছি কিন্তু প্রথম প্রেমের অনুভূতি আমি আর কোন প্রেমে খুঁজে পাইনি। সত্যি প্রথম প্রেমের অনুভূতি হাজারটা প্রেম করলেও এই অনুভূতির সাথে তুলনা হয়না। প্রথম প্রেম মানুষের হৃদয় থেকে তৈরি হয়। আর সেই হৃদয়ে অন্য কেউ জায়গা নিতে পারেনা।সেই জায়গাতে শুধু প্রথম প্রেমিকা দখল করে সারা জীবন থাকে।তাই আজও সোনিয়া আমার হৃদয়ে জায়গা দখল করে আছে। আর হৃদয়ে জায়গা থেকে সোনিয়া কখনো কোনদিন সরে যাবে না। আমার হৃদয়ের জায়গাতেই থাকবে সারা জীবন। আমি আজও সোনিয়াকে খুবই ভালোবাসি।সোনিয়া আমার প্রথম প্রেম, প্রথম ভালোবাসা এবং সোনিয়াই আমার শেষ ভালবাসা হয়ে হৃদয়ের মাঝে আছে এবং থাকবে সারা জীবন


Amar_Bangla_Blog_logo_png-4.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন💗🌹💗🌹💗

Sort:  
 2 years ago (edited)

আপনিও প্রেমের কাজে অংশগ্রহণ করেছিলেন ভাই জীবনে। আসলে সবারই মন চায় প্রেম করতে। কারো প্রেম সাকসেস হয়, আবার কারো প্রেম সাকসেস হয় না। তবে প্রেম করার অনুভূতিটা সবার মনের মধ্যে জাগ্রত থাকে।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মতামত পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে।

 2 years ago (edited)

সত্যি আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আসলে আপনাদের প্রথম প্রেমটা অনেক ভাল ছিল। এই প্রেমের সম্পর্কটা সত্যিই অসাধারণ। এত ভালোবেসে ছিলো। আসলে সোনিয়া আপু আপনাকে খুবই ভালবেসে। আপনাদের প্রেম হয়তো আপনাদের কখনো এক করতে পারেননি। কিন্তু মনের মিলন কখনোই দূর করতে পারবে না, সারাজীবন থাকবে।

 2 years ago 

আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ.

 2 years ago (edited)
 2 years ago 

কি কমেন্ট করবো বুঝতেছিনা 🥺🥺। আপনাদের ভালোবাসা অমর হয়ে থাকবে চিরকাল। পরিস্থিতি আপনাদের এক হতে দিলো না 😭। আমারই কান্না চলে আসছে গল্পটা পড়ে। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা 😥❤️।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 64258.81
ETH 2772.25
USDT 1.00
SBD 2.65