💗বন্ধুত্বের স্মৃতি গুলো কখনো ভোলা যায়না🌹//⛈️😪(ভয়ানক সেই দিনের গল্প🤕//🌹[10%shy-fox]
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
দেখতে দেখতে পাঁচটি বছর পার হয়ে গেল। আসলে বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো কখনো ভোলা যায়না। বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। কীভাবে ভুলবো এই স্মৃতিগুলো যে একদম রক্তে মিশে যায়। তাই আজকে বন্ধু রফিককে খুবই মনে পড়ছে। আজকে সন্ধ্যাবেলা আমি বাজারের ভিতরে এসেছিলাম।হঠাৎ করে দেখতে পেলাম বন্ধু রফিকের বাবা বাজার করছে। আমি গিয়ে বললাম আঙ্কেল কেমন আছেন। রফিকের বাবা আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকলো এবং তার চোখে যেন অশ্রু ভাসছে। সে আমাকে বলল আছি বাবা আল্লাহর রহমতে। তুমি কেমন আছো। তোমরা এখন কোথায় থাকো। তোমাদের পড়াশোনার কি খবর। রফিকের বাবা এই কথাগুলো বলতে ছিল আর তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে ছিল। কারণ রফিকের কথা তার মনে পড়ে গেছে।আমাদের সাথে আজ এভাবেই বেড়ে উঠত রফিক।সে আমাদের মতই হতো চলাফেরা করতো।কত বায়না করতো।পাঁচটি বছর আগে রফিক আমাদের ছেড়ে, এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরকালে চলে গেছে। যার কারণে রফিকের কথা খুবই মনে পড়ছে। কিভাবে আমার বন্ধু রফিক আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেল। সেই গল্প আজকে আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করছি।
সময়টা ছিল ২০১৭ সাল। রফিক মোটরসাইকেল কেনার জন্য তার বাবার কাছে অনেক বায়না করছিল। কিন্তু তার বাবা মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছে না।তার বাবা বলেছিল ২০২০ সালে তোমাকে মোটরসাইকেল কিনে দেব।তার কিছু দিন পর রফিকের মামা নতুন মোটরসাইকেল কিনেছে এবং রফিকদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে।রফিক ঐ মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের স্কুলে এসেছে এবং আমাদের ফোন দিয়ে বলল তোরা ইস্কুল মাঠে আয়। তখন রফিক ভালোভাবে মোটরসাইকেল চালাতে পারেনা।তখন আমি সুজনকে সাথে নিয়ে স্কুল মাঠে আসলাম। সুজন আমাদের বাড়ির পাশে থাকে। সুজনের মোটরসাইকেল ছিল। আমি সেই মোটরসাইকেল করে স্কুল মাঠে আসলাম এবং রফিক তার মামাতো ভাই মানিককে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল করে স্কুল মাঠে আসলো। মানিক মোটরসাইকেল অনেক আগে থেকে চালায়। সে ভালো মোটরসাইকেল চালাতে পারে। তাই রফিক বলল আমরা যখন মাঠে আসলাম। তখন রফিক বলল চল আজকে আমরা শহরে যাবো। শহরে নদীর পাড়ে ভ্রমণ করবো। তাই আমরাও রাজি হলাম। আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করলাম।
রফিক এবং মানিক একটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করল। আমি এবং সুজন অন্য একটি মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের আধা ঘন্টারমত শহরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। মোটরসাইকেলে বেশ আনন্দের সাথে আমরা যাচ্ছিলাম। কিন্তু সামনে থেকে একটি ট্রাক এসে রফিকদের মোটরসাইকেল এমনভাবে ধাক্কা লাগে যার,যার কারণে মানিক ছিটকে পড়ে যায় এবং রফিক এর পায়ের উপর দিয়ে ট্রাকের চাকা উঠে যায়। যার কারণে রফিক পায়ের অনেক জায়গায় ভেঙে যায়। আমাদের মোটরসাইকেলের কিছু হইলো না কারণ আমরা একটু দূরে ছিলাম।মানিক দূরে পরে যাওয়ার কারণে আহত হয়েছিল। কিন্তু রফিকের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তখন আমরা রফিককে ধরে নিয়ে একটি সিএনজি করে সাথে সাথেই সিরাজগঞ্জ সদর হসপিটালে নিয়ে এসেছিলাম।
সাথে সাথে সিরাজগঞ্জ সদর হসপিটালের ইমার্জেন্সি অপারেশন রুমে রফিককে পাঠানো হয়। তখন ইমারজেন্সি ডাক্তার বলেলো রফিকের ইন্টার্নাল ব্লীডিং হয়েছে। তার অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে খুব দ্রুত রক্ত লাগবে।রফিকের রক্ত ছিল এ পজিটিভ। আমরা অনেক কষ্টে রফিককে দুই ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করলাম। ডাক্তার বলল আরও রক্ত লাগবে। আপনারা ম্যানেজ করতে থাকুন।রফিকের পায়ে চার জায়গায় ভেঙে গিয়েছিল এবং ইন্টার্নাল ব্লীডিং হচ্ছিল। রফিকের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সিরাজগঞ্জ সদর হসপিটালের ডাক্তার বললো এখানে সম্ভব না। আপনাকে ঢাকা নিয়ে যান। রাতেই আমরা রফিককে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে গেলাম। আমি রফিকের সাথে ছিলাম। সেই মুহূর্তটি অনেক কষ্টের ছিল। আমার সামনে আমার বন্ধু আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই মুহুর্তটা সত্যি অনেক কষ্টের। আমরা রাত বারোটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পৌঁছালাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজের নেওয়ার পরে সেখানে রাখা হলো।সারা রাত রফিকের পাশে ছিলাম। ভোরবেলা আমি একটু ঘুমের মধ্যে ছিলাম।পরে দেখি কান্নার আওয়াজ চোখ খুলে দেখি রফিকের মামা খুব কান্না করছে।
আমি রফিকের পাশে এসে দেখি রফিকের মুখের উপরে সাদা কাপড় দিয়ে ডাকানো। কাপড় সরিয়ে দেখি রফিক চোখ বন্দ।সত্যিই ঐ মুহূর্তে আমার কতটা কষ্ট হয়েছিল আমি বুঝাতে পারবো না।রফিক আজ আমাদের মাঝে নেই। আমি রফিক আর নড়াচড়া করছে না।রফিক যেন আমাদের মাঝ থেকে আজ হারিয়ে গেছে। এক দুর্ঘটনার কারণে আজ রফিক আমাদের মাঝে নেই।চোখের সামনে প্রিয় বন্ধুকে এভাবে হারাতে দেখে সত্যিই আমি সেদিন ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। আজ এভাবে আমাদের বন্ধু চলে যাবে। কেন মোটরসাইকেল করে ভ্রমণ করতে এসেছিলাম। মানিককে ফোন দিলাম, মানিক কথাটা শুনতে পেরে অনেক কান্না করলো। মানিক ও সিরাজগঞ্জ সদর হসপিটালে ভর্তি ছিল। সত্যিই এতটা কষ্ট হয়েছিল রফিকের বাবার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না। ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দেবে ২০২০ সালে কথা দিয়েছিল। আর সেই ছেলে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করে মারা গেল। খুবই কষ্ট হচ্ছিল সত্যিই সেই মুহূর্তটা আমি এখনো ভুলতে পারিনি। আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে এখন এই পোস্টটি লিখতে।
আজকে হঠাৎ রফিকের বাবার সাথে দেখা হলো এবং রফিকের বাবার সাথে দেখা হয়ে সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল। সত্যিই আজ রফিক আমাদের মত ঘোরাফেরা করতো। বাবার কাছে কত বায়না করত। রফিকের বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার সেই রফিকের স্মৃতিগুলো বার বার চোখের সামনে ভাসছে। খুব মায়া হচ্ছে রফিকের বাবাকে দেখে। আজ বাবা তার ছেলেকে হারিয়ে কত কষ্ট না পাচ্ছে। আমাকে দেখে তার চোখে পানি আসলো অনেক কষ্ট পেল।আজকে রফিকের কথা খুবই মনে পড়ছে। বন্ধু যদি বেঁচে থাকতো তাহলে বন্ধুকে নিয়ে কত মজা করতাম কত স্মৃতি আরো তৈরি হতো। আমাদের বন্ধু আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে। তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থনা করি আমার বন্ধু রফিক যেন ওপারে সুখে থাকে ভালো থাকে। তার বাবাকে দেখে আজ খুব মায়া হলো। তার বাবাকে যেন আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য্য ধারণ করেন এবং রফিককে যেন আল্লাহ তাআলা ওপারে অনেক ভাল রাকে, এই দোয়া করি।
অনেক খারাপ লাগলো ভাই আপনার বন্ধু রফিক এর এক্সিডেন্ট ও মৃত্যুর সংবাদ শুনে, আসলে একটা তরতাজা প্রাণ মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টের কারণে হারাতে হলো। যাইহোক পরবর্তীতে কখনো বের হলে খুব কেয়ারফুলি চলাফেরা করবেন।
আসলে ভাই এভাবেই এক্সিডেন্টে বন্ধুকে হারাবো কখনো ভাবেনি, দোয়া করবেন বন্ধুর জন্য।
আসলে ভাই খুবই মর্মান্তিক ছিল, যাই হোক আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুক।
আপনার বন্ধু রফিকের শেষ পরিণতি টা সত্যি খুবই কষ্টের। আমার নিজের হৃদয় ক্ষরণ হলো। আসলে জন্মের পূর্বেই মৃত্যুর সময় নির্ধারিত হয়ে যায় এখানে আমাদের কী করার। তবে আমার মতে এই মোটরসাইকেলটা যত এড়িয়ে চলা যায় ততই ভালো।।
ঠিকই বলেছেন ভাই, মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টটা খুবই মারাত্মক। দোয়া করবেন আপনি আমার বন্ধুর জন্য।