বন্ধুদের সাথে আম পাড়তে গিয়ে শ্মশানে ভূত দেখার স্মৃতিময় গল্প// পর্ব- ৩

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


স্মৃতির পাতায় হাজারো গল্প জমা হয়ে রয়েছে। এই গল্পগুলোও সত্যি আমাদের মনে করে দেয় সেই সব দিনের কথা। বন্ধুদের সাথে আম চুরির গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আসলে আমাদের বাড়ির পাশেই শ্মশান রয়েছে। এই শ্মশানের পাশে আম গাছ থেকে আমরা আম চুরি করতে গিয়েছিলাম। সেই আম চুরি করতে গিয়ে স্মৃতিময় একটি গল্প আমাদের জীবনে রয়ে আছে। আর এই গল্পটি আমরা কোনদিনই ভুলবো না। কারণ জীবনে যেন অন্যরকম একটা ভয়াবহক রাত ছিল সেই দিনটি। আর সেই দিনের কথা মনে করতে পেরেই যেন অনেক ভয় লাগে। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে সেই স্মৃতিময় শ্মশানে আম চুরির গল্পটি শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি, আশা করছি শেষ পর্বের গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


castle-1483681_1280.jpg

source

তো বন্ধুরা হাসান যখন গাছ থেকে পুরো অজ্ঞান হয়ে যায়, আমরা তাকে নিয়ে এসে পানি ঢালী এবং পানি ঢালার পরে হাসান জ্ঞান ফিরে এবং হাসান তখন বলল যে তাড়াতাড়ি বাড়ি চল। এখানে আর এক মুহূর্ত থাকবো না। তখন আমরা সকল বন্ধুরা মিলে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে আসলাম। আমরা হাসানদের বাড়িতে আসলাম কারণ হাসানদের বাড়িতে কেউ ছিলনা, হাসানদের বাড়িতে যখন আমরা প্রবেশ করলাম।আমরা সকল বন্ধুরা একই রুমে ছিলাম। হাসান কিছুখন শুয়ে থাকলো এবং সাজু বন্ধু বলল যে কি হাসান অজ্ঞান হয়ে গাছ থেকে পড়ে গেলি কি হয়েছিল, একটু বলতো হাসান বললো যে আমি এখন কিছু বলতে পারবো না, আমার খুবই ভয় করছে। তোরা সবাই এখানেই থাক, আজকে রাতে ঘুমিয়ে নেই সকালবেলা তোদের বলব। আমিও অনেক ভয় পাচ্ছিলাম, কারণ সাদা কি যেন উড়ে এসে গাছের উপরে বসে ছিল, সেই দৃশ্যটি দেখেই যেন আমার মনের ভিতর অনেক ভয় হচ্ছিল। তাই আমি আর বেশি কিছু বললাম না। বললাম ঠিক আছে এখন রাতের এই দৃশ্যগুলোর গল্প না করাই ভালো। আমরা সকালবেলা শুনবো।


আসলে হাসান অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল ওর খুবই ঘুম দরকার এবং আমরা অনেক ভয় পেয়েছিলাম।যার কারণে বেশি রাত আর করলাম না, সকল বন্ধুরা ঘুমানোর চেষ্টা করতেছিলাম। তবে আমার ঘুম হচ্ছিল না, শুধু সাদা কি যেন দেখেছি ওই দৃশ্যটি চোখের সামনে ভাসতে ছিল। তারপরে অনেক কষ্টে সেই রাতে ঘুমিয়েছি আর ঘুম থেকে সকাল বেলা আমরা উঠলাম। উঠে দেখি হাসান এখনো ঘুমিয়ে রয়েছে, তাই ওকে ডাকলাম না। আধা ঘন্টা এক ঘন্টা পরে হাসান ঘুম থেকে উঠলো এবং ফ্রেশ হয়ে হাসান বলল যে তাড়াতাড়ি আমার আম্মাকে খবর দেয়া। আমার আম্মার নানি বাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসুক, আমার আর একা এখানে ভালো লাগছে না। তাই আমরা ওর আম্মাকে খবর দিলাম ওর ছোট ভাইকে বললাম, ওর ছোট ভাই ওর আম্মাকে আনার জন্য চলে গেল। তখন হাসান বলল যে কাল রাতে আমার সাথে কি হয়েছিল তোদের এখন বলবো।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

হাসান বলল তখন যে আমি জীবনে কখনোই ভূত দেখিনি। কাল রাতে আমি হয়তো ভূত দেখেছি, আর আমার এত ভয় লেগেছে যা বলার মত না। আমি যখন আম পারতেছিলাম, সাদা পোশাক পরা এবং মুখটা ছিল একদম কালো।সে আমার সামনে এসে আম গাছের ডালে বসলো এবং বসেই আমি যখন আম পারতে হাত বাড়িয়েছি তখনই আমার হাত করে ধরল। আমি সেই দৃশ্যটি দেখে সাথে সাথে চিৎকার দিয়েছি আর গাছের ডাল ছেড়ে দিলাম, আর আমি নিচে পড়ে গেলাম। তারপরে আমার কি হয়েছিল সেটা আর আমার মনে নেই। এই সাদা ভয়ানক দৃশ্যটি এত ভয়ানক ছিল যা দেখে আমি অবাক হয়ে গেছি। আসলে আমি জীবনে কখনো ভূত দেখিনি এবং ভূতকে আমি বিশ্বাস করি নাই।কিন্তু আমার সাথে এই ঘটনা হলো, আমি সত্যি বিশ্বাস করতাম না ভূত আসলেই রয়েছে,আর সেই ভূত আমাকে সামনে ছিলো।


হাসানের কথা শুনে আমার এবং আমার অন্যান্য বন্ধুদের অনেক ভয় হচ্ছিল। বললাম ঠিকই বলেছে হাসান কারণ এই সাদা পোশাক পরা কি যেন একটা দৃশ্য আমিও দেখেছি। উড়ে এসে গাছের ডালে বসল। সত্যি হাসান তখন ভূত দেখেছে আর আমিও ভূত দেখতে পেয়ে মনের ভিতর অনেক যেন ভয় হচ্ছিল। হাসান বললো যে আর জীবনে কোনদিন ওই গাছের কাছে যাবো না। আসলে আমি জীবনে কখনো ভূত দেখিনি হঠাৎ করে ভূত দেখার মুহূর্ত যেন আমাকে এখনো শেষ করে দিচ্ছে। আমি চোখ বন্ধ করলেই সেই দৃশ্যটি দেখি।আর আমার হাত ধরেছে সত্যি আমার খুবই ভয় হচ্ছে। আমার কি হবে সেটা আমি বলতে পারছি না। তখন হাসানকে বললাম যে কোন সমস্যা নেই, কিছু হবে না তোর আম্মা আসুক তোর আম্মাকে আমরা সকল ঘটনা বলবো। অনেকক্ষণ পরে হাসানের আম্মা চলে আসলো। হাসানের আম্মাকে আমরা সকল বন্ধুরা ঘটনাটি বললাম। হাসানের আম্মা তো অনেক রাগ আমাদের অনেক বকাবকি করল। যে রাতের বেলা ওখানে কেন গিয়েছো। নানান ধরনের কথা হলো তারপরে হাসানকে বলল যে চিন্তা করিস না বাবা। তোকে নিয়ে আমি কবিরাজ এর কাছে যাব। তারপর কবিরাজের কাছে হাসানকে নিয়ে একটা তাবিজ দিয়েছিল। তারপরে আর কোন সমস্যা হয়নি।


তারপরে হাসানের মা আমাদের সবাইকে বলে দিয়েছিল, তোমরা কিছুদিন দিনের বেলাও ওই আমতলা যাবে না, শশানের কাছেও না। তারপরে আমরা অনেকদিন সেখানে যাইনি, আসলে রাতের বেলা তো দূরের কথা দিনের বেলাও আর আমরা সেখানে যেতাম না। জীবনে প্রথম এই ভূত দেখার মুহূর্তটা ছিল। আর হাসানের এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল, আসলে সেই দিনের কথা আমরা কখনোই ভুলবো না। হাসানকে দেখলেই যেন আমাদের সেই দিনের কথা মনে পড়ে যায়। আসলে আমের সময় আসলেই আমাদের সেই স্মৃতিময় দিনের কথা মনে পড়ে যায়। তো বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে স্মৃতিরময় সেই গল্পটি শেয়ার করলাম, আশা করছি গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 3 months ago 

আমি নিজেও তো ভূত আছে বলে এটা বিশ্বাস করি না ভাইয়া। তবে আপনার বন্ধু হাসান যেভাবে বর্ণনা দিয়েছে তাতে তো মনে হচ্ছে ভূত বলে কিছু আছে। সে যাই হোক এরকম কিছু যেন অন্য কারো সাথে আর না হয় এটাই প্রত্যাশা করছি। কেননা এতে যদি কারোর হার্ট এর দুর্বলতা থাকে তাহলে সাথে সাথেই মারা যাবে। আমিও এটাই আশা করছি যে আপনারা আর কোনদিনও সেই শ্মশানে যাবেন না এতেই আপনার জন্য বা আপনার বন্ধুদের জন্য মঙ্গলজনক হবে ভাইয়া।

 3 months ago 

পর্ব- ৩

ভাইয়া এটা শেষ পর্ব হবে। টাইটেল ঠিক করে নেবেন। ভাইয়া আপনারা সরাসরি দেখে ভয় পেয়েছেন আর আমি আপনার পোস্ট পড়েই ভয় পেয়ে যাচ্ছি। আপনার বন্ধু এমন সাদা ভূত দেখে অজ্ঞান হয়েছে আর আমি হলে তো হার্ট অ্যাটাক করতাম। সরাসরি এভাবে আমিও কখনও দেখিনি কিন্তু মানুষের কথা শুনেই ভয় পেয়ে যাই আর দেখলে তো আমাকে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ভাইয়া শ্মশানের সেই আম গাছ কি এখনও রয়েছে। এমন জায়গা সবসময়ই অপবিত্র থাকে আর সেজন্য সেখানে না যাওয়াই ভালো। আপনার শৈশবের এই গল্প পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এত সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

এত রাতে সাদা পোশাক পরা এবং তার মুখ যদি থাকে কালো, এরকম একটা ভয়ঙ্কর জিনিস দেখলে তো সবারই অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কথা ভাই। আপনার বন্ধু হাসান তাও তো একটু সাহসী ছিল। তবে হাসানের মায়ের আপনাদের উপর রাগ করাটা কিন্তু স্বাভাবিকই ছিল। যাইহোক, ভূতের গল্পটা কিন্তু সত্যিই বেশ ভয়ঙ্কর ছিল ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 67865.46
ETH 3258.03
USDT 1.00
SBD 2.64