ঝড়ের রাতে আম কুড়াতে গিয়ে ভূত দেখার গল্প // পর্ব-৩
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
ছোটবেলা বন্ধুদের সাথে আম কুড়ানোর মুহূর্ত গুলো সত্যিই অসাধারণ ছিল। আর ঝড় বৃষ্টি হলেই যেন আম কুড়ানোর জন্য গাছ তলায় গিয়ে বসে থাকতাম। ঝড়-বৃষ্টি মানতাম না, আসলে সেই দিনগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। কারণ সেই দিনগুলো যেন আমাদের সবচাইতে আনন্দময় দিন ছিল। বন্ধুদের সাথে এই আমতলা গিয়ে আন্দোলনের মুহূর্তগুলো অসাধারণ ছিলো, তাই ছোটবেলার একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। বন্ধুদের সাথে ঝড়ের রাতে আম কুড়াতে গিয়ে ভূত দেখার অনুভূতি। আর এই ভূত দেখার গল্পটি আমাদের হৃদয়ে যেন এখনো গেঁথে রয়েছে। এই গল্পটি আমরা কখনোই ভুলবো না, বিশেষ করে আমি তো ভুলবো না। তাই আপনাদের মাঝে আমার সেই স্মৃতিময় গল্পটি শেয়ার করতেছিলাম, আজকে সেই গল্পের তৃতীয় ও শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি, আশা করছি আজকের পর্বটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
তারপরে আমার বন্ধু রফিকের কথামত যখন সেই মেয়েটির পিছে পিছে আমরা আম কুড়ানোর জন্য ভিটার পেছনের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন দেখতে পেলাম লাইট ধরেছে আমার বাবা। এবং বলছে ওখানে কে, আমি তখন বললাম আমরা বন্ধুরা আম কুড়াতে এসেছি,বাবা এসেই তো তখন আমাদের সেই বোকা, বললো যে এখনও বাড়ি চলো, তখন আমাদের সাথে যে মেয়ে ছিলো তাকিয়ে দেখতে পেলাম সেই মেয়েটি নেই। আর মেয়েটি কোথায় গেল খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বাবাকে বললাম যে আমাদের সাথে একটা মেয়ে ছিল, এই মেয়েটি আমাদের ওইদিকে নেওয়ার জন্য এসেছে এবং ওই দিকে অনেক আম রয়েছে, এই কথা বললেছে,বাবা বললো মেয়েটি চলে গেছে সে থাকবে না,বাবার কথা শুনে কিরকম যেন একটা ভয় ভয় কাজ করতে ছিল। তাই তখন বাবার আর কথায় অবাধ্য না হয়ে বাবার সাথে আমরাও বাড়িতে আসলাম। ওই দিকে রফিকের সাথে যে মানিক ছিল সে তো কাঁপতে ছিলো,আমরানতিন জনই আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসলো বাবা।
বাড়িতে এসে দেখি মা বৃষ্টির মধ্যে বারান্দায় লাঠি নিয়ে বসে রয়েছে। মানে আমি বাড়িতে আসলে আমাকে ধরে মারবে, কিন্তু বাবা ও বন্ধুরা ছিল বাবা বলল যে এখন কিছু বলল না। ওদের সাথে একটা সমস্যা হয়েছেো আমি সেই জন্য ওদের নিয়ে এসেছি, বাবার কথা মতো মা আর কিছু বলল না, বলল কি সমস্যা হয়েছে বাবা বলল যে আগে গামছা দিয়ে ওদের মাথা ভালো করে মুছিয়ে দাও, ওদিকে সুজন তো ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে অবস্থা খারাপ, রফিকও ভয় পেয়েছে, বুঝতে পেরেছে ওই মেয়েটি আসলে কি ছিলো।
তারপরে গামছা দিয়ে আমাদের শরীর ভালো করে মোচা হলো, এবং আমাদের একটা রুমে দেওয়া হল। সেই রুমে বাবা আসলো বলল যে তোমাদের ওখানে আম কুড়ানোর জন্য কে বলেছে, তখন বললাম যে আমরা এমনিতে গিয়েছিলাম। ওখানে যে একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে এটা তোমরা জানতে না। রফিক বলল যে আমরা জানতাম তবে আমের নেশায় ভুলে গিয়েছিলাম, আর তিন জন ছিলাম তাই ভয়ও কাজ করতেছিল না, তখন বলল যে তোমরা যে একটা মেয়ের সাথে যাচ্ছিলে এই মেয়েটাকে বুঝতে পেরেছ। সেই মেয়েটা মানুষ ছিল না, সেটা ছিল খারাপ আত্মা।মেয়ে সেজে মাঝেমধ্যে এখানে ঘোরাফেরা করে। আমি যখন নামাজ পড়ে আসি তখন মাঝেমধ্যে আমার চোখে পড়ে। আর তোমাদের যেদিকে নিয়ে যাচ্ছিল সেই দিকে কোন আম গাছ নেই। ঐদিকে রয়েছে একটা পুকুর, সেই পুকুরের ভিতরে তোমাদের নামিয়ে কি করত সেটা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানে।
বাবার এই কথা শুনে যেন গায়ের লোম খাড়া হয়ে গেল, অনেক ভয় পাচ্ছিলাম, হায় আল্লাহ আজকে আমাদের সাথে কি হতো। এইটা ভেবে যেন আমার বন্ধু মানিক কান্না করে দিল কারণ মানিক এমনিতে অনেক ভয় পেয়েছে। আর ও হয়তো বুঝতে পেরেছিল যার কারণে ওর ভিতরে অনেক ভয় কাজ করতেছিল। আর আমার আম্মা এই কথা শুনে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করলো, যে আজকে যদি তোমার বাবা ওখান দিয়ে না আসতো তাহলে তোমাদের কি হতো তিনজনের কপালে কি হতো আজকে।আসলে বাবা আমাদের অনেক ভালোভাবে বুঝা ছিলো, যে ওখানে খারাপ জায়গা, ঐখানে যাওয়া যাবে না, দিনের বেলায় যাওয়া নিষেধ। কারণ ওখানে খারাপ কিছু রয়েছে, আর তোমরা রাতের বেলায় গিয়েছো।বাবা বলল আমি যদি ওখান দিয়ে না যেতাম তাহলে তোমাদের তো আজকে আমি দেখতে পেতাম না। কি হতো কে জানতো। তাই তোমরা কখনোই আর ওইখানে আম কুড়াতে যাবে না। কথা কি মনে থাকবে, বাবার কথায় আমরা একমত হয়ে গেলাম। যে আমরা আর জীবনেও যাবো না।
https://x.com/rayhan111s/status/1796766898862133359?t=Pxv2UnzaH3vHJ8oQYvb8Pg&s=19
এরকম গল্প শুনেতো আমার নিজেরই ভয় লাগছে। আপনার বাবা ওই সময় সেখান দিয়ে না গেলে আপনাদের যে কি হতো তাই চিন্তা করছি। এরকম ভুতের গল্প শুনেছি আব্বুর কাছে আব্বুদের সময়ের। কিন্তু এখনো যে এরকম কাহিনী হতে পারে কল্পনা ছিল না। আপনাদের ভাগ্য ভালো ছিল তার জন্যই সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন।
ভূতের গল্প গুলো পড়তে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে তবে আপনার এই গল্পটা পড়ে সত্যিই আজকে বেশ ভয় পেয়ে গেছিলাম। আপনার আব্বু কে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের পাশে থেকে সাপোর্ট করার জন্য। ছোটবেলায় অন্ধকারে অনেক কুড়াতে গেছি তবে এমন অভিজ্ঞতা আমার আজও হয়নি । যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আসলেই ভয় করার মত গল্প শেয়ার করেছেন ভাইয়া। এরকম ঘটনার কথা, ভূতের অনেক কাহিনী শুনেছি। কিন্তু নিজে কখনো এমন পরিস্থির স্বীকার হইনি। যদি আপনার বাবা ঠিক সময়ে উপস্থিত না হতো, তাহলে কি হতো? ভূতের গল্পটি ভালো লেগেছে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ভয়ানক একটি গল্প শোনালেন ভাইয়া।আপনার আব্বু ছিল বিধায় সেদিন কোনো সমস্যা হয়নি।গ্রামে কিছু কিছু ভিটায় আম বাগান গুলোতে এমন ভয়ানক জ্বীন,ভুত থাকে।ভালো লাগলো গল্পটি তবে বেশ আতঙ্কের ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
ভাইয়া এই রাতে আপনার এই গল্পটি পড়ে আমার তো ভয়ে বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ করছে ।গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গিয়েছে। খুবই ভয়ংকর ছিল গল্পটি ।আপনার বাবা না এলে না জানি আপনাদের সঙ্গে কি ঘটনা ঘটতো ।সত্যি ভীষণ ভয়ঙ্কর একটি গল্প শেয়ার করেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।