আমাদের প্রত্যেকের জীবনে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আসলে জীবনে ফেলে আসা সেই দিনগুলো যেন এখন স্মৃতি হয়ে আমাদের মনে করিয়ে দেয়,সেই সব দিনগুলোর কথা। তাই আপনাদের মাঝে আবারও পুরনো দিনের একটি গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আসলে বর্ষাকালে নৌকায় করে আমরা অনেক জায়গায় ভ্রমণ করেছি।এমনকি বর্ষাকালে নৌকায় করে অনেক বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো। সেই দৃশ্যগুলো আগে প্রায়ই দেখতে পেতাম, কিন্তু এখনকার যুগে আর এইরকম দৃশ্য দেখা পাওয়া যায় না। আসলে যুগ যত পার হয়ে যাচ্ছে তত যেন আধুনিকতার ছোঁয়া লাগছে। যার কারণে আগের দিনগুলো যেন স্মৃতি হয়েই শুধু আমাদের মধ্যে রয়ে আছে। তাই আপনাদের সাথে নৌকায় করে মামার বিয়ের খাওয়ার মুহূর্তর গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পটির শেষের পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি শেষের পর্বের গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।

আসলে ঝাল পান খাওয়া নিয়ে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। বিশেষ করে আমার নানার ভাইকে ঝাল পান খাওয়ানো হয়েছিল। যার কারণে সে খুবই ত্যারা টাইপের লোক ছিল, অনেক ঝামেলা হয়েছিল। সবাই হাতজোড় করে মাফ চাওয়ার কারণে এই ভেজালটি থেকে মুক্ত হয়। তাকে শান্ত করা গেল তাকে শান্ত করার পরে অনেকটাই ভালো লাগলো। কারণ সে খুবই ত্যারা টাইপের ছিল নানা রকমের ঝামেলা বাজাচ্ছিল। বিয়ের অনুষ্ঠান যেন মাটি হয়ে যাচ্ছিল। যার কারণে তাকে শান্ত করাতে আমরা অনেক আনন্দিত হলাম। তারপরে আবারও বিয়ের আয়োজন করা হলো এবং খাওয়া-দাওয়া শেষে বিয়ে পড়ানো হলো। তারপরে আমাদের যাত্রার পালা। আসলে বর্ষাকালে যখন বিয়েগুলো হয় এই বিয়ে গুলো যাওয়ার জন্য বেশি রাত করা হয় না।

যার কারণে আমরা তাড়াতাড়ি করে বেরিয়ে পড়লাম এবং আমরা নৌকা নিয়ে যাব, যার কারণে আমাদের এই নৌকাটি খুবই সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল। আমরা অনেক মানুষ ছিলাম। যার কারণে একটি নৌকাতেও ছিল না। তাই আরেকটি ছোট নৌকায় করে মামারা যাত্রা শুরু করলো। আর এই ছোট নৌকাতে যাওয়ার সময় অনেক বিপদ হয়েছিল। কারণ ছোট নৌকাটি নদী পথ দিয়ে সন্ধ্যা বেলা যাত্রার কারণে নদীর ঢেলে যেন এই নৌকাটি খুবই বিপদের মুখে ছিল। আল্লাহ আল্লাহ করা হয়েছিল নৌকার মাঝি অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ একজন লোক ছিল। যার কারণে নৌকাটি খুবই সাবধানে নদীর ভিতর দিয়ে চালিয়ে আনা হয়েছিলো।আসলে এরকম বিয়ের অনুষ্ঠানে যদি কোন ঘটনা ঘটে যেত তাহলে দুঃখের সীমা থাকত না।

আমরা খুবই আনন্দের সাথে নৌকায় করে মামার বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলাম। যখন ঘাটে এসে নামলাম তখন নানী দেখি নতুন বউকে বরণ করার জন্য ডালা সাজিয়ে নিয়ে ঘাটে এসে বসে রয়েছে। আমাদের দেখে সবাই আনন্দে চিৎকার করে উঠল। আসলেই সেই মুহূর্তটা অসাধারণ ছিল। এভাবে নৌকায় করে বিয়ে যখন হয় আর ঘাটে বউ এর জন্য অপেক্ষা করে এই দৃশ্যগুলো আর দেখতে পাওয়া যায় না। আসলে তখন খুবই আনন্দ হয়। নৌকার উপর থেকে সবাই উল্লাস করতে থাকে এবং নদীর কিনারায় যেখানে বউকে নামানো হবে সেই জায়গাটি খুবই সুন্দরভাবে সাজানো থাকে। আসলে মামার এই বিয়ের অনুষ্ঠানটি অসাধারণ ছিল। আসলে এভাবে আর কখনোই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি।

আমরা বড় নৌকায় এসেছি অর্থাৎ যে নৌকায় বউকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর মামারা যে ছোট নৌকা এসেছে অন্য মামারা যে সেই মামারা এখনো ঘাটে আসলো না। সবাই চিন্তা করছে যে এমনি ছোট নৌকা রাত হয়ে গেছে তারা আসলো না কেন। একটু পরে দেখি তারা এসেছে এবং তাদের নৌকা থেকে অনেক আখ নামানো হলো। তারা এই আখ গুলো আনার জন্য দেরি করেছে। সবাই রাগারাগি করল। তবে বিয়ের অনুষ্ঠানে বেশি রাগারাগি করল না। সবাই বউকে নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে পার করতে লাগলো এবং বাইরে মামা ও তার বন্ধুরা মিলে আখ খাওয়া শুরু করলো।আর আমাদের পাঠিয়ে দিল বাসর ঘরের টাকা তোলার জন্য। বলল যে তিন হাজারের নিচে বাসর ঘর থেকে তোরা যেন টাকা না নিয়ে ছাড়িসনা। যার কারণে আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে টাকা তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লাম এবং মামাও কিছু বন্ধু চলে আসলো। তারা ২০০০ টাকা নিল এবং আমাদের 500 টাকা দিয়েছিল ছোটদের খাওয়ার জন্য, আসলে সেই রাতে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি। বিশেষ করে জোসনা রাত ছিল তাই আনন্দটা বেশি হয়েছে।