মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


স্বাধীনতা এমনি এমনি আসে না, স্বাধীনতাকে সিনিয়ে আনতে হয়। আর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়। যে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে সে জাতিকে অবশ্যই রক্ত দিতে হয়েছে। রক্ত ছাড়া যেন কখনোই স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব না। আর আমরা বাঙালি স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছি এক সাগরের রক্তের বিনিময়ে।মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আপনাদের মাঝে আজকে স্বাধীনতা নিয়ে আমার অনুভূতিগুলো শেয়ার করছি। আসলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পিছনে অনেক ইতিহাস রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যেন এই স্বাধীনতার সূত্রপাত ঘটে। ১৯৫২ সালে পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশের মানুষের মাতৃভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। উর্দুকে তারা রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিল। আর সেই উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি থেকেই যেন বাঙালি জাতির প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে। আসলে মায়ের মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়া কোনো জাতি মানতে পারেনা। যার কারণে বাঙালি জাতির বীর সন্তানেরাও এই দাবি মানতে পারেনি। যার কারণে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ করে।সেখান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালিরা প্রতিবাদ করতে শুরু করে, সেটাই ছিলো মুক্তি প্রতিবাদ।


patriot-1019844_1280 (1).jpg

source

পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হওয়ার পর থেকেই, পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তান বাঙালির উপরে সব সময় বৈষম্য করত তারা সব সময় বাংলাদেশের মানুষদেরকে অধিকার দিত না। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই যেন অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যেত আসলে এভাবে পার্থক্য লক্ষ্য করতে করতে বাঙালি জাতিকে যেন একদম নিঃশেষ করে দিত। বাংলাদেশ থেকে হাজারো সম্পদ তারা নিয়ে যেত কিন্তু প্রতিটা ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দিতে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষদের। পূর্ব বাংলার মানুষদের জন্য কোন অধিকারই ছিল না। তাদের কাজ সহ্য করতেছিল, কিন্তু ১৯৫২ সালে যখন মাতৃভাষাকে কেড়ে নিতে চাই, উর্দু একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে, এই কথা শুনে বাঙালি জাতি আর চুপ করে থাকেনি।


বাঙালি বীর সন্তানেরা সেই সভা বা মিছিলের নেমে পরে, প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে তারা। আমাদের মাতৃভাষা বাংলা থাকবে, উর্ধ্ব আমাদের মাতৃভাষা হবে না। তখনই যেন ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আর ১৪৪ দ্বারা ভেঙে রাজপথে নেমে আসে বাংলার বীর সন্তানেরা। আর সেই রাজপথে পুলিশের গুলিতে সালাম বরকত রফিক নাম না জানা আরো অনেকেই শহীদ হয়, পরবর্তী দিনে শহীদদের জন্য শহীদ মিনার তৈরি করা হয়।সেই প্রতিবাদে শফিক শহীদ হয়।


এভাবে নির্মমভাবে বাঙালি বীর সন্তানদের শহীদ করা হয়। এবং রক্তে রঞ্জিত হয় বাংলার আকাশে বাতাসে। আর এই রক্তের রঞ্চিতেই যেন বাংলার মানুষদের আরো মুক্তির সন্ধান খুঁজে দেয়। তারা প্রতিবাদ মুখ হয়ে ওঠে এবং তারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। এই নিয়ে যেন তারা আন্দোলনের নেমে ওঠে এবং যার কারণে মাতৃভাষাকে তারা আর হারাতে দেয়নি। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে পারেনি। বাংলার বীর সন্তানেরা যদি প্রতিবাদ না করতো তাহলে হয়তো আর আমার মায়ের মুখের ভাষায় কথা বলতে পারতাম না। আমাদের উর্দু ভাষায় কথা বলতে হতো। তাই নিজের অধিকার ফিরে পেতে হলে অবশ্যই প্রতিবাদ করতে হবে এবং সেই অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে। বাংলার বীর সন্তানেরা যেন এটাই আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। কিভাবে অধিকার ফিরে পেতে হয়। তারা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে রক্ষা করেছে।


মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে বাঙালি জাতির মত অন্য কোন জাতি এভাবে রাজপথে নেমে আসেনি। এভাবে জীবন দেয়নি। যার কারণে বাঙালি জাতি যেন বিশ্বের বুকে এক অন্য ইতিহাস তৈরি করেছে। সেই ইতিহাসের জন্যই আন্তর্জাতিক ভাবে মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই প্রতিবছরই বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশে এই মাতৃভাষা একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করা হয়। সেই সব বীর সন্তানদের কারণে যারা মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে জীবন দিয়েছে তাদের শ্রদ্ধার সাথে আমরা স্মরণ করি। আসলে একুশে ফেব্রুয়ারিতে নয় আমাদের প্রত্যেকটা দিনে তাদের স্মরণ করা উচিত। কারণ তাদের কারণে আজ আমরা মাতৃভাষায় মন খুলে কথা বলতে পারছি এবং মায়ের মুখের ভাষায় কথা বলার মত শান্তি আর কোথাও নেই।


২১ আমার অহংকার ২১ আমার গর্ব। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলতে পারি, না আমরা কখনোই ভুলতে পারিনা। এই একুশে ফেব্রুয়ারি আমার ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। তাই আমার ভাইদের আমরা চিরকাল স্মরণ করব এবং তাদেরকে মনে রাখব। বাংলার ইতিহাস আমরা কখনোই ভুলবো না। যাদের কারণে আজ আমরা মুক্তভাবে বসবাস করছি এবং শান্তিতে মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। আর একুশে ফেব্রুয়ারির কারণেই যেন আমরা স্বাধীন একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল সূত্র ছিল ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোল। তো বন্ধুরা আশা করছি ২১শে ফেব্রুয়ারি আপনারা সবাই অনেক শ্রদ্ধার সাথে এই দিনটি পালন করেছেন এবং বীর সেই সন্তানদেরকে মনের মনিকোঠায় স্থান করে দিয়েছেন। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

প্রথমে মহান একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবসে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। আপনাকেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই। ভাষা শহীদদের অবদান আমরা কখনো বাঙালি জাতি বলবো না। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 5 months ago 

আজকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আজকের এই দিনে বাংলার বীর সন্তানেরা নিজের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছিল নিজের ভাষা রক্ষার্থে। দিনটিকে স্মরণে রেখে আজকে আপনি সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।

 5 months ago 

একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনটিকে আমরা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ বিভিন্নভাবে উদযাপন করে থাকে। ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলা ভাষাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 57983.59
ETH 3132.93
USDT 1.00
SBD 2.44