রাজবাড়ীতে গিয়ে ভূত দেখার গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমরা প্রত্যেকেই ভূতকে খুবই ভয় পাই। আর এমন কোন মানুষ নেই যে ভূতকে ভয় পায় না। তবে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এই ভূত নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে। বিশেষ করে আমার জীবনে অনেক গল্প রয়েছে। তবে আপনাদের সাথে স্মৃতির পাতায় থেকে একটি গল্প আজকে শেয়ার করতে আসলাম। আসলে আমাদের স্মৃতির পাতায় হাজারো গল্প জমা হয়ে রয়েছে।দিনগুলো আর আমরা ফিরে পাবো না। তবে সেই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে মাঝে মাঝে অনেক হাসি এবং অনেক আনন্দ হয়। সেই দিনগুলোর কথা ভাবতেই যেন কেমন লাগে। বিশেষ করে ভূতের গল্প আপনাদের মাঝে আজকে শেয়ার করতে আসলাম। বন্ধুদের সাথে একটি ঘটনা ঘটেছিল আমার জীবনে। এই ঘটনাটি আমি সারা জীবন মনে রাখবো। আসলে এরকম ভয়ানক ঘটনা আমাদের জীবন থেকে কখনোই মুছে ফেলা যায় না। স্মৃতির পাতায় যেন রয়ে যায় আজীবন। তাই আজকে আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতে আসলাম। আশা করছি এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।


castle-1483681_1280.jpg

source

আমি তখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, হাই স্কুল জীবন শুরু এর মধ্যে নিজেকে অনেক বড় বড় মনে হতো, কারণ হাইস্কুলে পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছি বন্ধু-বান্ধবের অভাব নেই। বাড়ির পাশে অনেক বন্ধু রয়েছে তাদের সাথে যেন দুষ্টামীর নিয়েই সারা দিন পার করি। আর এই দুষ্টামিটাই যেন আমার জীবনের অনেক একটা বড় কারণ হয়েছিল। আসলে আমাদের বাড়ির পাশে অনেক সমবয়সির বন্ধু ছিল আমার। একসাথে বেড়ে ওঠা কেউ কেউ ছিল আমার চাইতে বড়, আর বড় হলেও আমার সাথে মিশতো কারণ ছোটবেলা আমাকে একটু বড় বড়ই লাগতো। যার কারণে এই বন্ধুদের সাথে সারাদিন ঘোরাফেরা করতাম আর কোথায় কি আছে সেগুলো খোঁজ করতাম। বিশেষ করে আমাদের বন্ধুদের একটা গ্রুপ ছিল। আর এই গ্রুপটা হলো যার কাছে ফল রয়েছে এই গাছের ফল গুলো চুরি করা।


তো আমরা বন্ধুরা মিলে একদিন কথা বলে ঠিক করলাম। গ্রামের, মেম্বারের বাড়িতে অনেক লিচু গাছ রয়েছে। আর তার এই গাছে অনেক কিছু ধরেছে, এই লিচু পাড়ার পরিকল্পনা করতেছিলাম। তবে আমি একটু ভয় পাচ্ছিলাম, কারণ মেম্বার খুবই করা টাইপের লোক ছিল। যদি তার হাতে ধরা পরি তাহলে তো মান সম্মান যাবে এবং আমাদেরও শাস্তি দিবে। আমি বারবার না করলাম। তবে বন্ধুরা বলল যে কোন ভয় নেই যেভাবেই হোক এই গাছ থেকে লিচু পেড়ে নিয়ে আসব। তুই কোন চিন্তা করিস না। ওদেরকে নাও করার পরেও ওরা মানলো না। আমি আর কি করবো ওদের সাথে রাজি হয়ে গেলাম। তবে একদিন আমার বন্ধুর বাড়িতে কেউ ছিলনা যার কারণে আমরা সবাই ঐবন্ধুর বাড়িতেই থাকবো।আমি বাড়িতে বললাম যে আজকে পিকনিক করবো আমার বন্ধুর বাড়িতে তাই ওখানেই থাকবো।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

তাই আমরা সবাই মিলে সেই বন্ধুর বাড়িতেই ছিলাম এবং রাত গভীর হয় যখন সেই জন্য আমরা অপেক্ষা করতেছিলাম। আসলে গভীর রাতে যেতে হবে তাছাড়া যদি ধরা পড়ে খবর রয়েছে। তাই যখন সাড়ে বারোটা বাজলো আর গ্রাম অঞ্চলে সাড়ে বারোটা মানে অনেক রাত। তাই আমরা বন্ধুরা মিলে সেই মেম্বার বাড়িতে আসলাম। লিচু পারার জন্য, তার ছোট ছোট অনেকগুলো লিচু গাছ ছিল। তবে গাছ ছোট হলেও প্রচুর পরিমাণে লিচু ধরেছিল। হাত দিয়ে পারা যায়, তাই আমরা বন্ধুরা মিলে পারতেছিলাম, আমরা ছিলাম পাঁচজন


আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে সেই গাছগুলো থেকে লিচু পেড়ে একটি ব্যাগে মধ্যে রাখলাম। এমন সময় আমরা যখন চলে যাব, তখন আমার বন্ধু রাসেল আরেকটি লিচু গাছে অনেক কিছু ধরেছে, সেই গাছে চারদিকে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। সে এই বাঁশটি সরাতে গিয়েই অনেক শব্দ হয়। আর মেম্বার বুঝতে পারে। সে বলে কেরে লিচু পারে,এই কথা শোনার পরে আমরা বন্ধুরা মিলে অনেক ভয়ে দৌড়ে চলে আসলাম সেখান থেকে। এবং পিছে পিছে যেন আমাদের খুঁজতে বের হয়েছে তাই আমরা মেম্বারের বাড়ির পাশেই ছিল একটি পুরানো রাজবাড়ি। এখানে আগের রাজাদের জমিদারি ছিলো, বিশাল বড় এই রাজবাড়ি। এখানে অনেক ময়লা আবর্জনা দিয়ে ঘেরা এখানে দিনের বেলায় কেউ যেতে সাহস পায় না। তবে আমাদের মেম্বার যদি ধরে ফেলে, সেই ভয়ে আমরা ওই রাজবাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলাম।


এই রাজ বাড়ির ভিতরে আমি কখনোই প্রবেশ করিনি এবং সকলের কাছে শুনেছি এ রাজবাড়ি নাকি অনেক ভয়ানক। মাকড়সা জাল দিয়ে ঘেরা ছিলো এবং শিয়াল ও কুকুরদের বসবাসের জায়গা হয়ে আছে।তাই রাজবাড়ির মধ্যে কেউ আশে না, কারণ এখানে কেউ দিনের বেলায় আসতে ভয় পেতো। অনেক পুরনো রাজবাড়ী ময়লা আবর্জনা অনেক মাকড়সা ছিল। এই মাকড়সা গুলো পার হয়ে আমরা বন্ধুরা ভয়ে ভয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। যাতে মেম্বার আমাদের ধরতে না পারে। তবে মেম্বার আর আমাদের এদিকে আসলো না। কিন্তু আমরা বন্ধুরা এই রাজবাড়ীর ভিতরে ঢুকে যেন কেমন লাগতে ছিলো,খুবই ভয়ভয়ে ছিল সেই মুহূর্তটা। তো বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই, আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব বাকি গল্পের অংশ, সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইলো।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 5 months ago 

তাহলে পাঁচ বন্ধু মিলে মেম্বার বাড়িতে লিচু চুরি করতে গেলেন। তবে রাতের বেলা চুরি করার মজাই আলাদা। আসলে অনেক সময় বন্ধুরা থাকলে অনেক না সিদ্ধান্ত হা হয়ে যায়। তবে মেম্বার বাড়ীর চুরি করতে গিয়ে তাদের আওয়াজ শুনে নীরব রাজবাড়ী চলে গেলেন। অনেকের মুখে শুনেছি এরকম বাড়িগুলোতে জিনভূত থাকে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোন সমস্যা দেখতে পারি নাই আপনার পোষ্টের মধ্যে। দেখি পরের পর্বে কি ঘটে সেই অপেক্ষায় রইলাম। সুন্দর করে গল্পের প্রথম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।

 5 months ago 

আসলেই পাঁচ বন্ধু মিলে চুরি করার মুহূর্তটা অনেক আনন্দ ছিল। তবে রাজবাড়ীতে ঢোকার পরে সেই আনন্দ মাটি হয়ে যায়।

 5 months ago 

ভুতের গল্প পড়তে আমার সবসময় অনেক বেশি ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে লিচু চুরি করতে গিয়ে ধরা খাওয়ার ভয়ে আপনারা পুরোনো রাজবাড়ীতে ঢুকে পড়লেন এমন অনেক দিনের পুরনো বাড়িতে জীন ভুত থাকাটায় স্বাভাবিক। লাস্টের অসংখ্য টুকু পড়ে একটু ভয় লাগছিলো। যাইহোক আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

 5 months ago 

প্রথম পর্বে তো ভূতের গল্প পাওয়া গেল না, তবে লিচু চুরির গল্প পাওয়া গেল আর কি। হা হা হা...🤭 আপনাদের তো অনেক সাহস ভাই, যে মেম্বারের বাড়িতে লিচু চুরি করতে গেছেন। তবে ভাগ্য ভালো যে মেম্বারের হাত থেকে বেঁচে গেছেন। তা না হলে আপনাদের অবশ্যই কোনো না কোনো শাস্তির ব্যবস্থা করত। এখন দেখা যাক আপনারা ভূতের হাত থেকে কতটা বেঁচে ফিরে আসতে পারবেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57305.83
ETH 3076.79
USDT 1.00
SBD 2.40