ঝড়ের রাতে আম কুড়াতে গিয়ে ভূত দেখার গল্প // পর্ব-২

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


ঝড়ের দিনে আম কুড়াতে অনেক মজা লাগে, আর এই আম কুড়ানোর মুহূর্তগুলো সত্যি অনেক আনন্দের হয়ে থাকে। যখন আমরা গ্রামে বসবাস করতাম, তখন বাতাস আর ঝড় আসলেই আমতলা চলে যেতাম। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই আম কুড়াতাম। আসলে বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়ানোর মুহূর্তটা যে এত আনন্দের ছিল সেটা বলে আর প্রকাশ করা যাবে না।আসলে আমরা যারা গ্রামে বসবাস করি, তারা এই আম কুড়ানোর মুহূর্ত আন্দোলনের সাথে উপভোগ করতে পেরেছি। আসলে ঝড়ের সময় গাছতলা গেলে যে আম পড়ে থাকে এই আমগুলো কুড়ানোর মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে। বিশেষ করে সকলের একসাথে হয়ে আমরা আম কুড়াতাম, এই দৃশ্যগুলো এখন চোখের সামনে ভাসে। আসলে পুরনো সেই দিনগুলো এত আনন্দের ছিল, সেই দিনগুলো আর আমরা কখনোই ফিরে পাবোনা। আসলে স্মৃতিময় এই দিনের কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোর মুহূর্তগুলো অনেক বেশি আনন্দের ছিল। এই মুহূর্তগুলো আর উপভোগ করতে পারি না, এখন ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে ভয় লাগে, ঝড় আসবে যেন রুমে চলে আসি। আসলে ছোটবেলা এই ভয় যেন নিজেদের মধ্যে ছিল না। তো বন্ধুরা সেই আম কুড়ানোর স্মৃতিময় গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি,আশা করছি দ্বিতীয় পর্ব পড়ে ভালো লাগবে।


lamp-2903830_1280.jpg

source

তারপর আমার বন্ধু রফিকের কথা মতে,আমরা আম কুড়ানোর জন্য ভিটাতে যেতে রাজি হলাম। আসলে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আর এই সন্ধ্যার সময় কেউই ভিটাতে আম কুড়াতে যায় না। দিনের বেলা এখানে আম কুড়াতে আসে। আসলে কাঁচা মিঠা আম সকলের অনেক প্রিয়। যার কারণে দিনের বেলায় সবাই আম কুড়াতে আমে, কিন্তু সন্ধ্যা ও রাতে বেলা কেউ আসে না। কারণ আমাদের গ্রামের একটা মেয়ে এই গাছের পাশেই আত্মহত্যা করেছিল গলায় দড়ি দিয়ে। তারপরে থেকে এখানে অনেক ভয় নাকি অনেকেই দেখিয়েছে। যার কারণে সেখান কেউই যায় না। কিন্তু রফিক বলল যে আমি গিয়েছিলাম।কোন ভয় নাই চল, তাই ওর কথা মতে আম কুড়ানোর জন্য সন্ধ্যাবেলা সেই ভিটাতে আসলাম।


সন্ধ্যা বেলা ভিটাতে আসলাম, এসে দেখতে পেলাম আম গাছের নিচে ঘাসের উপরে অনেক আম পড়ে রয়েছে। আসলে দুটি বড় বড় গাছে অনেক আম পড়ে রয়েছে। আমরা তিন বন্ধু মিলে এত আম কিভাবে কুড়াবো বুঝতে পারছিলাম না। তারপরে অনেক আনন্দ হচ্ছিল, তাড়াতাড়ি আমগুলো কুড়াতে লাগলাম। আসলে বৃষ্টির মধ্যে সেখানে কাঁদা হয়েছে। যার কারণে আমার বন্ধু রফিক আম কুড়াতে গিয়ে পড়ে গেল। কিন্তু ব্যথা পায়নি, ও যেন আরো হাসতে লাগলো। আসলে ওর হাসি দেখতে পেয়ে আমাদেরও হাসি আসলো। তারপরে বললাম যে আর দেরি করিস না, তাড়াতাড়ি আমগুলো কুড়িয়ে ব্যাগে নিয়ে যেতে হবে। ব্যাগ আমাদের পুরা হয়ে গেল আম দিয়ে, তারপরে যেন আম কুড়ানো শেষ হচ্ছিল না।


fantasy-2847724_1280.jpg

source

বৃষ্টি ও মেঘের ডাক আরো বাড়তেছিল, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকা ছিল। আসলে বিদ্যুৎ যখন চমকা ছিল চারপাশে যেন অনেক আলোকিত হয়ে যাচ্ছিল, সেই দৃশ্যগুলো দেখে অনেক ভয়ও লাগতেছিল, কারণ এই গাছের নিচে এমনিতেই ভয় রয়েছে। আসলে আমরা যখন আম কুড়ানো ছিলাম, তখন যে এখানে ভয় রয়েছে। এই চিন্তায় আমাদের মাথার মধ্যে ছিল না, কারণ আমরা তাড়াতাড়ি করে আমগুলো কুড়ালাম,ভুতের ভয়ের ধান্দাই ছিলো না,হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল আমার যে এখানে আম কুড়িয়ে যে গাছের নিচে আমের ব্যাগ রেখেছি সেই গাছের সাথে গ্রামের একটা মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।


তখন থেকে মনের ভিতর একটু ভয় কাজ করতেছিল, তারপরেও রফিক আম কুড়াচ্ছিলো এবং রফিককে বললাম রফিক আর আম কুড়াবো না, আবার সকালে এসে আম কুড়াব, আমরা সকালে আসবো চল এখন চলে যাই, রফিক বললো ঠিক আছে বন্ধু, তাহলে চল আমরা চলে যাই। তারপর রফিকের আমাদের যে আম কুড়ানোর ব্যাগটি ছিলো রফিক আর হাসান হাতে নিল যাচ্ছিলো,এমন সময় আমাদের সামনে একটা মেয়ে আসলো,চারো দিকে অন্ধকার ছিল, ভালোভাবে দেখা যাচ্ছিল না। শুধু একটা মেয়ে এসেছে, এটা বোঝা গেল। সেই মেয়েটি বলল যে তোমরা এখনই আমগুলো কুড়িয়ে চলে যাচ্ছো। ভিটার ওইপাশে আর একটি গাছ রয়েছে, সেখানে আরো বেশি আম পড়ে রয়েছে, আমি আমগুলো কুড়িয়ে রেখেছি, কিন্তু নিতে পারছি না। চলো আমাকে একটু সাহায্য কর, ওখানেও অনেক আম রয়েছে। তোমাদের দেবো। রফিক বললো তাই আচ্ছা ঠিক আছে, চলো কিন্তু আমি না করতে ছিলাম। আমি বললাম, আমরা অনেক আম কুরিয়েছি, আর আম কুড়াবো না। আমরা এখন যাব না, কিন্তু রফিক মেয়েটার কথা মত তার পিছে পিছে যেতে লাগলো।


কি আর করার রফিকের কারণে আমরা তিনজনই সেই মেয়েটির পিছে পিছে ভিটার ওই পাশে যাচ্ছিলাম। আসলে ভিটার ওইপাশে যে গাছ রয়েছে, সেটা আমরা জানতামই না। এটা আমাদের মাথায় ছিল না,আমাদের কি হয়ে গেল আমরা যেন বুঝতে পারছি না,মেয়েটি যে দিকে যাচ্ছে আমরাও পিছে পিছে যাচ্ছি, আর ভিটার পাশ দিয়েছিল একটা রাস্তা ছিলো, আমরা যখন তিনজন যাচ্ছি আমার বাবা তখন নামাজ পড়ে বাড়িতে আসতেছিল এবং আমাদের যাওয়া দেখে বলল কিরে ওখানে রাতের বেলায় কারা।এই বলে আমাদের দিকে লাইট ধরেছে এবং লাইট ধরার সাথে সাথে বাবা আমাদের চিনতে পেরেছে এবং আমাদের কাছে চলে আসলো। আর আমরা তখন সেই মেয়েটিকে খুঁজে পেলাম না, মেয়েটি কই মেয়েটিকে অনেক খুঁজলাম। যে এত রাতে মেয়েটি গেল কই, বাবা তখন বললাম কোন কথা বলোনা। আমার সাথে বাড়িতে আসো, তারপরে সব বলবো, তো বন্ধুরা আজকের পর্বে এখানে শেষ করলাম। বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ। 🙏🤲🙏


আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 2 months ago 

আম্মুর মুখে ছোট থেকেই শুনেছি যেখানে কেউ নাকি আত্মহত্যা করে সেখানে নাকি মাঝে মাঝেই অলৌকিক কিছু দেখা যায়। আপনি দেখছি সরাসরি সে রকম ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

 2 months ago 

এটা কি সত্যি গল্প ভাইয়া।সত্যি যদি হয় গল্পটি তবে কি ভয়ংকর। আমার তো মনে হচ্ছে আত্মহত্যা করা মেয়েটাই আপনাদের কাছে এসেছিলো।আপনার বাবা লাইট মেরেছে জন্য অদৃশ্য হয়ে গেছে। আগামী পোস্টে পরবর্তী তে কি হলো জানার অধীর আগ্রহে রইলাম।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভয়ংকর একটি ঘটনা ভাগ করে নেয়ার জন্য।

 2 months ago 

আপনার বন্ধু রফিক দেখছি ভালই সাহসী ভাই! এমনিতেই ওই জায়গায় একটা মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে, তার উপর যদি ওই রাতের বেলা কোন মেয়ে সামনে হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে বলে যে, "তোমরা এখনই আমগুলো কুড়িয়ে চলে যাচ্ছো, ভিটার ওইপাশে আর একটি গাছ রয়েছে, সেখানে আরো বেশি আম পড়ে রয়েছে" -এই কথা শুনলে তো আমি ওখানে হার্টফেল করতাম। যাইহোক, দেখা যাক পরবর্তীতে আপনারা আরো কি ভয়ের সম্মুখীন হন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65359.95
ETH 3492.90
USDT 1.00
SBD 2.51