বন্ধুত্বের বন্ধন //পর্ব-২
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
বন্ধুরা গত পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমার বন্ধু সাজু আমাদের জরুরী ভাবে ঢাকাতে যাওয়ার কথা বলেছিল। আর কি জন্য যাওয়ার কথা বলেছে সেটা আমরা জানি না, কিন্তু বারবার বলতেছিল যে তাড়াতাড়ি চলে আয়। দেরি না করে এমন কি সাজুর মা ও আমার কাছে ফোন দিয়েছি।ল আর সাজু আমার বাড়িতে ফোন দিয়েছিল। তাই আমি আর হাসান দেরি না করে তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নিলাম। আমি ভেবেছি হয়তো কোন বিপদে পড়েছে, তাই আমাদের হয়তো একটু সাহায্য লাগবে। আবারো ভাবলাম যে আমরা এখান থেকে গিয়ে ওকে কি সাহায্য করব ওতো শহরে বসবাস করছে ওখানে যে কোন ব্যবস্থা নিতে পারবে। তারপরে বন্ধু এভাবে বলল যাই হোক আমি আর হাসান পরের দিন সকাল বেলা রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে, তো বন্ধুরা আজকে সেই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।
আমি হাসান সাজু স্কুল জীবনে সবচাইতে কাছের বন্ধু ছিলাম। তিনজন সবসময় একই জায়গায় থাকতাম। যার কারণে সাজু এভাবে বলালো তাই আমরা আর দেরি না করে ওর কথা মতোই রেডি হয়ে সকালবেলা আমরা ট্রেনে রওনা দিলাম। দুই বন্ধু মিলে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনে রওনা দিলাম। আসলে ট্রেন জার্নি আমার খুবই ভালো লাগে। আর ট্রেনে করে গেলে বেশি ভালো লাগার কারণ হলো চারপাশে দৃশ্য উপভোগ করা যায়। আর জানালার পাশে বসলে আরো বেশি ভালো লাগে, আমরা যখন ট্রেনে যাচ্ছিলাম দুই বন্ধু মিলে অনেক মজা করলাম। বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন যখন থামে তখন আমরা নামতাম আর এই দৃশ্য গুলো দেখতাম। তবে বেশি ভালো লেগেছে কমলাপুর রেলস্টেশনে নেমে আমরা দুই বন্ধু সেখানে অনেক ফটোগ্রাফি করেছিলাম। সেই ফটোগ্রাফি গুলো আপনাদের সাথে পরবর্তীতে শেয়ার করব। তবে সেই মুহূর্তগুলো আমার বেশি ভালো লেগেছে, কারণ কমলাপুর এখন আগের চাইতে অনেক বেশি উন্নত এবং সুন্দরময় করেছে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের আসার আগে আমরা সাজুকে ফোন দিয়েছিলাম। যে ও যেন স্টেশনে এসে বসে থাকে। আসলে ওরা যে বাসায় থাকে এই বাসায় আমরা এর আগে কখনো যাইনি। যার কারণে ওর বাসা ও চিনি না, তাই আমরা সাজুকে আসতে বলেছিলাম । সাজু বলল ঠিক আছে বাইরে আমি দাঁড়িয়ে থাকবো। আমরা যখন কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বের হব তখন টিকিট চেক করা হয়। তখন আমরা টিকিট দেখিয়ে স্টেশন থেকে বের হয়ে দেখি সাজু দাড়িয়ে আছে। অনেকদিন পর দেখলাম যার কারণে সাজুকে দেখেই যেন বুকে জড়িয়ে নিলাম ও আমাদের জড়িয়ে ধরল, তিন বন্ধু যেন সেই পুরনো দিনের কথা বারবার মনে করতে ছিলাম। আসলে এত ভালো লাগতেছিল। সাজুর সাথে অনেকদিন পর দেখা হল যার কারণে খুবই ভালো লাগলো। তো সাজু বলল যে আগে বাসায় যাব না, চল আগে তিন বন্ধু মিলে একটু ঘুরে আসি।
তো আমরাও বেশি ঘোরাঘুরি না করে রিকশা নিয় বাসার দিকে রওনা দিলাম। সাজু বলল যে রিক্সায় ভ্রমন করলে অনেক বেশি ভালো লাগবে,তাই তিন বন্ধু মিলে রিক্সায় করে ভ্রমণ করতেছিলাম। আসলে শহরের ইট পাথরের এই সুন্দরময় দৃশ্যগুলো দেখতে দেখতে যেন কোনগুলি দিয়ে ওর বাসায় নিয়ে আসলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। বারবার জিজ্ঞেস করতেছিলাম আমাদের এভাবে কিসের জন্য নিয়ে আসলি। আমরা সব কাজ ফেলে চলে আসলাম। এই ইমারজেন্সি ভাবে নিয়ে আসলেইকোন বিপদ হয়েছে, এখন তো দেখছি তুই ঠিকঠাক আছোস কি হয়েছে একটু খুলে বল। সাজু বললো আগে বাসায় চল বাসায় গিয়ে তারপর সকল কিছু বলবো।
বাসায় গিয়ে দেখি সাজুর আম্মা সকল কিছু খাবার রেডি করে রেখেছে। আমরা যাওয়াতে সে অনেক খুশি হল। বললো বাবার আগে হাত মুখ দিয়ে আসো অনেক দূর থেকে এসেছ তোমরা খাওয়া-দাওয়া কর। তাই আমরা হাত মুখ দিয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম এবং বারবার আন্টিকে জিজ্ঞেস করতেছিলাম আন্টি কি হয়েছে। আমাদের তো টেনশন হচ্ছে। এভাবে ঢেকে নিয়ে আসলো। এভাবে তো কখনো আমাদের ডেকে নিয়ে আসেনি। তখন বলল যে খাওয়া-দাওয়া শেষ করার সকল কিছু বলব। তারপরে আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম তখন আন্টি আর সাজুকে বললাম কি হয়েছে বল এবার, তখন সাজু বলল আম্মা বলবে, আম্মার কাছ থেকে শোন, তখন আন্টিকে জিজ্ঞেস করলাম আন্টি কি হয়েছে। তখন সাজুর আম্মা বলল যে সাজুর জন্য একটা মেয়ে দেখেছি মেয়েটার সাথে ওর বিয়েও ঠিক হয়েছে। আমরা আগামীকাল গিয়ে আংটি পড়াবো, আর এত বড় একটা জীবনের সিদ্ধান্ত যার কারণে তোমাদের ছাড়া সাজু যাবে না। বারবার তোমাদের কথা বলতেছিল। কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠান হবে পরে। আগে শুধু আংটি পরিয়ে রাখবো। আর এই কথা যদি তোমাদের সাজু বলতো তাহলে তোমরা বলতা যে আমরা বিয়ের সময় যাব, এখন যাব না।তাই সাজু ভাবে জরুরিভাবে তোসাদের নিয়ে এসেছে এবং আগে কিছু বলেনি।
https://x.com/rayhan111s/status/1811357580406759603?t=zKKzuwPpotcodIP8BStNeA&s=19
আসলেই ভাই বন্ধুত্বের সম্পর্ক সারা জীবন রয়ে যায়। আপনার বন্ধু সাজু ঠিক তাই হয়েছে, ঢাকা শহরের বন্ধুদের কথা না ভেবে আপনাদের কথা ভেবেছে এবং আপনাদের মনে রেখেছে। তাই আপনাদের এভাবে জরুরিভাবে ডেকে নিয়ে গেছে। দোয়া করি এভাবেই যেন আপনাদের বন্ধুত্ব চিরকাল রয়ে যায়।