বড়শি দিয়ে বাবার সাথে মাছ ধরার গল্প//পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ21 hours ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বাবার সাথে আমার জীবনের হাজারো গল্প জমা হয়ে রয়েছে। আর এই গল্পগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে পুরনো দিনের কথা মনে করতে পেরে অনেক বেশি ভালো লাগে। মনে হয় যেন সেই পুরনো দিনগুলোই অনেক আনন্দময় ছিল। যদি সেই দিনগুলো আবারও ফিরে পেতাম কতই না ভালো হতো। আর আমি বাবার সাথে হাঁটে যেতাম, বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যেতাম। আসলে আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে নদী বয়ে চলেছে। এই নদীতে নৌকা নিয়ে মুহূর্তগুলো আমার জীবনে অনেক জড়িয়ে রয়েছে। তাই মাঝে মধ্যে আমি ছোটবেলা বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরতে যেতাম। আর মাছ ধরা যেন আমার বাবার নেশা ছিল। যার কারণে বাবা সময় পেলেই মাছ ধরার জন্য নদীর পাড়ে চলে যেত। আর আমিও বায়না করতাম বাবার সাথে যেতে। বাবা আমাকে সাথে নিয়ে যেত। আমি মাছগুলো ধরে ব্যাগে রেখে দিতাম। আর বাবার যখন মাছ ধরত তখন খুবই ভালো লাগতো। তাই স্মৃতিময় একটি মাছ ধরার গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম।


fish-4342145_1280.jpg

source

আমার বাবা বেশিরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকতো তার কাজে। যার কারণে মাছ ধরতে বেশি সময় পেতো না। তবে বাবার বন্ধুরা যখন বড়শি দিয়ে নদী থেকে বড় বড় মাছ ধরেছিল এই গল্প যখন বাবার কাছে এসে বললে তখন যেন বাবারও মাছ ধরার ইচ্ছা প্রকাশ করে।আসলে আমরা আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়াশোনা করি, প্রাইমারি স্কুল থেকে বাড়িতে এসে শুনি বাবা বড়শি বানাচ্ছে মাছ ধরার জন্য। তখন আমার খুবই ভালো লাগলো। কারণ আমারও বন্ধুর বাবারা এখন নদী থেকে বড়শি দিয়ে বোয়াল মাছ থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় মাছ ধরছে। আর এই মাছ ধরার কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো।


তাই আমি স্কুল থেকে এসেই খাবার না খেয়ে বাবার কাছে আসলাম। বাবা দেখি বড়শির সিপ বানাচ্ছে এবং অনেকগুলো বড়শিতে সুতা দিয়ে বেঁধে রেখেছে। বাবাকে বললাম বাবা কখন মাছ ধরতে যাবেন। বাবা বলল যে আজকে মাছ ধরতে যাব না। আজকে শুধু বড়শির সিপ বানাবো, কালকে মাছ ধরতে যাব। তুমি এখন বাসায় গিয়ে খাবার ভালোভাবে খাও। যদিও বেশি খাবার খাও তাহলেই তোমাকে আমি মাছ ধরতে নিয়ে যাব। বাবার কথা শুনে তাড়াতাড়ি আমি বাড়িতে আসলাম এবং আম্মাকে বললাম আম্মা তাড়াতাড়ি ভাত দেন। আমি ভাত খাব। আম্মা আমাকে ভাত দিলো এবং তাড়াতাড়ি খেয়ে আবার আমি বাবার কাছে আসলাম মাছ ধরার এই বড়শি গুলো বানানো দেখতেছিলাম।


sunset-1749095_1280.jpg

source

তারপরে বড়িশি বানানো দেখতেছিলাম আর মনে মনে ভাবতেছিলাম অনেক বড় বড় মাছ আমরা ধরতে পারবো। এটাই ভেবে খুবই ভালো লাগতেছিল। আসলে নদীতে তখন অনেক বেশি মাছ ছিল। যার কারণে বড়শিতে বেশি বড় বড় মাছ পাওয়া যেত। বোয়াল মাছ পাওয়া যেত বেশি। যার কারণে আমি পরের দিন স্কুলে যেতে চাইলাম না। বাবাকে বললাম আজকে আমি মাছ ধরতে যাব। বাবা বলল যে না স্কুলে যেতে হবে। কারণ মাছ ধরতে যাব বিকেলবেলা। তুমি স্কুল থেকে আসে যখন খাবার খাবে, তারপরে আমি তোমাকে নিয়ে মাছ ধরতে যাব। আমি যেতে চাইছিলাম না, বাবা জোর করে আমাকে স্কুলে পাঠিয়ে দিল। তবে সেইদিন স্কুলে আমার এক বিন্দু পরিমাণও মন বসেনি। শুধু মাছ ধরার দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতে ছিল।


তারপরে স্কুল ছুটি হল, স্কুল ছুটির পরে এক মিনিটও আমি স্কুলে দেরি করিনি। তাড়াতাড়ি আমি বাড়িতে এসেছিলাম। বাড়িতে এসেই আমি খাবার চাইলাম কারণ খাবার না খেলে তো আমাকে নিয়ে যাবে না। খাবার খেয়ে আমি বাবাকে বললাম বাবা চলো এখন মাছ ধরতে যায়। বাবা বলল যে ঠিক আছে আর একটু পরেই যাবো।তারপরে আমরা মাছ ধরার সকল বড়শির সিপগুলো নিলাম। আসলে বড়শি গুলো অনেক ছিল।এই বড়শির সিপ গুলো নদীর কিনারায় ছোট মাছ দিয়ে মাঠির মাঝে সিপ শক্ত করে রাখতে হয়।তাহলেই বড় বড় বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। যার কারণে আমরা অনেকগুলো বড়শির সিপ বানিয়েছিলাম। তারপর আমি বাবা সেই বড়শির সিপ গুলো নিয়ে নদীর পাড়ের দিকে রওনা দিলাম।


তারপরে আমি আর বাবা নদীর পাড়ে আসলাম ন।দীর পাড়ে এসে বোয়াল মাছ মারা এই বড়শির সিপ গুলো নদীর কিনারা দিয়ে আমরা পেতে রাখলাম।আর বড়শিতে ছোট ছোট তাজা মাছ আমরা বড়শির সাথে লাগিয়ে দিলাম।এই মাছগুলো যখন নড়বে তখন বড় মাছ এসে এই মাছগুলো খেতে চাইবে আর তখনই বড়শিতে আটকা পড়বে। এইভাবেই আমরা বড়শিগুলো নদীর কিনারায় পেতে রাখলাম, বোয়াল মাছ ধরার জন্য। তো বন্ধুরা আজকে এখানেই শেষ করছি। আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব মাছ ধরার পরবর্তী অংশটুকু। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই দোয়া রইলো। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 20 hours ago 

ছোটবেলা বাবার সাথে আমিও মাছ ধরতে যেতাম। মাছ ধরতে আমার খুবই ভালো লাগে।আপনি আপনার বাবার সাথে বড়শি দিয়ে নদীতে মাছ ধরার স্মৃতিময় গল্পটি শেয়ার করলেন। আশা করছি আগামী পর্বে এই গল্পের আকর্ষণীয় মুহূর্ত আমরা পড়তে পারব। গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 17 hours ago 

আসলে ভাইয়া ছোট বেলা বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরার মজাই আলাদা। ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 17 hours ago 

মাছ ধরতে যাওয়ার অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এজাতীয় ছোটবেলার গল্প বা অতীতের গল্প গুলো জানতে খুবই ভালো লাগে আমার। একজনের মাধ্যমে আরেকজন খুব সহজে জানতে পারে। বেশ ভালো লেগেছে আপনার সুন্দর এই গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 60988.21
ETH 2373.39
USDT 1.00
SBD 2.55