স্কুল জীবনের স্মৃতিময় একটি গল্প//পর্ব-২||🫣[১০% @shy-fox ]🌹
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
বন্ধুদের সাথে নিয়ে স্কুল জীবনে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই স্মৃতি গুলো যেন এখন মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। আসলে হাসি-কান্না নিয়েই স্কুল জীবনটা শুরু আর এই স্কুল জীবনের মতো আনন্দময় মুহূর্ত আর কোথাও নেই। কলেজ জীবনের স্মৃতি চায়তে স্কুল জীবনের মুহূর্তগুলো বেশি মজার হয়। কারণ পাঁচ বছর স্কুল লাইফে থাকা হয়। আর এই পাঁচ বছরের স্কুল লাইফের মুহূর্তটা সত্যিই অসাধারণ। বন্ধুবান্ধবের সাথে হাজারো মুহূর্ত রয়েছে। খুবই ভালো লাগে এবং জীবনের আনন্দময় মুহূর্ত স্কুল জীবনেই।স্কুলজীবনের মুহূর্তগুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। সেই মুহূর্তের মধ্যে থেকে আজকে আপনাদের সাথে দ্বিতীয় পর্বের একটি গল্প নিয়ে এসেছি। আসলে এই গল্পটি মূলত আমার প্রিয় বন্ধু হাসানকে নিয়ে। স্কুলজীবনের এডমিট কার্ড হারিয়ে যাওয়ার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই গল্পটি। তো বন্ধুরা চলুন আজকে সেই দ্বিতীয় পর্ব শুরু করা যাক।
বন্ধুরা প্রথম পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, স্কুল থেকে এডমিট কার্ড নিয়ে আসার মুহূর্তগুলো। আসলে এই এডমিট কার্ড নিয়ে আসতে অনেক ঝামেলা হয়েছে।অবশেষে এডমিট কার্ড যখন হাতে পেলাম তখন খুবই ভালো লাগলো এবং বন্ধুদের সাথে বিদায় নিয়ে বাড়ির দিকে আসার সময় আমার বন্ধু হাসান ভুল বসত করে তার স্কুল ব্যাগ সিএনজির ভিতরে রেখেছিল। আর এই ব্যাগের মধ্যে এডমিট কার্ড ছিল।সিএনজি থেকে নেমে ভ্যান যাচ্ছিলাম, একটু পরে যখন আমাদের মনে হলো যে সেই ব্যাগটি নেই তখন খুবই খারাপ লাগলো। এতটা খারাপ লাগছিল যে বলার মত না। হাত পা কাঁপতে ছিলো।মনে হচ্ছিল ব্যাগটি যদি না পায় তাহলে আমারা পরীক্ষা দিতে পারব না। আমাদের জীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আমরা দ্রুত সিএনজি স্টেশনের দিকে রওনা দিলাম। বন্ধু হাসান কান্না করে দিল বললো এটা আমি কি করলাম। আমাদের দুই বন্ধু জীবন হয়তোবা এখানে শেষ। আমি আর হাসান তখন সিরাজগঞ্জের সিএনজি স্টেশনের আসলাম।
সিএনজি স্টেশনে আসলাম এবং এসে দেখলাম এখানে অনেক সিএনজি রয়েছে। হাসান প্রত্যেকটা সিএনজি খুঁজতে লাগল, আমি বললাম এভাবে খুঁজে পাবো না। সিএনজি স্টেশনের মাস্টার আছে, তার সাথে কথা বলি। আমরা সিএনজির মাস্টারের কাছে আসলাম। এসে বললাম যে ভাইয়া এখন যে সিএনজি বাগবাটি থেকে স্টেশন সিরাজগঞ্জে এসেছে। সেই সিএনজির ভিতরে আমাদের একটি ব্যাগ রয়েছে আর এই ব্যাগটির মধ্যে অ্যাডমিট কার্ড রয়েছে এবং এডমিট কার্ডটি আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া আমরা পরীক্ষা দিতে পারবোনা। স্টেশনের সকল সেই ভাই খুবই ভালো ছিল। সে বলল যে এই কিছুক্ষণ আগে যে কয়টা সিএনজি বাগবাটি থেকে এখানে এসেছে তাদের ডাকো। প্রত্যেককে বলা হলো যে ওদেরকে নিয়ে এসেছে কোন ড্রাইভার কিন্তু যারা এসেছিল তাদের মধ্যে আমরা যে ড্রাইভারের সিএনজিতে এসেছি তাকে দেখতে পেলাম না।হাসান পাগলের মতো সকল সিএনজিতে ব্যাগ খুঁজতে লাগলো।
তারপর সিএনজির ওখান থেকে এক ভাই এসে বলল বাগবাটি থেকে সিরাজগঞ্জে এক ঘণ্টার মধ্যে তিনটি সিএনসি এসেছে এবং দুইটি সিএনজি স্টেশনে রয়েছে। আর একটি সিএনজি রহিম ভাই চালক।আর রহিম ভাই কিছুক্ষণ আগেই একটি ভাড়া নিয়ে কাজিপুরের দিকে রওনা দিয়েছে এবং সে খুবই সৎ মানুষ।যদি রহিম ভাইয়ের চোখে পড়ে তাহলে ব্যাগটি পাবেন।অন্য মানুষের চোখে যদি পড়ে তাহলে জামেলা হবে। স্টেশন মাস্টার ভাই বললো চিন্তা কইরো না।আমি রহিমের তো ফোন নাই,আমি কাজিপুর স্টেশন কল দিয়ে রাখছি।হাসান বললো অন্য কোন মানুষ যদি সেই ব্যাগটি নিয়ে যায় তাহলে কপাল খারাপ হবে। আমি শেষ রে বন্ধু, কথাটি শুনে খুবই খারাপ লাগলো। অনেক টেনশন হচ্ছিল। আমি বললাম রহিম ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করার কোন ব্যবস্থা নেই। তারা বলেছেন রহিমের সাথে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা নেই তবে রহিমকে আমরা যখন পৌঁছায় তখন ফোন দিব জানাবো।তারা বললো কাজিপুর যেতে দুই- তিন ঘন্টা সময় লাগবে।সত্যিই কথাটি শুনে খুবই খারাপ লাগলো এবং মনে মনে চিন্তা হচ্ছিল যদি না পাই বাড়িকে কি বললো।স্টেশনের মাস্টার ভাই বলল যে কোন চিন্তা করো না। তোমরা ইনশাল্লাহ পাবেন। দোয়া করতে থাকো। আর আমি খোঁজ নিতেছি নিয়ে তোমাদের জানাব। তখন স্টেশনে ভাইয়ের কাছে আমরা একটি নাম্বার দিয়ে আসলাম। আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। হাসানকে বললাম চল বাড়ি যায়। হাসান বললো ভালো লাগতেছে না। স্টেশনে বসে থাকল ২০ মিনিটয়ের মতো।পরে বললাম এখন বাড়িতে যায়। হাসান বল আমি বাড়িতে কিভাবে যাব, বাড়িতে যাওয়ার কোন মুখ নেই।তখন হাসানকে সাথে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসলাম। আমার বাড়িতেও কাউকে কিছু বললাম না। মা বলল যে এডমিন কার্ড দিছে তোদের বললাম যে আজকে না কালকে দেবে।
দুই বন্ধু মিলে আমার রুমের ভিতর শুয়ে থাকলাম, কি করব বুঝতেছিনা, মা এসে বললো এভাবে শুয়ে আছিস কেন। দুদিন পর পরীক্ষা পড়াশোনা করতে হবে না। বলো আজকে পড়াশোনা করতে ভালো লাগতেছে না।তুমি যাও। মা বললে কিছু কি হয়েছে,স্যারদের সাথে কোন ঝামেলা হয়েছে বললাম না। মাকে রুম থেকে বের করে দিয়ে শুয়ে থাকলাম।একটু পরে এসে দেখি মা আমাদের বারবার ডাকছে। বললাম কি হয়েছে, মা বললো যে তোদের রফিক স্যার ফোন দিয়েছিলো।স্কুল থেকে। এখনি তোদের দুজনকে স্কুলে যেতে বললো।এখনই তাড়াতাড়ি স্কুলে যেতে বললাম কেন। মা বললো যানি সা শুধু বললো হাসান আর তোকে যেন স্কুলে তারাতাড়ি পাঠিয়ে দেয়।স্যার কেন এভাবে তাড়াতাড়ি স্কুলে যেতে বলছে। এটা নিয়েও একটা টেনশন হচ্ছিল। পরে মাকে দিয়ে আবার স্যারকে ফোন দেওয়ালাম। মা তখন স্যারকে বললো যে কিসের জন্য স্যার ওদের যেতে বলছেন। একটু বললে ভালো হতো। তখন স্যার বললো ওরা স্কুলের ব্যাগ রেখে গেছে, এই ব্যাগের ভিতর এডমিট কার্ড রয়েছে। এটা যেন ওরা এসে নিয়ে যায়। এই কথাটা লাউসস্পিকারে শুনলাম। শুনে চমকে উঠলাম এবং হাসানকে আমি তাড়াতাড়ি বললাম। হাসান ওঠ আমাদের ব্যাগ পাওয়া গেছে। তাড়াতাড়ি স্কুলে যেতে হবে। আমাদের স্কুলে জমা আছে। তখনই আমি আর হাসান মাকে কিছু বললাম না। মা বলল কি হয়েছে কিভাবে রেখে আসলি।মাকে বললাম তোমাকে পরে সব বলবো।আগে স্কুলে যায়,তাই আমি আর হাসান স্কুলে দিকে রওনা দিলাম।
আপনার এই গল্পটি প্রথম পর্ব যখন আমি করেছিলাম তখন খুবই খারাপ লেগেছিল। কারণ আপনারা দুই বন্ধু এডমিট কার্ড হারিয়ে ফেলেছিলেন। আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো। প্রথম দিকে একটু চিন্তায় ছিলাম এডমিট কার্ড পেয়েছেন কিনা। শেষের দিকে এসে যখন পড়ি আপনাদের স্কুল ব্যাগ আপনাদের স্যারের কাছে জমা আছে এবং ঠিকঠাক মত স্কুল ব্যাগ এবং এডমিট কার্ড পেয়েছেন এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। এডমিট কার্ড না পেলে আপনারা আর পরীক্ষা দিতে পারতেন না। কিন্তু আপনাদের স্কুল ব্যাগ স্কুলে কিভাবে রেখে আসলেন তাই তো বুঝতে পারলাম না। পরের পর্ব আশা করি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অনেকদিন আগে আপনার প্রথম পর্বটি পড়েছিলাম। এতদিন পর ২য় পর্ব শেয়ার করলেন, যে প্রথম পর্বের কথা ভুলে গেছিলাম😁। পরে অবশ্য মনে পড়েছে। সেই সিএনজি চালক রহিম ভাই আসলে বেশ ভালো এবং সৎ মানুষ। সেজন্যই আপনারা এবারের মত পরীক্ষাটা দিতে পেরেছেন। তা না হলে আসলে কপালে বেশ খারাপ ছিল। মিষ্টি খাওয়ানো দরকার ছিল আপনার এই খুশিতে
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
স্কুল জীবনের এই গল্পগুলো শুনলে যেন স্মৃতির পাতায় হারিয়ে যাই। এই দিনগুলো আর ফিরে পাওয়া যাবেনা।
যাক আপনার এডমিট কার্ড হারানোর ব্যাপারটা জেনে প্রথমে খারাপ লাগছিল। আপনারা বেশ কষ্ট করেছেন সিএনজি স্টেশনে গিয়ে যাক পরবর্তীতে স্কুলে ব্যাগ সহ এডমিট কার্ড পাওয়া গেছে জেনে ভীষণ খুশি হলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে, আমার পোস্টে এত চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।
আপনার প্রথম পর্বটি আমার পড়া হয়নি। তবে একটু বুঝতে পারলাম আপনাদের এডমিট কার্ড হারিয়ে ফেললেন। তবে এডমিট কার্ডটি আপনাদের স্কুলের রফিক স্যারের কাছে আছে শুনে ভালো লাগলো। এডমিট কার্ড না পাওয়া গেলে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। কিভাবে দুই বন্ধুর এডমিট কার্ড সহ ব্যাগটি স্কুলের স্যারের কাছে আসলো ব্যাপারটি আগামী পর্বে আশা করি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে স্কুল জীবনের স্মৃতিময় গল্পটি শেয়ার করার জন্য ।
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
ভাইয়া বেশ কয়েকদিন আগে আপনার প্রথম পর্ব পড়ে টেনশনে ছিলাম যে এডমিট কার্ডের কারনে পরিক্ষা দিতে পারেন কি না। পরে দ্বিতীয় পর্ব পরে মনে শান্তি পেলাম। ভাইয়া এমন গল্প দিলে পর্ব গুলো তারাতারি সেয়ার করে ফেলবেন, তা না হলে অপেক্ষা করতে করতে কখন চিৎপটাং হয়ে যাবো বলা যায় না,হা হা হা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ