বন্ধুদের সাথে পিকনিকে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প // পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, আর এই স্মৃতির পাতা থেকে আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আসলে আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন আমাদের বন্ধুদের সাথেই এই স্মৃতিময় গল্পটি ঘটেছিল। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে সেই গল্প শেয়ার করছি। আমাদের স্কুল থেকে জানুয়ারি মাসে পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিল। আর পিকনিকে আমরা গিয়েছিলাম নাটোরের রাজবাড়ি। নাটোর রাজবাড়িতে ভ্রমণের মুহূর্ত অনেক আনন্দের ছিল। আসলে পিকনিকে যাওয়ার মুহূর্ত গুলো আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি।এবং স্যারদের সাথে নিয়ে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করি। সেই স্মৃতিময় গল্প আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি, আসলে বনভোজনের এই দিনগুলোর কথা খুবই মনে পড়ছে। বিশেষ করে স্কুল জীবনের দিনগুলো আমি কখনো ভুলতে পারছিনা। তো বন্ধুরা চলুন স্মৃতিময় গল্পটা শুরু করা যাক।


তো বন্ধুরা আমরা যখন ক্লাস নাইনে পড়ি এবং জানুয়ারি মাসেই এই পিকনিকের আয়োজন করা হলো। প্রতিবছরই আমাদের স্কুল থেকে বনভোজনের আয়োজন করা হয়। আর স্কুল থেকে ছাত্র ছাত্রীদের সাথে নিয়ে অনেক দুর দুরান্ত ভ্রমণ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা যখন ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত সে সকল ছাত্র ছাত্রী ছিলাম তখন আমাদের এই বনভোজনে নেওয়া হতো না, কারণ আমাদের হেড স্যারের একটা কথা ছিল নাইন টেন এই দুই শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে শুধু বনভোজন করা হবে। বাকিদের নেওয়া হবে না।তাই কি আর করা আমরা এইটে থাকতে স্যারকে অনেক বুঝিয়েছিলাম তারপরেও কাজ হয়নি। এটাই যেন প্রধান লক্ষ্য ছিল যে সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীদের বনভোজনের নেওয়া হবে না।


beach-g54a9ac48d_1920.jpg

source

তাই ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত তিনটা বছর বনভোজনে যেতে পারিনি, বড় ভাই বোনদের কাছ থেকে শুধু গল্প শুনতাম এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখতাম। আর আফসোস করতাম যে আমরা কবে নাইনে উঠবো।তখন আমরা পিকনিক আয়োজন করবো। তো আমরা যখন নাইনে উঠলাম আলহামদুলিল্লাহ তখন আমাদের ক্লাস টিচার বললো এবার তোমরা কোথায় পিকনিকে যেতে চাও।অনেক জন অনেক জায়গার নাম বললো। স্যার বললো এবার নাটোরের রাজবাড়ি যাবে এবং নাটোরের রাজবাড়ি গিয়ে সেই রাজপরিবারের শাসনকার্য দেখবো।তো আমাদের একটা ইচ্ছা ছিল যে প্রাচীন রাজারা কিভাবে শাসনকার্য চালানো করেছে। সেই দৃশ্যগুলো দেখতে পাবো। সেখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব। তাই অনেক আনন্দে সাথে শিকার হলাম। আমরা সকল বন্ধুরা যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম। তখনই আমাদের স্যার এসে বললো আমরা সকলেই যেন সকাল ছয়টার দিকে আমাদের স্কুলে এসে পৌঁছাবে। আর সকাল সাড়ে ছয়টার সময় বাস ছেড়ে দিবে। আর সাড়ে ৬ পর যে আসবে, তাকে আর নেওয়া হবে না। যেতে পারবে না।তাকে অবশ্যই ছয়টার সময় সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে।


হেড স্যার আমাদের বলে দিলেও ছয়টার সময় উপস্থিত থাকতে হবে। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলাম। ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করলাম। ওরা বলল ঠিক আছে আমরা তারাতারি বের হব। তাই সাড়ে পাঁচটার দিকে আমি বাড়ি থেকে বের হলাম। আর বন্ধুদের সাথে রাস্তায় দেখা হবে। তাদের সাথে নিয়ে আসলাম। স্কুলে এসে দেখি আমরাই প্রথম এসেছি। এখনো কেউ আসেনি। তারপরেই আস্তে আস্তে সবাই আসলো কিন্তু হেডস্যার এর খবর নাই। আমাদের বলেছিল যদি তোমরা দেরি করে আসো তাহলে তোমাদের জন্য অপেক্ষা করবো না,সেই স্যারের এখুন দেখা নাই।সকলেই কথা বলতে লাগল এবং হেডস্যার আসলো পুরা সাতটার দিকে। সাড়ে ছটার সময় বাস ছাড়ার কথা। স্যারের জন্য সাতটা বেজে গেল,তারপর স্যার আসলো, স্যার বলল যে আজকে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়েছে। যার কারণে আসতে পারেনি।স তারপরে আমাদের বাস সাড়ে সাতটার দিকে ছেড়ে দিল। আমরা আনন্দের সাথে যাত্রা শুরু করলাম এবং বাসের ভিতরে স্যাররা বলল তোমরা তোমাদের মত মজা করো। কোন সমস্যা নাই। তো আমরা মজা করতে লাগলাম।হেড স্যারকে আমাদের বড় ভাই দশম শ্রেণীর বাসে উঠিয়ে দিলাম আর আমাদের ক্লাস টিচারকে আমাদের বাসে নিয়ে মজা করতে করতে গান বাজিয়ে যাত্রা শুরু করলাম।


people-g2aeb6379b_1920.jpg

source

আসলে যাত্রাপথে বাসের ভিতর অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি। সেই দিনের কথা খুব মনে পড়ছে। স্যারদের সাথে নিয়ে বন্ধুবান্ধব একসাথে বাসের ভিতর নাচানাচি সেই মুহূর্তটা সত্যি অসাধারণ ছিলো। আসলে পিকনিকে যে এতটা মজা হয় সেটা আমি প্রথমবারই উপভোগ করেছিলাম। কারণ এর আগে আমাদের স্কুল থেকে কখন আমি পিকনিকে যায়নি এবং আমাদের ক্লাসের কাউকে নেওয়া হয়নি। তাই বন্ধুদের সাথে নিয়ে অনেক আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করতেছিলাম। স্যারদের কোথাও কোনো বাধা নেই।স্যাররাও আমাদের সাথে নাচতে ছিল। সত্যি সেই মুহূর্তে অনেক আনন্দের ছিল।তারপর স্যার বলল যে আমাদের পিকনিকের ওখানে গিয়ে লটারি আয়োজন করেছি। এখন তোমরা সবাই একটা করে টিকেট কিনবা এবং বেশি কিনতে পারো, কোন সমস্যা নাই। তবে একটা করে অবশ্যই সবাইকে কিনতে হবে। তাই বাসের ভিতর আমার বন্ধু লটারি বিক্রি করা শুরু করে দিল এবং আমি ৫ টি টিকেট কিনলাম।


আমাকে সিরাজগঞ্জ থেকে নাটোরের যেতে প্রায় আড়াই ঘন্টা তিন ঘন্টা সময় লাগে। তাই আমরা সেই সময়টুকু বাসের ভিতর আনন্দের সাথে উপভোগ করতেছিলাম এবং স্যারদের সাথে নিয়ে হাসি আনন্দে নাচানাচির মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ ছিলো। সেই দিনটি খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি।দিনটিতে অনেক মজা করেছি যা বলার মতো না। তো বন্ধুরা আমাদের আনন্দময় ভ্রমণের যাত্রাটি অসাধারণ ছিল। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে এ পর্যন্ত শেয়ার করলাম। পরবর্তীতে পর্বে আমরা নাটোরের রাজবাড়িতে গিয়ে কতটা মজা করেছি, সেই বাকি গল্পের পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল।🙏🤲🙏

গল্পটি চলমান

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

আসলেই স্কুল জীবনে পিকনিকে যাওয়ার অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। আমরাও স্কুল জীবনে বন্ধুদের সাথে পিকনিক করেছি। আপনার আজকের পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

স্কুলে থাকা অবস্থায় দূরে কোথাও পিকনিকে আমারও যাওয়া হয়নি। কিন্তু কলেজে থাকা অবস্থায় গিয়েছি। আসলেই পিকনিকে দূরে কোথাও গেলে খুবই মজা হয়। বিশেষ করে বাসের মধ্যে অনেক ইনজয় করা হয় । যেমনটা আপনি করেছিলেন। সবাই মিলে নাচানাচি গান গাওয়া খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন বোঝা যাচ্ছে। আপনার ছোটবেলার পিকনিকে যাওয়ার গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

খুবই সুন্দর ভাবে আমাকে উৎসাহিত করেছেন, সেজন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা।

 2 years ago 

যেহেতু আপনাদের হেড স্যার বলেছিল ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত কেউ পিকনিকে যেতে পারবেনা। তাই আপনারা কখন নাইনে উঠবেন এবং পিকনিকে যাবেন সেই অপেক্ষায় ছিলেন সবাই। আমার কাছে বেশি মজার বিষয় লেগেছিল আপনাদের হেড স্যার বলেছিল আপনাদেরকে সকাল ৬ টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছানোর জন্য কিন্তু তিনি সকাল ৭ টায় স্কুলে এসেছিলেন। বাসের মধ্যে অনেক মজা করেছিলেন পড়ে বুঝতে পারলাম।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে, ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

স্কুল লাইফে আমরা অনেক পিকনিক করেছি মজা করেছে তবে দূরে কোথাও তেমন একটা যাওয়া হয়ে ওঠেনি।আমার কাছে এই গল্পটা অনেকটা ইন্টারেস্টিং লেগেছে বিশেষ করে আপনার স্যার বলেছিল ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত কোন রেস্টুডেন্ট পিকনিকে যেতে পারবেনা।বাকি যারা পিকনিকে যাবে সকাল ছয়টার মধ্যে উপস্থিত থাকতে হবে স্কুলে। কিন্তু তিনি সকাল সাতটার সময় উপস্থিত হন বিষয়টা অনেক মজার ছিলো। পিকনিক স্পটে কাটানো কিছু অনুভূতি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মতামত পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে।

 2 years ago 

আপনাদের স্কুলের এমন একটা নিয়ম দেখে আমি তো একেবারেই অবাক। আমি আগে জানতাম স্কুলের প্রত্যেক ক্লাসের প্রত্যেকটা স্টুডেন্ট পিকনিকে যেতে পারে। কিন্তু আপনাদের স্কুলে আপনাদের হেড স্যার বলেছিল ক্লাস সিক্স থেকে এইট পর্যন্ত কোন স্টুডেন্ট পিকনিকে যেতে পারবেনা শুধু নাইন- টেন এর স্টুডেন্ট গুলো যেতে পারবে। আপনারা যখন ক্লাস এইটে ছিলেন আপনাদের হেড স্যারকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছিলেন কিন্তু উনি মানেননি। আপনার অপেক্ষায় ছিলেন কখন ক্লাস নাইনে উঠবেন এবং পিকনিকে যাবেন মজা করতে করতে। বাসের মধ্যে গান বাজনা চালিয়ে বেশ মজা করতে করতে পিকনিকে গিয়েছিলেন আপনারা এটা জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মতামত পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগছে।

 2 years ago 

সকলের স্কুল কলেজ লাইফে এমন সুন্দর সুন্দর মধুর স্মৃতি রয়েছে। যে সমস্ত স্মৃতিগুলো মনে হলে যেন খুঁজে পায় সোনালী দিন। আজ আপনি সেই সমস্ত স্মৃতি আমাদের মাঝে স্মরণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন এই পোষ্টের মধ্যে। পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার অসংখ্য ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার স্মৃতির পাতা থেকে অনেক সুন্দর একটি পিকনিকের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বন্ধুদের সাথে পিকনিকে যাওয়ার প্রথম পর্বের গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে আমার। আসলে ভাইয়া ছাত্র জীবনে এরকম পিকনিক করার মধ্যে খুবই আনন্দ ছিল। আর পিকনিকে যাওয়ার পথে বাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আনন্দটা হয়। পিকনিকে যাওয়ার মুহূর্তে বাসের মধ্যে নাচানাচি করা আর গান করার মজায় ছিল আলাদা। যাহোক ভাইয়া, পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 87000.16
ETH 3290.95
USDT 1.00
SBD 2.93