খেজুরের রস খেতে যাওয়ার স্মৃতিময় গল্প //পর্ব-৩

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম/🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আর এই স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। তেমনি শীতের ভিতরে এক অন্যরকম অনুভূতি উপভোগ করেছিলাম। আমরা বন্ধুদের সাথে নিয়ে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি ছিল অসাধারণ। এই স্মৃতিময় গল্প যেন শীতকাল আসলেই মনে পরে যায়। তাই স্মৃতিময় এই দিনের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে এসেছি। আশা করছি বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় এই গল্পটি শেষের পর্ব পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। তো বন্ধুরা চলুন খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতির গল্পটি পড়া শুরু করা যাক।


winter-3197686_1280.jpg

source

তো বন্ধুদের সাথে এবং বড় ভাইদের সাথে যখন আমরা এই খেজুরের রস খাচ্ছিলাম, তখন খুবই ভালো লাগতেছিল। আসলে সকালবেলা এই অনুভূতিটা অসাধারণ ছিল। অনেক কষ্ট করে এই খেজুরের রস খাওয়ার জন্য আমরা এসেছিলাম, শীতের সকালে মোটরসাইকেল করে আসা অনেক কষ্ট করছিল। তারপরে যখন খেজুরের রস খাচ্ছিলাম তখন যেন এই কষ্ট দূর হয়ে গেল। তো আমরা খেজুরের রস খেয়ে একটু আশেপাশের দৃশ্যগুলো উপভোগ করতেছিলাম। বড় ভাইরা বলল ওই পাশে খেজুর গাছের বাগান রয়েছে। তোরা ওখান দিয়ে ঘুরতে যাহ ভালো লাগবে। ইতিমধ্যে আমাদের খেজুরের রসগুলো তারা গুড় বাড়ানোর জন্য জ্বাল দেওয়া শুরু করে দিল। আমরা বাগান দিয়ে ঘুরে এসে এই খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় বানানোর দৃশ্য দেখার জন্য দাঁড়িয়ে রইলাম।


বড় একটি পাত্রের মধ্যে এই খেজুরের রসগুলো ঢালা হলো। তারপরে তারা জ্বাল দেওয়া শুরু করে দিল। আসলে খেজুরের অনেক রস জ্বাল দিয়ে তারা গুড় বানায়। আর এই গুড় একদম ভেজাল মুক্ত এবং অরজিনাল খেজুরের রসের গুড়। তাই এখান থেকে সকলেই গুড় কেনার জন্য আসে। আর এই অরিজিনাল গুড় খেতে খুবই মজা। খেজুরির অনেক রস থেকে জ্বাল দিয়ে আস্তে আস্তে এই খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়। সত্যি এই গুড় খেলে আপনার খুবই ভালো লাগবে। আর খেজুরের গুড় এতটা মজা সেটা এই অরজিনাল গুড় না খেলে আপনি বুঝতেই পারবেন না। তাই আমরা এই খেজুরর গুড় তৈরি করার দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম। আসলে তারা অনেক কষ্ট করে এই খেজুরের গুড় গুলো তৈরি করে। সেটা না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করা যাবে না।


cyclist-4910488_1280.jpg

source

তারা এই খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করতে ছিল। আমরা বন্ধুরা মিলে বসে রয়েছি এবং আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখন তারা খেজুরের আঠালো গুড়ের রস নিয়ে আসলো। মানে এই খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে তারা আঠালো করেছে। আর এই আঠালো নরম গুড় খেতে অসাধারণ লাগে। আমাদের একটি প্লেটে করে দেওয়া হলো। আমরা সকলেই এই গুড় খেতে লাগলাম। আমার কাছে সবচাইতে বেশি সুস্বাদু এবং মজাদার লেগেছে এই খেজুরের আঠালো নরম গুড়। সত্যি এটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর এই নরম গুড় কেনা যায়। তাই আমি এই নরম গুড় কিনলাম কারণ এটি খেতে অসাধারণ ছিল।


তবে নরম নরম আঠালো এই গুড় গরম গরম খাওয়াই সবচেয়ে বেশি মজাদার হয়। তারপরে তারা আস্তে আস্তে এই গুড় বানানো শুরু করে দিল। একটি পাত্রের ভিতর খেজুরের আঠালো গুড় ঢেলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো। এগুলো জমা হয়ে গুড় তৈরি হয়ে গেল। আর এই গুড় তৈরি হওয়াতে আমরা অনেক আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তটা উপভোগ করলাম। আর গুড় বানানোর দৃশ্য দেখলাম। তারপরে আমরা সকলেই অল্প অল্প কেউ বেশি পরিমাণে নিয়ে আসলাম। আমরা এখন চলে যাব। যার কারণে তাদের ব্যবহার আমাদের অসাধারণ লেগেছে। বড় ভাইরা তাদের সাথে খুবই ভালো ব্যবহার করলে এবং তাদের আরো বেশি টাকা দিতে চাইলে। কিন্তু তারা বলল কোন সমস্যা নাই। আমাদের কাছে প্রতিদিনই মানুষ আসে তবে আপনাদের সকলের ব্যবহার আমাদের খুবই ভালো লেগেছে। আপনাদের গিফট স্বরূপ আমি কিছু নরম গুড় দিলাম।


গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া এই মানুষগুলো একদম অসহায়, নিরীহ এবং সুন্দর মনের মানুষ। তাদের ব্যবহার দেখলেই বোঝা যায়। সত্যি তাদের সাথে যতটুকু সময় ছিলাম খুবই আনন্দের সাথে আমরা হাসি আনন্দের মাঝে কাটিয়েছি। তাদের ব্যবহার খুবই ভালো লেগেছে। তাই আবারও আমাদের যেতে ইচ্ছা করলো। তাই তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসলাম এবং তারা আবারও আমাদের আসতে বলল। সত্যিই সেই মুহূর্তটা খুবই ভালো লেগেছিল। তারপরে আর যাওয়া হয়নি। তো বন্ধুরা আপনাদের সাথে স্মৃতির পাতা থেকে এই খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতির গল্প শেয়ার করতে পেরে আমারও খুবই ভালো লাগছে। 🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 6 months ago 

বোঝাই যাচ্ছে সকালবেলা বড় ভাইদের সঙ্গে নিয়ে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতিটা অসাধারণ ছিল। সকালবেলা খেজুরের রস খেতে সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে অনেক কষ্ট করে যখন খেজুরের রস মুখে দেওয়া হয় তখন অনুভূতিটা সত্যিই বলে বোঝানো যায় না। গ্রাম বাংলার মানুষের মন মানসিকতা সবসময়ই অনেক বেশি ভালো হয় তারা একটুও সদ্য ব্যবহার পেলেই তার সঙ্গে এত ভালো আচরণ করে যে এই ভালোবাসা আপনি কোটি টাকা দিয়েও কিনতে পারবেন না। খেজুরের রস খাওয়ার স্মৃতিময় গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 6 months ago 

শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতিটা অন্যরকম। আমরাও প্রতি বছর আমাদের বাসা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাইক নিয়ে খেজুরের রস খেতে যেতাম। তবে এ বছর যাওয়া হয়নি। পাশের গ্রামে খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলাম বড় ভাই এবং বন্ধুদের সাথে। আপনার রস খাওয়ার অনুভূতিটা পরে বেশ ভালো লাগলো। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57839.82
ETH 3132.70
USDT 1.00
SBD 2.43