"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-২৩||আমার স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি//🫣[১০% @shy-fox ]🌹steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


স্কুল জীবনের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা কখনোই ভোলা যায় না। বন্ধুদের সাথে হাসি-খুশি আনন্দ নিয়ে সেই স্মৃতিময় ঘটনা গুলো মনের পাতায় রয়ে যায় সারাটি বছর।আর এই স্মৃতিময় দিন গুলোর মধ্যে কিছু যেমন সুখের এবং আনন্দময় স্মৃতি রয়েছে তেমনি কিছু তিক্ত স্মৃতিও রয়েছে। আজকে আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-২৩ এর মাধ্যমে আমরা সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি শেয়ার করতে পারছি এবং সবার জীবনের সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা অনুভূতি জানতে পারছি। তাই আমার বাংলা ব্লগের এডমিন এবং মডারেটরদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। যারা এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন।


হাই স্কুল জীবনের স্মৃতিময় গল্পগুলো ছিল সবচাইতে আনন্দময়, কারণ হাই স্কুল লাইফের বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এই হাই স্কুল লাইফটা আমার কাছে সবচাইতে আনন্দময় মুহূর্ত মনে হয়। কারণ বন্ধুদের সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে আজ খুবই ভালো লাগে। শুধু স্মৃতির পাতায় সেই দিনগুলো রয়ে গেছে। আমরা এখন অনেক দূরে আসি বন্ধুদের কাছ থেকে। কিন্তু সেই দিনগুলোর কথা ভাবতেও যেন অনেক ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে টিফিনের সময় আনন্দময় মুহূর্ত ক্লাস ফাকি দিয়ে খেলাধুলা করা। কখনও ক্লাসের মধ্যে দুষ্টামি সত্যিই এই দিনগুলো কথা ভাবতেই যেন মনের ভিতর আনন্দ হয়। আর সেই বন্ধুদের সাথে যে মধুর সম্পর্ক ছিল যে সম্পর্ক কখনোই হারিয়ে যাবে না, কিন্তু আজ কর্মক্ষেত্রে সকল বন্ধুরা অনেক দূরে রয়েছি। কিন্তু বন্ধুরা দূরে থাকলেও মন যেন সেই একই সূত্রে গাঁথা রয়েছে। সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে খুবই ভালো লাগে। আর মনে হয় সেই দিনগুলো যদি আবার ফিরে পেতাম তাহলে কতই না ভালো হতো। আজকে তাই আমি আপনাদের সাথে একটি বন্ধুদের সাথে নিয়ে তিক্ত অনুভূতির গল্প শেয়ার করতে এসেছি। আশা করছি এই গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।


thai-gac5ea3e45_1920.jpg

source

আমার স্কুল জীবনের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি🫣
স্কুল জীবনের আমার তিক্ত অনুভূতির অন্যতম একটি অনুভূতি হল পিটিতে দাঁড়ানো। আর পিটিতে দাঁড়ানোর এই অনুভূতি সত্যি আমাকে তিক্ত করেছে। প্রতিদিন সকালবেলা পিটিতে দাঁড়ানো লাগতো। আমাদের স্কুলের ক্লাস শুরু হতো দশটা থেকে।আর পিটি শুরু হতো সারে নয়টা থেকে। এই আধা ঘন্টা সময় যেন তিক্ততাই ভরে থাক। সত্যিই এই সময়টা কখনোই যেত না। স্যারদের করাকরি নিয়ম ছিলো পিটিতে দাঁড়াতেই হবে।না দাঁড়ালে শাস্তি পেতে হবে।আমরা পাঁচ বন্ধু ছিলাম এই বন্ধুরা পিটিতে দাঁড়াতে চাইতাম না। আমার বন্ধুরা দাঁড়াতে চায়তো না।তার মধ্যে ছিল সুজন ও সাজু ছিল অন্যতম।আমাদের যে স্যার পিটি করাতো তার নাম ছিল জাহাঙ্গীর স্যার। আর জাহাঙ্গীর স্যার ছিল অনেক কড়া কিন্তু আমরা মাঝেমধ্যেই পিটি করতাম না। আমরা পিটি না করেই স্কুলের পাশেই নদী ছিল। সেই নদীর ব্রিজের পাশে বসে থাকতাম। যখন পিটি শেষ হতো তখন ক্লাসে ঢুকলাম। এভাবেই অনেক দিন চলে গেল। জাহাঙ্গীর স্যার অনেক রেগে গেল তখন আমাদের একটা রুমে ডাকলো তখন স্যার বললো তোরা ভালো ছাত্র ৩০ টা মিনিট কষ্ট করে পিটিতে দাঁড়িয়ে থাকতে কি সমস্যা তোমাদের।অন্য ছাত্রদের বেত এর আঘাত করে পিটি করাই তোরা ভালো ছাত্র তাই ভালো করে বুঝিয়ে বলাম এইটাও একটা ক্লাস। কিন্তু সাজু ছিল এই স্কুলের সভাপতি ছেলে। যার কারণে সে জন্য সাজু বললো স্যার বলার দরকার ছিল বললো আমি এই রোদের মধ্যে বিরক্তময় ৩০ মিনিট পিটি করতে পারবো না।


possible-g9c2402087_1920.jpg

source

আসলে পিটি করার সময়টুকু আমার অনেক বিরক্ত লাগত। এই ৩০ মিনিট রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। স্যার যেভাবে বলতো সে ভাবে কথা শুনে হাত তোলা লাগতো, আর নানা রকমেন পিটি ছিলো। আসলে এই বিষয়টা আমার কাছে অনেক বিরক্ত মনে হতো। তারপরও যেহেতু জাহাঙ্গীর স্যার এভাবে আমাদের বললেন। তাই ভাবলাম পরের দিন থেকে পিটিতে দাঁড়াবো। তাই আমি এবং আরও তিন বন্ধু পিটিতে দাঁড়ালাম। কিন্তু সুজন ও সাজু পিটিতে দাঁড়ালো না। আমাদের পিটিতেতে দাঁড়ানোর দেখে জাহাঙ্গীর স্যার ও হেড স্যার অনেক খুশি হল।পিটি শেষে আমি ক্লাসে ঢুকে এমন সময় হেড স্যার আমাকে তার সাথে দেখা করতে বললেন। আমরা তিন বন্ধু স্যারের সাথে দেখা করতে গেলাম।হেড স্যারের কাছে গিয়ে দেখি জাহাঙ্গীর স্যার ওখানে বসে আছে। ভেবেছি জাহাঙ্গীর স্যার হয়তো নালিশ করেছে। কিন্তু হেড স্যার বললো যে তোমরা পিটি করো না প্রতিদিনই এটা জাহাঙ্গীর স্যার আমাকে বলে এবং আমিও দেখি তোমরা পিটি করানো পাঁচজন। কিন্তু আজকে তোমরা তিনজনকে পিটি করা দেখে খুবই ভালো লাগলো।তোমরা ক্লাসের ভালো স্টুডেন্ট তোমরা পিটি না করলে আর স্টুডেন্ট গুলোতো করো করবেনা। তোমারা করো না বলো আর ছাত্রদের কিছু বলতে পারি না। তাই আজকে তোমাদের তিন জনকে পিটি করা দেখে খুবই ভাল লেগেছে।আশা করছি তোমরা যদি নিয়মিত পিটি করো তাহলে সুজন ও সাজুও পিটি করবে। আশা করছি তোমরা নিয়মিত এখন থেকে পিটি করবা আমি বললাম ঠিক আছে স্যার আপনি যেহেতু বলছেন আমাদের কষ্ট হলেও আমরা আপনার কথা রাখবো।


son-g3ffdc34da_1280.png

source

তারপরে ক্লাসে দেখি সজন এবং সাজু এসে বসে আছে।আমাদের দেখেই সুজন ও সাজু বললো, কিরে আজকে তো তিনজন আজকে পিটি করেছিস কেমন লাগলো। বললাম কেমন লাগছে সেটা না একদম খারাপ লাগেনি।তবে পিটি আমাদের একটা ক্লাসের অংশ। আমাদের পিটি করতে হবে। যতই কষ্ট হোক এটা আমাদের নিয়মিত করতে হবে। আমরা যদি না করি তাহলে আমাদের ক্লাসের অনেক স্টুডেন্ট করছে না। এভাবে সবাই না করলে, আমাদের স্কুলে মন নষ্ঠ হবে।স্যাররা কষ্ট পায় তোর বাবা সভাপতি দেখে বেশি কিছু বলে না।আমি মনে করি স্যারদের কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে না। আমাদের কষ্ট হলেও পিটি করতে হবে। তখন সুজন বললো কথা খারাপ বলিসনি। আমাদের যতই কষ্ট হোক কাল থেকে নিয়মিত পিটি করবো।আমরা পাঁচ বন্ধু পরের দিন পিটিতে দাঁড়ালাম। আমাদের পিটিতে দাঁড়ানোর দেখে অনেক স্টুডেন্ট অবাক হয়ে গেল। যে ওরা অনেক দিন পর পাঁচজন এক সাথে পিটিতে দাঁড়িয়েছে এবং জাহাঙ্গীর স্যার অনেক খুশি হল। জাহাঙ্গীর স্যার আমাদের কাছে এসে বলল তোদের আজকে পিটিতে দাঁড়ানোর দেখে খুবই ভালো লাগছে। আজকে টিফিনের সময় তোরা দেখা করিস, তোদের কিছু খাওয়াবো। স্যারের কথা শুনে খুবই ভালো লাগলো। স্যারের মুখে সত্যিই অনেক হাঁসি ফুটিয়ে ছিল। স্যারের মুখে হাসি দেখে আমাদের অনেক ভালো লেগেছিলো।


boy-g9db45b5ac_1280.png

source

তারপরে থেকে আমরা নিয়মিত পিটিতে দাঁড়ালাম এভাবেই এক সপ্তাহ কেটে গেল।কষ্ট হলেও ভালোই লাগতে ছিল। এক সপ্তাহ পরে আমরা আবারও পিটিতে দাঁড়িয়েছি এবং স্যার আমাদের হাত তুলে জায়গা নিতে বলেছে। আমরা হাত তুলে জায়গা নিতে গিয়ে সুজন এক বড় ভাইয়ের পায়ে পারা নেই,সুজন ইচ্ছা করে দেইনি, আসলে হাত তুলে জায়গা নিতে গিয়ে পিছানোর সময় পাড়াটা লাগে।কিন্তু যে বড় ভাইয়ের পায়ে পাড়া লাগে, সেই বড় ভাই সুজনকে পিছন থেকে মাথায় একটা থাপ্পড় মারে,আর এই থাপ্পড় মারার কারণে সুজনের মাথা গরম হয়ে যায় এবং উল্টো দিকে ঘুরে তাকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। তখন সেই বড় ভাইয়ের কিছু বন্ধু মিলে সুজনকে মারছিল। তখন আমরা সব বন্ধুরা মিলে তাদেরকে মারলাম।আস্তে আস্তে ক্লাস নাইন আর টেন এর মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে গেলো।ঘটনাটি অনেক বড় হয়ে গেলো।সকল স্যাররা এসে মারামারি থামিয়ে দিল।ছোট একটি বিষয় নিয়ে অনেক বড় মারামারির ঘটনা ঘটে যায়। তখন স্কুলের সকল স্যার এবং সভাপতিদের নিয়ে এই মারামারিটা বিচার করার হলো। সেখানে সকলের কথা শোনা হলো এবং দেখা গেল যে সুজন এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেনি। হঠাৎ করে পায়ে লেগে গেছে। আসলে হাত তোলার সময় এরাকম ঘটনা হয়ে থাকে জাহাঙ্গীর স্যার এই কথাটা বললে।যে ইচ্ছা করে না হঠাৎ করে পাড়া লেগে যায়। এতে ওই বড় ভাইকেই দোষি করা হলো। তার পরেও আমরা ছোট হয়ে বড়দের সাথে মারামারি করেছি। সেজন্য আমরা বড় ভাইদের কাছে ভুল স্বীকার করলাম এবং বড় ভাইরা আমাদের সাথে ভুল স্বীকার করে মিল হয়ে গেলো।

আসলে বন্ধুদের সাথে স্কুল জীবনে অনেক আনন্দময় স্মৃতি রয়েছে। তার মধ্যে তিক্ত এই স্মৃতিময় অনুভূতিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আসলে সেদিন অনেক বড় মারামারি হয়ে গিয়েছিল বড় ভাইদের সাথে। এমনিতেই পিটিতে দাঁড়ানো ছিল আমার অন্যরকম তিক্ততা এবং বিরক্ত তার অনুভূতি। তারপরে আবার সেই পিটিতেই দাঁড়ানো নিয়ে মারামারি হয়েছিল। এই ঘটনাটি সত্যি এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে এবং বড় ভাইদের সাথে মারামারি ঘটনাটি আমার কাছে সবচাইতে তিক্তময় অনুভূতি ছিল।আশা করি আমার স্কুল জীবনের তিক্তার অনুভূতিটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।🙏🤥🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 2 years ago 
 2 years ago 

এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অনেকের স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার অনুভূতি জানতে পারলাম। আসলে প্রতিযোগিতার আয়োজন না করলে হয়তো জানা হতো না ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

 2 years ago 

আপনার স্কুল জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা ভালো লাগলো ভাই। স্কুল জীবনে অনেক কিছু হয়ে যায় সেগুলো স্মৃতি হিসেবে থেকে যায়। ঠিক তেমনি আপনার সাথেও অনেক কিছু হয়ে গেছিল সেগুলো আপনি আমাদের সাথে অনেক সুন্দর ভাবে শেয়ার করেছেন

 2 years ago 

আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

হাই স্কুল লাইফে এমন মারামারি হয়ে থাকে তবে আমার লাইফে মারামারির কোন চিহ্ন নাই। এমনকি আমার ক্লাসের কোন বন্ধুরা এভাবে কখনো মারামারি করত না। তারা ছিল শান্ত সৃষ্ট নম্র অভদ্র মারামারি থেকে অনেক দূরে থাকত। তারা ছিল অতি আনন্দবিলাসী গান বাজনা পছন্দ করত। মনে পড়ে গেল সেই হাই স্কুল লাইফের বন্ধুদের কথা আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 years ago 

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56588.25
ETH 2399.94
USDT 1.00
SBD 2.32