বন্ধু হৃদয়ের কথা আজ খুব মনে পড়ছে

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আসসালামু আলাইকুম/আদাব🌺

হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


বন্ধুত্বের বন্ধন কখনোই ভোলা যায় না। স্কুল জীবনের বন্ধুত্ব যেন সারা জীবন হৃদয়ের মাঝে থেকে যায়। আর এই বন্ধুদের সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। সেই স্মৃতিগুলো আজ মনে পড়ছে খুব।তাই আজকে বন্ধু হৃদয়ের কথা বেশি মনে পড়ছে। কারণ বন্ধু হৃদয় আমার স্কুল জীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু ছিল। এই বন্ধুর সাথে হাজারো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সত্যি বন্ধুর সাথে কত আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছি। স্কুল জীবনের প্রতিটা স্মৃতি যেন আজ খুবই মনে পড়ছে। বন্ধুর সাথে অনেকদিন আমি একসাথে দিন পর করেছি। দেখেছি দুজন মিলে অনেক আনন্দময় মূর্তি উপভোগ করেছি। আর এই বন্ধুর সাথে হঠাৎ করে যেন আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়ে নিলো। আর এই বিদায়টা ছিল অনেক দুঃখের। বিদায়ের কথা মনে পড়লেই যেন খুবি কষ্ট হয়।সত্যি বন্ধু আজ এই দিনে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে।


বন্ধুর এভাবে বিদায় কখনই মেনে নেওয়া যায় না। এত আনন্দ এত মুহূর্ত উপভোগ করেছি সেই বন্ধু যখন আমাদের ছেড়ে চলে গেল সত্যি খুবই কষ্ট হয়েছে। আজকের এই দিনে আমার বন্ধু তার মামার সাথে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করেছিল। আর এই মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে সে আমাদের ছেড়ে চলে গেলো। মোটরসাইকেলের দিন দিন এক্সিডেন্টের পরিমাণ যেন বেড়েই চলেছে। আর এই মোটর সাইকেলের এক্সিডেন্টের কারণে আমরা আমাদের প্রিয় মানুষগুলো হারিয়ে ফেলছি। বন্ধু আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছে একটি বছর হয়ে গেছে। একটি বছর হয়ে গেলেও যেন বন্ধু আমাদের মাঝে রয়েছে। বন্ধুর কথা কখনোই ভুলতে পারি না। আজ একটি বছর পরে আজকের এই দিনে বন্ধুর কথা খুব মনে পড়ছে। বন্ধুকে নিয়ে কত স্মৃতি রয়েছে। হঠাৎ করে বন্ধু তার মামার সাথে ভ্রমণে বের হয়েছিল। আর ভ্রমণে বের হওয়ার পরেই তাদের আনন্দময় মুহূর্তের পোস্ট আমরা ফেসবুকে দেখতে পেয়েছিলাম। খুবই ভালো লাগতেছিল। বন্ধু অনেক খুশিতে ছিল। কিন্তুু কিছুক্ষণের মধ্যে শুনতে পেলাম বন্ধুরা এক্সিডেন্ট করেছে এবং তাদের হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে।


guy-2617866_1280.jpg

source

স্কুল থেকে আমরা অনেক বন্ধু গিয়েছিলাম হাসপাতালে আমাদের সাথে আমাদের স্যারাও গিয়েছিল। গিয়ে দেখতে পেল তার মামার বেশি কিছু হয়নি, শুধু তার মামার হাতটা ভেঙে গেছে এবং আমার বন্ধুর মাথাতে আঘাত লেগেছিল। মাথা ও কান দিয়ে রক্ত পড়তে ছিল। সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ডাক্তার দেখার পরে বলল যে এখানে কাজ হবে না। আপনারা ওকে ঢাকায় নিয়ে যান। তারপরে অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করা হলো এবং ঢাকার দিকে রওনা করা হলো। তার বাবা মার কান্না যেন আর থামতেই ছিল না। আমিও বন্ধুর সাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।


ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় রাস্তার মধ্যে বন্ধু আমাকে কি যেন বলতে চেয়েছিল। সেই কথাটা আজও বলা হয়নি। বারবার হাত দিয়ে ইশারা করতে ছিল। হয়তোবা অন্য কিছু বোঝাতে চেয়েছিল কিন্তু আমি সেই ভাষাটা বুঝতে পারিনি। তাই আমার আরও বেশি কষ্ট হয়।কারণ বন্ধু শেষ ভাষাটা আমি বুঝতে পারিনি। যদি শেষ ভাষাটা বুঝতে পারতাম, তাহলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। যখন আমরা পঙ্গু হাসপাতালে প্রবেশ করলাম। হাসপাতালে ঢোকার পরেই বন্ধুকে আর খুঁজে পেলাম না, বন্ধু যেন চুপ হয়ে গেল। তার সকল ব্যথা কমে গেল এবং আমরা বারবার ডাকতে লাগলাম। তার বাবা বলল হয়তো ঘুমিয়ে গেছে।


sad-4209944_1280.jpg

source

এত ব্যাথার মধ্যে কিভাবে ঘুম হবে। আমার যেন একটা টেনশন হচ্ছিল।ডাক্তার আসলো, ডাক্তার এসে ভালোভাবে দেখে কিছু বলল না। বলল আমার রুমে আসন। যখন এই কথা বলল তখন আমার খুবই খারাপ লাগলো। হয়তোবা কোন খারাপ নিউজ পাব। কিন্তু ডাক্তার যখন রুমে গেল তার মামাকে ডেকে বলল যে ও আর বেঁচে নেই। ওকে আপনারা নিয়ে যেতে পারেন। আসলে রক্তক্ষরণ হয়েছে বেশি। প্রচন্ড মাথায় আঘাত লেগেছে। যার কারণে মাথার ভিতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং কান দিয়ে রক্ত বের হয়েছে।বন্ধুকে হারানোর এই কষ্টকর যেন এখনো মনের ভিতরে নারা দেয়। সেই দিনগুলোর কথা মনে করতে পেরে যেন চোখ দিয়ে পানি আসে। খুবই কষ্টে সেই দিনটা কাটিয়েছিলাম কারণ আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। সারা জীবনের স্মৃতি হৃদয়ের মাঝে রেখেছিলাম বন্ধুকে। আর বন্ধুত্বের বন্ধন কখনো শেষ হয়ে যাবে না। অনেক বন্ধুর সাথে অনেক মারামারি ঝগড়া হয় কিন্তু আমাদের এই বন্ধুত্বের মাঝে কখনোই ঝগড়া হয়নি। তাই যেন বন্ধুর কথা বেশি মনে পড়ে।বিকালে এম্বুলেন্সে করে আমরা বাসার দিকে নিয়ে আসলাম। গ্রামের বাড়িতে এনে দেখতে পেলাম বন্ধুদের বাড়িতে মানুষের আর মানুষ। সকলে যেন কান্নায় ভেসে পড়ছে। কারণ পরিবারের ছোট সন্তান আর খুব আদরে ছিল। একে বিদায় দেওয়ার মুহূর্ত খুবি কষ্টর ছিল। সবাই যেন পাগল প্রায় হয়ে গেছে। আসলে সেই দিনের কথা মনে করতে পেরে আমার এখন খুবই খারাপ লাগছে। কিভাবে সেই দিনটি যে পার করেছি আর পরিবারের সবাইকে তাকে হারিয়ে পাগল হয়ে গিয়েছিল।


মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টের এই পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা মোটরসাইকেল যখন চালাই তখন আমার এক্সিডেন্টের কথা ভাবি না। আমরা অনেক স্পিডে চালাই। তখন আমাদের মাথায় কাজ করে না। শুধু স্পিড আর স্পিড। এই স্পিডের কারণেই আমরা যেন আমাদের প্রিয় মানুষকে হারিয়ে ফেলেছি। তাই মোটরসাইকেল চালাতে হবে সাবধানে। জীবনে নিরাপত্তা আগে। হয়তো প্রতিযোগিতা দিয়ে আমরা কেউ এগিয়ে যেতে পারি, কিন্তু আমাদের মাঝ থেকে যে হারিয়ে যায় সে কখনো ফিরে পাবো না।আজকে প্রায় একটি বছর পার হয়ে গেলো।বন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে আমাদের সাথে। আল্লাহতলার কাছে দোয়া করি আল্লাহ তা'আলা যেন আমার বন্ধুকে ওপারে শান্তিতে রাখে। আর আল্লাহতালার কাছে এটাই দোয়া করি তাদের পরিবারের সবাইকে যেন সুস্থ রাখে। এবং পরিবারকে নিয়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করে। বন্ধুর জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল, আল্লাহ তুমি আমার বন্ধুকে শান্তিতে রেখো।🙏🤲🙏

আমার পরিচয়

IMG_20211018_182622.jpg

আমার নাম মোঃ রায়হান রেজা।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি পেশায় একজন সহকারী মেডিকেল অফিসার ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে🌹💖🌹।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉 বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  
 last year 

আপনার কথাগুলো পড়ে আমার কিন্তু বেশ জানতে ইচ্ছে হচ্ছে সেদিন আপনার বন্ধু কি বলতে চেয়েছিল। প্রিয় একজন মানুষ যদি এভাবে চলে যায় তাহলে কি তা মেনে নেওয়া যায়। সত্যি বলতে বন্ধুদের কখনো ভুলা যায় না। আপনার বন্ধুর জন্য আমার বেশ খারাপ লাগছে। আশা করি সে যেখানে থাকে ভালোই থাকবে। দোয়া রইল আপনার বন্ধুর প্রতি।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

বর্তমানে বাংলাদেশের মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট এর সংখ্যার পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর এগুলো হচ্ছে শুধু আমাদের অসাধারণতার কারণে। যদি আমরা জানতে পারছি বাইকের গতি বেশি থাকলে যে কোন সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে তারপরও আমরা সেই কাজটি করে থাকি। আর এর ফলে ঝরে যাচ্ছে কত মানুষ। ঠিক যেমন আপনার একটা বন্ধু এভাবে এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। তার সাথে চলা তার সাথে ফেরা খাওয়া-দাওয়া কত কিছু স্মৃতিগুলো এখন আপনার মনের মাঝে ওকে দিয়ে আপনাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। আসলে এই বন্ধুত্বকে ভুলে থাকা বেশ কঠিন। আমাদের কারো সতর্ক হতে হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তাহলে আমরা এই এক্সিডেন্ট থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবো।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

আসলে বন্ধু হারানোর কষ্ট কখনোই ভোলা সম্ভব না। বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো সব সময় মনে করে। আসলেই বাইক এক্সিডেন্টের কথা এখন একটু বেশি শোনা যাচ্ছে, আর বাইক এক্সিডেন্ট অনেক বেশি হচ্ছে। সবার উচিত সাবধানে বাইক চালানোর। স্পিড বেশি না দিয়ে কম দেওয়াই ভালো বাইকের। আপনার বন্ধুর জন্য দোয়া করি যেন আল্লাহ তায়ালা ওনাকে বেহেস্ত নসিব করেন।

 last year 

কিছুক্ষণ আগেও বাইক এক্সিডেন্ট নিয়ে কথা হচ্ছিল আমাদের। আমাদের এদিকে বাইক এক্সিডেন্ট হয়েছে একটা। আসলে বাইক এক্সিডেন্ট এর প্রচলন এখন বেড়েই চলেছে। আমি অনেক কন্ট্রোল করে এবং সাবধানতার সাথে বাইক চালাই। আমার বাইকের স্পিড আমি খুবই কম রাখি এবং কম রাখার চেষ্টা করি। আপনার বন্ধু এক বছর আগে আপনাদেরকে ছেড়ে চলে গিয়েছে এটা জেনে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। আসলে বন্ধুদের কথা ভোলা যায় না।

 last year (edited)

আসলে বন্ধুকে হারিয়ে যেন আপনার মধ্যে শোকের ছায়া পড়েছে। আসলে এভাবে বন্ধুদের সাথে অনেক স্মৃতি আমাদের রয়েছে কিন্তু সেই বন্ধু যদি বিদায় হয়ে যায় তাহলে অনেক কষ্টময়।

 last year 

এমন হৃদয়বিদারক একটি ঘটনা মন থেকে মেনে নেওয়া সত্যি বড় কঠিন। ভেবেছিলাম কোন প্রেম কাহিনী আমাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন কিন্তু এখন দেখি করুন একটি রোড এক্সিডেন্টের ঘটনা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। সত্যিই এই জাতীয় ঘটনা আজ আমাদের দেশে ঘটে চলছে প্রতিনিয়ত কিন্তু তার কোন সমাধান আজও হলো না। খুবই কষ্ট লাগে এই জাতীয় ঘটনাগুলো শুনলে অথবা পড়লে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 86273.50
ETH 3305.14
USDT 1.00
SBD 2.81